Loading...
November 21, 2022

আমেরিকা, ইউকে, অস্ট্র্রেলিয়া ও কানাডার পাশাপাশি এশিয়ার দেশ চীনও এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিয়ে আকর্ষণ করতে শুরু করেছে।চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) হলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চীন সরকারের দেয়া স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ এর যাবতিয় বিষয় দেখভাল করে চাইনিজ স্কলারশিপ কাউন্সিল (সিএসসি)। সিজিএস/সিএসসি (CGS/CSC) নামে অধিক পরিচিত এই স্কলারশিপের বিস্তারিত নিয়েই আজকের আয়োজন।

ব্যাচেলরে সিজিএস/সিএসসি স্কলারশিপ মানেই চাইনিজ মাধ্যম, ইংরেজিতে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।

আর মাস্টার্সে ইংলিশ এবং চাইনিজ দুই মাধ্যমেই পড়ার সুযোগ আছে। তবে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি মাধ্যমকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।

আপনি এই স্কলারশিপের আওতায় করতে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার্স, কিংবা পিএইচডি।

স্কলারশিপ এর নাম

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ ( সি জি এস )

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) আওতায় আপনি পড়তে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স। এখান থেকে প্রথমে আপনার পছন্দের বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে নিন। সিএসসি বি-টাইপের জন্য  – http://www.campuschina.org/universities/categories.html

আমাদের দেশ থেকে যারা পড়ালেখার জন্য চীনে আসে তাদের শতকরা ৫০ ভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং, ৩০ ভাগ মেডিকেল, ১৫ ভাগ কলা (ভাষা-সাহিত্য বা অন্যান্য), এবং সর্বশেষ ৫ ভাগ ব্যাবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়তে আসে।

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

চাইনিজ সরকার। চাইনিজ স্কলারশিপ কাউন্সিল (সিএসসি)

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

স্কলারশিপের আওতায় আপনি যা যা পাবেনঃ

১। টিউশন ফি

২। মাসিক ভাতা

৩। বিমান ভাড়া

৪। স্বাস্থ্য বীমা

৫। ফ্রি আবাসন

আবেদনের যোগ্যতা

১) বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। অবশ্যই সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
২) অন্য কোনো স্কলারশিপ বা ফান্ডিং এর জন্য মনোনীত হওয়া যাবে না।

৩) স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ এবং বয়স অবশ্যই ২৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৪) মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৩৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৫) ডক্টরেল প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৪০ এর চেয়ে কম হতে হবে।

আবেদনের সময়সীমা

আবেদন শুরু হয় সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আর শেষ হয় জুন-জুলাইয়ের দিকে। তবে বিস্তারিত জানতে ও পিন পয়েন্ট তথ্যের জন্য আপনাকে সাহায্য নিতে হবে অফিসিয়াল ওয়েব সাইটের।

https://studyinchina.csc.edu.cn/

বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হলে নিচের ওয়েবসাইট থেকে করতে হবে।

http://www.shed.gov.bd/site/view/scholarship

আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রতি বছরই প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

Chinese government scholarship
Image Source: Internet

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) এ বিশ্বের যে কোন দেশের সুস্থ নাগরিক আবেদন করতে পারবে।

আবেদন প্রক্রিয়া

এই স্কলারশিপে আবেদন করার উপায় হচ্ছে,

(১) বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে (টাইপ – এঃ সবোর্চ্চ ২টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)

(২) চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে (টাইপ – বিঃ সবোর্চ্চ ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)

 

Type A তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হয় এবং Type B তে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হয়।

প্রথম পদ্ধতিঃ বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট – http://www.shed.gov.bd/site/view/scholarship

সকল ডকুমেন্টস ও আবেদন পত্র জমা দিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এরপর প্রাথমিক বাছাই-এর সকল কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে চাইনিজ এম্বেসীতে এবং সেখানে আপনাকে ভাইভা দিতে হবে। পরবর্তীতে রেজাল্ট জানিয়ে দেওয়া হবে। আর আপনি এই প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ টি সাবজেক্টে আবেদন করতে পারবনে। আর এডমিশন কার্য শেষ হলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এখানে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার এইস,এস,সি এর ফলাফল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এছাড়া ভাল কোনো শিক্ষকের প্রসংসা পত্র, কো-কারিকুলার এক্টিভিটিজ এবং চাইনিজ জানা থাকলে আপনি সেটাতে বেনিফিট পেতে পারেন। এখানে ভাইবা ও একটা মূখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল হতে একটু দেরী হয় ,সাধারনত জুলাই এর শেষ সপ্তাহ বা আগস্ট এর প্রথম সপ্তাহে ফলাফল প্রকাশ হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে

প্রথমেই আপনাকে চাইনীজ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে এবং দেখে নিতে হবে এই সকল বিশ্ববিদ্যালয় চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) প্রদান করে কি না। তো আপনারা যারা এই মাধ্যমে আবেদন করতে চান তারা নভেম্বর- ডিসেম্বর থেকেই বিভিন্ন ভার্সিটির ওয়েব সাইটে তথ্য খোজা শুরু করুন। বিভিন্ন ভার্সিটির ওয়েব সাইট,সেখানে আবেদনের প্রক্রিয়া,তাদের রিকোয়ারমেন্ট দেখলে আপনি নিজেই সব কিছু বুঝে যাবেন। চীনের অধিকাংশ ভালমানের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়।  এরপর সকল কাগজপত্র ও আবেদন ফর্মসহ আবেদন করতে হবে স্কলারশিপের জন্য। এবার সকল কাগজপত্র কুরিয়ার করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় আর যদি এপ্লিকেশন ফি দেবার প্রয়োজন হয় তবে সেটাও দিতে হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রেজাল্ট দিলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় খোজার ক্ষেত্রে https://www.topuniversities.com/universities/region/asia/country/china অথবা http://www.campuschina.org/ এই ওয়েব সাইটের সহায়তা নিতে পারেন।

স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য আপনাকে জমা দিতে হবেঃ

১. অ্যাপ্লিকেশন ফরম।
২. পাসপোর্ট।
৩. পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৪. সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের নোটারাইজ কপি।
৫. স্টাডি প্ল্যান।
৬. রিকোমেন্ডেশন লেটার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন প্রফেসরের কাছ থেকে রিকোমেন্ডেশন লেটার বা সুপারিশপত্র নিতে হবে।
৭. মেডিকেল রিপোর্ট।
৮. IELTS বা TOFFEL সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।

আবেদন করতে ভিজিট করুণঃ

http://www.campuschina.org/

সিএসসি স্কলারশিপ এর আবেদনের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এজেন্সি নাম্বার কোড জানার জন্য ভিজিট করুনঃ

https://scholarshipfellow.com/agency-numbers-of-all-universities-for-csc-scholarship-china/

অন্যান্য তথ্যের জন্য

https://www.chinesescholarshipcouncil.com

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হলে সুদূর চীনে যাওয়া উচিত- এই প্রবাদ আমরা সবাই জানি। এই প্রবাদ শুনে সবাই বুঝতেই পারছেন পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ দেশ চীন জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চায় বেশ এগিয়ে, সেই অতীত থেকেই। পাহাড়, পর্বত, নদী, সমউদ্র, তৃণভূমি, মরুভূমি- কি নেই এই বৃহদাকার দেশের থলের মধ্যে। মহা প্রাচীরের দেশ চীনে, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের পর সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পাড়ি জমাই প্রাচ্যের এই দেশে। হিসাব অনুযায়ী দেখা গেছে, এক ২০১৬ সালেই তাবদ দুনিয়া থেকে ৪,৪০,০০০ শিক্ষার্থী পড়তে এসেছে চীনে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বেশ সুনাল অর্জন করেছে এবং চীন সরকারের উদার নীতির কারণে এ দেশে দিনে দিনে অন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

কেন চীনে পড়তে যাবেন?

“পিপলস রিপাবলিক অব চায়না” – আয়তন ও জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের বৃহত্তম দেশটির রাজধানী বেইজিং, ভাষা মান্দারিন আর মুদ্রা ইউয়েন। উৎপাদন, শিল্প, কৃষি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই যেন এক নম্বর এই দেশ। আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, খেলাধূলা ও গবেষণা থেকে শুরু করে কি নেই এই সব সম্ভবের দেশে। প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে চীন উৎকর্ষতার শিখরে- ফলে এই দেশে পড়াশুনা করলে বিশ্বের প্রযুক্তি বিষয়ে নিজের দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হবে। কিন্তু, চীনের চাকুরির বাজার ক্রমে সংকুচিত হচ্ছে- আবার, অপর দিকে, এই দেশে ব্যবসা করার পথ দিন দিন আরো খুলে যাচ্ছে। তাই অবারিত দ্বার এই দেশে নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য হয়ত আপনারও দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হবে।

Great wall - China
Image Source: pixabay.com

চীনে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইউরোপ বা আমেরিকার মত চীনে পড়াশুনা করতে GRE/ GMAT/ SAT/ ACT কিম্বা নিদেন পক্ষে IELTS/ TOEFL জাতীয় কোন পরীক্ষায় বসতে হবে না।

চীনে যেহেতু পাশ মার্ক ৬০%। তাই আপনার একাডেমিক পরীক্ষায় ৬০% এর অধিক মার্ক থাকলে আপনি চীনে যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি ৮০% মার্ক পেলে স্কলারশিপ পেতে আপনার সুবিধা হবে। আর ডিপ্লোমা কোর্সে আবেদন করতে আপনার থাকতে হবে HSC- তে ৪.৪৩ পয়েন্ট। ব্যাচেলরে আবেদন করতে আপনাকে SSC ও HSC তে আপনার সব মিলিয়ে থাকতে হবে ৮.০ পয়েন্ট। মাস্টার্সে আবেদন করতে থাকতে হবে ৩.২০ আর পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে ৩.৪০ পয়েন্ট সাথে থাকতে হবে পাবলিশড রিসার্চ পেপার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা ফি বছর পরিবর্তন হয়। তাই দেখে নিন, বুঝে নিন – বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদতে কি চাচ্ছে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

চীন বছরে দুইটি সেমিস্টারের মাধ্যমে অফার করে বিভিন্ন ধরণের কোর্স। আপনি গ্রাজুয়েশন, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, মাস্টার্স, সিনিয়র স্কলার, জেনারেল স্কলার অথবা পিএইচডি সহ যে কোন প্রোগ্রামে যেতে পারেন ।

চীনে অবস্থিত বিশ্বমানের প্রায় ১১০০ এর অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আওতায় বিভিন্ন কোর্স অফার করে থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সব বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেয় না। আবার অনেক নামী- দামী বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেওয়া হয় না। তাই আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমন্ধে একটু জেনে নিতে হবে। আর এই দেশে প্রকৌশল, কৃষি, মেডিকেল ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, বিজনেস ও ম্যানেজমেন্টসহ অনেক ধরণের বিষয়ে পড়ানো হয়। তবে, প্রকৌশল বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় চীনে উন্নত শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।

বর্তমানে চীনে মেডিকেল ও স্বাস্থ্যবিষয়ে পড়াশোনার জন্য বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। চীনের যেকোন রেজিস্টার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে পড়াশুন শেষ করে এসে আপনি বাংলাদেশে প্রকটিস করতে পারবেন। শুধু আপনাকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) থেকে সম্মতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ও এখন বেশ উন্নত ও তারা বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষা প্রদান করে আসছে। নিম্নে চীনের কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। Tsinghua University

২। Peking University

৩। University of Science and Technology of China

৪। Zhejiang University

৫। Fudan University

Students in China
Image Source: Internet

চাইনিজ ইউনিভার্সিটির র‍্যাংকিং নিয়ে  আরও ভালো ভাবে জানতে চাইলে তুমি এই লিঙ্কটিতে ঘুরে আসতে পারো। আশা করি র‍্যাংকিং নিয়ে তোমার আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না।

 

লিঙ্কঃ https://www.mastersportal.com/ranking-country/105/china.html

কোন ভাষায় পড়বেন?

চাইনিজ কিংবা ইংলিশ দুই ভাষাতেই পড়তে পারবেন । ডিপ্লোমাতে সারাধরণ চাইনিজে পড়ানো হয়। ইংলিশ কোর্স খুব একটা পাওয়া যায়না। অনার্স , মাস্টার্স, পিএইচডি চাইনিজ কিংবা ইংলিশে করতে পারেন । বেশির ভাগ ইউনিভার্সিটি এখন IELTS চাচ্ছে। সর্বনিম্ন ৬.০ ব্যান্ড। তবে, আপনার প্রোফাইল সমৃদ্ধ হলে সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও IELTS ছাড়াই আবেদন গ্রহণ করছে। চীনা ভাষায় দক্ষতা প্রমাণের জন্য HSK 4 পরীক্ষার স্কোর প্রয়োজন পড়ে আর যদি খোদ চাইনিজ ভাষায় পড়তে চান তাহলে প্রয়োজন পড়বে HSK 5 । তবে, এই স্কোরও বাধ্যতামূলক নয়। চীনে সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে দিয়ে এই সংক্রান্ত কোর্স করিয়ে নেবে। তাই, এই বিষয়েও কোন চিন্তা নেই।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

চীনে আবেদনের জন্য সকল ডকুমেন্টস নোটারাইজড করে দিতে হবে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় আবার আপনার সার্টিফিকেট চাইনীজ ভাষা/ মান্দারিন ভাষায় চেয়ে থাকে। তাদের জন্য আপনাকে অনুবাদক দিয়ে আপনার ডকুমেন্টস অনুবাদ করিয়ে নিতে হবে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখন ইংরেজীতে প্রদত্ত সকল সার্টিফিকেট এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

আগেই বলেছি চীনে দুইটি সেমিস্টার পড়ানো হয় প্রতি বছরঃ যার একটি মার্চে শুরু হয় আর অপরটি সেপ্টেম্বরে শুরু হয়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা বেশ কষ্টকর- তাই, আবেদন করার জন্য যদি চীনে অবস্থিত কোন পরিচিত বন্ধু বা আত্মীয়ের সাহয্য নেন তাহলে অনেকটাই সুবিধা হবে। যেহেতু, আবেদন করতে টাকা-পয়সা খরচ হবে, তাই বিশ্বস্ত না হলে এই বিষয়ে না এগোনোই ভালো।

Students in China
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার পরবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ

১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট (অবশ্যই নোটারাইজড)

২। Study Plan ও ২ টি রিকমেন্ডেশন লেটার (সহযোগী অধ্যাপক বা অধ্যাপকের কাছ থেকে নিতে হবে)

৩। পাসপোর্টের কপি ও সাদা ব্যাক-গ্রাউন্ডের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (নোটারাইজড)

৪। স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট

৫। জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র, বায়ো-ডাটা

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

সাধারণত চীনে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশুনা করতে বছরে খরচ হবে ২-৩ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এই ফি-এর তারতম্য হয়। আর মেডিকেল বিষয়ে পড়তে খরচ হবে ৩-৬ লাখ টাকা। চীনে মেডিকেল কোর্স ৫ বছরের আর সাথে ১ বছরের ইন্টার্নশীপ।

 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে চীনা সরকার প্রচুর পরিমাণে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছে, যেগুলো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলে টিউশন ফি’র জন্য ফুল ও পার্শিয়াল ফান্ডিংয়ে দেয়া হয়ে থাকে। এর মাঝে রয়েছে-

১। Chinese Government Scholarship

২। University/ Presidential Scholarship

৩। Confucius Institute Scholarship

৪। Local Government Scholarship / Provincial Scholarship

৫। Enterprise Scholarship

তাই, যোগ্যতা থাকলে এই দেশে স্কলারশিপের সুযোগ অনেক বেশি।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

চীনের বিশ্ববিদ্যালয় আপনার আবেদন গ্রহণ করলে তারা আপনাকে প্রদান করবে JW202 (চীনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সীলযুক্ত) । আর এই JW 202 ভিসা আবেদনের জন্য একান্ত প্রয়োজন। সকল ডকুমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত চীন এম্বেসীতে করতে হবে ভিসার জন্য আবেদন।

ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের লিস্ট নীচে তুলে ধরা হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Admission Letter এবং JW 202

২। সকল নোটারাইজড ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ

৪। রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

৫। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৬। মেডিকেল রিপোর্ট

৭। IELTS এর সনদ (যদি থাকে)

৮।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

City life in China
Image Source: Internet

চীনের আবাসন ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রার ব্যয়

চীনে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে হোস্টেল। হোস্টেলে থাকতে আপনাকে দিতে হবে ভার্সিটিভেদে বাৎসরিক ৩০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা।

সকল দেশের মত এই দেশেও খরচ নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের মত। তবে নিজে রান্না করে খেলে আপনি প্রভিন্সভেদে মাসিক ৪০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকায় সেরে নিতে পারবেন। আর যদি বাইরে খান তাহলে এই খরচ মাসিক ২৫,০০০ টাকার মত লেগে যাবে।

চীনের যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন বেশ ভালো, তেমনই বেশ সাশ্রয়ী। এখন চলুন বিভিন্ন যানবাহনে খরচ কেমন হতে পারে সেই সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:

মেট্রো: ৪০ টাকা (প্রায়)

ট্যাক্সি/কি.মি: ৩০ টাকা (প্রায়)

সিটি বাস: ২৫ টাকা (প্রায়)

পাবলিক ট্রান্সপোর্টে স্টুডেন্ট পাস থাকলে মাসে তাতে খরচ হবে মাত্র ১৩০০ টাকা

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

চীনে পড়াশুনার পাশাপাশি জব করা সকল প্রদেশে বৈধ নয়। তাই, আপনি জব করতে পারবেন কি না সেটা আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রদেশে সেটার উপর নির্ভর করবে। আর চীনে চাকুরীর বাজারে বিদেশী হিসেবে চাকুরী পাওয়া কঠিন। তাই, আপনি স্থায়ী বসবাসের কথা ভাবলে এই দেশ খুব একটা ভালো ডেস্টিনেশন হবে না। কিন্তু, জ্ঞান অর্জনের জন্য এই দেশ সমৃদ্ধ।

City life in china
Image Source: Internet

আপনারা চীনে উচ্চশিক্ষা নিয়ে অনেক কিছুই জেনে গেলেন। বাকিটা আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে জানতে হবে। তাহলে আর দেরী কেন? এখনি করুন- নিজেই নিজের আবেদন।

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!