Loading...
November 23, 2022

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষা অর্জনের ডেস্টিনেশন হল ইংল্যান্ড, যাকে সাংবিধানিক ভাষায় বলা হয় United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland. সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে এই দেশের ইতিহাস বহু সমৃদ্ধ- বহু প্রাচীন। জ্ঞানের অন্যতম পীঠ হল এই দেশ। তাই তাবদ দুনিয়ার জ্ঞান পিপাসুরা ভিড় জমায় এই দেশে এসে। আর শিক্ষার্থীদের চাহিদার দিকে তাকিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের বিভিন্ন রকম প্রতরণার ফাঁদে ফেলছে। অনেকে আবার না বুঝে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে নাম-সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখন তাদের ভুল তারা বুঝতে পারে, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি, ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত বিবরণ। তাই, যদি স্বপ্ন হয় ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা তাহলে আর দেরি না করে আর্টিকেলটা পড়ে দেখুন, বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন আর নিজেই করুন নিজের আবেদন।

কেন ইংল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইংল্যান্ড বিশ্বজুড়ে পড়াশুনা করার জন্য অন্যতম স্থান। প্রতি বছর এই পূন্যভূমিতে বিদ্যার্জনের জন্য পাড়ি দেয় প্রায় ৫,০০,০০০ জ্ঞানপিপাসু। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অফার করা হয় ৫০,০০০ এর বেশি কোর্স আর আছে ২৫ এর বেশি সাবজেক্ট এরিয়া। আর বিশ্বে চাকুরীদাতা থেকে শুরু করে সকল নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংল্যান্ডের ডিগ্রীর কদরও কম নয়। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ও নিজেকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার জন্য আপনার গন্তব্যও হতে পারে ইংল্যান্ড।

Study in England
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইংল্যান্ডে ৩-৪ বছরের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হতে প্রয়োজন পড়বে ১২ বছরের শিক্ষা জীবনের আর সাথে প্রয়োজন পড়বে IELTS স্কোর কমপক্ষে ৬.০ -৬.৫। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়তে যেতে প্রয়োজন পড়বে ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন ও সাথে IELTS স্কোর ৬.৫ – ৭.০। এদেশে পড়াশুনা করতে আপনাকে আপনার একাডেমিক কোর্সে ৫০-৫৫ শতাংশের বেশি মার্ক্স অর্জন করে আসতে হবে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

ইংল্যান্ডে নানা ধরণের কোর্স অফার করা হয়। আর আপনি ডিপ্লোমা, কারিগরী কোর্স, ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পোস্ট গ্রাডুয়েট ডিপ্লোমা, পিএইচডি- সব ধরণের কোর্সের জন্য আসতে পারেন ইংল্যান্ডে। আপনি আপনার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বেছে নিবেন আপনার জন্য বেস্ট কোর্স। সাধারণত ইংল্যান্ডে Business School, Hospitality, Tourism and Hotel Management, Pure Science and Engineering, Education Science, Law ও Health & Medicine – এই সব স্কুলের কোর্সগুলো খুবই জনপ্রিয়। MBA, MSC, BBA, ACCOUNTING, MARKETING, HRM, ENGINEERING, LAW, IT, SOCIAL SCIENCE, PUBLIC HEALTH, PHARMACY, DIPLOMA সহ আরও নানা ধরনের বিষয়ে পড়াশুনা করতে পারবেন ।আপনি এই ইন্ডান্স্ট্রিতে অনেক জবও পাবেন। তাই, ভেবে দেখুন ও সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজের পছন্দের কোর্স বেছে নিন।

ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীকে প্রথমে ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করতে হয়।ইংল্যান্ডে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি তথ্য সম্ভার হিসেবে কাজ করে। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ইংল্যান্ডের কোর্সগুলো ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে।

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্ত নেই। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয়েই যান-না-কেন, সে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে আগে একটু অন-লাইন রিসার্চ করে নিতে ভুলবেন না। কারণ, অনেকেই ভুলে করে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন, যাদের কোর্স অফার করার লিগাল অথরিটি নেই। World Ranking-এ আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেখে নিন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হল, খুঁজে দেখুন আর পছন্দ করে দেখুন আপনার জন্য প্রযোজ্য কোর্স কোনটি হবেঃ

  1. University of Oxford
  2. University of Cambridge
  3. Imperial College London
  4. UCL
  5. London School of Economics and Political Science
  6. University of Edinburgh
  7. King’s College London
  8. University of Manchester
  9. University of Warwick
  10. University of Bristol
University in England
Image Source: pexels.com

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ইংল্যান্ডে বছরে দুইটি সেশন আছেঃ

১। অটাম সেশন ও

২। স্প্রিং সেশন

অটাম সেশন শুরু হয় সাধারণত সেপ্টেম্বর – জানুয়ারি মাসে আর স্প্রিং সেশন শুরু হয় জানুয়ারি – জুন মাসে। ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে দেখলে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পাবেন ভর্তির আবেদন পত্র, সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে করতে পারবেন আবেদন। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আবার দেয় অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ। আপনি যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন এডমিশন অফিসের সাথে- তারা আপনাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে। ইংল্যান্ডে ভর্তির আবেদন বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার- প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়, সব কিছু প্রসেস করতে। তাই হাতে প্রায় ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

নিচে ইংল্যান্ডে আবেদনের জন্য মূল ডকুমেন্টসগুলোর তালিকা দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট- অবশ্যই ইংরেজীতে ও নোটারাইজ করে দিতে হবে।

২। IELTS এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে ইংল্যান্ডে পড়াশুনার ব্যয় অনেক কম-বেশি হয়। এই দেশে পড়াশুনার ব্যয় ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি মূলত ফাউন্ডেশন কোর্স বা প্রিলিমিনারি কোর্সে পড়তে প্রতি বছর খরচ হয় ৪,০০০-১২,০০০ পাউন্ড। কলা বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে অনুমানিক ৭,০০০ – ৯,০০০ পাউন্ড। আবার, বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আপনার প্রয়োজন পড়বে ৭,০০০ – ১২,০০০ পাউন্ড। মেডিক্যাল বিষয়ে পড়তে সব জায়গায় খরচ একটু বেশিই হয়। সাধারণত মেডিক্যাল সাইন্সে আপনার খরচ ১০,০০০ – ২১,০০০ পাউন্ড। ইংল্যান্ডে বিজনেস স্কুল বেশ জনপ্রিয়। এখানে বিজনেস স্কুলে পড়তে প্রতি বছর ৪,০০০ পাউন্ড থেকে ৩০,০০০ পাউন্ড খরচ হবে।

Students in England
Image Source: pixabay.com

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বেশি হলেও এখানে অনেক ধরণের স্কলারশিপেরও সুযোগ আছে। সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েব সাইটেই পাবেন বিভিন্ন স্কলারশিপের খবরা-খবর।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ইংল্যান্ডে পড়তে আপনাকে টিউশন ফি ও লিভিং কস্ট বাবদ ব্যাংকে ১০,০০০ – ১৫,০০০ পাউন্ড দেখাতে হবে। এই পরিমাণ অর্থ আপনাকে কমপক্ষে ১ মাস আপনার একাউন্টসে আছে এমন দেখাতে হবে। তবে চিন্তা নেই- ভিসা পাওয়ার পর এই টাকা আপনি তুলে ফেলতে পারবেন। জার্মানীর মত ব্লক একাউন্টসে টাকা রাখতে হবে না আপনাকে।

ভিসার জন্য আবেদন

ইংল্যান্ডে ভিসার কাজ শেষ করতে ৩ থেকে ৩.৫ মাস সময় লাগে। তাই সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা নামে কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। মূলত, স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, যেটাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলা হয়। এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি ইংল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

Visa Application - England
Image Source: Internet

এবার জেনে নিন ভিসা আবেদনর জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

২। CV, মোটিভেশন ও রেফারেন্স

৩। সকল মার্কশিট ও সনদ

৪। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৫।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ও টিউশন ফি প্রদানের রশিদ

৬। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৭। পুলিশ ক্লিয়ারান্স ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টস

৮।IELTS এর কপি

৯। মেডিকেল চেক আপ রিপোর্ট

ইংল্যান্ডে থাকাকালীন আপনার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে তার প্রমাণপত্র হিসেবে যুক্ত করুন

১. ইংল্যান্ডের ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

২. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

৩. ব্যাংক ড্রাফট।

৪. এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।

৫. যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি।

৬. আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।

ইংল্যান্ডে পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ইংল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন আর ছুটিতে আপনি ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার আপনার সাথে আপনার স্পাউস থাকলে তিনিও কাজ করার সুযোগ পাবেন। বর্তমানে ইউকে গভারন্মেন্ট স্টুডেন্টদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে ।

ইংল্যান্ডে আপনি কোথায় বসবাস করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার দৈনন্দিন খরচ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য কত খরচ হবে। আপনি চাইলে আবাসিক ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের খরচ ৪০০ – ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে মেটাতে পারবেন।আপনি কি মানের লাইফ লিড করতে চান তার উপর এটা ডিপেন্ড করে ।

Road in London
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আর আপনি বৈধভাবে ৮ থেকে ১০ বছর থাকার পর PR এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে রাখি ইংল্যান্ড ২০২১ সাল থেকে তাদের PR সংক্রান্ত নীতিমালায় বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। যদি ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষার্থী পড়াশুন শেষ করেন, তাহলে তিনি ২ বছর মেয়াদী Post Study Work (PSW) ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। আর আপনি যদি কমপ্লিট করেন পিএইচডি, তাহলে আপনি ৩ বছর মেয়াদী PSW ভিসা। যদি দুর্ভাগ্যবশত এই ভিসার এই সময়ে যদি আপনি কোন জব ম্যানেজ করতে না পারেন, তাহলে আপনি আবার কোন কোর্সে পড়া শুরু করতে পারেন এবং ডবল ডিগ্রী অর্জন করতে পারেন। পরবর্তীতে আবার আপনি PSW ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি চাইলে, আপনার বেটার-হাফ (স্বামী/ স্ত্রী)- কে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারেন আর আগেই তো বলেই, আপনার স্পাউস এলে তিনি ফুল-টাইম জব করার সুযোগ পাবেন।

ইংল্যান্ড অপার সম্ভবনার দেশ। এই দেশে আপনি আপনার নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডে যেমন সম্ভবনা তৈরী হয়েছে, তেমনি প্রতারক চক্রও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই যাচাই বাছাই করে আবেদন করুন আর গড়ে তুলুন নিজের ভবিষ্যৎ।

City of London
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

ইউরোপ- পাশ্চাত্যের জ্ঞানের সাগর, পাশ্চাত্যের কেন্দ্রস্থল। ইউরোপ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেননি, এমন মানুষ কি আদৌ আছে? অনেকে আবার রীতিমত ইউরোপের জ্ঞানের সাগরে ডুব দেবার স্বপ্ন দেখেন। ইউরোপের পাড়ি জমানোর রাস্তা সহজ করতে তাই আজ আমরা আলোচনা করবো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর যেদেশে অবস্থিত সেই দেশ- বেলজিয়াম নিয়ে। বেলজিয়াম মূলত পশ্চিম ইউরোপের দেশ। সুন্দর এই দেশে আবেদনের বিস্তারিত এখন জেনে নেওয়া যাক- তাহলে চলুন শুরু করি।

Study in Belgium
Image Source: pixabay.com

দেশ পরিচিতি – বেলজিয়াম

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বেলজিয়াম ইউরোপের ছোট ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ৩০,৬৮৯ বর্গ কিলোমিটারের এই দেশে বসবাস করে ১ কোটি ১৪ লক্ষ লোকের বসবাস (২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী)। ১৮৩০ সালে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস, মুদ্রা ইউরো ও এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা তিনটি- ফ্রেঞ্চ, ডাচ ও জার্মান। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে এই দেশের ৩৯০.২ বিলিয়ন ইউরো। শীতকালের গড় তাপমাত্রা ৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস আর গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা ১৮.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মূলত বেলজিয়াম শীত প্রধান দেশ ও আটলান্টিক সাগরের কারণে এই দেশে বাতাসের আদ্রতা বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচন

বেলজিয়ামে বিশ্বমানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে পড়াশুনার মাধ্যম হল ডাচ। এদেশে ব্যাচেওর প্রোগ্রাম সাধারণত ডাচ ভাষাতেই পরিচালিত হয়। কিন্তু মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রাম ইংরেজী মাধ্যমে অফার করা হয়ে থাকে। এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, পরিবেশ বিজ্ঞান, মেডিকেল সাইন্স সহ ব্যবসায় প্রশাসনের বিভিন্ন কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট খুঁজতে হবে- আর বাছাই করে নিতে হবে আপনার পছন্দের কোর্স।

আপনাদের সুবিধার্থে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

Katholieke Universiteit Leuven (KU Leuven)

https://www.kuleuven.be/english

University of Ghent

http://www.ugent.be/en

Université Catholique de Louvain (UCL)

https://www.uclouvain.be/en-index.html

Vrije Universiteit Brussel (VUB)

http://www.vub.ac.be/en/

Universite Libre de Bruxelles (ULB)

http://www.ulb.ac.be/ulb/presentation/uk.html

University in Belgium
Image Source: Internet

ভাষাগত যোগ্যতা

ইংরেজী মাধ্যমে পড়তে আপনাকে IELTS পরীক্ষা দেবার প্রয়োজন পড়বে। আপনাকে IELTS-এ অর্জন করতে হবে ন্যূনতম ৬.০ থেকে ৬.৫ । যদি আপনি ৬.৫ পান তাহলে আপনার আবেদন সহজেই গৃহীত হবে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আপনার পূর্ব ডিগ্রী (যেমনঃ ব্যাচেলর)-এ আপনার Medium of Instruction যদি ইংরেজী হয় তাহলে আপনি IELTS ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন।

ডকুমেন্ট সত্যায়ন

সকল একাডেমিক কাগজপত্র সত্যায়িত করতে হবে যথাক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেলজিয়াম এম্বেসী কনস্যুলেট দ্বারা।

ঢাকা বেলজিয়াম কনস্যুলেটরের ঠিকানা নিচে দেওয়া হলঃ

Honorary Consulate Dhaka

ACI Centre – 245 Tejgaon Industrial Area, 1208 Dhaka Bangladesh

+8802 88 786 03 (Ext. 280)

[email protected]

www.consubel.net (under construction)

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া

ভর্তির জন্য প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট থেকে Admission Office এ যোগাযোগ করে মেইল এর মাধ্যমে সকল বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করুন। সেই অনুযায়ী কাগজপত্র গুছিয়ে ফেলতে হবে আর আবেদন করতে হবে। আর প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস বেলজিয়ামের কনস্যুলেটর মহোদয়ের কাছ থেকে সত্যায়িত করে আনতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হয় ডাকযোগে- সেক্ষেত্রে হাতে সময় নিয়েই আবেদন করতে হবে। আবার যদি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে, তাহলে তো কথাই নেই স্ক্যান করে ডকুমেন্টস দিয়ে আবেদন করে ফেলুন।

আপনার কাগজপত্র সব ঠিক ঠাক থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে পাঠিয়ে দিবে Acceptance Letter. এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের Dutch Language Centre-এ আবেদন করতে হবে (যদি ডাচ মাধ্যমে পড়তে চান)। ডাচ ভাষা শেখার জন্য আপনাকে ২৫০০ থেকে ৪০০০ ইউরো খরচ করতে হবে। Dutch Language Centre থেকেও আপনাকে একটি Acceptance Letter পাঠাবে।  যদি ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশুনা করতে চান তাহলে IELTS এর কপি দিলেই চলবে।

এবার এই দুইটি Acceptance Letter পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে ব্যাংক একাউন্টস নাম্বার প্রদান করবে টিউশন ফি প্রদান করার জন্য। তারপরেই আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

Students in Belgium
Image Source: pixabay.com

এডমিশনের জন্য যেসকল কাগজপত্র আপনাকে প্রেরণ করতে হবে তার একটি লিস্ট নিচে দেওয়া হল।

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম

২। পরিচিতি ডকুমেন্ট

৩। সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশীট

৪। মোটিভেশন লেটার/ সিভি/ রেফারেন্স লেটার

৫। আইইএলটিএস / মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন সার্তফিকেট

টিউশন ফি

বেলজিয়ামে বার্ষিক টিউশন ফি ৮৩৫ ইউরো থেকে ৯০০০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ফি বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে তৃতীয় বিশ্বে দেশের জন্য বিশেষ কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এই সকল তথ্যাদি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পেয়ে যাবেন।

এই দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে- আর এই সকল স্কলারশিপগুলো আংশিক বা পুরো টিউশন ফি সহ মাসিক ভাতা দিয়ে থাকে। এই সকল তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে স্কলারশিপ সেকশনে পেয়ে যাবেন।

আর্থিক সচ্ছলতার প্রমান/ব্যাংক সলভেন্সি

ব্যাংক সলভেন্সির জন্য আপনাকে নিজে একাউন্টসে (৬৭০ ইউরো x ১২) = ৮০৪০ ইউরো রাখতে হবে। যাতে ঐ দেশে দিয়ে থাকা খাওয়া হেলথ কেয়ার নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে না হয়।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে ভিসা কনস্যুলেট থাকলেও ভিসা অফিস নেই। তাই ভিসার জন্য আপনাকে যেতে হবে ইন্ডিয়ার দিল্লীতে। ইন্ডিয়ায় অবস্থিত ভিসা অফিসের ঠিকানা নিচে দেওয়া হলঃ

Embassy New Delhi

50-N Shantipath, Chanakyapuri, 110021 New Delhi, India.

T: +91 11 424 280 00 – Embassy

T: +91 11 424 280 40 – Visa matters every working day between 11.30am and 1pm (check status of applications in process)

Mail: [email protected]

[email protected]

[email protected] (visa)

F: +91 11 424 280 02

Opening hours:

The embassy is open to the public from Monday to Friday between 9am and 1pm and between 1.30 and 5pm.

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের চেকলিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম ও সাথে সংযুক্ত পাসপোর্ট সাইজের ছবি

২। পাসপোর্ট (১ বছরের ভ্যালিডিটি থাকতে হবে)

৩। অফার লেটার

৪। সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত/ মোটিভিশন লেটার

৫। সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশীট

৬। আইইএলটিএস কপি

৭। ব্যাংক সলভেন্সি ডকুমেন্টস (ইনকাম ট্যাক্স ও আয়ের উৎস)

৮। টিউশন ফি পেমেন্ট-এর কপি

৮। মেডিকেল সার্টফিকেট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (আপনার বয়স ২১ বছরের বেশি হলে)

Life in Belgium
Image Source: pixabay.com

আবাসন ব্যবস্থা এবং জীবন যাত্রার ব্যয়

বেলজিয়ামে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রায় হোস্টেল সুবিধা রয়েছে। তবে আপনি বাইরে থাকতে চাইলে তাও পাবেন। শেয়ারড কিম্বা সিঙ্গেল ফ্লাট সব সুবিধাই রয়েছে এই দেশে।

বেলজিয়ামে থাকা খাওয়ার বাবদ ৪০০-৮০০ ইউরো খরচ হবে। তবে এই খরব ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করে। আপনার রুচি ও জীবনযাত্রা ও কোথায় কিভাবে আছেন তার উপরে এই খরচ ১০০০ ইউরোর উপরেও যেতে পারে।

পার্ট টাইম জব

ইউরোপের এই দেশে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম চাকুরী করার সুযোগ পাবেন। আর সামারে চাইলে পুরো দস্তুর কাজ করার সুযোগ পাবেন। বেলজিয়ামে যদিও অফিসিয়ালি ৩ টি ভাষা আছে, তবে ডাচ ভাষার প্রাধান্য বেশি। আর এই ডাচ ভাষা জানা না থাকলে আপনার পার্ট টাইম চাকুরীর আশা অনেকটাই গুড়ে বালি।

কোর্স শেষে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

বেলজিয়ামে একটানা ৫ বছরের বেশি সময় থাকলে আপনি এই দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বেলজিয়াম নিয়ে আলোচনা আমার আজ এখানেই শেষ করছি। এই সুন্দর দেশে আবেদন করতে চাইলে দেরি না করে নিজেকে তৈরী করে আবেদন করুন- এখনি। শুভ কামনা রইলো।

Life in Belgium
Image Source: Internet

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

প্যারিসের ঘুরতে, দেখতে যাবার অথবা আইফেল টাওয়ারের সামনে বসে কফিতে চুমুক দেবার স্বপ্ন দেখেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া আসলেই মুসকিল। হ্যাঁ, আজ কথা বলছি ফ্রান্সের। পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস আর মুদ্রা ফ্র্যাঙ্ক, তবে এ দেশে ইউরো প্রচলিত। আর্ট, শিল্প সাহিত্যের আঁতুড় ঘর ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আপনি সাহিত্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ নানা বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন। আর সেই পথ বাৎলে দিতে আমাদের আজকের আয়োজন। তাই, দেরী না করে এক বসায় পড়ে ফেলুন আজকের পর্ব।

Study in France
Image Source: eurocentres.com

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার মাধ্যম

ফ্রানের আন্তর্জানিক মানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে আপনি লিটারেচার, হিস্ট্রি, ল’, স্যোশাল সাইন্স, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, ফিজিক্স, ম্যাথেমাটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্যুরিজম, ডিজাইন ক্রাফট, থিয়েটার ও ফিল্ম, ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক, স্কাপচার, ড্রয়িং, পেইন্টিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, ব্যালেট ড্যান্স সহ নানাবিধ বিষয়ে অর্জন করতে পারবেন জ্ঞান।

বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানোর মাধ্যম ফ্রেঞ্চ। তাই, এদেশে পড়তে চাইলে আপনাকে অব্যশই জানতে হবে ফেঞ্চ ভাষা। তবে, শুধু ফেঞ্চ নয়, অল্প পরিসরে হলেও ইংরেজীতেও এদেশে কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। তাই আবেদনের সময় খেয়াল করবেন কোন ভাষায় পাঠদান করা হয়ে থাকে।

নিচে ফ্রান্সের কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হল। গুগল সার্চেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাড়ি নক্ষত্র জানতে পারবেন।

  • Université Paris 6 Pierre and Marie Curie
  • Université Paris Sud (Paris XI)
  • École Normale Supérieure Paris
  • Université Claude Bernard Lyon 1
  • Université de Bordeaux
  • Université Denis Diderot Paris 7
  • Université de Strasbourg

ফ্রান্সে অধ্যয়নের যোগ্যতা

আপনি ফ্রান্সে ব্যাচেলর, মাস্টার্স অথবা পিএইচডি- যে কোন প্রোগ্রামের জন্য পাড়ি জমাতে পারবেন। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই এইচ,এস,সি আর মাস্টার্সের জন্য ব্যাচেলর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই আপনার মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে।

আপনার কোর্স যদি ফ্রেঞ্চ ভাষায় হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতার প্রমাণপত্র দিতে হবে। আর এজন্য আপনার যোগাযোগ করতে হবে Alliance Francaise আর করে ফেলতে হবে ফ্রেঞ্চ ভাষার উপর কোর্স। আপনাদের সহায়তার জন্য Alliance Francaise de Dhaka এর লিঙ্কটি হলঃ (https://www.afdhaka.org/)।

ইংরেজী ভাষার কোর্সের জন্য আপনাকে IELTS/ TOEFL পরীক্ষার সনদ দিতে হবে। ব্যাচেলরে আবদনের জন্য ন্যূনতম ৫.৫ চাওয়া হলেও ৬.০ থাকলে আপনার আবেদন গৃহীত হবার সম্ভবনা থাকে। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে ৬.০ প্রয়োজন পড়বে আর ৬.৫ থাকলে আপনার ভিসা ও অন্যান্য সুবিধা পেতে সুবিধা হবে। আর TOEFL দিয়ে আবেদন করতে আপনাকে ব্যাচেলরে আবেদনের জন্য ৫৫০ আর মাস্টার্সের জন্য ৬০০ স্কোর অর্জন করতে হবে। তবে আপনার স্কোর বেশি থাকলে ভিসা আবেদনে আপনি এগিয়ে থাকবেন।

এখানে একটা কথা না বললেই নয়, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনার ইংরেজী পারদর্শিতা যাচাই করার জন্য অনলাইন টেস্ট বা স্কাইপিতে ইন্টারভিয় নিয়ে থাকে।

University in France
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। এখানে বছরে তিনটি সেমিস্টার পড়ানো হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহঃ

১। আবেদন পত্র

২। সকল মূল সনদ ও মার্কশীট এর কপি

৩। জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা সনদ ও পাসপোর্ট- এর কপি

৪। IELTS/ TOEFL / French Language সনদ

৫। মোটিভেশন লেটার/ রেফারেন্স লেটার/ সিভি [প্রযোজ্য ক্ষেত্রে]

এই সকল ডকুমেন্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই, আবেদনের পূর্বে অবশ্যই সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে নিতে ভুলবেন না।

টিউশন ফি

২০১৯ সালের তথ্য ও উপাত্ত অনুযায়ী, ফ্রান্সের লাইসেন্সড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর কোর্সে পড়তে আনুমানিক ২৭৭০ ইউরো/ প্রতি বছর আবার, মাস্টার্স কোর্সে পড়তে প্রয়োজন পড়বে ৩৭৭০ ইউরো / প্রতি বছর। ডক্টোরাল কোর্সের জন্য লাগবে ৩৮০ ইউরো/ প্রতি বছর। তবে এই হিসাব নিকাষ বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।

স্কলারশিপ বৃত্তান্তঃ

ফ্রান্সে সরকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। এসব স্কলারশিপে আংশিক বা পুরো টিউশন ফি মওকুফ হতে পারে। কিছু কিছু স্কলারশিপে মাসিক ভাতাও প্রদান করা হয়ে থাকে।

এসব স্কলারশিপ খুঁজতে আবেদন করতে হবে নিচের লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

http://www.diplomatie.gouv.fr/en/coming-to-france/studying-in-france/finance-your-studies-scholarships/

Image Source: Internet

ব্যাংক সলভেন্সি

ফ্রান্সে ভিসার ক্ষেত্রে ব্যাংকে আপনাকে ১০ থেকে ১৫ হাজার ইউরো দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি আপনাকে ব্যাংক স্পন্সরশিপ বহন করবেন, সে যদি প্রথম রক্তের সম্পর্কের অভিভাবক হন, তাহলে ভিসার ক্ষেত্রে আপনি সুবিধা পাবেন। এছাড়া অন্য যে কোন অভিভাবক আপনাকে স্পন্সর করতে পারবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক কাগজপত্র ও প্রমাণাদি এম্বাসীতে জমা করতে হবে। আপনি চাইলে নিজের নামেও ব্যাংকে টাকা দেখাতে পারেন। ভিসা পাবার পর আপনি চাইলে এই টাকা যেকোন সময় তুলে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ফ্রান্সে প্রবেশকালে ইমিগ্রেশনে আপনাকে ব্যাংক সলভেন্সি পেপার দেখানোর জন্য অনুরোধ করতে পারে। সুতরাং, যাত্রার সময় সলভেন্সি পেপার আপনার সাথেই রাখবেন।

ভিসা আবেদন পর্ব

ভিসার জন্য প্রথমে এম্বাসীতে ই-মেইল করে এপন্টমেন্ট নিতে হবে। সকল কাগজপত্র সহকারে এম্বাসীতে উপস্থিত হলে ওই দিনই দ্বিতীয়বারের জন্য আরেকটি এপন্টমেন্ট দেওয়া হবে। ভিসার সকল কাগজপত্র জমা দেবার পর আপনাকে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ভিসা পাবার জন্য।

Visa Application France
Image Source: Internet

সাধারণত যে সকল কাগজপত্র ভিসার জন্য জমা করতে হবে তা নিচে দেওয়া হল। তবে এম্বেসীতে যোগাযোগ করে আপনাকে অবশ্যই চেকলিস্টটা আরেক বার দেখে নিতে হবে, কারণ এম্বেসী অনেক সময় তাদের চেকলিস্ট পরিবর্তন করে থাকে।

১। পাসপোর্ট (অবশ্যই ৬ মাসের অধিক মেয়াদ থাকতে হবে)

২। অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ও পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি

( অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ডাউনলোড করুন এখান থেকেঃ https://bd.ambafrance.org/Download-the-application-form-for  )

৩। ফ্লাইট বুকিং টিকেট (এটা করতে কোন টাকা লাগে না, শুধু বুকিং দিবেন)

৪। ভিসা অ্যাপ্লিকেশান ফি বা স্কলারশিপ লেটার (যদি পেয়ে থাকেন)

(স্কলারশিপ প্রাপ্তদের ফি লাগে না)

৫। হেলথ ইস্যুরেন্স (যতদিন এর কোর্স ততদিনের করতে হবে)

৬। জন্ম নিবন্ধন

৭। সিভি/রিজিউমি

৮। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস

৯। ইউনিভার্সিটির অফার লেটার

১০। ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সল্ভেন্সি (যিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন তার অর্থাৎ স্পন্সরের)

১১। হাউজিং সার্টিফিকেট/ ডকুমেন্ট (যদি ফ্রান্সে কোন আত্মীয়ের বাসাকে হাউজিং এর জন্য দেন তাহলে ঐ শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত উনার/উনাদের বাসার সকল কন্ট্রাক্ট পেপার দেখাতে হবে)

১২। স্পন্সরের জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট কপি, যা দ্বারা আপনার সাথে উনার সম্পর্ক কি টিউশন ফি পরিশোধের কপি/প্রমাণ

১৩। IELTS/ TOEFL/ফ্রেঞ্চ ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (Alliance Française Certificates)

১৪। ট্রেনিং সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

১৫। কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

আবাসন ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ফ্রান্সে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হোস্টেল রয়েছে। আপনি চাইলে পেইং গেস্ট অথবা শেয়ারিং এপার্টমেন্ট থাকতে পারবেন। এদেশে থাকা খাওয়ার জন্য আপনাকে মাসে খরচ করতে হবে ৪০০-৬০০ ইউরো। তবে এই খরচ পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করে। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স বাবদ আপনার খরচ করতে হবে ৪২ ইউরো/ প্রতি জন/ প্রতি মাস।

Life in France
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব

ফ্রান্সে বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ফ্রেঞ্চ সরকার বিদেশী নাগরিকদের বছরে ৯৬৪ ঘন্টা কাজ করার অনুমতি প্রদান করে।

ফ্রান্সে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

পড়াশুনা শেষ করার পর আপনি ফান্সে ১ বছর জব খোঁজার জন্য সময় পাবেন। আর আপনি যদি হয়ে থাকেন তরুণ গবেষক, কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বা ইনোভেটিভ ইকোনমিক প্রোজেক্টের ডিজাইনার, ফ্রেঞ্চ টেক প্রোগ্রামের অংশ গ্রহণকারী, আর্টিস্ট, উচ্চ পর্যায়ের অ্যাথলেট তাহলে আপনার জন্য ইস্যু করা হবে Plurennial Residence Card (“Passeport Talent”) – এই কার্ডটির আওতায় আপনি ও আপনার পরিবারকে ৪ বছরের ভিসা দেওয়া হবে, আর এই সময়ে আপনি চাকুরী করতে পারবেন।

ফান্সে একটানা ৫ বছর বৈধভাবে থাকার পর শর্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্যে আবেদন করতে পারবেন। সব শর্ত রক্ষিত হলে পেয়ে যাবেন ফ্রান্সের নাগরিকত্ব।

Life in France
Image Source: Internet

ফ্রান্স একাধারে আধুনিক কিন্তু সম্ভ্রান্ত ও প্রাচীন। ফ্রান্স ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী বা সাহিত্যিকদের জন্য যেন কাঙ্ক্ষিত ও আরাধ্য স্থান। তাই, বসবাস ও পড়াশুনার জন্য ফ্রান্স এত বেশি লোভনীয়।

তথ্যসুত্র

November 21, 2022

নিশীথ সূর্যের দেশ নামে পরিচিত স্কান্ডিনেভিয়ান একটি দেশ নরওয়ে। ইউরোপের ৪ টি নর্ডিক দেশের মধ্য অন্যতম নরওয়ে বিশ্বের শান্তির সূচকে আছে এক নম্বরে। এদেশের জীবন যাত্রার খরচ একটু বেশি হলেও অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত নরওয়েতে রয়েছে ভবিষ্যত গড়ার অপার সম্ভবনা। কারণ, বিজ্ঞান- প্রযুক্তি-শিক্ষার দিক দিয়ে বিশ্বে এ দেশের জুড়ি মেলা ভার। এই দেশের রাজধানী অসলো, ভাষা নরওয়েজিয়ান আর মুদ্রা নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। আপনিও যদি উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান এই দেশে তাহলে এই পুরো লেখাটি আপনার জন্য।

Study in Norway
Image Source: Internet

নরওয়েতে পড়ার ন্যূনতম যোগ্যতা

নরওয়ে তে পড়ার জন্য অবশ্যই আপনার কিছু নূন্যতম যোগ্যতা থাকতে হবে। একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে আপনাকে ৬০% নম্বর পেতে হবে। আপনি যদি যেতে চান ব্যাচেলর ডিগ্রীর জন্য তাহলে আপনাকে HSC + ১ বছর বাংলাদেশি যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে। অন্যদিকে মাস্টার্স করতে আগ্রহী প্রার্থীদের অব্যশই ৩ বছরের ব্যাচেলর কোর্স কমপ্লিট থাকতে হবে। পক্ষান্তরে ২ বছরের মাস্টার্স কোর্স ম্যান্ডাটরি যদি আপনি PhD কোর্সে পড়তে যেতে চান।

নরওয়ে-তে আপনি পেয়ে যাবেন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে মোট ৯ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনে রয়েছে ১৫০টির মত কলেজ এবং ২ টি পাবলিক আর্টস ইন্সটিটিউট। নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

  1. University of Oslo
  2. Norwegian University of Science & Technology
  3. University of Bergen
  4. University of Stavanger
University of Oslo, Norway
Image Source: Internet

এদেশে চাইলেও আপনি নরওয়েজিয়ান বা ইংরেজ- যে কোন ভাষায় পড়াশুনা করতে পারেন। কিন্তু নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়তে গেলে এ ভাষায় ভালো দখল থাকতে হবে।

IELTS স্কোর

সাধারণত এ দেশে পড়তে আপনাকে IELTS এ তুলতে হবে কমপক্ষে ৬.০ স্কোর। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে তুলতে হবে ৬.৫ – তবেই আপনি Safe Zone এ থাকবেন।

আবেদনের সময়সীমা

সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে আবেদন পর্ব। যদিও এটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্নতা আনে, তাই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে গিয়ে সঠিক ভাবে তথ্য উপাত্ত ঘেটে দেখতে হবে।

কোর্স বাছাই

নরওয়েতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইংরেজী কোর্স অফার করা হয়। তাই, আপনি আগে থেকে দেশের জব মার্কেট, আর যদি নরওয়েতেই থাকতে চান তাহলে সে দেশের জব মার্কেট বুঝে সাবজেক্ট বাছাই করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

https://www.studyinnorway.no/

Students in Norway
Image Source: Internet

যেসব বিষয়ে পড়া যায়ঃ এডুকেশন, অডিওলজি, আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন, লাইব্রেরি সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, অকুপেশনাল থেরাপি প্রোগ্রাম, ফুড সায়েন্স, স্পেশালাইজড টিচার এডুকেশন, ফার্মাসি, ফিশারিজ, ফিজিওথেরাপি, হিউম্যানিটিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, জার্নালিজম, ল, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, অ্যাগ্রিকালচার সায়েন্স, মেরিটাইম সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, ডেনটিস্ট্রি, অর্থোপেডিকস, রেডিওলজি, ন্যাচারাল সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স, আর্কিটেকচার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস স্টাডিজ, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, সোশ্যাল ওয়ার্ক প্রোগ্রাম, নার্সিং, থিওলজি, ভেটেরিনারি মেডিসিন, ম্যাথমেটিকস, বিবিএ, এমবিএ ইত্যাদি।

ক্রেডিট ট্রান্সফার

ক্রেডিট ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মাবলী আছে। যেমনঃ অবশ্যই আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন তা গ্রেড- বি (Grade B) এর আওতায় থাকতে হবে। আপনি যদি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০% এর অধিক কোর্স সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে ক্রেডিট ট্রান্সফার আর সম্ভব নয়। আর অবশ্যই আপনাকে শেষ করা সকল কোর্সের কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে হবে।

সেমিস্টার ফি / টিউশন ফি

নরওয়েতে সাধারণত কোন টিউশন ফি লাগে না। তবে আপনাকে সেমিস্টার ফি দিতে হবে এবং তা হল প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। তবে, কিছু প্রোগ্রাম বা কোর্সের ক্ষেত্রে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিউশন ফি নেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টারে ৫১-১০১ মার্কিন ডলার ফি খরচ হয়।

স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

বর্তমানে নরওয়েতে বাংলাদেশিদের জন্য কোন কোটা ভিত্তিক স্কলারশিপ নেই। তবে চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই- এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেক ধরণের স্কলারশিপ। আপনার সুবিদার্থে লিঙ্কটি দেওয়া হলঃ

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/find-available-scholarships-and-grants

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা স্কলারশিপ রয়েছে। যদি আপনি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে সব ধরণের খরচের জন্য থাকবে অর্থ বরাদ্দ।

বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্ত্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কাগজপত্রের ধরণও ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই আপনাকে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে তথ্য উপাত্ত ঘেটে আবেদন করতে হবে।

আপনার বোঝা ও জানার সুবিধার্থে নিচে কি কি ডকুমান্টেস জমা দিতে হবে তার একটি লিস্ট দেওয়া হলঃ

১। প্রথমে নির্দিষত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে- সেটা অনলাইন বা অফলাইন দুটোই হতে পারে। এটা পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল।

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট,

৩। IELTS সনদ

৪। পাসপোর্টের কপি (পাসপোর্টে কমপক্ষে ১ বছর মেয়াদ থাকতে হবে)

৫। মোটিভেশন লেটার (Motivation Letter)

৬। রিকমেন্ডেশন লেটার (Recommendation Letter)

৭। চাকুরীর অভিজ্ঞতার সনদ (যদি থাকে)

University of Oslo-Norway
Image Source: Internet
ব্যাংক সলভেন্সির সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উল্লেখ্য যে, অফার লেটার পাওয়ার পর আপনাকে ১,০৩,৯৫০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা নরওয়ের ব্যাংকে পাঠাতে হবে। অবশ্য, ব্যাংক ও কোন একাউন্টসে পাঠাতে হবে সেটা আপনাকে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিবে। চিন্তার কারণ নেই- নরওয়ে যাবার পর পরই আপনি চাইলে পুরো টাকা একবারে তুলে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আর যদি আপনি ভিসা না পান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে পুরো টাকাটাই ফেরত পাঠিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে হয়ত ডলারের দাম বাড়া বা কমার কারণে হয়ত কিছু ক্ষতি হতে পারে। কাগজপত্র হার্ড কপি নাকি সফট কপি পাঠাতে হবে সেটাও নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। তাই, আগে ভাগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইল করে জেনে নিন সঠিক তথ্য। সকল ডকুমেন্টস সত্যায়িত হতে হবে। আর কোনটি যদি ইংরেজীতে না হয়, তাহলে ইংরেজীতে অনুবাদ করার পর নোটারী করে পাঠাতে হবে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যদি আপনি এডমিশন পেয়ে যান, তাহলে টাকা জমা করা ও কাগজপত্র নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর পর কাজ হবে এম্বেসীতে ভিসার জন্য আবেদন করা। এজন্য যা যা প্রয়োজনঃ

১। স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিট এপ্লিকেশন

২। পাসপোর্টের কপি

৩। ভিসা ফি

৪। অফার লেটার

৫। মোটিভিশন লেটার

৬। IELTS সনদ

৭। Housing ডকুমেন্ট

৮। ব্যাংক স্টেটমেন্ট

Visa Application
Image Source: Internet

উল্লেখ্য, নরওয়েতে ভিসা এপ্লিকেশনের জন্য যে ইন্সুরেন্স লাগে, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়ে দেয়। সঠিক তথ্যের জন্য চেকলিস্ট এম্বেসী ওয়েবসাইটে দেখে নিতে হবে- সে জন্য নিচে একটি লিঙ্ক দেওয়ায় হলঃ

https://www.norway.no/en/bangladesh/

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/student-residence-permit

হাউজিং বা থাকার ব্যবস্থা

এক্ষেত্রে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না, কারণ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধা নিতে আপনাকে আবেদন করতে হবে কর্তৃপক্ষ বরাবর।

পার্ট টাইম জব এবং লিভিং এক্সপেন্স

নরওয়েতে থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলক ভাবে বেশি। এখানে প্রায় ৪০০-৮০০ ইউরো গুনতে হবে এই খাতে। এখানে, ক্যাফে, বার, সামার জব, সিজোনাল জব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর, হেলথ সেক্টর, ফিশিং সেক্টর, সোপ, ক্লিনার, ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং, এনজিও, সেলস, কল সেন্টার, ট্রাভেল, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে কাজ করে ঘণ্টায় ৭-২২ মার্কিন ডলার আয় করা যায়।

হ্যা- আপনি নরওয়েতে গিয়ে পার্ট টাইম জবের সুযোগ পাবেন- তবে সেটা সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি নয়। তবে সামার ভ্যাকেশনে আপনি চাইলে ফুল টাইম জব করতে পারবেন। নরওয়েজিয়ান ভাষা জানা না থাকলে জব পেতে খুব কষ্ট হবে। তাই দেশ ছাড়ার আগে নরওয়েজিয়ান ভাষা শিখে যাওয়াই উত্তম।

Life in Norway
Image Source: Internet

পারমানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট

একটানা ৩ বছরের বেশি সময় বৈধভাবে এ দেশে থাকলে আপনি পি,আর – এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মাস্টার্স শেষে ১ বছর আপনার সাবজেক্ট রিলেটেড জব করার পর আপনি পি,আর- এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাছাড়া, মাস্টার্সের পর আপনি পিএইচডি-তে এপ্লাই করেন তাহলেও আপনি পি,আর-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এদেশে পিএইচডি-কে জব হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

যদি প্রথম থেকে আপনার ইচ্ছা থাকে নরওয়েতে খুটি গাড়ার, তাহলে উচিত হবে প্রথম সপ্তাহ থেকেই নরওয়েজিয়ান ভাষা রপ্ত করা। এ দেশে আপনি চাইলে পরিবার নিয়েও আসতে পারেন- সে জন্য আপনাকে লিভিং কস্টের জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক সলভেন্সি দেখাতে হবে।

https://www.udi.no/en/want-to-apply/permanent-residence/

শান্তির এই দেশে আপনিও যেতে পারেন নিজের জ্ঞানের ক্ষুধা নিবৃত করতে। তাই ভাষা শিখে নিন আর প্রস্তুতি  নিন নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার।

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!