Loading...
November 23, 2022

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষা অর্জনের ডেস্টিনেশন হল ইংল্যান্ড, যাকে সাংবিধানিক ভাষায় বলা হয় United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland. সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে এই দেশের ইতিহাস বহু সমৃদ্ধ- বহু প্রাচীন। জ্ঞানের অন্যতম পীঠ হল এই দেশ। তাই তাবদ দুনিয়ার জ্ঞান পিপাসুরা ভিড় জমায় এই দেশে এসে। আর শিক্ষার্থীদের চাহিদার দিকে তাকিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের বিভিন্ন রকম প্রতরণার ফাঁদে ফেলছে। অনেকে আবার না বুঝে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে নাম-সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখন তাদের ভুল তারা বুঝতে পারে, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি, ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত বিবরণ। তাই, যদি স্বপ্ন হয় ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা তাহলে আর দেরি না করে আর্টিকেলটা পড়ে দেখুন, বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন আর নিজেই করুন নিজের আবেদন।

কেন ইংল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইংল্যান্ড বিশ্বজুড়ে পড়াশুনা করার জন্য অন্যতম স্থান। প্রতি বছর এই পূন্যভূমিতে বিদ্যার্জনের জন্য পাড়ি দেয় প্রায় ৫,০০,০০০ জ্ঞানপিপাসু। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অফার করা হয় ৫০,০০০ এর বেশি কোর্স আর আছে ২৫ এর বেশি সাবজেক্ট এরিয়া। আর বিশ্বে চাকুরীদাতা থেকে শুরু করে সকল নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংল্যান্ডের ডিগ্রীর কদরও কম নয়। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ও নিজেকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার জন্য আপনার গন্তব্যও হতে পারে ইংল্যান্ড।

Study in England
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইংল্যান্ডে ৩-৪ বছরের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হতে প্রয়োজন পড়বে ১২ বছরের শিক্ষা জীবনের আর সাথে প্রয়োজন পড়বে IELTS স্কোর কমপক্ষে ৬.০ -৬.৫। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়তে যেতে প্রয়োজন পড়বে ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন ও সাথে IELTS স্কোর ৬.৫ – ৭.০। এদেশে পড়াশুনা করতে আপনাকে আপনার একাডেমিক কোর্সে ৫০-৫৫ শতাংশের বেশি মার্ক্স অর্জন করে আসতে হবে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

ইংল্যান্ডে নানা ধরণের কোর্স অফার করা হয়। আর আপনি ডিপ্লোমা, কারিগরী কোর্স, ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পোস্ট গ্রাডুয়েট ডিপ্লোমা, পিএইচডি- সব ধরণের কোর্সের জন্য আসতে পারেন ইংল্যান্ডে। আপনি আপনার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বেছে নিবেন আপনার জন্য বেস্ট কোর্স। সাধারণত ইংল্যান্ডে Business School, Hospitality, Tourism and Hotel Management, Pure Science and Engineering, Education Science, Law ও Health & Medicine – এই সব স্কুলের কোর্সগুলো খুবই জনপ্রিয়। MBA, MSC, BBA, ACCOUNTING, MARKETING, HRM, ENGINEERING, LAW, IT, SOCIAL SCIENCE, PUBLIC HEALTH, PHARMACY, DIPLOMA সহ আরও নানা ধরনের বিষয়ে পড়াশুনা করতে পারবেন ।আপনি এই ইন্ডান্স্ট্রিতে অনেক জবও পাবেন। তাই, ভেবে দেখুন ও সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজের পছন্দের কোর্স বেছে নিন।

ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীকে প্রথমে ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করতে হয়।ইংল্যান্ডে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি তথ্য সম্ভার হিসেবে কাজ করে। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ইংল্যান্ডের কোর্সগুলো ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে।

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্ত নেই। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয়েই যান-না-কেন, সে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে আগে একটু অন-লাইন রিসার্চ করে নিতে ভুলবেন না। কারণ, অনেকেই ভুলে করে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন, যাদের কোর্স অফার করার লিগাল অথরিটি নেই। World Ranking-এ আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেখে নিন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হল, খুঁজে দেখুন আর পছন্দ করে দেখুন আপনার জন্য প্রযোজ্য কোর্স কোনটি হবেঃ

  1. University of Oxford
  2. University of Cambridge
  3. Imperial College London
  4. UCL
  5. London School of Economics and Political Science
  6. University of Edinburgh
  7. King’s College London
  8. University of Manchester
  9. University of Warwick
  10. University of Bristol
University in England
Image Source: pexels.com

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ইংল্যান্ডে বছরে দুইটি সেশন আছেঃ

১। অটাম সেশন ও

২। স্প্রিং সেশন

অটাম সেশন শুরু হয় সাধারণত সেপ্টেম্বর – জানুয়ারি মাসে আর স্প্রিং সেশন শুরু হয় জানুয়ারি – জুন মাসে। ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে দেখলে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পাবেন ভর্তির আবেদন পত্র, সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে করতে পারবেন আবেদন। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আবার দেয় অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ। আপনি যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন এডমিশন অফিসের সাথে- তারা আপনাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে। ইংল্যান্ডে ভর্তির আবেদন বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার- প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়, সব কিছু প্রসেস করতে। তাই হাতে প্রায় ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

নিচে ইংল্যান্ডে আবেদনের জন্য মূল ডকুমেন্টসগুলোর তালিকা দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট- অবশ্যই ইংরেজীতে ও নোটারাইজ করে দিতে হবে।

২। IELTS এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে ইংল্যান্ডে পড়াশুনার ব্যয় অনেক কম-বেশি হয়। এই দেশে পড়াশুনার ব্যয় ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি মূলত ফাউন্ডেশন কোর্স বা প্রিলিমিনারি কোর্সে পড়তে প্রতি বছর খরচ হয় ৪,০০০-১২,০০০ পাউন্ড। কলা বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে অনুমানিক ৭,০০০ – ৯,০০০ পাউন্ড। আবার, বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আপনার প্রয়োজন পড়বে ৭,০০০ – ১২,০০০ পাউন্ড। মেডিক্যাল বিষয়ে পড়তে সব জায়গায় খরচ একটু বেশিই হয়। সাধারণত মেডিক্যাল সাইন্সে আপনার খরচ ১০,০০০ – ২১,০০০ পাউন্ড। ইংল্যান্ডে বিজনেস স্কুল বেশ জনপ্রিয়। এখানে বিজনেস স্কুলে পড়তে প্রতি বছর ৪,০০০ পাউন্ড থেকে ৩০,০০০ পাউন্ড খরচ হবে।

Students in England
Image Source: pixabay.com

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বেশি হলেও এখানে অনেক ধরণের স্কলারশিপেরও সুযোগ আছে। সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েব সাইটেই পাবেন বিভিন্ন স্কলারশিপের খবরা-খবর।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ইংল্যান্ডে পড়তে আপনাকে টিউশন ফি ও লিভিং কস্ট বাবদ ব্যাংকে ১০,০০০ – ১৫,০০০ পাউন্ড দেখাতে হবে। এই পরিমাণ অর্থ আপনাকে কমপক্ষে ১ মাস আপনার একাউন্টসে আছে এমন দেখাতে হবে। তবে চিন্তা নেই- ভিসা পাওয়ার পর এই টাকা আপনি তুলে ফেলতে পারবেন। জার্মানীর মত ব্লক একাউন্টসে টাকা রাখতে হবে না আপনাকে।

ভিসার জন্য আবেদন

ইংল্যান্ডে ভিসার কাজ শেষ করতে ৩ থেকে ৩.৫ মাস সময় লাগে। তাই সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা নামে কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। মূলত, স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, যেটাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলা হয়। এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি ইংল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

Visa Application - England
Image Source: Internet

এবার জেনে নিন ভিসা আবেদনর জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

২। CV, মোটিভেশন ও রেফারেন্স

৩। সকল মার্কশিট ও সনদ

৪। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৫।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ও টিউশন ফি প্রদানের রশিদ

৬। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৭। পুলিশ ক্লিয়ারান্স ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টস

৮।IELTS এর কপি

৯। মেডিকেল চেক আপ রিপোর্ট

ইংল্যান্ডে থাকাকালীন আপনার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে তার প্রমাণপত্র হিসেবে যুক্ত করুন

১. ইংল্যান্ডের ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

২. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

৩. ব্যাংক ড্রাফট।

৪. এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।

৫. যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি।

৬. আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।

ইংল্যান্ডে পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ইংল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন আর ছুটিতে আপনি ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার আপনার সাথে আপনার স্পাউস থাকলে তিনিও কাজ করার সুযোগ পাবেন। বর্তমানে ইউকে গভারন্মেন্ট স্টুডেন্টদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে ।

ইংল্যান্ডে আপনি কোথায় বসবাস করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার দৈনন্দিন খরচ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য কত খরচ হবে। আপনি চাইলে আবাসিক ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের খরচ ৪০০ – ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে মেটাতে পারবেন।আপনি কি মানের লাইফ লিড করতে চান তার উপর এটা ডিপেন্ড করে ।

Road in London
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আর আপনি বৈধভাবে ৮ থেকে ১০ বছর থাকার পর PR এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে রাখি ইংল্যান্ড ২০২১ সাল থেকে তাদের PR সংক্রান্ত নীতিমালায় বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। যদি ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষার্থী পড়াশুন শেষ করেন, তাহলে তিনি ২ বছর মেয়াদী Post Study Work (PSW) ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। আর আপনি যদি কমপ্লিট করেন পিএইচডি, তাহলে আপনি ৩ বছর মেয়াদী PSW ভিসা। যদি দুর্ভাগ্যবশত এই ভিসার এই সময়ে যদি আপনি কোন জব ম্যানেজ করতে না পারেন, তাহলে আপনি আবার কোন কোর্সে পড়া শুরু করতে পারেন এবং ডবল ডিগ্রী অর্জন করতে পারেন। পরবর্তীতে আবার আপনি PSW ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি চাইলে, আপনার বেটার-হাফ (স্বামী/ স্ত্রী)- কে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারেন আর আগেই তো বলেই, আপনার স্পাউস এলে তিনি ফুল-টাইম জব করার সুযোগ পাবেন।

ইংল্যান্ড অপার সম্ভবনার দেশ। এই দেশে আপনি আপনার নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডে যেমন সম্ভবনা তৈরী হয়েছে, তেমনি প্রতারক চক্রও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই যাচাই বাছাই করে আবেদন করুন আর গড়ে তুলুন নিজের ভবিষ্যৎ।

City of London
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

Donde fueres, haz lo que vieres” – এটি একটি স্প্যানিশ প্রবাদ যাকে ইংরেজীতে বলা যেতে পারেঃ Wherever you go, do whatever you see আর সোজা বাংলায়, যেমন দেশ, তেমন বেশ আর তেমনি হওয়া উচিত কার্য-কলাপ। শুরুতেই আপনাদের স্পানিশ জ্ঞান সাগরের তীরে নিয়ে ফেললাম। অন্যভাবে, স্পানিশ ফুটবল, খাবার অথবা স্পানিশ মুভি পৃথিবীয় অন্যতম ক্লাসিক ব্যাপারের একটি যেন। এতো স্পানিশ চর্চা করছি, নিশ্চই বুঝতে পারছেন- আজ আপনাদের সাথে আলোচনায় বসবো স্পেনের উচ্চশিক্ষা নিয়ে। আর দেরী না করে শুরু করে দেই- স্পেনে উচ্চশিক্ষাঃ নিজেই করুন নইজের আবেদন।

কেন স্পেনে পড়তে যাবেন?

পড়াশুনার জন্য যদি যেতে চান ইউরোপ, আর গন্তব্য যদি হয় স্পেন- তাহলে মনে রাখবেন, স্পেন আপনাকে বিশাল হৃদয় নিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে। পড়াশুনার পরিবেশ, চর্চার জায়গা ও বিকাশ ও সার্বক সুযোগ ও মানের বিচারে এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে আছে। শুধু কি তাই- খোদ আমেরিকা থেকেও এই দেশে পড়তে আসে অনেক শিক্ষার্থী। তাহলে, বুঝতেই পারছেন- স্পেন অনেকটাই এগিয়ে বিদ্যার্জনের পীঠস্থান হিসেবে।

Study in Spain
Image Source: pixabay.com

পশ্চিম ইউরোপের সেঞ্জেনভুক্ত দেশ স্পেনের সাংবিধানিক নাম Reino de España, ভাষা স্প্যানিস, মুদ্রা ইউরো আর রাজধানী মাদ্রিদ- এদেশের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। আইবেরীয় উপদ্বীপে অবস্থিত স্পেনের আয়তন ৫,০৫,৯৯০ বর্গ কিলোমিটার যা বিশ্বর ৫১তম বৃহৎ, ও লোকসংখ্যার গণনায় এই দেশে বসবাস করে ৪৭ মিলিয়ন লোক। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের মনে, পর্তুগাল বিশ্বে ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতি। ২.৬% জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই দেশ পৃথিবীর অন্যতম উন্নত অর্থিনীতির দেশ। তাই, এই দেশ আপনাকেও এনে দিতে পারে সাফল্য।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

স্পেনের শিক্ষার মান বিশ্বমানের- আর এজন্যই বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী এই দেশে পড়তে আসেন। প্রতিবছর সারাবিশ্বের হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্পেনের মোট ৭৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসেন। স্পেনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে।  স্পেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় স্প্যানিশ ভাষায়। কিন্তু শুধু স্প্যানিশ নয়, এদেশে ইংরেজী ভাষায়ও পাঠ দান করা হয়ে থাকে। ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি সব প্রোগ্রামই ইংরেজী ভাষায় করার সুযোগ আছে। এজন্য আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে যেনে নিতে হবে। কিন্তু যদি আপনার জানা থাকে স্প্যানিশ ভাষা তাহলে আপনার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার উন্মোচন আরো সহজ হবে- সুযোগের দিগন্ত হবে অনেক সুদূর প্রসারী।

নিচে আপনাকে স্পেনের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হল:

  1. Universitat de Barcelona
  2. Universidad Complutense de Madrid
  3. Universitat de València
  4. Universidad de Granada
  5. Universitat Autónoma de Barcelona
  6. Universidad Politécnica de Madrid
  7. Universidad de Sevilla
  8. Universidad de La Rioja

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং ও তালিকা আরো বিস্তারিত জানতে ব্রাউজ করে দেখুন নিচের ওয়েবসাইটঃ

https://www.4icu.org/es/

স্পেনে পড়াশুনার জন্য অনেক বিষয় রয়েছে। আপনি আপনার পছন্দ ও যোগ্যতা অনুযায়ী আপনার কোর্স বেছে নিতে পারেন। অন্যতম কিছু কোর্সঃ

ফিজিকোলজি, ফিলোসফি, অডিওলজি, আরলি চাইল্ডহুড এডুকেশন, লাইব্রেরি সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি অকুপেশনাল থেরাপি প্রোগ্রাম, ফুড সায়েন্স, স্পেশালিষ্ট টিচার এডুকেশন, ফার্মাসি, ফিশারিস, এডমিনিস্ট্রেটিভ ল, সিভিল ল, পাবলিক ল, ম্যাথমেটিক্স, ফিজিওথেরাপি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ল, আর্ট এন্ড ডিজাইন, এগ্রিকালচারাল সায়েন্স, মেরিটাইম সায়েন্স, আর্টটেকচার, অটোলজি, সয়েল সায়েন্স,  জার্নালিজম, মেডিক্যাল সায়েন্স, বায়োলজি, ফিজিক্স, ডেনটিসট্রি, অর্থোপেডিকস, রেডিওলোজী, ন্যাচারাল সায়েন্স, সোশাল সায়েন্স, আর্কিটেকচার, আর্টস, বিজনেস স্টাডিজ, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, সোশাল ওয়ার্ক, নার্সিং, ভেটেরিনারি মেডিসিন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাচেলর্স ও মাস্টার্স কোর্সে পড়াশোনা করতে পারেন।

Study in Spain
Image Source: Internet

স্পেনে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

স্পেনে ব্যাচেলর পড়তে গেলে আপনার ১২ বছরের শিক্ষা জীবনের অর্থাৎ HSC পাশ করে আসতে হবে, মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ১৬ বছরের শিক্ষা জীবনের  অর্থাৎ, ব্যাচেলর ডিগ্রী থাকতে হবে এবং পিএইচডি করার জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রী। এরপর আপনার দরকার হবে ভাষাগত দক্ষতার। আপনি ইংরেজী ভাষায় কোর্স করতে চাইলে আপনাকে IELTS এ ৫.৫/৬.০ – ৭.০ স্কোর পেতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এই স্কোর পরিবর্তিত হয়। আর আপনি যদি স্প্যানিশ ভাষায় কোর্স নিতে চান তাহলে আপনাকে স্প্যানিশে আপনার B1/B2 বা DELE (Diploma of Spanish as a Foreign Language) Intermediate বা DELE B1/B2 থাকতে হবে। DELE সার্টিফিকেটটি ইস্যু করে Cervantes Institute, Spain.

উল্লেখ্য যে, স্প্যানিশ ভাষায় সরাসরি ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীকে স্প্যানিশ ভাষায় ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।

স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষা

বাংলাদেশে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষার জন্য কিছু ইন্সিটিউট রয়েছে বিশেষ করে আধুনিক ভাষা ইন্সিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ স্প্যানিশ ডিপার্টমেন্টে জুনিয়র এবং সিনিয়র কোর্স নামে ১বছর করে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু রয়েছে যা সাধারনত প্রতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে ভর্তির আবেদন গ্রহন করা হয়। তাছাড়া ঢাকার আর কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষাদান করা হয় যেমন ব্রাক ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি।

এখানে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষা সম্পর্কিত কিছু লিংক দেওয়া হল যেখানে স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় সম্বন্ধে জানা যাবে।

https://iml.du.ac.bd/

https://www.facebook.com/catedra.inditex.du/

https://elebengali.wordpress.com

https://elebangla.wordpress.com

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

স্পেনে আবেদনের জন্য আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রথমে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তারপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন করিয়ে নিতে হবে। এরপর, ঢাকাস্থ স্পেনের দূতাবাস থেকে সকল ডকুমেন্টস সত্যায়ন করাতে হবে। অনলাইনে আবেদনের সময় অনেক সময় হার্ডকপিও চায়। তাই এজন্য সত্যায়িত ফটোকপি আপনাকে পাঠাতে হতে পারে। আপনার ডকুমেন্টস যেন সঠিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় পৌছায় এজন্য হাতে সময় নিয়ে ডকুমেন্টস পাঠানো ও আবেদনের কাজ শুরু করা উচিত।

University in Spain
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতোকত্তর অথবা পিএইচডি সব ধরণের প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ আছে স্পেনে।

স্পেনে তিন ধাপে ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির আবেদন গ্রহন করা হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১ম ধাপে স্নাতক কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয় যা সাধারনত বছরের শুরুর(ফেব্রুয়ারী-জুন) দিকে ভর্তির আবেদন গ্রহন করা হয়।

২য় ধাপে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয় যা সাধারনত বছরের মাঝখানের (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) দিকে ভর্তির আবেদন গ্রহন করা হয়।

৩য় ধাপে গবেষণামূলক/PhD কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয় যা সাধারনত এপ্রিল-অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তির আবেদন গ্রহন করা হয়।

স্পেনে দুই ধরণের মাস্টার্স কোর্স আছেঃ একটি অফিসিয়াল মাস্টার্স, যা স্পেনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত আর দ্বিতীয়টি হল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত ও অফারকৃত মাস্টার্স প্রোগ্রাম, যা তুলনামূলক ব্যয়বহুল। মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে আপনার ব্যাচেলরের মার্ক্স স্পেনের সমতুল্য স্কেলে রূপান্তর করিয়ে নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার পরবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ

১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট (স্পেনের স্কেলে রূপান্তরকৃত)

২। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৩। CV

৪। পাসপোর্টের কপি ও ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৫। আপ্লিকেশন ফি পরিশোধের প্রমাণ

সকল ডকুমেন্টস ঠিক ঠাক মত জমা দিতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইল করে জেনে নিতে হবে।

আপনার ডকুমেন্টস সব কিছু ঠিক-ঠাক থাকলে, ১-২ মাসের মধ্যে আপনাকে মেইল করে জানিয়ে দেওয়া হবে। Acceptance Letter আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর আবেদন কনফার্ম করার জন্য টিউশন ফি-এর পুরোটা বা আংশিক অংশ বিশ্ববিদ্যালয়রের প্রদত্ত ব্যাংক একাউন্টসে পাঠিয়ে দিতে হবে। টিউশনের ফি-এর কতটুকু অংশ জমা দিতে হবে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন হতে পারে। এই টিউশন ফি (আংশিক/ পূর্ণ) জমা দেওয়ার পরে, বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে Acceptance Letter -এর হার্ডকপি ও ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র পাঠাবে।

Students in Spain
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

স্পেনে পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আপনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলে আপনার বার্ষিক ফি দিতে হবে ৬,০০-১,২৮০ ইউরো। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হলে বার্ষিক ফি-এর পরিমাণ হবে ৫,৫০০-১৮,০০০ ইউরো পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে এই টিউশন ফি-এর তারতম্য হয়ে থাকে। নন-ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে প্রতি ক্রেডিট ৫৫-৮০ ইউরো হয়ে থাকে আর মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রামে এই প্রতি ক্রেডিট ফি হয়ে থাকে ২২-৩৬ ইউরো।

স্পেনের পাবলিক ও প্রাইভেট সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই আছে বৃত্তির সুবিধা। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই থাকে সকল স্কলারশিপের খবরা-খবর। নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে স্কলারশিপের জন্য নিচের ওয়েব সাইট ঘুরে আসতে পারেনঃ

https://www.aecid.es/ES/becas-y-lectorados/convocatorias-maec-aecid

স্পেনের আবাসন ব্যবস্থা

স্পেনে আপনি কোথায় আছেন সেটার উপর নির্ভর করবে আপনাকে আবাসন বাবদ কত খরচ করতে হবে। মাদ্রিদ বা বার্সেলোনার মত শহরে থাকতে আপনাকে ৩৫০ – ৯০০ ইউরো দিতে হতে পারে শেয়ারড ফ্ল্যাটের জন্য। কিন্তু আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরে স্যালামাঙ্কা, স্যান্টিয়াগো ডি কম্পোসটেলা ও গ্র্যানাডা শহরে থাকেন আপনি ৩০০ ইউরোতে আপনার ফ্ল্যাট পেয়ে যাবেন। শুধু তাই নয়, অন্যান্য খরচও এখানে কম। সমস্যা হবে আপনাকে রোজ বেশ খানিকটা রাস্তা কমিউট করে বিশ্ববিদ্যালয় পৌছাতে হবে।

আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলেও আবেদন করতে পারেন। দ্রুত আবেদন করলে আপনার হোস্টেলে থাকার সম্ভবনা বেড়ে যাবে। আপনি যেখানেই থাকেন না কেন, ভিসার জন্য আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে হাউজিং কন্ট্রাক্ট ডকুমেন্টস।

Students in Spain
Image Source: Internet

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

স্পেনের ভিসা পেতে আপনার সময় লাগবে ৩ মাসের বেশি, তাই আগে ভাগেই আপনাকে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভিসা পাওয়ার প্রথম ধাপ হবে আপনাকে ঢাকাস্থ স্পেনের দূতাবাস থেকে ভিসা প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে হবে। এজন্য নিচের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে এপয়েন্টমেন্ট নিনঃ

http://www.exteriores.gob.es/embajadas/dhaka/es/Paginas/inicio.aspx

আপনি সকল কাগজ নিয়ে সময়মত এম্বেসীতে উপস্থিত হয়ে ডকুমেন্টস সাবমিট করবেন। যদি সকল ডকুমেন্টস ঠিক থাকে, তাহলে ভিসা ফি ব্যাংকে জমা দিয়ে রশীদসহ সকল ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Offer Letter

২। সকল সত্যায়িত ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ

৪। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

৫। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৬। IELTS / DELE B1-B2 এর সনদ

৭। হাউজিং সার্টিফিকেট/ ডকুমেন্টস

১১। ফ্লাইট বুকিং টিকিট

১২।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

Life in Spain
Image Source: pexels.com

পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার খরচ

স্পেনে একজন বিদেশী শিক্ষার্থীর সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ থাকে। তবে, পার্ট টাইম জবের টাকায় নিজের খরচ চালানো সম্ভব হলেও টিউশ্ন ফি দেওয়া সম্ভব হবে না। স্পেনে থাকা-খাওয়া বাবদ মাসিক খরচ প্রায় ৪০০-৫০০ ইউরো, এটা নির্ভর করে শহর, ব্যক্তির লাইফ স্টাইল এর উপর।

স্পেনে স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

গত সেপ্টেম্বর ২০১৮ সাল থেকে স্পেনে একটি নতুন ইমিগ্রেসন আইন অনুমোদন করা হয়েছে, এই আইনের অধীনে স্পেনে উচ্চশিক্ষারত বিদেশী শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষা সমাপ্তির পর স্পেনে একটি চাকরি খোঁজার জন্য অথবা নিজস্ব ব্যবসায়িক প্রকল্প তৈরি/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে সর্বোচ্চ ১২-মাস স্পেনে থাকার অনুমতি পাবেন।

 

এখানে ৫ বছর থাকার পর Temporary Resident Permit এর জন্য আবেদন করার সুযোগ থাকে। তবে এজন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে যেমনঃ সফলভাবে স্পেনে কোর্স শেষ করতে হবে, স্বাস্থ্যবীমা থাকতে হবে এবং চাকুরী পাওয়ার আগ-পর্যন্ত চলার মত আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র। আর টানা ১০ বছর থাকার পর, আপনি Permanent Residence এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

Life in Spain
Image Source: Internet

যাই হোক, স্বপ্নের স্পেন হোক আপনার সম্ভবনার নতুন দুয়ার। শুরু করে দিন আজই স্পেনে ভর্তির আবেদন।

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

মধ্য ইউরোপের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি যেখানে জন্ম নিয়েছিলেন কিংবদন্তি নেতা মার্শাল টিটো সেই দেশের নাম স্লোভেনিয়া। আর এই দেশই আজ আমাদের কেন্দ্রবিন্দু। উচ্চশিক্ষার জন্য যারা ইউরোপের স্বপ্ন দেখছেন- এই লেখাটি আসলে তাদেরই জন্য। তাহলে আর দেরি কেন? শুরু করি আজকের পর্ব।

কেন স্লোভেনিয়ায় পড়তে যাবেন?

পাহাড়-নদী-হ্রদ বেষ্টিত স্লোভেনিয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার লোকের ঢল নামে এর অনাবিল সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য। এই দেশের আয়তন ৭,৮৮৭.৪ বর্গ মাইল এবং রাজধানী লুবলিয়ানা। এই শহর কার্যত স্লোভেনিয়ার সকল প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু- যদিও আয়তনের বিচারে শহরটি বেশ ছোট। এই দেশের মুদ্রার নাম ইউরো এবং ভাষা স্লোভিন- আর দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজী। এখানে সকলেই প্রায় ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। এ দেশের মোট জনসংখ্যা ২০,৮১,৯৪৫ জন। এই দেশের মোট জিডিপি ৫৪ বিলিয়ান মার্কিন ডলার আর কমপক্ষে গড়ে ৮৮৬ ইউরো এই দেশে বেতন দেওয়া হয়।

Study in Slovenia
Image Source: pixabay.com

সামগ্রিক বিচারে এই দেশ হতেই পারে আপনাদের পছন্দের ডেস্টিনেশন।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

স্লোভেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। তাই নিঃসন্দেহে এই দেশে পড়তে আসার জন্য মনস্থির করতে পারেন।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  • University of Ljubljana‎
  • University of Maribor‎
  • University of Nova Gorica‎
  • University of Novo Mesto‎
  • University of Primorska‎

এই দেশে আপনি সকল সাবজেক্টেই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। আর্টস, বিজনেস অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং যে কোন বিষয়েই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। এখানে কোর্সসমূহ স্লোভেনিয়া আর ইংরেজী ভাষায় অফার করা হয়। বিভিন্ন কোর্স বিভিন্ন ভাষায় হওয়ায় আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত কোর্স কোন ভাষায় অফার করা হয়েছে?

স্লোভেনিয়াতে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

স্লোভেনিয়ায় পড়াশুনার জন্য আপনার জন্য প্রয়োজন পড়বে ইংরেজী ভাষাগত যোগ্যতা। পড়তে যেতে আপনাকে অর্জন করতে হবে B2 গ্রেডের বা IELTS এ ৬.০ অর্জনের প্রমাণপত্র। আর স্বাভাবিকভাবে আপনাকে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে অর্জন করতে হবে HSC আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে আপনার থাকতে হবে ব্যাচেলর আর পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে আপনার থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রী।

ভর্তি আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

স্লোভেনিয়ায় Autumn সেশনে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। অক্টোবার মাস থেকে ক্লাস শুরু হয় এই সেশনের এবং ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্লিকেশন নেওয়া শুরু হয়- আর শেষ হয় জুন মাসে। অন্যদিকে Winter সেশনে কম সংখ্যক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নেওয়া হয়। এদেশে আবেদন করতে হয় একটি কমন ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে, যার লিংক নিচে দেওয়া হলঃ

https://portal.evs.gov.si/prijava/?locale=en

এরপর, এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে আর দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চয়েস লিস্ট। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে মেইল করে আপনাকে একটি ডকুমেন্ট দেওয়া হবে, এই ডকুমেন্ট নিজ হস্তে স্বাক্ষর করে অন্যান্য সত্যায়িত ডকুমেন্টসের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।

University in Slovenia
Image Source: Internet

নিচে প্রায়শঃ আবশ্য ডকুমেন্টসের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। যথাযথভাবে সত্যায়িত সকল একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। সহস্তে স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র

৩। IELTS এর সনদ

৪। CV,

৫। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

এরপর আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে Letter of Acceptance দেওয়া হবে। যদি এটিতে উল্লেখ থাকে, ভিসা আবেদনের পূর্বে আপনাকে টিউশন ফি দিতে হবে তাহলে আগে টিউশন ফি দিয়েই আপনাকে আবেদন করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে থাকে, তারা ভিসা প্রাপ্তির পর টিউশন দিতে বলে। তাই আপনার জন্য কোনটি হচ্ছে, সেটা Letter of Acceptance পড়ে ভালো করে বুঝে নিতে হবে।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

স্লোভেনিয়ার জন্য ডকুমেন্টস সত্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া।

(১) প্রথমে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার ডকুমেন্টস সত্যায়ন করিয়ে নিতে হবে।

(২) তারপর যেতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়নের জন্য।

(৩) এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়ন করতে হবে।

(৪) এবার এই ডকুমেন্টস অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশের এম্বেসী থেকে সত্যায়ন করাতে হবে- এজন্য ফি দিতে হবে প্রতি পেজ ১০ ইউরো। মনে রাখবেন, অরিজিনাল কাগজ ছাড়া তারা ডকুমেন্টস সত্যায়ন করে না। তাই অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত আপনার কোন বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনকে অথরাইজ করে দিতে হবে এবং তিনি আপনার অরিজিন্যাল ডকুমেন্টস দেখিয়ে সত্যায়িত করিয়ে আনবেন।

(৫) এরপর সত্যায়ন করাতে হবে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া থেকে। এখানে প্রতি পেজ সত্যায়ন করাতে ক্ষরচ হবে ৩ ইউরো। এরা কোন কুরিয়ার কপি গ্রহণ করে না। তাই আপনাকে আবার দ্বারস্থ হতে হবে প্রবাসী বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনের। আপনি চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়েরও সহযোগিতা নিতে পারেন। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই জন্য আপনার কাছ থেকে চার্জ নিবে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ এম্বেসী যদি ডকুমেন্টস সত্যায়ন না করে তাহলে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া এই ডকুমেন্টস সত্যায়ন করবে না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ও আপনার ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে না।
Students in Slovenia
Image Source: Internet

টিউশন ফি

স্লোভেনিয়ায় আপনাকে পড়াশুনার জন্য আপনাকে দিতে হবে ২,৫০০-৪০০০ ইউরো। আবার আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা হয়ে থাকে তাহলে টিউশন ফি হতে পারে ৮,০০০ ইউরো পর্যন্ত।

স্লোভেনিয়ায় আবাসন ব্যবস্থা

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে হোস্টেলের ব্যবস্থা। আবাসনের জন্য আগে থেকেই আবেদন করা বুদ্ধিমানের কাজ। স্লোভেনিয়ায় থাকা- খাওয়া বাবদ আপনার মাসিক খরচ হবে ৩০০-৩৫০ ইউরো।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

স্লোভেনিয়ায় ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে সেদেশে এক বছর চলার মত পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান দেখাতে হবে। সাধারণত এই দেশে একজনের জন্য বার্ষিক প্রায় ৬০০০-৭০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

বাংলাদেশে স্লোভেনিয়ার এম্বেসী না থাকায় আপনাকে যেতে হবে ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীতে। এজন্য আপনাকে আগে থেকেই নিতে হবে এপয়েন্টমেন্ট। ভিসা ফি দিতে হবে ৮০ ইউরো। এখানে আপনাকে টেম্পোরারী রেসিডেন্স পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

ই-মেইলের মাধ্যমেও আপনি স্লোভেনিয়ার দূতাবাসে ভিসার জন্য অ্যাপোয়েনমেন্ট পেতে পারেন। দিল্লিতে অবস্থিত স্লোভেনিয়ার দূতাবাসের ওয়েবসাইট (http://www.newdelhi.embassy.si)।

Students in Slovenia
Image Source: Internet

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Offer Letter

২। স্লোভেনিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো Observation Letter, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফর্মালিটি শেষ হবার পর পাঠানো হয়ে থাকে

৩। পাসপোর্ট [কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ ও ২ টি ফাকা পেজ থাকতে হবে]

৪। ফটোগ্রাফ (৪.৫ সেঃমিঃ x ৩.৫সেঃমিঃ) – দুইটি

৫। মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স ও পুলিশ ক্লিয়ারান্স সার্টিফিকেট [অনধিক ৩ মাসের পুরাতন]

৬। ফ্লাইট রিজার্ভেসনের ডকুমেন্টস

৭। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৮। জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট [ইংরেজীতে হতে হবে]

৯। IELTS এর সনদ

১০। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

১১। সকল সত্যায়িত ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

১২।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে বসতে হবে ইন্টারভ্যিউ-এ। আর ভিসা পেতে সময় লাগবে ৪-৬ সপ্তাহ।

ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীর ঠিকানাঃ

A – 5/4, Vasant Vihar, New Delhi 110 057, India

T: + 91 11/ 41662891

Visa section:

T: + 91 11/ 41662893 F: + 91 11 /41662895 E: [email protected]

পার্ট টাইম জব ও জীবন-যাপন ব্যয়

অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ডে যে রকম নিয়ম আছে যে স্টুডেন্ট অবস্থায় একজন ব্যক্তি এক সপ্তাহে বৈধভাবে বিশ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না, স্লোভেনিয়ার আইনে এ রকম সুনির্দিষ্ট করে এখনো কিছু উল্লেখ নেই। তাই এখানে চাইলে একজন শিক্ষার্থী ফুলটাইম কাজ করতে পারেন। MJob Service আর E-studentski Servis নামক দুইটি সংস্থা শিক্ষার্থীদের জব খোঁজার ব্যাপারে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

মাসিক খরচ নির্ভর করে আপনার জীবন যাপনের উপর। সাধারনত স্লোভেনিয়ায় আপনি ৩০০-৩৫০ ইউরো দিয়ে ১মাস চলতে পারবেন।

Life in Slovenia
Image Source: Internet

স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আপনি যদি ফুল টাইম কাজের অভিজ্ঞতা ও টানা ৫ বছর এই দেশে থাকেন তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন PR -এ আবেদন করার সুযোগ। আর যদি আপনি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, টানা ১০ বছর থাকতে হবে।

অর্থাৎ শিক্ষার্থী অবস্থায় পার্মানেন্ট রেসিডেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুই বছরকে এক বছর হিসেবে বিবেচনা হয়। উদাহরণস্বরূপ: কেউ যদি তিন বছরের ব্যাচেলর কোর্স সম্পন্ন করেন স্লোভেনিয়া থেকে, তাহলে এ তিন বছরকে অর্ধেক অর্থাৎ দেড় বছর এবং সেই সঙ্গে আরও সাড়ে তিন বছর ফুলটাইম কাজ করার অভিজ্ঞটা দেখাতে পারলেই তিনি স্লোভেনিয়ার পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তাহলে , শুরু স্লোভেনিয়া যাত্রার শুভ সূচনা।

Life in Slovenia
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

নিজেই করুণ নিজের আবেদনের আজকের পর্ব সাজানো হয়েছে বিশ্বের অন্যতম এক ধনী দেশকে নিয়ে, যে দেশ উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত এবং ১৯২১ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। আমার আশা অনেকেই বুঝতে পেরেছেন আজ  আমরা কথা বলবো আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা নিয়ে। তাহলে আর দেরী না করে শুরু করে দেই আজকের আলোচনা আর আপনারাও তৈরি হয়ে যান আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য – নিজেরাই করে ফেলুন নিজের আবেদন।

কেন আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ আয়ারল্যান্ড। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী এখন পাড়ি জমাচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে। আয়ারল্যান্ড দেশটির অফিসিয়াল নাম “রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড” আর অফিসিয়াল ভাষা আইরিশ ও ইংরেজী। এই দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী হল ডাবলিন। ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির উৎকর্ষে অবস্থিত এই দেশে মুদ্রা ইউরো। এই দেশ মূলত শীত প্রধান এবং এই দেশের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আয়ারল্যান্ডের আয়তন ৭০,২৭৩ বর্গকিঃমিঃ আর  লোকসংখ্যা ৪৭,৫৭,৯৭৬ জন। এই দেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ৬৯,০০০ মার্কিন ডলার। তবে আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, আয়ারল্যান্ড সেঞ্জেনভুক্ত দেশ নয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষার আশায় চলে আসছে আয়ারল্যান্ডে।

এই দেশের অন্যতম অফিসিয়াল ভাষা ইংরেজী হওয়ায় অনেক কোর্স রয়েছে ইংরেজী ভাষায়। এই দেশে ব্যাচেলর ডিগ্রি সাধারণত ৩ – ৪ বছরের হয়ে থাকে, মাস্টার্স ১.৫ – ২ বছর এবং ডক্টরেট ৩-৪ বছরের হয়ে থাকে। তাই আপনার জন্যও হতে পারে এই দেশ বিদ্যাশিক্ষার অন্যন্য স্থান।

Study in Ireland
Image Source: internet

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জনপ্রিয় কিছু কোর্স –

অ্যাকাউন্টিং, অ্যাগ্রিকালচার, অ্যানাটমি, অ্যাপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স, আর্কিটেকচার, ডিজাইন, আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, অডিও ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং, এভিয়েশন স্টাডিজ, ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স, বায়োমেডিকেল সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, সিরামিকস, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া, ডান্স, ড্রামা, ই-কর্মাস, ইকোনমিকস, একাউনট্যান্সি, এবরোজিনাল এন্ড ইনডিজিনাস স্টাডি, অলটারনেটিভ মেডিসিন, এনথ্রপলজি, অ্যাপায়েড ম্যাথমেটিকস, একুয়াকালচার, কেমিষ্ট্রি, এনভায়রোনমেন্টাল স্টাডিজ, বিজনেস এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করা যায়।

কয়েকটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

১. ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি (www.dcu.ie )
২. ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অ্যায়ারল্যান্ড (www.nuigalway.ie )
৩. ট্রিনিটি কলেজ, ডাবলিন (www.tcd.ie )
৪. ইউনিভার্সিটি কলেজ, ডাবলিন (www.ucd.ie )
৫. রকওয়েল কলেজ (www.rockwellcollege.ie )
৬. গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি (www.gcd.ie )
৭. অ্যাথোলেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (www.ait.ie )

Study in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

আয়ারল্যান্ডে বছরে দুইটি সেমিস্টার পড়ানো হয়। একটি ফল সেমিস্টার অপরটি স্প্রিং সেমিস্টার। ফল সেমিস্টার চলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আর স্প্রিং সেমিস্টার চলে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত।

ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যদি এই দেশে পড়তে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১২ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ এইচএসসি পাস হতে হবে। আর আপনাকে IELTS-এ ৫.৫ থেকে ৬.০ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ বা IBTতে ৭৯ থেকে ৮০ পয়েন্ট হতে হবে। অন্যদিকে, আপনি যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ, আপনাকে শেষ করতে হবে ব্যাচেলর ডিগ্রী। এবং আপনাকে IELTS-এ ৬.০ থেকে ৬.৫ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ থেকে ২৩৭ বা IBT-তে ৭৯ থেকে ৯৩ পয়েন্ট থাকতে হবে। আপনার GRE/GMAT প্রয়োজন হবে কি না সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন তার উপর।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সাধারণত ফল সেমিস্টারে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয় আয়ারল্যান্ডে। স্প্রিং সেমিস্টারে কোন কোন কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অল্প পরিমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। আবেদন করতে আপনাকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভর্তি শাখা’ বরাবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

ইউনিভার্সিটিতে আবেদনের জন্য ডকুমেন্টস চেকলিস্টঃ

১। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস ও মার্কশীট

২। পাসপোর্ট/জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি

৩।  অ্যাপ্লিকেশন ফরম

৪। আইইএলটিএস এর সার্টিফিকেট

৫। এপ্লিকেশন ফি পরিশোধের প্রমাণ কপি

University in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি বিভিন্ন রকমের। সাধারণত এই ফি ৪৫ থেকে ৯০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবেদন করার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন যাচাই বাছাই করে এবং যোগ্য শিক্ষার্থীদের আয়ারল্যান্ডে পড়াশুনা করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনকে যথার্থ মনে করলে তারা সরাসরি আপনাকে Offer Letter পাঠিয়ে দিতে দেরি করবে না।

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর ডিগ্রির ক্ষেত্রে বছরে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ১৫০ ইউরো এবং মাস্টার ডিগ্রির ক্ষেত্রে সাত হাজার ৪০০ থেকে ১৫ হাজার ৭২০ ইউরো টিউশন ফি লাগে। তবে কলেজে পড়াশোনা করতে প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ কম হয়। প্রতি মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ ইউরো দিয়েই অনায়াসে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ মেটাতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। আয়ারল্যান্ডে ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়। এই দেশে প্রায় ১০০ এর মত বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে।

নিচের লিঙ্কে স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেনঃ
http://www.educationinireland.com/en/How-Do-I-Apply-/Tuition-Costs-Scholarships/Scholarships/

আয়ারল্যান্ডে আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা। এই আবাসন ব্যবস্থা অনেক উন্নত। কিন্তু, বাইরের শেয়ারড এপার্টমেন্ট থেকে এই আবাসন ব্যবস্থা কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকে।  জীবনযাত্রার খরচ হিসাব করতে বসলে, আয়ারল্যান্ড অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির অনুরূপ- বেশ খানিকটা ব্যয়বহুল। তবে, আপনি যদি বড় শহরে বাস করেন, তবে আপনার খরচ বেশি হবে। অন্যদিকে,  আপনি ছোট শহরে বসবাস করেন তাহলে ব্যয় বেশ খানিকটা কমে যাবে। এই দেশে আপনাকে প্রতিমাসে জীবন ধারণের জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ ইউরো খরচ করতে হতে পারে। আর শিক্ষার্থীদের জন্য অন্য একটি ব্যয় হলে স্বাস্থ্যবীমা।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

আয়ারল্যান্ডে ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে প্রায় ১০,০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবে। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

Students in Ireland
Image Source: internet

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

আয়ারল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার ভর্তি নিশ্চিত হবার পর আপনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবেন একটি Offer Letter. এই Offer Letter পাবার পর আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। তাই আপনাকে যোগাযোগ করতে হবে দিল্লীস্থ আয়ারল্যান্ড এম্বেসীর সাথে।

দিল্লীস্থ আইরিশ এম্বেসীর ঠিকানা নিম্নে দেওয়া হলঃ

230 Jor Bagh, New Delhi-110003, India

For Visa: +91-11 462671

আপনি ফোন করে তাদের সাথে যাবতীয় সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়া আপনি অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন নিচের ওয়েব লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

https://www.dfa.ie/irish-embassy/india/contact-us/

এবং এই পিডিএফ ফাইলটা  ভিসার যাবতীয় তথ্যের জনঃ
http://www.vfsglobalirelandvisa.com/india/pdf/bangladesh_271115.pdf

ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য ও ডকুমেন্টসঃ 

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Pages/Study

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Student%20Finances.pdf/Files/Student%20Finances.pdf

নিচে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।  সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫।  No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট ইত্যাদি

Life in Ireland
Image Source: internet

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আয়ারল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন। আর আপনি সামারে সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন।  রেস্টুরেন্ট, দোকান, শপিং মলে কাজ করে ঘণ্টায় ৭ থেকে ১২ ইউরো পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।  আয়ারল্যান্ডে আপনি পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন কিন্তু এই পার্ট টাইম জব করে পুরো টিউশন ফি জোগাড় করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।

আর ৫ বছর আয়ারল্যান্ডে বৈধভাবে বসবাস করলে আপনি আবেদন করতে পারবেন PR এর জন্য।

আয়ারল্যান্ড ইউরোপের পশ্চিম উপকূলের অন্যতম সুন্দর দেশ। আপনি এই দেশে অনেক সুবিধা পাবেন। হয়ত আয়ারল্যান্ড আপনার জন্য উন্মোচন করবে সুন্দর ভবিষ্যতের অনেক সম্ভবনা। তাই আজই  করুন নিজের আবেদন নিজেই- আর সেরে নিন আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা।

Life in Ireland
Image Source: internet

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যাবার বিধান আছে। সেই বিচারে হাঙ্গেরী কি খুব দূর? আপনারা যারা বিদেশে পড়তে যেতে চান, তাদের জন্য আজ নতুন এক ডেস্টিনেশন নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ তুলে ধরব হাঙ্গেরীতে উচ্চ শিক্ষার যাবতীয় বিষয় আশয়। তাই, সিট বেল্ট বেঁধে ফেলুন- আমাদের ফ্লাইট এখনি ঊড়াল দেবে হাঙ্গেরীর উদ্দেশ্যে।

Study in Hungary
Image Source: pexels.com

কেন হাঙ্গেরী পড়তে যাবেন?

অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, ইউক্রেন, সার্বিয়া, রমানিয়া, স্লোভেনিয়া এই দেশগুলোর ঠিক মাঝে অবস্থিত দেশ হাঙ্গেরী। এই দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আর সেঞ্জেন চুক্তির আওতায় আছে। তাই, হাঙ্গেরীতে পাড়ি জমাতে পারলে আপনি বিনা বিপত্তিতে ঘুরে আসতে পারবেন ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে।

দানিয়ুব নদীর তীরে অবস্থিত বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরীর রাজধানী ও পৃথিবীর অন্যতম বাসযোগ্য ও উন্নত শহর। এই দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইংরেজী ও হাঙ্গেরী ভাষায়। এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রিসার্চের জন্য বিখ্যাত- শুধু তাই নয়, শিক্ষা কার্যক্রমে বাস্তবিকধর্মী করতে অনেক প্রশিক্ষণ ও ফ্যাক্টরী এটাচমেন্ট থাকে। এছাড়া হাঙ্গেরীতে পড়াশুনার খরচও ইউরোপের অন্যান্য দেশের থেকে কম।

এই দেশে প্রায় ৯৩,০৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনে বসবাস করে প্রায় ১ কোটি লোকের বসবাস। এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা হাঙ্গেরিয়ান এবং মুদ্রার নাম ফরিন্ট (HUF).

হাঙ্গেরীর কিছু বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হলঃ

১। Budapest University of Technology and Economics

২। Eötvös Loránd University Budapest

৩। University of Szeged

হাঙ্গেরীতে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

হাঙ্গেরীতে ব্যাচেলর পড়তে গেলে আপনাকে HSC অথবা ডিপ্লোমা পাশ করে আসতে হবে। অনেক কোর্সে ভর্তির জন্য আপনাকে এন্ট্রান্স এক্সাম দিতে হতে পারে। অথবা প্রিপেরোটরী কোর্সে ভর্তি হতে হবে। ব্যাচেলর কোর্স গুলোর অধিকাংশই হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় করানো হয়। তবে অল্প সংখ্যক ইংরেজী কোর্সও আছে। আর মাস্টার্সে ভর্তি হতে ব্যাচেলর আর পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্ত হতে প্রয়োজন পড়বে মাস্টার্স ডিগ্রীর।

হাঙ্গেরীতে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে IELTS স্কোর প্রয়োজন পরবে ৫.০ থেকে ৬.০ আর TOEFL স্কোর পড়বে ৬০ থেকে ৮০। মাস্টার্স আর পিএইচডি প্রোগ্রামে IELTS স্কোর প্রয়োজন পরবে ৫.৫ থেকে ৬.৫ আর TOEFL স্কোর প্রয়োজন পরবে ৭০ থেকে ৯০।

University in Hungary
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে যোগ্যতার তারতম্য হয়। তাই আবেদনের সময় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স অনুযায়ী যোগ্যতাগুলো ভালো করে খুঁটিয়ে দেখে নেবেন।

কোর্স সার্চ ও কোর্স নির্বাচন

হাঙ্গেরীতে অনেক কোর্স ও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই, আপনাকে নিজের পছন্দের কোর্স খুঁজে পেতে আশা করি খুব একটা কষ্ট হবে না। হাঙ্গেরীতে কোর্স খুঁজতে নিচের লিঙ্কটিতে ঘরে দেখতে পারেনঃ

http://studyinhungary.hu/study-in-hungary/menu/find-a-study-programme/study-finder.html

এই দেশে সাধারণত বছরে ২ টি সেশনে আবেদন কয়ার সুযোগ আছে। প্রথমটি হল ১ এপ্রিল থেকে ১ জুলাই এবং দ্বিতীয়টি হল ১ অক্টোবর থেকে ১ ডিসেম্বর। তবে কোর্সের সময় অনেক সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তাই আবেদনের সময় জানতে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ঘুরে আসুন।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনার আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন তা নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। তাই আপনার উচিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট ঘেটে সব কিছু জেনে নেওয়া। সাধাণত নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস আপনার আবেদনের সময় চাওয়া হয়ঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। আইইএলটিএস (ন্যূনতম ৬.০) / জার্মান B2 সনদ

৪। এন আই ডি/পাসপোর্ট কপি

৫। মোটিভেশন লেটার/ সিভি/ রেফারেন্স লেটার

৬। কাজের অভিজ্ঞতা/ রিসার্স পেপার (যদি প্রয়োজন হয়)

 

অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তাই এই ব্যাপারে অবশ্যই ভালো করে খোঁজ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেবিদ্যালয়ের Admission Office-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে। অন লাইন পরীক্ষা নেবার পর বিশ্ববিদ্যালয় আপনার ফলাফল জানাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে কন্ডিশনাল অফার লেটার দিতে পারে। সেক্ষেত্রে শর্ত পূরণ ও নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টসে টিউশন ফি প্রদান করলেই অফার লেটার দিয়ে থাকে।

Students in Hungary
Image Source: Internet

টিউশন ফি

হাঙ্গেরীতে পড়াশুনা করতে প্রতি বছর ২৫০০ ইউরো থেকে ১০,০০০ ইউরো প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আসলে কত অর্থের প্রয়োজন হবে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেই জেনে নিতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

হাঙ্গেরীর এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। তাই আপনাকে যেতে হবে ইন্ডিয়ার নয়া দিল্লীতে। ভিসার জন্য আবেদন করতে আপনাকে প্রদান করতে হবে ৫০ ইউরো আর সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ।

আপনার ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট (কমপক্ষে ১ বছর ভ্যালিডিটি থাকতে হবে) সাথে ফটোগ্রাফ

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। ভিসা আবেদন ফর্ম

৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার

৫। স্বাস্থ্য বীমার যাবতীয় ডকুমেন্টস

 

দিল্লী এম্বেসীর ওয়েব ঠিকানাঃ

https://delhi.mfa.gov.hu/eng

Life in Hungary
Image Source: pexels.com

আবাসন ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রার ব্যয়

হাঙ্গেরীতে আবাসন খাতে আপনাকে জায়গা ও শহর ভেদে ১৯০ থেকে ২৩০ ইউরো খরচ হবে। আপনি চাইলে এই শহরে ৫৫০ থেকে ৮৫০ ইউরোর মধ্যে যাবতীয় ব্যয় বির্বাহ করতে পারবেন।

পার্ট টাইম জব

হাঙ্গেরীতে বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আপনি যদি হাঙ্গেরী ভাষা জানেন তাহলে পার্ট টাইম কাজ পেতে সুবিধা হবে।

পড়ালেখা শেষে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ

হাঙ্গেরীতে আপনি খুব সহজেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। আপনি যদি আইনসিদ্ধ ভাবে হাঙ্গেরীতে ৩ বছর থাকেন তাহলে আপনি National Permanent Residence Permit (NPRP) বা (Állandó tartózkodási kártya) পেয়ে যাবেন। শুধু তাই নয়, যদি হাঙ্গেরীর নাগরিকত্ব পেয়ে যান তাহলে সেই ডকুমেন্টস দিয়ে আপনি ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি গিয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় বসবাস করার সুযোগ পাবেন।

Life in Hungary
Image Source: Internet

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

বিশ্ব এখন আপনার হাতের মুঠোয়। আপনি চাইলে ইন্টারনেটের এক ক্লিকে দেখছেন আপনার বিদেশী বন্ধুদের বা আত্মীয় স্বজনদের। শুধু কি তাই, আপনি চাইলেই পাড়ি জমাতে পারেন বিশ্বের যেকোন দেশে। আর যাদের ইচ্ছা বাইরের দেশের ডিগ্রী তাদের জন্য বিশ্ব আজ উন্মুক্ত। যে কোন দেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপ অনেকের প্রিয় ডেস্টিনেশন। আর ইউরোপের মনোরম দেশ আস্ট্রিয়া, সে তো অনেকেরই স্বপ্নের স্থান। এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরবো আস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষা লাভের কিছু কার্যকরী গাইডলাইন।

অস্ট্রিয়া দেশ হিসেবে যেমন

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আস্ট্রিয়া। ভিয়েনা রাজধানী আর ইউরো মুদ্রা বিশিষ্ট আস্ট্রিয়ার ভাষা জার্মান/ডয়েচ। ৪৭৮ বিলিয়ন ডলার (২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী) জিডিপি-এর এই দেশে প্রায় ৮৯ লক্ষ জনগণ বসবাস করে এবং আস্ট্রিয়ার আয়তন ৮৩,৮৭৯ বর্গ কিলোমিটার। আর্থিক মাথাপিছু আয়ের হিসেব অনুযায়ী অস্ট্রিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি। দেশটির অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মানের দিক থেকেও অনেক উন্নত। শীতকালে এই দেশের তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি থেকে নীচে নেমে যায় (সেলসিয়াস স্কেল) আর গরম কালে তাপমাত্রা২০-২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে।

Hallstatt, Austria
Image Source: pixabay.com

যোগ্যতা যাচাই ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই

অস্ট্রিয়ায় ব্যাচেলর কোর্স সাধারণত জার্মান/ডয়েচ ভাষায় করতে হয়। ব্যাচেলর কোর্স এর জন্য জার্মান/ডয়েচ B2 লেভেল সম্পন্ন করতে হবে। ল্যাংগুয়েজ কোর্স আপনি বাংলাদেশেও করতে পারেন অথবা অস্ট্রিয়াতে ও করতে পারেন।  বাংলাদেশে সম্পন্ন না করলে প্রথম একবছর অস্ট্রিয়াতে জার্মান ভাষা পড়ার পরে ব্যাচেলর কোর্স করতে হবে।

অস্ট্রিয়ার প্রধান পড়াশুনার ভাষা জার্মান হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজী ভাষায় কোর্সও রয়েছে। আপনি যদি ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যেতে চান তাহলে HSC + ১ বছর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে। সেই সাথে ন্যূনতম ৫০% মার্ক্স অর্জন করতে হবে। যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে চান, তাহলে ব্যাচেলর ডিগ্রী আর পিএইচডি প্রোগ্রামে যেতে মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে।

অস্ট্রিয়ায় মোট ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ২১টি এপ্লাইড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

  1. University of Vienna | http://www.univie.ac.at
  2. Vienna University of Technology | http://www.tuwien.ac.at
  3. Medical University of Vienna | http://www.mediuniwien.ac.at
  4. University of Graz | http://www.uni-graz.at
  5. Graz University of Technology | http://www.tugraz.at
  6. University of Innsbruck | http://www.uibk.ac.at
  7. Vienna University of Economics and Business | http://www.wu.ac.at/

ইউরোপের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। ১২০টির বেশি ডিগ্রি প্রোগ্রাম পড়ার সুযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২২টি ব্যাচেলর প্রোগ্রাম, ২৯টি মাস্টার্স প্রোগ্রাম, ৪৯টি ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম এবং ২৪টি টিচার অ্যাক্রিডিয়েশন প্রোগ্রাম ছাড়াও ৮০টি ক্ষেত্রে ডক্টরাল প্রোগ্রাম পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।

 

কোর্স খুঁজতে নিম্মোক্ত ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন-

http://www.studienwahl.at/Content.Node/homepage.en.php

TU Wien, Austria
Image Source: Internet

ভাষাগত যোগ্যতা

অস্ট্রিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারনত জার্মান ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়। যদি আপনি জার্মান ভাষায় পড়াশুনা করতে চান, তাহলে আপনাকে জার্মান ভাষার B2 পরীক্ষায় পাশ করে আসতে হবে। আর আপনি চাইলে আস্ট্রিয়া গিয়েও এই কোর্স করতে পারবেন। সরকারী ইউনিভার্সিটিগুলোতে জার্মান ভাষা শিখতে প্রতি সেমিস্টার ৪৫০-৫০০ ইউরো এর মত লাগবে। তবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সেটা অনেক বেশি ( ১৫০০-২৫০০ ) ইউরো এর মত লাগবে।

 

ইউনিভার্সিটিতে ভ র্তির জন্য IELTS অত্যাবশ্যকীয় নয়, তবে ভিসা আবেদনের পূর্বে অবশ্যই IELTS স্কোর ৫.৫ থাকতে হবে। মাস্টার্স কোর্স ইংরাজি ও জার্মান ভাষাতে আছে। ইংরাজিতে পড়াশোনার জন্য IELTS ৬/৬.৫ থাকতে হবে।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

সকল একাডেমিক কাগজপত্র সত্যায়িত করতে হবে যথাক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অস্ট্রিয়ার এম্বেসী দ্বারা। মন্ত্রণালয় থেকে কাগজপত্র সত্যায়ত করার পর আপনি যখন এগুলো এম্বেসীতে জমা করবেন, এম্বেসী কনস্যুলেট সেগুলোকে VFS ঢাকা অফিসে পাঠাবে এবং এর ফি বাবদ ৪৩,১২০ টাকা থেকে ৪৭,০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। এরপর সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করার পর VFS সেটা পুনঃরায় এম্বেসীতে পাঠাবে এবং তারপর এম্বেসী কনস্যুলেট তা সত্যায়িত করবে।

অস্ট্রিয়ান কনস্যুলেটর, ঢাকা, বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট ও ঠিকানা :

Austrian Honorary Consulate in Dhaka, Bangladesh –

Safura Tower, 5th Floor, 20 Kemal Ataturk Avenue,
Dhaka – 1213, Bangladesh
Phone (Local): (02) 986.1707, Internation: +880.2.986.1707
Email: [email protected]

ভিএফএস ঢাকা এর ঠিকানা –

Austria Visa Application Centre

4th Floor, Delta Life Tower, Plot 37, Road 90,
Gulshan North, Dhaka-1212, Bangladesh.

Submission schedule: 14:00 to 16:30 (Sunday -Thursday).
Passport retrieval schedule: 15:00 to 16:00(Sunday – Thursday).
Information: Sunday to Thursday 14:00 to 15:00 hours

ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া

অস্ট্রিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাধারণত দুই সেমিস্টার থাকে। প্রথমটি ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে আর পরেরটি মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকে। অস্ট্রিয়ার ভর্তি, অফার লেটার, ডকুমেন্ট এটাসটেশন, ভিসা- পুরো প্রসেস অনেক সময় সাপেক্ষ (৬ থেকে ১২ মাস)। তাই আগে ভাগেই কাজ শুরু করতে হবে।

ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের তালিকা নীচে দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। আইইএলটিএস (ন্যূনতম ৬.০) / জার্মান B2 সনদ

৪। এন আই ডি/পাসপোর্ট কপি

৫। মোটিভেশন লেটার/ সিভি/ রেফারেন্স লেটার

৬। কাজের অভিজ্ঞতা/ রিসার্স পেপার (যদি প্রয়োজন হয়)

Students in Austria
Image Source: Internet

বিনা বেতনে বা স্বল্প খরচে পড়ার সুযোগ

ইউরোপের যেসব দেশে স্বল্প খরচে পড়াশোনা করা যায় তার মধ্যে অস্ট্রিয়া অন্যতম। অস্ট্রিয়ার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার টিউশন ফি দিতে হয় না, তবে সেমিস্টার ফি ১৯ ইউরো দিতে হবে। তবে ভর্তির সময় রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ কিছু টাকা দিতে হবে। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু কোর্সের ক্ষেত্রে টিউশন ফি দিতে হয়, তবে তা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আবেদন করার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় – এর সাথে মেইল করে এর এডমিশন ও টিউশন ফি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়াই ভালো।

আর্থিক সচ্ছলতার প্রমান/ব্যাংক সলভেন্সি সনদ

ব্যাংক সলভেন্সির জন্য আপনার একাউন্টসে ৫৮৯৭.১৬ ইউরো (শিক্ষার্থী যদি ২৪ বছরের নীচে হয়) অথবা ১০৬৭৮.০৮ (শিক্ষার্থী যদি ২৪ বছরের বেশি হয়) ইউরো। আপনার স্পন্সর মা-বাবা-স্ত্রী থেকে যেকোন আত্মীয় হতে পারে। তবে মনে রাখবেন টাকার উৎস, ট্যাক্সের ডকুমেন্ট সকল কিছু ভিসার জন্য জমা দিতে হবে। স্পন্সর যদি আস্ট্রিয়ায় বসবাস করে তবে আরো ভালো। ভিসা পাওয়ার পর আপনি চাইলে এই টাকা তুলে ফেলতে পারবেন।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে এম্বেসী না থাকা ভিসার জন্য আপনাকে ইন্ডিয়াতে যেতে হবে। এজন্য প্রথমেই আপনাকে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। যে সকল কাগজপত্র জমা দিবেন তার মূল কপির সাথে ২ সেট ফটোকপিও নিয়ে যাবেন।

ডকুমেন্ট চেকলিস্টঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম ও সাথে সংযুক্ত পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩৫ মিমি x ৪৫ মিমি)

২। এপয়েন্টমেন্ট লেটার আর এপন্টমেন্ট নিতে ভিজিট করুনঃ

https://appointment.bmeia.gv.at/?Office=new-delhi
৩। পাসপোর্ট

৪।ইউনিভার্সিটি অফার লেটার

৫। সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত/ মোটিভিশন লেটার

৬। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৭। আইইএলটিএস বা জার্মান ভাষাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট

৮। টিউশন ফি পেমেন্ট-এর কপি

৯। ট্রাভেল হেলথ ইনস্যুরেন্স

১০। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কনসুলেট অফিস কর্তৃক সত্যায়িত)

১১। একোমোডেশ ন কনফার্মেশন লেটার

১২। বার্থ সার্টিফিকেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং কনসুলেট অফিস কর্তৃক সত্যায়িত)

১৩। জব এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট (মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য)

১৪। স্পন্সের এফিডেভিড পেপার

১৫। স্পন্সর যদি ব্যবসায়ী হয়, তাহলে

  • ৬-মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • ট্রেড লাইসেন্স
  • আপডেটেড TIN ও ট্যাক্স রিটার্ন পেপার

স্পন্সর চাকুরিজীবি হলে প্রয়োজন হবে

  • আই,ডি ও স্যালারী উল্লেখপূর্বক জব সার্টিফিকেট
  • জব আই,ডি কার্দের কপি
  • ৬-মাসের স্যালারী স্টেটমেন্ট

১৬। স্পন্সরের একাউন্ট থেকে এপ্লিকেন্টের একাউন্টে টাকা পাঠানোর পেমেন্ট প্রুফ

১৭। এপ্লিক্যান্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

Visa Application - Austria
Image Source: Internet

অস্ট্রিয়ান এম্বাসি নিউ দিল্লি এর ঠিকানাঃ

Austrian Embassy New Delhi

EP-13, Chandragupta Marg Chanakyapuri New Delhi 110 021 India

T: (+91/11) 2419 2700
F: (+91/11) 2688 6929
e-mail: new-delhi-ob(at)bmeia.gv.at

Opening hours: Mo – Th 08:30 – 17:00, Fr 09:00 – 15:00

জীবন যাত্রার ব্যয় এবং পার্ট টাইম জব

অস্ট্রিয়ায় থাকা খাওয়া বাবদ আপনার ৪০০ থেকে ৫০০ ইউরো প্রতি মাসে খরচ হবে।

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত আপনি এই দেশেও ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম চাকুরি করতে পারবেন। তবে সামারে ফুল টাইম জব করার সুযোগ রয়েছে। এখানে বিভিন্ন রেস্তোরা, শপিংমল, হোটেলে কাজ করতে পারবেন।  তবে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রিয়া যাওয়ার  সময় সাথে ৬-৮ মাসের খরচ নিয়ে যাওয়াই উত্তম। এছাড়া জার্মান ভাষা জানা থাকলে জব পাওয়ার সম্ভবনা একটু বেশি থাকে।

স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

স্থায়ীভাবে বাস করতে চাইলে নূন্যতম পাঁচ বছর বৈধভাবে একটানা বাস করার প্রমাণপত্র দেখিয়ে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির (পিআর) জন্য আবেদন করতে হবে।আর পড়াশুনা শেষে এক বছরের জব সার্চ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

Life in Austria
Image Source: pixabay.com

সুতরাং আস্ট্রিয়ায় পড়তে যেতে চাইলে আপনি এখন নিজেই করতে পারবেন নিজের আবেদন।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

প্যারিসের ঘুরতে, দেখতে যাবার অথবা আইফেল টাওয়ারের সামনে বসে কফিতে চুমুক দেবার স্বপ্ন দেখেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া আসলেই মুসকিল। হ্যাঁ, আজ কথা বলছি ফ্রান্সের। পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস আর মুদ্রা ফ্র্যাঙ্ক, তবে এ দেশে ইউরো প্রচলিত। আর্ট, শিল্প সাহিত্যের আঁতুড় ঘর ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আপনি সাহিত্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ নানা বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন। আর সেই পথ বাৎলে দিতে আমাদের আজকের আয়োজন। তাই, দেরী না করে এক বসায় পড়ে ফেলুন আজকের পর্ব।

Study in France
Image Source: eurocentres.com

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার মাধ্যম

ফ্রানের আন্তর্জানিক মানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে আপনি লিটারেচার, হিস্ট্রি, ল’, স্যোশাল সাইন্স, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, ফিজিক্স, ম্যাথেমাটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্যুরিজম, ডিজাইন ক্রাফট, থিয়েটার ও ফিল্ম, ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক, স্কাপচার, ড্রয়িং, পেইন্টিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, ব্যালেট ড্যান্স সহ নানাবিধ বিষয়ে অর্জন করতে পারবেন জ্ঞান।

বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানোর মাধ্যম ফ্রেঞ্চ। তাই, এদেশে পড়তে চাইলে আপনাকে অব্যশই জানতে হবে ফেঞ্চ ভাষা। তবে, শুধু ফেঞ্চ নয়, অল্প পরিসরে হলেও ইংরেজীতেও এদেশে কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। তাই আবেদনের সময় খেয়াল করবেন কোন ভাষায় পাঠদান করা হয়ে থাকে।

নিচে ফ্রান্সের কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হল। গুগল সার্চেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাড়ি নক্ষত্র জানতে পারবেন।

  • Université Paris 6 Pierre and Marie Curie
  • Université Paris Sud (Paris XI)
  • École Normale Supérieure Paris
  • Université Claude Bernard Lyon 1
  • Université de Bordeaux
  • Université Denis Diderot Paris 7
  • Université de Strasbourg

ফ্রান্সে অধ্যয়নের যোগ্যতা

আপনি ফ্রান্সে ব্যাচেলর, মাস্টার্স অথবা পিএইচডি- যে কোন প্রোগ্রামের জন্য পাড়ি জমাতে পারবেন। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই এইচ,এস,সি আর মাস্টার্সের জন্য ব্যাচেলর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই আপনার মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে।

আপনার কোর্স যদি ফ্রেঞ্চ ভাষায় হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতার প্রমাণপত্র দিতে হবে। আর এজন্য আপনার যোগাযোগ করতে হবে Alliance Francaise আর করে ফেলতে হবে ফ্রেঞ্চ ভাষার উপর কোর্স। আপনাদের সহায়তার জন্য Alliance Francaise de Dhaka এর লিঙ্কটি হলঃ (https://www.afdhaka.org/)।

ইংরেজী ভাষার কোর্সের জন্য আপনাকে IELTS/ TOEFL পরীক্ষার সনদ দিতে হবে। ব্যাচেলরে আবদনের জন্য ন্যূনতম ৫.৫ চাওয়া হলেও ৬.০ থাকলে আপনার আবেদন গৃহীত হবার সম্ভবনা থাকে। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে ৬.০ প্রয়োজন পড়বে আর ৬.৫ থাকলে আপনার ভিসা ও অন্যান্য সুবিধা পেতে সুবিধা হবে। আর TOEFL দিয়ে আবেদন করতে আপনাকে ব্যাচেলরে আবেদনের জন্য ৫৫০ আর মাস্টার্সের জন্য ৬০০ স্কোর অর্জন করতে হবে। তবে আপনার স্কোর বেশি থাকলে ভিসা আবেদনে আপনি এগিয়ে থাকবেন।

এখানে একটা কথা না বললেই নয়, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনার ইংরেজী পারদর্শিতা যাচাই করার জন্য অনলাইন টেস্ট বা স্কাইপিতে ইন্টারভিয় নিয়ে থাকে।

University in France
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। এখানে বছরে তিনটি সেমিস্টার পড়ানো হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহঃ

১। আবেদন পত্র

২। সকল মূল সনদ ও মার্কশীট এর কপি

৩। জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা সনদ ও পাসপোর্ট- এর কপি

৪। IELTS/ TOEFL / French Language সনদ

৫। মোটিভেশন লেটার/ রেফারেন্স লেটার/ সিভি [প্রযোজ্য ক্ষেত্রে]

এই সকল ডকুমেন্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই, আবেদনের পূর্বে অবশ্যই সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে নিতে ভুলবেন না।

টিউশন ফি

২০১৯ সালের তথ্য ও উপাত্ত অনুযায়ী, ফ্রান্সের লাইসেন্সড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর কোর্সে পড়তে আনুমানিক ২৭৭০ ইউরো/ প্রতি বছর আবার, মাস্টার্স কোর্সে পড়তে প্রয়োজন পড়বে ৩৭৭০ ইউরো / প্রতি বছর। ডক্টোরাল কোর্সের জন্য লাগবে ৩৮০ ইউরো/ প্রতি বছর। তবে এই হিসাব নিকাষ বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।

স্কলারশিপ বৃত্তান্তঃ

ফ্রান্সে সরকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। এসব স্কলারশিপে আংশিক বা পুরো টিউশন ফি মওকুফ হতে পারে। কিছু কিছু স্কলারশিপে মাসিক ভাতাও প্রদান করা হয়ে থাকে।

এসব স্কলারশিপ খুঁজতে আবেদন করতে হবে নিচের লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

http://www.diplomatie.gouv.fr/en/coming-to-france/studying-in-france/finance-your-studies-scholarships/

Image Source: Internet

ব্যাংক সলভেন্সি

ফ্রান্সে ভিসার ক্ষেত্রে ব্যাংকে আপনাকে ১০ থেকে ১৫ হাজার ইউরো দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি আপনাকে ব্যাংক স্পন্সরশিপ বহন করবেন, সে যদি প্রথম রক্তের সম্পর্কের অভিভাবক হন, তাহলে ভিসার ক্ষেত্রে আপনি সুবিধা পাবেন। এছাড়া অন্য যে কোন অভিভাবক আপনাকে স্পন্সর করতে পারবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক কাগজপত্র ও প্রমাণাদি এম্বাসীতে জমা করতে হবে। আপনি চাইলে নিজের নামেও ব্যাংকে টাকা দেখাতে পারেন। ভিসা পাবার পর আপনি চাইলে এই টাকা যেকোন সময় তুলে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ফ্রান্সে প্রবেশকালে ইমিগ্রেশনে আপনাকে ব্যাংক সলভেন্সি পেপার দেখানোর জন্য অনুরোধ করতে পারে। সুতরাং, যাত্রার সময় সলভেন্সি পেপার আপনার সাথেই রাখবেন।

ভিসা আবেদন পর্ব

ভিসার জন্য প্রথমে এম্বাসীতে ই-মেইল করে এপন্টমেন্ট নিতে হবে। সকল কাগজপত্র সহকারে এম্বাসীতে উপস্থিত হলে ওই দিনই দ্বিতীয়বারের জন্য আরেকটি এপন্টমেন্ট দেওয়া হবে। ভিসার সকল কাগজপত্র জমা দেবার পর আপনাকে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ভিসা পাবার জন্য।

Visa Application France
Image Source: Internet

সাধারণত যে সকল কাগজপত্র ভিসার জন্য জমা করতে হবে তা নিচে দেওয়া হল। তবে এম্বেসীতে যোগাযোগ করে আপনাকে অবশ্যই চেকলিস্টটা আরেক বার দেখে নিতে হবে, কারণ এম্বেসী অনেক সময় তাদের চেকলিস্ট পরিবর্তন করে থাকে।

১। পাসপোর্ট (অবশ্যই ৬ মাসের অধিক মেয়াদ থাকতে হবে)

২। অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ও পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি

( অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ডাউনলোড করুন এখান থেকেঃ https://bd.ambafrance.org/Download-the-application-form-for  )

৩। ফ্লাইট বুকিং টিকেট (এটা করতে কোন টাকা লাগে না, শুধু বুকিং দিবেন)

৪। ভিসা অ্যাপ্লিকেশান ফি বা স্কলারশিপ লেটার (যদি পেয়ে থাকেন)

(স্কলারশিপ প্রাপ্তদের ফি লাগে না)

৫। হেলথ ইস্যুরেন্স (যতদিন এর কোর্স ততদিনের করতে হবে)

৬। জন্ম নিবন্ধন

৭। সিভি/রিজিউমি

৮। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস

৯। ইউনিভার্সিটির অফার লেটার

১০। ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সল্ভেন্সি (যিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন তার অর্থাৎ স্পন্সরের)

১১। হাউজিং সার্টিফিকেট/ ডকুমেন্ট (যদি ফ্রান্সে কোন আত্মীয়ের বাসাকে হাউজিং এর জন্য দেন তাহলে ঐ শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত উনার/উনাদের বাসার সকল কন্ট্রাক্ট পেপার দেখাতে হবে)

১২। স্পন্সরের জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট কপি, যা দ্বারা আপনার সাথে উনার সম্পর্ক কি টিউশন ফি পরিশোধের কপি/প্রমাণ

১৩। IELTS/ TOEFL/ফ্রেঞ্চ ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (Alliance Française Certificates)

১৪। ট্রেনিং সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

১৫। কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

আবাসন ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ফ্রান্সে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হোস্টেল রয়েছে। আপনি চাইলে পেইং গেস্ট অথবা শেয়ারিং এপার্টমেন্ট থাকতে পারবেন। এদেশে থাকা খাওয়ার জন্য আপনাকে মাসে খরচ করতে হবে ৪০০-৬০০ ইউরো। তবে এই খরচ পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করে। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স বাবদ আপনার খরচ করতে হবে ৪২ ইউরো/ প্রতি জন/ প্রতি মাস।

Life in France
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব

ফ্রান্সে বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ফ্রেঞ্চ সরকার বিদেশী নাগরিকদের বছরে ৯৬৪ ঘন্টা কাজ করার অনুমতি প্রদান করে।

ফ্রান্সে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

পড়াশুনা শেষ করার পর আপনি ফান্সে ১ বছর জব খোঁজার জন্য সময় পাবেন। আর আপনি যদি হয়ে থাকেন তরুণ গবেষক, কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বা ইনোভেটিভ ইকোনমিক প্রোজেক্টের ডিজাইনার, ফ্রেঞ্চ টেক প্রোগ্রামের অংশ গ্রহণকারী, আর্টিস্ট, উচ্চ পর্যায়ের অ্যাথলেট তাহলে আপনার জন্য ইস্যু করা হবে Plurennial Residence Card (“Passeport Talent”) – এই কার্ডটির আওতায় আপনি ও আপনার পরিবারকে ৪ বছরের ভিসা দেওয়া হবে, আর এই সময়ে আপনি চাকুরী করতে পারবেন।

ফান্সে একটানা ৫ বছর বৈধভাবে থাকার পর শর্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্যে আবেদন করতে পারবেন। সব শর্ত রক্ষিত হলে পেয়ে যাবেন ফ্রান্সের নাগরিকত্ব।

Life in France
Image Source: Internet

ফ্রান্স একাধারে আধুনিক কিন্তু সম্ভ্রান্ত ও প্রাচীন। ফ্রান্স ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী বা সাহিত্যিকদের জন্য যেন কাঙ্ক্ষিত ও আরাধ্য স্থান। তাই, বসবাস ও পড়াশুনার জন্য ফ্রান্স এত বেশি লোভনীয়।

তথ্যসুত্র

November 21, 2022

ডেনমার্ক বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে এক আকর্ষণীয় বিদ্যালাভের পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত। এ দেশের রাজধানি কোপেনহেগেন আর মুদ্রা হল ডেনিস ক্রোনা এবং ভাষা ডেনিস।

অতি সুন্দর মনোমুগ্ধকর এই দেশে আপনিও যদি পড়তে যেতে চান তাহলে এখনি পড়ে ফেলুন গোটা লেখাটা, কারণ এটা আপনার জন্যই লেখা।

কেন ডেনমার্কে পড়তে যাবেন?

উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক মানুষই দুঃশ্চিন্তায় ভোগেন আর বুঝে উঠতেই পারেন না- কোন দেশ হবে তাদের গন্তব্য? অধিকাংশ মানুষই মনে করেন আমেরিকা, কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়া হবে তাদের জন্য বিদ্যার্জনের গন্তব্য। কিন্তু, এই দেশগুলোতে ভালো CGPA, IELTS, GRE/ GMAT থাকা সত্ত্বেও আপনি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন না- আপনি এদেশে ভিসা পেয়ে পড়তে যেতে পারবেন। বরং ইউরোপের এই দেশে আপনার ভালো CGPA ও IELTS স্কোর থাকলেই পেয়ে যাবেন আপনার ডেনমার্কে পড়ার টিকিট। তাই বলে এটা ভাবার কারণ নেই যে, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভালো নয় বা এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking-এর মধ্যে নেই। বরং এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উন্নতদেশের চেয়ে ভালো।

Higher Study in Denmark
Image Source: Internet

আপনাদের জন্য World Ranking-এ কিছু ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  1. University of Copenhagen
  2. Roskilde University
  3. University of Southern Denmark
  4. IT University of Copenhagen
  5. Copenhagen Business School
  6. Copenhagen Business Academy
  7. VIA International College
  8. University College Zealand
  9. Aarhus University
  10. Technical University of Denmark
  11. Aalborg University
  12. Copenhagen University
  13. Odense University
  14. Danish University of Education
  15. Royal Academy of Music

ডেনমার্কে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ডেনিশ কিংবা ইংরেজী ভাষায় পড়াশুনা করতে পারবেন। ডেনিশ ভাষায় পড়তে গেলে অবশ্যই আপনাকে “Denisake Foreign Language” বা “Denish Test 2” পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হতে হবে। আর যদি ইংরেজী ভাষায় পড়তে চান, তাহলে IELTS স্কোর 5.5 – 6.5 থাকতে হবে, একাডেমিক পরীক্ষায় অবশ্যই ৫০% মার্ক থাকতে হবে। যদি আপনি ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জনের জন্য যান, তাহলে HSC + ১ বছর বাংলাদেশে পড়াশুনা করতে হবে। আবার মাস্টার্সে আবেদনের জন্য ৪ বছরের ব্যাচেলর এবং পিএইচডি পড়তে যেতে আপনাকে ২ বছরের মাস্টার্স থাকতে হবে।

কোর্স সার্চ ও কোর্স নির্বাচন

কোর্স সার্চের জন্য আপনি বিভিন্ন ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখতে পারেন অথবা, ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট আছে ( https://www.optagelse.dk), সেখানে গিয়েও দেখতে পারেন। কোর্স বাছাই-এর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ইন্টারেস্ট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মাথায় রেখে কাজ করবেন। মনে রাখবেন, ডেনিশ ও বাংলাদেশের চাকুরীর বাজার ভিন্ন। তাই ডেনমার্কে থাকবেন নাকি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এইসব ভালো করে চিন্তা করেই আপনি আপনার কোর্স নির্বাচন করবেন।

ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি পিএইচডি সহ ৬শয়েরও বেশি বিষয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে ডেনমার্কে। বিষয়গুলোর মধ্যে আছে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস এন্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, এস্ট্রোনমি, অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি, ডিজিটাল মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং, এপ্লায়েড ম্যাথমেটিকস, আইসিটি ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিস, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিকস, একাউন্টিং এন্ড ফিন্যান্স, ফ্যাশন এন্ড টেক্সটাইলস ডিজাইন, ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ ইত্যাদি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা

ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত সাবজেক্ট ও ইন্সটিটিউটভেদে আবেদনের সময়সীমা পরিবর্তিত হয়। কিন্তু, সাধারণত EEU এর বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনের শেষ সীমা ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত হয়ে থাকে আর সব ধরণের ফরমালিটি শেষে ক্লাশ শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাস থেকে। কিন্তু, অবশ্যই ওয়েবসাইট ঘেটে আবেদনের সীমা ও এবং ক্লাশ শুরু হবার তারিখ ভাল করে দেখে নেবেন।

Study in Denmark - Aalborg University
Image Source: Internet

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ডেনমার্কে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে- যার লিঙ্কটি হলঃ

https://www.optagelse.dk/

এই লিঙ্কে গিয়ে আপনাকে আবেদন করতে হবে। এছাড়া অন্য কোন উপায়ে আবেদন করা যায় না।

 

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। IELTS এর সনদ

৩। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। CV

৫। পাসপোর্টের কপি

অফার লেটার (Offer Letter) /এডমিশন লেটার(Admission Letter)

যদি ডেনমার্কের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার এডমিশন হয়, তাহলে আপনাকে একটি কনডিশনাল এডমিশন লেটার দেওয়া হবে। এর পর আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টসে টিউশন ফি জমা করতে হবে। তাহলেই আপনি পাবেন এডমিশন লেটার। চিন্তার কোন কারণ নেই- ভিসা না পেলে টিউশন ফি ফেরত পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, এডমিশন লেটারের সাথে ST-1 নামক একটি ফর্ম পাঠানো হয়। সেখানে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও নিজের তথ্য থাকে।

টিউশন ফি

সাধারণতঃ ডেনমার্কে পড়তে গেলে আপনাকে টিউশন ফি গুনতে হবে ৬০০০-১৬,০০০ ইউরো পর্যন্ত। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে এই টিউশন ফি কম ও বেশি হতে পারে।

Students in Denmark
Image Source: Internet

স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

ডেনমার্কে বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ রয়েছে। আপনি যদি সেখানে সরকারি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে আপনি শুধু পড়াশুনার নয়, মাসিক খরচও বহন করে থাকে। কিছু স্কলাশিপের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

১। NORDPLUS

২। ERASMUS

৩। ERASMUS MUNDUS

৪। Full Bright Commission

স্কলারশিপ খুঁজে পেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

https://studyindenmark.dk/study-options/tuition-fees-scholarships

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ডেনমার্কে আপনাকে কোন ব্যাংক সলভেন্সি দেখাতে হবে না। যদি আপনি আপনার স্পাউস নিয়ে যেতে চান, তাহলেই আপনার একাউন্টসে ৭১২৯২ ডেনিস ক্রোনা দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

ভিসা প্রক্রিয়া চাইলে আপনি অনলাইনে সেরে নিতে পারেন। অথবা, VFS Global Service Pvt. Ltd. তে গিয়েও সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই ভিসা প্রক্রিয়া একটু সময় সাপেক্ষ- ডেনমার্কের ভিসার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে প্রায় ২ থেকে ৩ মাস। তাই, এই সময় সাপেক্ষ কাজ সারার জন্য হাতে থাকতে হবে পর্যাপ্ত সময়। না হলে, আপনার ভিসা পেতে গিয়ে সেমিস্টার লসও হতে পারে।

Visa Denmark
Image Source: Internet

ভিসার জন্য আপনাকে জমা দিতে হবে নিম্নোক্ত কাগজপত্রঃ

১। পাসপোর্ট ও রিসেন্ট ছবি

২। মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। IELTS স্কোরের কপি

৪। এডমিশন লেটার

৫। সকল তথ্য দিয়ে সঠিকভাবে পূরণকৃত ST-1 ফর্ম

যোগাযোগের জন্য ঢাকা অফিসের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

https://bangladesh.um.dk/

ডেনমার্কে আবাসিক ব্যবস্থা

চিন্তার কোন কারণ নেই- এই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আছে আবাসিক হল। বিশেষত আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে অন্তর্জাতিক মানের সু্যোগ সুবিধাসহ হলের। যদি হোস্টেলে সিট না পেয়ে থাকেন কিম্বা হোস্টেলে থাকতে না চান, তাহলে আপনি বাসা ভাড়া করেও থাকতে পারেন।

এজন্য নিচে একটি খরচের এস্টিমেট দেওয়া হলঃ

হোস্টেল – ২৪০ – ৪০০ ইউরো

ফ্যামিলি বাসা- ২০০- ৫০০ ইউরো

শেয়ারড ফ্লাট- এটি আর কম হয়ে থাকে, সাধারণত আপনার ফ্লাটমেটের সংখ্যার উপর নির্ভর করবে।নিচের লিঙ্কে ঘাটলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেনঃ

https://studyindenmark.dk/live-in-denmark/housing-1/how-to-find-housing

মাসিক খরচ এবং পার্ট টাইম জব এর সুযোগ

ডেনমার্কে থাকা খাওয়া বাবদ ৭৫০-৯০০ ইউরোর মত খরচ করতে হবে। যদিও এই খরচের পুরোটাই ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভরশীল। অনেকের অনেক কমও লাগতে পারে, আবার অনেক সুময় অনেক বেশিও খরচ হয়ে যায়।

ডেনমার্কে আপনি সাধারণত ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করার অনুমতি পাবেন। তবে যে কোন ছুটি বা সামার ভ্যাকেশনে ফুল টাইম জব করার অনুমতি পাবেন।

Life in Denmark
Image Source: Internet

কোর্স শেষে চাকুরীর সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস

এই দেশে Establish Card নামক এক ধরণের কার্ডের প্রচলন রয়েছে। আপনার মাস্টার্স বা পিএইচডি শেষ হবার পর আপনি এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই কার্ড থাকলে আপনি দুই বছর চাকুরী খোঁজার বা করার সুযোগ পাবেন।

আর যদি স্থায়ী বসবাস করতে চান, তাহলে আপনাকে টানা ৮ বছর থাকতে হবে। এই ৮ বছর সময়ের শেষের ৪ বছরের মধ্য ৩.৫ বছর আপনাকে ফুল টাইম চাকুরীর সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকতে হবে। তাহলেই মিলেবে ডেনমার্কে স্থায়ী নাগরিক হবার সুযোগ।

 

ডেনমার্ক ইউরোপের একটি সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। এদেশে বসবাস করতে এখন অনেকেই আগ্রহী। তাই, আর দেরী কেন? চলুন আবেদন করি এখনি।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

নিশীথ সূর্যের দেশ নামে পরিচিত স্কান্ডিনেভিয়ান একটি দেশ নরওয়ে। ইউরোপের ৪ টি নর্ডিক দেশের মধ্য অন্যতম নরওয়ে বিশ্বের শান্তির সূচকে আছে এক নম্বরে। এদেশের জীবন যাত্রার খরচ একটু বেশি হলেও অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত নরওয়েতে রয়েছে ভবিষ্যত গড়ার অপার সম্ভবনা। কারণ, বিজ্ঞান- প্রযুক্তি-শিক্ষার দিক দিয়ে বিশ্বে এ দেশের জুড়ি মেলা ভার। এই দেশের রাজধানী অসলো, ভাষা নরওয়েজিয়ান আর মুদ্রা নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। আপনিও যদি উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান এই দেশে তাহলে এই পুরো লেখাটি আপনার জন্য।

Study in Norway
Image Source: Internet

নরওয়েতে পড়ার ন্যূনতম যোগ্যতা

নরওয়ে তে পড়ার জন্য অবশ্যই আপনার কিছু নূন্যতম যোগ্যতা থাকতে হবে। একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে আপনাকে ৬০% নম্বর পেতে হবে। আপনি যদি যেতে চান ব্যাচেলর ডিগ্রীর জন্য তাহলে আপনাকে HSC + ১ বছর বাংলাদেশি যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে। অন্যদিকে মাস্টার্স করতে আগ্রহী প্রার্থীদের অব্যশই ৩ বছরের ব্যাচেলর কোর্স কমপ্লিট থাকতে হবে। পক্ষান্তরে ২ বছরের মাস্টার্স কোর্স ম্যান্ডাটরি যদি আপনি PhD কোর্সে পড়তে যেতে চান।

নরওয়ে-তে আপনি পেয়ে যাবেন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে মোট ৯ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনে রয়েছে ১৫০টির মত কলেজ এবং ২ টি পাবলিক আর্টস ইন্সটিটিউট। নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

  1. University of Oslo
  2. Norwegian University of Science & Technology
  3. University of Bergen
  4. University of Stavanger
University of Oslo, Norway
Image Source: Internet

এদেশে চাইলেও আপনি নরওয়েজিয়ান বা ইংরেজ- যে কোন ভাষায় পড়াশুনা করতে পারেন। কিন্তু নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়তে গেলে এ ভাষায় ভালো দখল থাকতে হবে।

IELTS স্কোর

সাধারণত এ দেশে পড়তে আপনাকে IELTS এ তুলতে হবে কমপক্ষে ৬.০ স্কোর। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে তুলতে হবে ৬.৫ – তবেই আপনি Safe Zone এ থাকবেন।

আবেদনের সময়সীমা

সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে আবেদন পর্ব। যদিও এটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্নতা আনে, তাই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে গিয়ে সঠিক ভাবে তথ্য উপাত্ত ঘেটে দেখতে হবে।

কোর্স বাছাই

নরওয়েতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইংরেজী কোর্স অফার করা হয়। তাই, আপনি আগে থেকে দেশের জব মার্কেট, আর যদি নরওয়েতেই থাকতে চান তাহলে সে দেশের জব মার্কেট বুঝে সাবজেক্ট বাছাই করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

https://www.studyinnorway.no/

Students in Norway
Image Source: Internet

যেসব বিষয়ে পড়া যায়ঃ এডুকেশন, অডিওলজি, আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন, লাইব্রেরি সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, অকুপেশনাল থেরাপি প্রোগ্রাম, ফুড সায়েন্স, স্পেশালাইজড টিচার এডুকেশন, ফার্মাসি, ফিশারিজ, ফিজিওথেরাপি, হিউম্যানিটিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, জার্নালিজম, ল, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, অ্যাগ্রিকালচার সায়েন্স, মেরিটাইম সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, ডেনটিস্ট্রি, অর্থোপেডিকস, রেডিওলজি, ন্যাচারাল সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স, আর্কিটেকচার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস স্টাডিজ, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, সোশ্যাল ওয়ার্ক প্রোগ্রাম, নার্সিং, থিওলজি, ভেটেরিনারি মেডিসিন, ম্যাথমেটিকস, বিবিএ, এমবিএ ইত্যাদি।

ক্রেডিট ট্রান্সফার

ক্রেডিট ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মাবলী আছে। যেমনঃ অবশ্যই আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন তা গ্রেড- বি (Grade B) এর আওতায় থাকতে হবে। আপনি যদি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০% এর অধিক কোর্স সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে ক্রেডিট ট্রান্সফার আর সম্ভব নয়। আর অবশ্যই আপনাকে শেষ করা সকল কোর্সের কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে হবে।

সেমিস্টার ফি / টিউশন ফি

নরওয়েতে সাধারণত কোন টিউশন ফি লাগে না। তবে আপনাকে সেমিস্টার ফি দিতে হবে এবং তা হল প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। তবে, কিছু প্রোগ্রাম বা কোর্সের ক্ষেত্রে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিউশন ফি নেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টারে ৫১-১০১ মার্কিন ডলার ফি খরচ হয়।

স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

বর্তমানে নরওয়েতে বাংলাদেশিদের জন্য কোন কোটা ভিত্তিক স্কলারশিপ নেই। তবে চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই- এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেক ধরণের স্কলারশিপ। আপনার সুবিদার্থে লিঙ্কটি দেওয়া হলঃ

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/find-available-scholarships-and-grants

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা স্কলারশিপ রয়েছে। যদি আপনি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে সব ধরণের খরচের জন্য থাকবে অর্থ বরাদ্দ।

বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্ত্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কাগজপত্রের ধরণও ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই আপনাকে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে তথ্য উপাত্ত ঘেটে আবেদন করতে হবে।

আপনার বোঝা ও জানার সুবিধার্থে নিচে কি কি ডকুমান্টেস জমা দিতে হবে তার একটি লিস্ট দেওয়া হলঃ

১। প্রথমে নির্দিষত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে- সেটা অনলাইন বা অফলাইন দুটোই হতে পারে। এটা পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল।

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট,

৩। IELTS সনদ

৪। পাসপোর্টের কপি (পাসপোর্টে কমপক্ষে ১ বছর মেয়াদ থাকতে হবে)

৫। মোটিভেশন লেটার (Motivation Letter)

৬। রিকমেন্ডেশন লেটার (Recommendation Letter)

৭। চাকুরীর অভিজ্ঞতার সনদ (যদি থাকে)

University of Oslo-Norway
Image Source: Internet
ব্যাংক সলভেন্সির সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উল্লেখ্য যে, অফার লেটার পাওয়ার পর আপনাকে ১,০৩,৯৫০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা নরওয়ের ব্যাংকে পাঠাতে হবে। অবশ্য, ব্যাংক ও কোন একাউন্টসে পাঠাতে হবে সেটা আপনাকে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিবে। চিন্তার কারণ নেই- নরওয়ে যাবার পর পরই আপনি চাইলে পুরো টাকা একবারে তুলে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আর যদি আপনি ভিসা না পান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে পুরো টাকাটাই ফেরত পাঠিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে হয়ত ডলারের দাম বাড়া বা কমার কারণে হয়ত কিছু ক্ষতি হতে পারে। কাগজপত্র হার্ড কপি নাকি সফট কপি পাঠাতে হবে সেটাও নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। তাই, আগে ভাগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইল করে জেনে নিন সঠিক তথ্য। সকল ডকুমেন্টস সত্যায়িত হতে হবে। আর কোনটি যদি ইংরেজীতে না হয়, তাহলে ইংরেজীতে অনুবাদ করার পর নোটারী করে পাঠাতে হবে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যদি আপনি এডমিশন পেয়ে যান, তাহলে টাকা জমা করা ও কাগজপত্র নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর পর কাজ হবে এম্বেসীতে ভিসার জন্য আবেদন করা। এজন্য যা যা প্রয়োজনঃ

১। স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিট এপ্লিকেশন

২। পাসপোর্টের কপি

৩। ভিসা ফি

৪। অফার লেটার

৫। মোটিভিশন লেটার

৬। IELTS সনদ

৭। Housing ডকুমেন্ট

৮। ব্যাংক স্টেটমেন্ট

Visa Application
Image Source: Internet

উল্লেখ্য, নরওয়েতে ভিসা এপ্লিকেশনের জন্য যে ইন্সুরেন্স লাগে, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়ে দেয়। সঠিক তথ্যের জন্য চেকলিস্ট এম্বেসী ওয়েবসাইটে দেখে নিতে হবে- সে জন্য নিচে একটি লিঙ্ক দেওয়ায় হলঃ

https://www.norway.no/en/bangladesh/

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/student-residence-permit

হাউজিং বা থাকার ব্যবস্থা

এক্ষেত্রে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না, কারণ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধা নিতে আপনাকে আবেদন করতে হবে কর্তৃপক্ষ বরাবর।

পার্ট টাইম জব এবং লিভিং এক্সপেন্স

নরওয়েতে থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলক ভাবে বেশি। এখানে প্রায় ৪০০-৮০০ ইউরো গুনতে হবে এই খাতে। এখানে, ক্যাফে, বার, সামার জব, সিজোনাল জব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর, হেলথ সেক্টর, ফিশিং সেক্টর, সোপ, ক্লিনার, ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং, এনজিও, সেলস, কল সেন্টার, ট্রাভেল, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে কাজ করে ঘণ্টায় ৭-২২ মার্কিন ডলার আয় করা যায়।

হ্যা- আপনি নরওয়েতে গিয়ে পার্ট টাইম জবের সুযোগ পাবেন- তবে সেটা সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি নয়। তবে সামার ভ্যাকেশনে আপনি চাইলে ফুল টাইম জব করতে পারবেন। নরওয়েজিয়ান ভাষা জানা না থাকলে জব পেতে খুব কষ্ট হবে। তাই দেশ ছাড়ার আগে নরওয়েজিয়ান ভাষা শিখে যাওয়াই উত্তম।

Life in Norway
Image Source: Internet

পারমানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট

একটানা ৩ বছরের বেশি সময় বৈধভাবে এ দেশে থাকলে আপনি পি,আর – এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মাস্টার্স শেষে ১ বছর আপনার সাবজেক্ট রিলেটেড জব করার পর আপনি পি,আর- এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাছাড়া, মাস্টার্সের পর আপনি পিএইচডি-তে এপ্লাই করেন তাহলেও আপনি পি,আর-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এদেশে পিএইচডি-কে জব হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

যদি প্রথম থেকে আপনার ইচ্ছা থাকে নরওয়েতে খুটি গাড়ার, তাহলে উচিত হবে প্রথম সপ্তাহ থেকেই নরওয়েজিয়ান ভাষা রপ্ত করা। এ দেশে আপনি চাইলে পরিবার নিয়েও আসতে পারেন- সে জন্য আপনাকে লিভিং কস্টের জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক সলভেন্সি দেখাতে হবে।

https://www.udi.no/en/want-to-apply/permanent-residence/

শান্তির এই দেশে আপনিও যেতে পারেন নিজের জ্ঞানের ক্ষুধা নিবৃত করতে। তাই ভাষা শিখে নিন আর প্রস্তুতি  নিন নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা লাভের অন্যতম পীঠস্থান হল সুইডেন। উন্নত জীবন, পড়াশুনা, এবং গবেষণার অপার সমাহার রয়েছে এই দেশটিতে। আর এসব কারণেই উচ্চ শিক্ষা পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সুইডেন।

সুইডেন ইউরোপের অন্যতম অত্যাধুনিক দেশ। এ দেশের মুদ্রার নাম ক্রোনা। এ দেশে শিক্ষার হার ৯৯%। শিক্ষার্থীদের এই পছন্দের ডেস্টিনেশন নিয়ে আপনাদের সামনে তথ্য উপাত্ত সহ আমরা আলোচনা করবো সুইডেনে উচ্চশিক্ষার সকল খুটি নাটি বিষয় সম্পর্কে।

Castel in Sweden
Image Source: pixabay.com

সুইডেনের একাডেমিক স্ট্রাকচার ও সেমিস্টার

সুইডেনের শিক্ষা ব্যবস্থা “National Standard of Academic Education” এর অন্তর্ভুক্ত। এখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রফেশনাল এডুকেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ দেশে অনার্স প্রোগ্রামে সুইডিশ ভাষা জানা থাকলে ভালো- তবে না জানা থাকলেও সমস্যা নেই, কারণ, এ দেশের Second Language হল ইংলিশ।

স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধিকাংশ কোর্স হল ইংরেজী মাধ্যমে অফার করা হয়। প্রায় ৬০০ এর বেশি কোর্স মাস্টার্স প্রোগ্রামে অফার করা হয় এবং সবগুলোই ইংরেজী মাধ্যমে অফার করা হয়।

সুইডেনে ব্যাচেলর প্রোগ্রাম ৩-৪ বছরের, মাস্টার্স প্রোগ্রাম ১-২ বছরের হয়ে থাকে। এদেশে ৬ মাসের ডিপ্লোমাসহ PhD, Post-Doctoral এর সুযোগ রয়েছে। আর আপনি যদি প্রশিক্ষণমূলক পড়াশুনা করতে চান তারও ব্যবস্থা রয়েছে এই দেশে। প্রশিক্ষণমূলক কোর্সসমূহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় “National Agency for Higher Vocational Education” এর মাধ্যমে।

Study in Sweden - Select University
Image Source: Internet

আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিস্ট এখানে সংযুক্ত করা হলঃ

  1. Uppsala University
  2. KTH Royal Institute of Technology
  3. Lund University
  4. University of Gothenburg
  5. Linkoping University
  6. Umea University
  7. Chalmers University of Technology
  8. Stockholm University

সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে দুইটি সেমিস্টার রয়েছে- স্প্রিং সেমিস্টার ও অটাম সেমিস্টার

(স্প্রিং সেমিস্টার (Spring Semester) শুরু হয় মধ্য জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত। এই সেমিস্টারে আবেদন করা শুরু হয় মে মাস থেকে।

(অটাম সেমিস্টার (Autumn Semester) শুরু হয় পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত আর এই সেমিস্টারের আবেদন শুরু হয় মধ্য অক্টোবর থেকে।

এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল স্প্রিং সেমিস্টারে শুধু শর্ট কোর্স (৬ মাস ) অফার করা হয়ে থাকে। তাই এই সেমিস্তারে এপ্লাই করলে সাধারণত আপনি ৬ মাসের ভিসা পাবেন। অন্য দিকে অটাম সেমিস্টারে সাধারণত অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আপনি মাত্র ১৩ মাসের ভিসা পাবেন- যদিও কোর্স ডিউরেশন ৩/ ৪ বছর অথবা ১/২ বছরের হয়ে থাকে। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই- আপনি চাইলে আবেদন করে সময় সীমা বাড়িয়ে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ হওয়ায়  আপনাকে হাতে সময় রেখে মাঠে নামতে হবে।

কোর্স বাছাই ও ভর্তি আবেদন পর্ব

সুইডেনে কেবল একটি ওয়েবসাইট দিয়ে সব বিশ্ববদ্যালয়ে আবেদন করা হয়। এর অন্য কোন উপায় নেই। আপনার সুবিধার্থে লিঙ্কটি নিচে দেওয়া হলঃ

https://www.universityadmissions.se/intl/start  

https://www.universityadmissions.se/intl/search

প্রথমে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার নিজের সঠিক তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় ও আপনার পছন্দের কোর্সটি বাছাই করতে হবে। মনে রাখবেন, একই তথ্য দিয়ে একাধিক একাউন্ট খুললে সবগুলো একাউন্ট ব্যান হয়ে যাবার সম্ভবনা থাকে। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব পোর্টাল ঘুরে কোর্স পছন্দ করে এই ওয়েব সাইটে সেটা সিলেক্ট করে দিতে পারবেন।

একটি সেমিস্টারে আপনি ৪ টির বেশি কোর্সে এপ্লাই করতে পারবেন না ।

Students in Sweden
Image Source: pixabay.com

ভর্তি আবেদন ফি ও কাগজপত্র পাঠানোর উপায়

প্রথমেই বলে রাখি, আবেদনের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৯০০ ক্রোনা। মূলত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিন্ত আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড নাও থাকে তবে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমেও এই অর্থ পরিশোধ করা যাবে।

এখন আসি কি কি ডকুমেন্টস পাঠাতে হবে তার ফিরিস্তত নিয়ে। সাধারণত ব্যাচেলর এবং মাস্টার্সের মার্কশীট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সত্যায়িত করে হার্ড কপি পাঠাতে হবে। এটি আপনি সরকারি ডাক বিভাগ বা DHL এর মাধ্যমেও পাঠাতে পারবেন। আর IELTS স্কোর, মোটিভেশন লেটার (Motivation Letter), পাসপোর্টের কপি, এবং কিছু ক্ষেত্রে সিভি (CV) ইত্যাদির সফটকপি Upload করতে হবে। এই তথ্যগুলো কোর্সের ওয়েবসাইটে সঠিক ভাবে খুঁজে দেখতে হবে। ভুলে করলে একদমই চলবে না।

লিঙ্কঃ https://www.universityadmissions.se/en/All-you-need-to-know1/Applying-for-studies/Documenting-your-eligibility-for-studies/Instructions-for-Masters-applicants/Specific-requirements-for-my-country1/bangladesh/

সুইডিশ না ইংলিশঃ IELTS প্রয়োজন কি না?

IELTS ছাড়া আপনি ভর্তির আবেদন করতে পারবেন যদি আপনার Medium of Instruction হয় ইংরেজী। কিন্তু, মনে রাখবেন IELTS ছাড়া আবেদন করা গেলেও সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসা পাওয়ার সম্ভবনা কমে যাবে। তাই আমার ব্যক্তিগত মতামত, IELTS দিয়েই আবেদন করা উচিত। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য 6.0 আর মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য 6.5 স্কোর থাকলে ভালো হয়।

সেমিষ্টার টিউশন ফি ও মাসিক বসবাসের খরচ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে টিউশন ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে বছরে আনুমানিক প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,৪০,০০০ ক্রোনা টিউশন ফি দিতে হবে যদি আপনি সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়তে চান। এখানে খাওয়া থাকা বাবদ ৫০০০ – ৮০০০ ক্রোনা প্রয়োজন পড়ে প্রতি মাসে। তবে আপনি পার্ট টাইম জব করে সহজেই এই খরচ বহন করতে পারবেন।

Life in Sweden 01
Image Source: pixabay.com

আছে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

স্কলারশিপ সুইডেনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দেশে দুই ধরণের স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে- প্রথমটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং অপরটি দেওয়া হয় সুইডিশ সরকারের পক্ষ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপটি শুধু টিউশন ফি এর উপর দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি স্কলারশিপেরও সু্যোগ রয়েছে। এই সরকারি স্কলারশিপে টিউশিন ফি এর পাশাপাশি মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়ে থাকে। এটি SI স্কলারশিপ নামে পরিচিত।

নিচে SI স্কলারশিপের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

https://studyinsweden.se/scholarships

মনে রাখবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হবার পর এই স্কলারশিপের আবেদন করতে হয় এবং সাধারণত মার্চ মাস থেকে এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আর্থিক সচ্ছলতা বা ব্যাংক সলভেন্সি

আপনি যদি এক বছরের জন্য পড়তে চান, তাহলে আপনাকে ৮,১৯০ করে ১০ মাসের খরচ ব্যাংকে রাখতে হবে। আবার যদি দুই বছরের জন্য যান তাহলে আনুপাতিক হারে এই টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকবে। মনে রাখবেন এই অর্থ আপনার নামে ব্যাংকে রাখতে হবে আর ভিসা আবেদনের ৩ মাস আগ থেকে এই টাকা আপনার একাউন্টসে থাকতে হবে। এই ব্যাপারে আরো স্বচ্ছ ধারণা পেতে সুইডিশ এম্বেসীতে যোগাযোগ করতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তি নিশ্চিত হবার পর যদি স্কলারশিপ না পেয়ে থাকেন তবে টিউশন ফি জমা দিতে হবে। এরপর টিউশন ফি জমা দেওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

আপনার সুবিধার্থে চেকলিস্ট করে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার

২। টিউশন ফি-এর পেমেন্ট কপি বা স্কলারশিপের ডকুমেন্ট

৩। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৪। পাসপোর্টের কপি

৫। স্টাডি পারমিটের পূরণকৃত এপ্লিকেশন ফর্ম (ফ্যামিলি ডিটেল সহ)

৬। ভিসা ফি

Visa Application - Sweden
Image Source: pixabay.com

প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য এম্বেসী ওয়েবসাইট ভিসিট করুণ। মনে রাখবেন, খুটিনাটি বিষয়ের জন্য ভিসা রিজেক্ট হয়ে থাকে।

সকল কাগজপত্র জমা দিয়ে ইন্টারভিউ দিলে পেয়ে যাবেন সেই কাঙ্ক্ষিত ভিসা।

লিঙ্কঃ

http://www.swedenabroad.com/en-GB/Embassies/Dhaka

http://www.migrationsverket.se/English/Private-individuals/Moving-to-someone-in-Sweden.html

স্পাউস ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া

আপনি চাইলে পুরো পরিবার অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী- সন্তানাদিসহ সুইডেনে যেতে পারবেন। আর তাই সুইডেন শিক্ষার্থীদের কাছে এত জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক সলভেন্সির পরিমাণ বাড়াতে হবে।

নিচে একটা রাফ এস্টিমেট দেওয়া হলঃ

১। নিজের জন্য ব্যয়ঃ ১০ x ৮,১৯০ ক্রোনা / প্রতিবছর

২। স্পাউসের জন্য ব্যয়ঃ ১২ x ৩,৫০০ ক্রোনা / প্রতিবছর

৩। বাচ্চার জন্য ব্যয় (প্রতি জন): ১২ x ২১০০ ক্রোনা / প্রতিবছর

যোগ করার পর প্রাপ্ত অর্থ আপনার ব্যাংকে দেখাতে হবে। আশার কথা হল। স্ত্রী বা স্বামী একই সাথে জব করতে পারবেন। এরজন্য আপনার আলাদা কোন ভিসার দরকার হবে না।

ওয়ার্ক পারমিট এবং পার্ট টাইম জব

সুইডেনে পার্ট টাইম জবের কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। শিক্ষার্থীরা নিজের ইচ্ছা মত পার্ট টাইম জব করতে পারবে। এখানে বড় শহরগুলোতে খুব সহজেই পার্ট টাইম জব পাওয়া যায়। তবে ছোট শহরগুলতে সুযোগ একটু কম।

সুইডেনে ৩০ ক্রেডিট শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন। কাজ পাওয়ার পর আপনি ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে হবে। ফুল টাইম জবের সময় সীমা সাধারণত ৮-১০ ঘন্টা হয়ে থাকে। সুইডিশ ভাষা জানা না থাকলে কাজ পাওয়া একটু কঠিন হয়ে যায়। তাই, আমার অনুরোধ, সুইডেনে যাবার আগে অবশ্যই সুইডিশ ভাষার কোর্স করে যাবেন।

Life in Sweden
Image Source: pixabay.com

কোর্স শেষে চাকুরীর সুযোগ ও পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির সুযোগ

পড়াশুনা শেষে আপনি ৬ মাসের জন্য জব সার্চ ভিসা এপ্লাই করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিটে আবেদনের পর আপনি পেয়ে যাবেন ২ বছরের রেসিডেন্স পারমিট ও পরে আবার ২ বছর এই পারমিট বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

এই ৪ বছর পর আপনি পার্মানেন্ট রেসিডেন্সীর জন্য আবেদন করতে পারবেন।সুতরাং, আপনার যদি গন্তব্য হয় সুইডেন তাহলে আজই নেমে পড়ুন প্রস্তুতি নিতে।

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!