Loading...
November 23, 2022

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষা অর্জনের ডেস্টিনেশন হল ইংল্যান্ড, যাকে সাংবিধানিক ভাষায় বলা হয় United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland. সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে এই দেশের ইতিহাস বহু সমৃদ্ধ- বহু প্রাচীন। জ্ঞানের অন্যতম পীঠ হল এই দেশ। তাই তাবদ দুনিয়ার জ্ঞান পিপাসুরা ভিড় জমায় এই দেশে এসে। আর শিক্ষার্থীদের চাহিদার দিকে তাকিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের বিভিন্ন রকম প্রতরণার ফাঁদে ফেলছে। অনেকে আবার না বুঝে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে নাম-সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখন তাদের ভুল তারা বুঝতে পারে, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি, ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত বিবরণ। তাই, যদি স্বপ্ন হয় ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা তাহলে আর দেরি না করে আর্টিকেলটা পড়ে দেখুন, বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন আর নিজেই করুন নিজের আবেদন।

কেন ইংল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইংল্যান্ড বিশ্বজুড়ে পড়াশুনা করার জন্য অন্যতম স্থান। প্রতি বছর এই পূন্যভূমিতে বিদ্যার্জনের জন্য পাড়ি দেয় প্রায় ৫,০০,০০০ জ্ঞানপিপাসু। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অফার করা হয় ৫০,০০০ এর বেশি কোর্স আর আছে ২৫ এর বেশি সাবজেক্ট এরিয়া। আর বিশ্বে চাকুরীদাতা থেকে শুরু করে সকল নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংল্যান্ডের ডিগ্রীর কদরও কম নয়। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ও নিজেকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার জন্য আপনার গন্তব্যও হতে পারে ইংল্যান্ড।

Study in England
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইংল্যান্ডে ৩-৪ বছরের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হতে প্রয়োজন পড়বে ১২ বছরের শিক্ষা জীবনের আর সাথে প্রয়োজন পড়বে IELTS স্কোর কমপক্ষে ৬.০ -৬.৫। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়তে যেতে প্রয়োজন পড়বে ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন ও সাথে IELTS স্কোর ৬.৫ – ৭.০। এদেশে পড়াশুনা করতে আপনাকে আপনার একাডেমিক কোর্সে ৫০-৫৫ শতাংশের বেশি মার্ক্স অর্জন করে আসতে হবে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

ইংল্যান্ডে নানা ধরণের কোর্স অফার করা হয়। আর আপনি ডিপ্লোমা, কারিগরী কোর্স, ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পোস্ট গ্রাডুয়েট ডিপ্লোমা, পিএইচডি- সব ধরণের কোর্সের জন্য আসতে পারেন ইংল্যান্ডে। আপনি আপনার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বেছে নিবেন আপনার জন্য বেস্ট কোর্স। সাধারণত ইংল্যান্ডে Business School, Hospitality, Tourism and Hotel Management, Pure Science and Engineering, Education Science, Law ও Health & Medicine – এই সব স্কুলের কোর্সগুলো খুবই জনপ্রিয়। MBA, MSC, BBA, ACCOUNTING, MARKETING, HRM, ENGINEERING, LAW, IT, SOCIAL SCIENCE, PUBLIC HEALTH, PHARMACY, DIPLOMA সহ আরও নানা ধরনের বিষয়ে পড়াশুনা করতে পারবেন ।আপনি এই ইন্ডান্স্ট্রিতে অনেক জবও পাবেন। তাই, ভেবে দেখুন ও সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজের পছন্দের কোর্স বেছে নিন।

ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীকে প্রথমে ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করতে হয়।ইংল্যান্ডে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি তথ্য সম্ভার হিসেবে কাজ করে। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ইংল্যান্ডের কোর্সগুলো ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে।

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্ত নেই। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয়েই যান-না-কেন, সে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে আগে একটু অন-লাইন রিসার্চ করে নিতে ভুলবেন না। কারণ, অনেকেই ভুলে করে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন, যাদের কোর্স অফার করার লিগাল অথরিটি নেই। World Ranking-এ আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেখে নিন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হল, খুঁজে দেখুন আর পছন্দ করে দেখুন আপনার জন্য প্রযোজ্য কোর্স কোনটি হবেঃ

  1. University of Oxford
  2. University of Cambridge
  3. Imperial College London
  4. UCL
  5. London School of Economics and Political Science
  6. University of Edinburgh
  7. King’s College London
  8. University of Manchester
  9. University of Warwick
  10. University of Bristol
University in England
Image Source: pexels.com

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ইংল্যান্ডে বছরে দুইটি সেশন আছেঃ

১। অটাম সেশন ও

২। স্প্রিং সেশন

অটাম সেশন শুরু হয় সাধারণত সেপ্টেম্বর – জানুয়ারি মাসে আর স্প্রিং সেশন শুরু হয় জানুয়ারি – জুন মাসে। ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে দেখলে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পাবেন ভর্তির আবেদন পত্র, সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে করতে পারবেন আবেদন। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আবার দেয় অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ। আপনি যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন এডমিশন অফিসের সাথে- তারা আপনাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে। ইংল্যান্ডে ভর্তির আবেদন বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার- প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়, সব কিছু প্রসেস করতে। তাই হাতে প্রায় ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

নিচে ইংল্যান্ডে আবেদনের জন্য মূল ডকুমেন্টসগুলোর তালিকা দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট- অবশ্যই ইংরেজীতে ও নোটারাইজ করে দিতে হবে।

২। IELTS এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে ইংল্যান্ডে পড়াশুনার ব্যয় অনেক কম-বেশি হয়। এই দেশে পড়াশুনার ব্যয় ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি মূলত ফাউন্ডেশন কোর্স বা প্রিলিমিনারি কোর্সে পড়তে প্রতি বছর খরচ হয় ৪,০০০-১২,০০০ পাউন্ড। কলা বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে অনুমানিক ৭,০০০ – ৯,০০০ পাউন্ড। আবার, বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আপনার প্রয়োজন পড়বে ৭,০০০ – ১২,০০০ পাউন্ড। মেডিক্যাল বিষয়ে পড়তে সব জায়গায় খরচ একটু বেশিই হয়। সাধারণত মেডিক্যাল সাইন্সে আপনার খরচ ১০,০০০ – ২১,০০০ পাউন্ড। ইংল্যান্ডে বিজনেস স্কুল বেশ জনপ্রিয়। এখানে বিজনেস স্কুলে পড়তে প্রতি বছর ৪,০০০ পাউন্ড থেকে ৩০,০০০ পাউন্ড খরচ হবে।

Students in England
Image Source: pixabay.com

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বেশি হলেও এখানে অনেক ধরণের স্কলারশিপেরও সুযোগ আছে। সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েব সাইটেই পাবেন বিভিন্ন স্কলারশিপের খবরা-খবর।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ইংল্যান্ডে পড়তে আপনাকে টিউশন ফি ও লিভিং কস্ট বাবদ ব্যাংকে ১০,০০০ – ১৫,০০০ পাউন্ড দেখাতে হবে। এই পরিমাণ অর্থ আপনাকে কমপক্ষে ১ মাস আপনার একাউন্টসে আছে এমন দেখাতে হবে। তবে চিন্তা নেই- ভিসা পাওয়ার পর এই টাকা আপনি তুলে ফেলতে পারবেন। জার্মানীর মত ব্লক একাউন্টসে টাকা রাখতে হবে না আপনাকে।

ভিসার জন্য আবেদন

ইংল্যান্ডে ভিসার কাজ শেষ করতে ৩ থেকে ৩.৫ মাস সময় লাগে। তাই সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা নামে কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। মূলত, স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, যেটাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলা হয়। এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি ইংল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

Visa Application - England
Image Source: Internet

এবার জেনে নিন ভিসা আবেদনর জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

২। CV, মোটিভেশন ও রেফারেন্স

৩। সকল মার্কশিট ও সনদ

৪। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৫।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ও টিউশন ফি প্রদানের রশিদ

৬। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৭। পুলিশ ক্লিয়ারান্স ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টস

৮।IELTS এর কপি

৯। মেডিকেল চেক আপ রিপোর্ট

ইংল্যান্ডে থাকাকালীন আপনার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে তার প্রমাণপত্র হিসেবে যুক্ত করুন

১. ইংল্যান্ডের ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

২. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

৩. ব্যাংক ড্রাফট।

৪. এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।

৫. যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি।

৬. আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।

ইংল্যান্ডে পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ইংল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন আর ছুটিতে আপনি ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার আপনার সাথে আপনার স্পাউস থাকলে তিনিও কাজ করার সুযোগ পাবেন। বর্তমানে ইউকে গভারন্মেন্ট স্টুডেন্টদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে ।

ইংল্যান্ডে আপনি কোথায় বসবাস করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার দৈনন্দিন খরচ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য কত খরচ হবে। আপনি চাইলে আবাসিক ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের খরচ ৪০০ – ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে মেটাতে পারবেন।আপনি কি মানের লাইফ লিড করতে চান তার উপর এটা ডিপেন্ড করে ।

Road in London
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আর আপনি বৈধভাবে ৮ থেকে ১০ বছর থাকার পর PR এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে রাখি ইংল্যান্ড ২০২১ সাল থেকে তাদের PR সংক্রান্ত নীতিমালায় বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। যদি ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষার্থী পড়াশুন শেষ করেন, তাহলে তিনি ২ বছর মেয়াদী Post Study Work (PSW) ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। আর আপনি যদি কমপ্লিট করেন পিএইচডি, তাহলে আপনি ৩ বছর মেয়াদী PSW ভিসা। যদি দুর্ভাগ্যবশত এই ভিসার এই সময়ে যদি আপনি কোন জব ম্যানেজ করতে না পারেন, তাহলে আপনি আবার কোন কোর্সে পড়া শুরু করতে পারেন এবং ডবল ডিগ্রী অর্জন করতে পারেন। পরবর্তীতে আবার আপনি PSW ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি চাইলে, আপনার বেটার-হাফ (স্বামী/ স্ত্রী)- কে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারেন আর আগেই তো বলেই, আপনার স্পাউস এলে তিনি ফুল-টাইম জব করার সুযোগ পাবেন।

ইংল্যান্ড অপার সম্ভবনার দেশ। এই দেশে আপনি আপনার নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডে যেমন সম্ভবনা তৈরী হয়েছে, তেমনি প্রতারক চক্রও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই যাচাই বাছাই করে আবেদন করুন আর গড়ে তুলুন নিজের ভবিষ্যৎ।

City of London
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

উচ্চশিক্ষার স্বর্গরাজ্য কানাডায় অনেকেই যাবার স্বপ্ন দেখেন,দেখেছেন হয়তবা দেখছেন। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও বিষয়গুলো সমন্ধে ভালোমত না জানার কারণে স্বপ্ন হয়ত রয়ে যাচ্ছে অধরা। কিন্তু আর চিন্তা নেই? আমরা প্রস্তুত আপনার স্বপ্নকে বাস্তবতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে। চলুন, শুরু করি স্বপ্নরাজ্য কানাডার দিকে পথ বাড়ানোর জন্য আমাদের আজকের আয়োজন।

কেন কানাডায় পড়তে যাবেন?

নর্থ আমেরিকার দেশ কানাডা  দ্বিতীয় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দেশ। এই দেশের আয়োতন ৯.৯৮ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার আর জনসংখ্যা ৩,৭৯,৭১,০২০ জন। এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা ফ্রেঞ্চ ও ইংরেজী এবং মুদ্রা কানাডিয়ান ডলার। এই দেশের জিডিপি $১.৮১২ ট্রিলিয়ন আর পার কাপিটা জিডিপি হল ৪৯,৯৩১ ডলার। এই দেশের রাজধানী অটোয়া আর সর্ববৃহৎ শহর টরেন্টো। এই দেশ মূলত শীত প্রধান।

Niagra Waterfall Canada
Image Source: pixabay.com

কানাডায় পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

কানাডায় পরাশুনা করতে কমপক্ষে ৭০% নম্বরের প্রয়োজন পড়বে। কানাডায় ব্যাচেলর করতে আপনার HSC এ ভালো মার্ক্স ও IELTS এ ৬.০ কিন্তু কোন সাব-সেকশনে ৫.৫ এর নিচে পেলে চলবে না। আবার আপনি যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে চান, তাহলে ব্যাচেলরে আপনার ৭০% নম্বরের বেশি থাকতে হবে, IELTS এ থাকতে হবে ৬.৫, কিন্ত কোন সাব-সেকশনে ৬.০ এর নিচে নয়। ব্যাচেলরে অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ GRE / GMAT চাইতে পারে। কিন্তু স্কলারশিপ পেতে গেলে আপনার GRE/ GMAT থাকাটা আবশ্যকীয়। পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে মাস্টার্স থাকতে হবে এবং অন্যান্য যোগ্যতা মাস্টার্স করতে গেলে যেসব যোগ্যতা লাগে তার সমতুল্য।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

বিশ্বে অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় এই কানাডায় অবস্থিত। তাইতো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে, প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ লোক বিদ্যার্জনের আশায় পাড়ি জমায় কানাডায়। কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

সেরা  টি বিশ্ববিদ্যালয়

১) University of Toronto

২) Mcgill University

৩) University of British Columbia

৪) Mcmaster University

৫) University of Alberta

৬) University of Waterloo

মধ্যম সারির বিশ্ববিদ্যালয়

৭) Ottawa University

৮) University of Western Ontario

৯) York University

১০) University of Montreal

১১) Dalhousie University

১২) Carleton University

১৩) Queens University

১৪) Simon Fraser University

১৫) University of Manitoba

১৬) University of Victoria

১৭) Memorial University

১৮) University of Saskatchewan

আবেদন করার সময় অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও র‍্যাঙ্কিং বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। অনেক সময় ওয়েবসাইটে কিছু Misleading তথ্য দেওয়া থাকে- যা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে। অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে অনেক টাকা খুইয়ে ফেলেন। তাই, সবসময় বিভিন্ন সোর্স থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে জানার চেষ্টা করা উচিত। আর গুগল সার্চতো আছেই।

এই দেশে পড়াশুনার মাধ্যম ইংরেজী ও ফ্রেঞ্চ। তবে আবেদনের সময় অবশ্যই আপনাকে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে আপনি কোন মাধ্যমে পড়তে চান।

University in Canada
Image Source: Internet

কানাডায় আপনি আপনার পছন্দের সকল কোর্সই পেয়ে যাবেন। কম্পিউটার সায়েন্স, বায়োলজি, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ফুড সায়েন্স, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড রিসোর্সেস, ইলেকট্রনিক্স, মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস, মেরিন অ্যাফেয়ার্স, এগ্রিকালচার, ইকোনোমিক্স, অ্যাপ্লায়েড কম্পিউটার সায়েন্স, ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাসট্রোনমি, অ্যাপ্লায়েড জিওগ্রাফি, আর্কিটেকচারাল সায়েন্স, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, এডুকেশন, হোম ইকোনোমিক্স, মিউজিক, ফিলোসফি, হিস্ট্রি অ্যান্ড রিলিজিওন, ইংলিশ, ল, থিয়েটারসহ আন্ডার র্গ্যাজুয়েট পর্যায়ে প্রায় দশ হাজার বিষয় এবং পোস্ট র্গ্যাজুয়েট পর্যায়ে প্রায় তিন হাজার বিষয় পড়তে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

কানাডায় ভর্তির জন্য প্রথমেই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং আবেদন ফি জমা দিতে হবে। আবেদন ফি জমা না দেওয়া পর্যন্ত আবেদন প্রসেস শুরু হবে না। কান্ডায় আপনি ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি সকল ধরণের প্রোগ্রামে যাবার সুযোগ আছে। কানাডায় মাস্টার্স কোর্স দুই ধরণেরঃ কোর্স-বেজড ও থিসিস-বেজড। কোর্স বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে সাধারণত স্কলারশিপ পাওয়া যায় না। তবে থিসিস-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে আপনার ফান্ড বা স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ আছে। থিসিস-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে অবশ্যই প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলে নিতে হবে। এই প্রফেসর খোঁজা বেশ জটিল ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া। কারণ আপনাকে প্রফেসরদের খুঁজে তাদের রিসার্চ এরিয়া-ভিত্তিক নিজের পোর্ট-ফোলিও সাজিয়ে তাকে ইমেইল করতে হবে এবং তাকে কনভিন্স করতে হবে। প্রফেসররা সাধারণত স্কাইপি, অথবা অন্য মিডিয়ামে আপনার ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। কানাডায় প্রফেসর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি আপনাকে রিকমেন্ডেশন করলে, বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি আপনাকে ভর্তির বিষয়ে অনেক সহায়তা করে থাকে আর স্কলারশিপ পেতে আর কোন বাধা থাকে না। অনেক সময় প্রফেসর তার কাছে বরাদ্দ রিসার্চ ফান্ড থেকে আপনাকে RA (Research Assistant) পোস্ট অফার করে থাকে অথবা আপনাকে TA (Teacher’s Assistant) অফার করে কোর্স ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

কানাডায় বছরে তিনটি সেমিস্টার থাকে, যথাঃ Winter সেমিস্টার, Summer সেমিস্টার ও Fall সেমিস্টার। Winter সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আর Summer সেমিস্টার মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মূলত Fall Semester এ International Student ভর্তি কয়া হয়ে থাকে এবং এই সময়েই বেশি স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে। Fall Semester এর ব্যাপ্তি সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর- আর ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় মার্চ-এপ্রিল থেকে আর ডেডলাইন থাকে জুন মাসে। মনে রাখবেন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সীমা আলাদা। তাই আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে দেখে নেওয়া উচিত আর কোন বিভ্রান্তি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন আফিসে যোগাযোগ করা উচিত।

নিচে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিয়া দেওয়া হলঃ

১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৩। Statement of Purpose (SOP)

৪। পাসপোর্টের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৫। রেফারেন্স লেটার- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার সম্পর্কে ভালো রিমার্ক্স থাকতে হবে।

৬। IELTS এবং প্রয়োজনে GRE/GMAT

৭। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র

সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে আপনার ভর্তি কার্যক্রম নিশ্চিত করে। তাই হাতে ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করা উচিত। মনে রাখবেন, আপনার পড়াশুনার মাঝে গ্যাপ ২ বছরের বেশি হলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

Niagra Waterfall Canada
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

কানাডায় ব্যাচেলর প্রোগ্রামে আপনার খরচ হবে প্রতি বছর ১৪,০০০ থেকে ২৭,০০০ কানাডিয়ান ডলার। মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রতি বছর ১৬,০০০ থেকে ২০,০০০ কানাডিয়ান ডলার খরচ হবে।

কানাডায় ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। কানাডায় ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়।

ভেনিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ: কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এমন শিক্ষার্থীদের কাছে সর্বাধিক জনপ্রিয় বৃত্তি এটি। কানাডার সরকার এই বৃত্তি দিয়ে থাকে।বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে বছরে ৫০ হাজার কানাডীয় ডলার দেওয়া হয়। মেয়াদ তিন বছর।

আইডিআরসি ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড: এই বৃত্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পায়। প্রতিবছরই এই বৃত্তি প্রদান করা হয়।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

কানাডায় পড়ালেখার জন্য শক্ত পৃষ্ঠপোষক দেখাতে হয়। শিক্ষার্থীকে তাঁর পৃষ্ঠপোষকের ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক হিসাব দেখাতে হবে এবং এই টাকা ন্যূনতম ৬ মাস থেকে এক বছর ব্যাংকে থাকতে হবে।

যদি স্পন্সর (মা অথবা বাবা) থাকে, তাহলে তার ট্যাক্সের কাগজ-পত্র ও ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ভিসা পেতে আপনাকে দ্বারস্থ হতে হবে ঢাকায় অবস্থিত কানাডিয়ান এম্বেসী-এর। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত অফার লেটার ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সমেত আবেদন করতে হবে ভিসার জন্য।

নিচে কাগজপত্রের জন্য প্রয়োজনীয় তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট

সব কিছু ঠিকমত রুল অনুযায়ী জমা দিতে হবে। ছোট খাট ভুলের জন্যই ভিসা রিজেক্ট হয়।

University in Canada
Image Source: Internet

কানাডিয়ান হাই কমিশনের ঠিকানা:

High Commission of Canada

United Nations Road, Baridhara, Dhaka-1212, Bangladesh

Telephone: +880 2 988 7091 to 988 7097

Fax: +880 2 882 3043  +880 2 882 6585

Email: [email protected] | www.vfs-canada.com.bd

ইমিগ্রেশন এ্যাণ্ড সেটেলমেন্ট টিমের ভলান্টিয়ারগণ বিনামূল্যে তাদের ওয়েবসাইট এবং ফোরামের মাধ্যমে কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা এবং ইমিগ্রেশনের সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। আপনিও চাইলে তাদের ওয়েবসাইট এবং ফোরাম থেকে ঘুরে আসতে পারেন:

ওয়েবসাইট:  http://immigrationandsettlement.org/Home/Index

ফোরাম: http://forum.immigrationandsettlement.org/

কানাডায় আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

কানাডায় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের ৬ মাস হোস্টেলে থাকা বাধ্যতামূলক। এখানে থাকা বাবদ প্রতি ৪ মাসের জন্য দিতে হয় ৪,০০০ থেকে ৭,০০০ কানাডিয়ান ডলার। কিন্তু বাইরে আপনি খুব কম খরচে রুম পেয়ে যাবেন। বাইরে থাকা- খাওয়া আপনি প্রতি মাসে ৬০০ – ৮০০ কানাডিয়ান ডলারে মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে এই খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন শহরে আছেন আর কিভাবে জীবন যাপন করছেন।

পার্ট টাইম জব এর সুযোগ

কানাডায় পার্ট টাইম জবের সুযোগ রয়েছে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা। ব্যাচেলর স্টুডেন্টদের প্রথম ১ বছর জব করার সুযোগ থাকে। না তবে ব্যাচেলরের স্টুডেন্টগণ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে TA, RA, Office Assistance- হিসেবে জব করতে পারে। কিন্তু মূলত এই জবগুলো মাস্টার্স বা পিএইচডি-এর শিক্ষার্থীদের অফার করা হয়।

এ ছাড়াও অফ ক্যাম্পাস ওয়ার্ক পারমিট-এর সুবিধা আছে। এই সুবিধা পেতে অবশ্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। ৬ মাস ফুল টাইম পড়া শুনার পরে আপনি এপ্লাই করতে পারবেন, কিন্তু কাগজ যোগাড় করতে সময় লাগায় মোট ৭-৮ মাস লেগে যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ-কে সন্দেহজনক দেশ-এর তালিকায় যুক্ত করায় প্রসেসিং সময় ১৫ দিনের বদলে কমপক্ষে ৩ মাস লাগে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে কাজ করার পারমিশন এর জন্য।এর আগে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করা অবৈধ। তার আগে এবং পরে অন ক্যাম্পাসে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন যা পাওয়ার সম্ভাবনা শুরুর দিকে খুবই ক্ষীণ। অফ/অন ক্যাম্পাস কাজ করে থাকা খাওয়ার খরচ তোলা সম্ভব হলেও টিউশন ফী দেওয়া সম্ভব না।

Students in Canada
Image Source: pixabay.com

স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

পড়াশুনা শেষ করে শিক্ষার্থীরা ১-৩ বছরের ওয়ার্কপারমিট পান এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে আবেদন করতে পারেন। কানাডার প্রভিন্সগুলোর মধ্যে সাসকাচুয়ান, ম্যানিটোবা, নিউ ফাউণ্ডল্যান্ড এ্যাণ্ড ল্যাব্রাডরে শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে আবাসনের সুযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে অন্টারিও প্রভিন্সের মাস্টার্স প্রোগ্রাম কমপ্লিট করার পরেও একজন শিক্ষার্থী স্থায়ীভাবে থেকে যাবার জন্যে আবেদন করতে পারেন। সম্প্রতি রুরাল এ্যাণ্ড নর্দার্ন পাইলট প্রোগ্রামটিও শিক্ষার্থীদেরকে আশার আলো দেখাচ্ছে।

কিছু প্রয়োজনীয় সাইট-এর এড্রেস

১। http://www.ouac.on.ca – এটি অন্টারিওর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির অনলাইন সাইট। এটার মাধ্যমে এপ্লাই করতে পারেন অথবা সরাসরি এপ্লাই করতে পারেন। এটা নির্ভরযোগ্য। খরচ একটু বেশী- কিন্তু টাকা কোথায় ঢাললেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা এবং অনলাইনে আপনার ভর্তির স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। এপ্লাই করার পর এই সাইট নিয়মিত চেক করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ: সঠিক ফরম পূরণ করবেন।

২। http://www.aucc.ca/index_e.html – কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাইট। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন। কিন্তু সব সঠিক নয় (কিছুটা এদিক সেদিক)।

৩। http://oraweb.aucc.ca/dcu_e.html – প্রোগ্রাম অনুসারে সার্চ করে, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি লিস্ট বানাতে পারেন।

৪। http://cic.gc.ca/english/study/index.asp  – সরকারী সাইট- এখানে স্টাডি পারমিট এবোং পড়াশুনা বিষয়ক সব ধরণের ফর্ম এবং সরকারী সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।

৫। http://www.studyincanada.com/english/index.asp – আরেকটি উপকারী সাইট।

Life in Australia
Image Source: pexels.com

অপার সম্ভবনার দেশ কানাডা। আপনার নিজের সম্ভবনা তৈরীর জন্য কানাডায় পাড়ি জমাতে পারেন। শুভ কামনা রইলো আমাদের পক্ষ থেকে।

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

নিজেই করুণ নিজের আবেদনের আজকের পর্ব সাজানো হয়েছে বিশ্বের অন্যতম এক ধনী দেশকে নিয়ে, যে দেশ উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত এবং ১৯২১ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। আমার আশা অনেকেই বুঝতে পেরেছেন আজ  আমরা কথা বলবো আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা নিয়ে। তাহলে আর দেরী না করে শুরু করে দেই আজকের আলোচনা আর আপনারাও তৈরি হয়ে যান আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য – নিজেরাই করে ফেলুন নিজের আবেদন।

কেন আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ আয়ারল্যান্ড। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী এখন পাড়ি জমাচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে। আয়ারল্যান্ড দেশটির অফিসিয়াল নাম “রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড” আর অফিসিয়াল ভাষা আইরিশ ও ইংরেজী। এই দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী হল ডাবলিন। ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির উৎকর্ষে অবস্থিত এই দেশে মুদ্রা ইউরো। এই দেশ মূলত শীত প্রধান এবং এই দেশের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আয়ারল্যান্ডের আয়তন ৭০,২৭৩ বর্গকিঃমিঃ আর  লোকসংখ্যা ৪৭,৫৭,৯৭৬ জন। এই দেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ৬৯,০০০ মার্কিন ডলার। তবে আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, আয়ারল্যান্ড সেঞ্জেনভুক্ত দেশ নয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষার আশায় চলে আসছে আয়ারল্যান্ডে।

এই দেশের অন্যতম অফিসিয়াল ভাষা ইংরেজী হওয়ায় অনেক কোর্স রয়েছে ইংরেজী ভাষায়। এই দেশে ব্যাচেলর ডিগ্রি সাধারণত ৩ – ৪ বছরের হয়ে থাকে, মাস্টার্স ১.৫ – ২ বছর এবং ডক্টরেট ৩-৪ বছরের হয়ে থাকে। তাই আপনার জন্যও হতে পারে এই দেশ বিদ্যাশিক্ষার অন্যন্য স্থান।

Study in Ireland
Image Source: internet

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জনপ্রিয় কিছু কোর্স –

অ্যাকাউন্টিং, অ্যাগ্রিকালচার, অ্যানাটমি, অ্যাপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স, আর্কিটেকচার, ডিজাইন, আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, অডিও ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং, এভিয়েশন স্টাডিজ, ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স, বায়োমেডিকেল সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, সিরামিকস, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া, ডান্স, ড্রামা, ই-কর্মাস, ইকোনমিকস, একাউনট্যান্সি, এবরোজিনাল এন্ড ইনডিজিনাস স্টাডি, অলটারনেটিভ মেডিসিন, এনথ্রপলজি, অ্যাপায়েড ম্যাথমেটিকস, একুয়াকালচার, কেমিষ্ট্রি, এনভায়রোনমেন্টাল স্টাডিজ, বিজনেস এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করা যায়।

কয়েকটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

১. ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি (www.dcu.ie )
২. ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অ্যায়ারল্যান্ড (www.nuigalway.ie )
৩. ট্রিনিটি কলেজ, ডাবলিন (www.tcd.ie )
৪. ইউনিভার্সিটি কলেজ, ডাবলিন (www.ucd.ie )
৫. রকওয়েল কলেজ (www.rockwellcollege.ie )
৬. গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি (www.gcd.ie )
৭. অ্যাথোলেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (www.ait.ie )

Study in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

আয়ারল্যান্ডে বছরে দুইটি সেমিস্টার পড়ানো হয়। একটি ফল সেমিস্টার অপরটি স্প্রিং সেমিস্টার। ফল সেমিস্টার চলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আর স্প্রিং সেমিস্টার চলে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত।

ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যদি এই দেশে পড়তে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১২ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ এইচএসসি পাস হতে হবে। আর আপনাকে IELTS-এ ৫.৫ থেকে ৬.০ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ বা IBTতে ৭৯ থেকে ৮০ পয়েন্ট হতে হবে। অন্যদিকে, আপনি যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ, আপনাকে শেষ করতে হবে ব্যাচেলর ডিগ্রী। এবং আপনাকে IELTS-এ ৬.০ থেকে ৬.৫ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ থেকে ২৩৭ বা IBT-তে ৭৯ থেকে ৯৩ পয়েন্ট থাকতে হবে। আপনার GRE/GMAT প্রয়োজন হবে কি না সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন তার উপর।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সাধারণত ফল সেমিস্টারে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয় আয়ারল্যান্ডে। স্প্রিং সেমিস্টারে কোন কোন কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অল্প পরিমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। আবেদন করতে আপনাকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভর্তি শাখা’ বরাবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

ইউনিভার্সিটিতে আবেদনের জন্য ডকুমেন্টস চেকলিস্টঃ

১। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস ও মার্কশীট

২। পাসপোর্ট/জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি

৩।  অ্যাপ্লিকেশন ফরম

৪। আইইএলটিএস এর সার্টিফিকেট

৫। এপ্লিকেশন ফি পরিশোধের প্রমাণ কপি

University in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি বিভিন্ন রকমের। সাধারণত এই ফি ৪৫ থেকে ৯০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবেদন করার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন যাচাই বাছাই করে এবং যোগ্য শিক্ষার্থীদের আয়ারল্যান্ডে পড়াশুনা করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনকে যথার্থ মনে করলে তারা সরাসরি আপনাকে Offer Letter পাঠিয়ে দিতে দেরি করবে না।

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর ডিগ্রির ক্ষেত্রে বছরে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ১৫০ ইউরো এবং মাস্টার ডিগ্রির ক্ষেত্রে সাত হাজার ৪০০ থেকে ১৫ হাজার ৭২০ ইউরো টিউশন ফি লাগে। তবে কলেজে পড়াশোনা করতে প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ কম হয়। প্রতি মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ ইউরো দিয়েই অনায়াসে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ মেটাতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। আয়ারল্যান্ডে ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়। এই দেশে প্রায় ১০০ এর মত বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে।

নিচের লিঙ্কে স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেনঃ
http://www.educationinireland.com/en/How-Do-I-Apply-/Tuition-Costs-Scholarships/Scholarships/

আয়ারল্যান্ডে আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা। এই আবাসন ব্যবস্থা অনেক উন্নত। কিন্তু, বাইরের শেয়ারড এপার্টমেন্ট থেকে এই আবাসন ব্যবস্থা কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকে।  জীবনযাত্রার খরচ হিসাব করতে বসলে, আয়ারল্যান্ড অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির অনুরূপ- বেশ খানিকটা ব্যয়বহুল। তবে, আপনি যদি বড় শহরে বাস করেন, তবে আপনার খরচ বেশি হবে। অন্যদিকে,  আপনি ছোট শহরে বসবাস করেন তাহলে ব্যয় বেশ খানিকটা কমে যাবে। এই দেশে আপনাকে প্রতিমাসে জীবন ধারণের জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ ইউরো খরচ করতে হতে পারে। আর শিক্ষার্থীদের জন্য অন্য একটি ব্যয় হলে স্বাস্থ্যবীমা।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

আয়ারল্যান্ডে ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে প্রায় ১০,০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবে। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

Students in Ireland
Image Source: internet

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

আয়ারল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার ভর্তি নিশ্চিত হবার পর আপনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবেন একটি Offer Letter. এই Offer Letter পাবার পর আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। তাই আপনাকে যোগাযোগ করতে হবে দিল্লীস্থ আয়ারল্যান্ড এম্বেসীর সাথে।

দিল্লীস্থ আইরিশ এম্বেসীর ঠিকানা নিম্নে দেওয়া হলঃ

230 Jor Bagh, New Delhi-110003, India

For Visa: +91-11 462671

আপনি ফোন করে তাদের সাথে যাবতীয় সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়া আপনি অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন নিচের ওয়েব লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

https://www.dfa.ie/irish-embassy/india/contact-us/

এবং এই পিডিএফ ফাইলটা  ভিসার যাবতীয় তথ্যের জনঃ
http://www.vfsglobalirelandvisa.com/india/pdf/bangladesh_271115.pdf

ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য ও ডকুমেন্টসঃ 

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Pages/Study

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Student%20Finances.pdf/Files/Student%20Finances.pdf

নিচে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।  সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫।  No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট ইত্যাদি

Life in Ireland
Image Source: internet

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আয়ারল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন। আর আপনি সামারে সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন।  রেস্টুরেন্ট, দোকান, শপিং মলে কাজ করে ঘণ্টায় ৭ থেকে ১২ ইউরো পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।  আয়ারল্যান্ডে আপনি পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন কিন্তু এই পার্ট টাইম জব করে পুরো টিউশন ফি জোগাড় করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।

আর ৫ বছর আয়ারল্যান্ডে বৈধভাবে বসবাস করলে আপনি আবেদন করতে পারবেন PR এর জন্য।

আয়ারল্যান্ড ইউরোপের পশ্চিম উপকূলের অন্যতম সুন্দর দেশ। আপনি এই দেশে অনেক সুবিধা পাবেন। হয়ত আয়ারল্যান্ড আপনার জন্য উন্মোচন করবে সুন্দর ভবিষ্যতের অনেক সম্ভবনা। তাই আজই  করুন নিজের আবেদন নিজেই- আর সেরে নিন আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা।

Life in Ireland
Image Source: internet

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

বিশ্ব এখন আপনার হাতের মুঠোয়। আপনি চাইলে ইন্টারনেটের এক ক্লিকে দেখছেন আপনার বিদেশী বন্ধুদের বা আত্মীয় স্বজনদের। শুধু কি তাই, আপনি চাইলেই পাড়ি জমাতে পারেন বিশ্বের যেকোন দেশে। আর যাদের ইচ্ছা বাইরের দেশের ডিগ্রী তাদের জন্য বিশ্ব আজ উন্মুক্ত। যে কোন দেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপ অনেকের প্রিয় ডেস্টিনেশন। আর ইউরোপের মনোরম দেশ আস্ট্রিয়া, সে তো অনেকেরই স্বপ্নের স্থান। এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরবো আস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষা লাভের কিছু কার্যকরী গাইডলাইন।

অস্ট্রিয়া দেশ হিসেবে যেমন

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আস্ট্রিয়া। ভিয়েনা রাজধানী আর ইউরো মুদ্রা বিশিষ্ট আস্ট্রিয়ার ভাষা জার্মান/ডয়েচ। ৪৭৮ বিলিয়ন ডলার (২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী) জিডিপি-এর এই দেশে প্রায় ৮৯ লক্ষ জনগণ বসবাস করে এবং আস্ট্রিয়ার আয়তন ৮৩,৮৭৯ বর্গ কিলোমিটার। আর্থিক মাথাপিছু আয়ের হিসেব অনুযায়ী অস্ট্রিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি। দেশটির অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মানের দিক থেকেও অনেক উন্নত। শীতকালে এই দেশের তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি থেকে নীচে নেমে যায় (সেলসিয়াস স্কেল) আর গরম কালে তাপমাত্রা২০-২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে।

Hallstatt, Austria
Image Source: pixabay.com

যোগ্যতা যাচাই ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই

অস্ট্রিয়ায় ব্যাচেলর কোর্স সাধারণত জার্মান/ডয়েচ ভাষায় করতে হয়। ব্যাচেলর কোর্স এর জন্য জার্মান/ডয়েচ B2 লেভেল সম্পন্ন করতে হবে। ল্যাংগুয়েজ কোর্স আপনি বাংলাদেশেও করতে পারেন অথবা অস্ট্রিয়াতে ও করতে পারেন।  বাংলাদেশে সম্পন্ন না করলে প্রথম একবছর অস্ট্রিয়াতে জার্মান ভাষা পড়ার পরে ব্যাচেলর কোর্স করতে হবে।

অস্ট্রিয়ার প্রধান পড়াশুনার ভাষা জার্মান হলেও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজী ভাষায় কোর্সও রয়েছে। আপনি যদি ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যেতে চান তাহলে HSC + ১ বছর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে। সেই সাথে ন্যূনতম ৫০% মার্ক্স অর্জন করতে হবে। যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে চান, তাহলে ব্যাচেলর ডিগ্রী আর পিএইচডি প্রোগ্রামে যেতে মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে।

অস্ট্রিয়ায় মোট ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ২১টি এপ্লাইড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

  1. University of Vienna | http://www.univie.ac.at
  2. Vienna University of Technology | http://www.tuwien.ac.at
  3. Medical University of Vienna | http://www.mediuniwien.ac.at
  4. University of Graz | http://www.uni-graz.at
  5. Graz University of Technology | http://www.tugraz.at
  6. University of Innsbruck | http://www.uibk.ac.at
  7. Vienna University of Economics and Business | http://www.wu.ac.at/

ইউরোপের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। ১২০টির বেশি ডিগ্রি প্রোগ্রাম পড়ার সুযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২২টি ব্যাচেলর প্রোগ্রাম, ২৯টি মাস্টার্স প্রোগ্রাম, ৪৯টি ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম এবং ২৪টি টিচার অ্যাক্রিডিয়েশন প্রোগ্রাম ছাড়াও ৮০টি ক্ষেত্রে ডক্টরাল প্রোগ্রাম পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।

 

কোর্স খুঁজতে নিম্মোক্ত ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন-

http://www.studienwahl.at/Content.Node/homepage.en.php

TU Wien, Austria
Image Source: Internet

ভাষাগত যোগ্যতা

অস্ট্রিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারনত জার্মান ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়। যদি আপনি জার্মান ভাষায় পড়াশুনা করতে চান, তাহলে আপনাকে জার্মান ভাষার B2 পরীক্ষায় পাশ করে আসতে হবে। আর আপনি চাইলে আস্ট্রিয়া গিয়েও এই কোর্স করতে পারবেন। সরকারী ইউনিভার্সিটিগুলোতে জার্মান ভাষা শিখতে প্রতি সেমিস্টার ৪৫০-৫০০ ইউরো এর মত লাগবে। তবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সেটা অনেক বেশি ( ১৫০০-২৫০০ ) ইউরো এর মত লাগবে।

 

ইউনিভার্সিটিতে ভ র্তির জন্য IELTS অত্যাবশ্যকীয় নয়, তবে ভিসা আবেদনের পূর্বে অবশ্যই IELTS স্কোর ৫.৫ থাকতে হবে। মাস্টার্স কোর্স ইংরাজি ও জার্মান ভাষাতে আছে। ইংরাজিতে পড়াশোনার জন্য IELTS ৬/৬.৫ থাকতে হবে।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

সকল একাডেমিক কাগজপত্র সত্যায়িত করতে হবে যথাক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অস্ট্রিয়ার এম্বেসী দ্বারা। মন্ত্রণালয় থেকে কাগজপত্র সত্যায়ত করার পর আপনি যখন এগুলো এম্বেসীতে জমা করবেন, এম্বেসী কনস্যুলেট সেগুলোকে VFS ঢাকা অফিসে পাঠাবে এবং এর ফি বাবদ ৪৩,১২০ টাকা থেকে ৪৭,০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। এরপর সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করার পর VFS সেটা পুনঃরায় এম্বেসীতে পাঠাবে এবং তারপর এম্বেসী কনস্যুলেট তা সত্যায়িত করবে।

অস্ট্রিয়ান কনস্যুলেটর, ঢাকা, বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইট ও ঠিকানা :

Austrian Honorary Consulate in Dhaka, Bangladesh –

Safura Tower, 5th Floor, 20 Kemal Ataturk Avenue,
Dhaka – 1213, Bangladesh
Phone (Local): (02) 986.1707, Internation: +880.2.986.1707
Email: [email protected]

ভিএফএস ঢাকা এর ঠিকানা –

Austria Visa Application Centre

4th Floor, Delta Life Tower, Plot 37, Road 90,
Gulshan North, Dhaka-1212, Bangladesh.

Submission schedule: 14:00 to 16:30 (Sunday -Thursday).
Passport retrieval schedule: 15:00 to 16:00(Sunday – Thursday).
Information: Sunday to Thursday 14:00 to 15:00 hours

ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া

অস্ট্রিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাধারণত দুই সেমিস্টার থাকে। প্রথমটি ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে আর পরেরটি মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকে। অস্ট্রিয়ার ভর্তি, অফার লেটার, ডকুমেন্ট এটাসটেশন, ভিসা- পুরো প্রসেস অনেক সময় সাপেক্ষ (৬ থেকে ১২ মাস)। তাই আগে ভাগেই কাজ শুরু করতে হবে।

ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের তালিকা নীচে দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। আইইএলটিএস (ন্যূনতম ৬.০) / জার্মান B2 সনদ

৪। এন আই ডি/পাসপোর্ট কপি

৫। মোটিভেশন লেটার/ সিভি/ রেফারেন্স লেটার

৬। কাজের অভিজ্ঞতা/ রিসার্স পেপার (যদি প্রয়োজন হয়)

Students in Austria
Image Source: Internet

বিনা বেতনে বা স্বল্প খরচে পড়ার সুযোগ

ইউরোপের যেসব দেশে স্বল্প খরচে পড়াশোনা করা যায় তার মধ্যে অস্ট্রিয়া অন্যতম। অস্ট্রিয়ার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার টিউশন ফি দিতে হয় না, তবে সেমিস্টার ফি ১৯ ইউরো দিতে হবে। তবে ভর্তির সময় রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ কিছু টাকা দিতে হবে। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু কোর্সের ক্ষেত্রে টিউশন ফি দিতে হয়, তবে তা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আবেদন করার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় – এর সাথে মেইল করে এর এডমিশন ও টিউশন ফি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়াই ভালো।

আর্থিক সচ্ছলতার প্রমান/ব্যাংক সলভেন্সি সনদ

ব্যাংক সলভেন্সির জন্য আপনার একাউন্টসে ৫৮৯৭.১৬ ইউরো (শিক্ষার্থী যদি ২৪ বছরের নীচে হয়) অথবা ১০৬৭৮.০৮ (শিক্ষার্থী যদি ২৪ বছরের বেশি হয়) ইউরো। আপনার স্পন্সর মা-বাবা-স্ত্রী থেকে যেকোন আত্মীয় হতে পারে। তবে মনে রাখবেন টাকার উৎস, ট্যাক্সের ডকুমেন্ট সকল কিছু ভিসার জন্য জমা দিতে হবে। স্পন্সর যদি আস্ট্রিয়ায় বসবাস করে তবে আরো ভালো। ভিসা পাওয়ার পর আপনি চাইলে এই টাকা তুলে ফেলতে পারবেন।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে এম্বেসী না থাকা ভিসার জন্য আপনাকে ইন্ডিয়াতে যেতে হবে। এজন্য প্রথমেই আপনাকে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। যে সকল কাগজপত্র জমা দিবেন তার মূল কপির সাথে ২ সেট ফটোকপিও নিয়ে যাবেন।

ডকুমেন্ট চেকলিস্টঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম ও সাথে সংযুক্ত পাসপোর্ট সাইজের ছবি (৩৫ মিমি x ৪৫ মিমি)

২। এপয়েন্টমেন্ট লেটার আর এপন্টমেন্ট নিতে ভিজিট করুনঃ

https://appointment.bmeia.gv.at/?Office=new-delhi
৩। পাসপোর্ট

৪।ইউনিভার্সিটি অফার লেটার

৫। সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত/ মোটিভিশন লেটার

৬। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৭। আইইএলটিএস বা জার্মান ভাষাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট

৮। টিউশন ফি পেমেন্ট-এর কপি

৯। ট্রাভেল হেলথ ইনস্যুরেন্স

১০। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কনসুলেট অফিস কর্তৃক সত্যায়িত)

১১। একোমোডেশ ন কনফার্মেশন লেটার

১২। বার্থ সার্টিফিকেট (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং কনসুলেট অফিস কর্তৃক সত্যায়িত)

১৩। জব এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট (মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য)

১৪। স্পন্সের এফিডেভিড পেপার

১৫। স্পন্সর যদি ব্যবসায়ী হয়, তাহলে

  • ৬-মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • ট্রেড লাইসেন্স
  • আপডেটেড TIN ও ট্যাক্স রিটার্ন পেপার

স্পন্সর চাকুরিজীবি হলে প্রয়োজন হবে

  • আই,ডি ও স্যালারী উল্লেখপূর্বক জব সার্টিফিকেট
  • জব আই,ডি কার্দের কপি
  • ৬-মাসের স্যালারী স্টেটমেন্ট

১৬। স্পন্সরের একাউন্ট থেকে এপ্লিকেন্টের একাউন্টে টাকা পাঠানোর পেমেন্ট প্রুফ

১৭। এপ্লিক্যান্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

Visa Application - Austria
Image Source: Internet

অস্ট্রিয়ান এম্বাসি নিউ দিল্লি এর ঠিকানাঃ

Austrian Embassy New Delhi

EP-13, Chandragupta Marg Chanakyapuri New Delhi 110 021 India

T: (+91/11) 2419 2700
F: (+91/11) 2688 6929
e-mail: new-delhi-ob(at)bmeia.gv.at

Opening hours: Mo – Th 08:30 – 17:00, Fr 09:00 – 15:00

জীবন যাত্রার ব্যয় এবং পার্ট টাইম জব

অস্ট্রিয়ায় থাকা খাওয়া বাবদ আপনার ৪০০ থেকে ৫০০ ইউরো প্রতি মাসে খরচ হবে।

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত আপনি এই দেশেও ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম চাকুরি করতে পারবেন। তবে সামারে ফুল টাইম জব করার সুযোগ রয়েছে। এখানে বিভিন্ন রেস্তোরা, শপিংমল, হোটেলে কাজ করতে পারবেন।  তবে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রিয়া যাওয়ার  সময় সাথে ৬-৮ মাসের খরচ নিয়ে যাওয়াই উত্তম। এছাড়া জার্মান ভাষা জানা থাকলে জব পাওয়ার সম্ভবনা একটু বেশি থাকে।

স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

স্থায়ীভাবে বাস করতে চাইলে নূন্যতম পাঁচ বছর বৈধভাবে একটানা বাস করার প্রমাণপত্র দেখিয়ে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির (পিআর) জন্য আবেদন করতে হবে।আর পড়াশুনা শেষে এক বছরের জব সার্চ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

Life in Austria
Image Source: pixabay.com

সুতরাং আস্ট্রিয়ায় পড়তে যেতে চাইলে আপনি এখন নিজেই করতে পারবেন নিজের আবেদন।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

নিশীথ সূর্যের দেশ নামে পরিচিত স্কান্ডিনেভিয়ান একটি দেশ নরওয়ে। ইউরোপের ৪ টি নর্ডিক দেশের মধ্য অন্যতম নরওয়ে বিশ্বের শান্তির সূচকে আছে এক নম্বরে। এদেশের জীবন যাত্রার খরচ একটু বেশি হলেও অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত নরওয়েতে রয়েছে ভবিষ্যত গড়ার অপার সম্ভবনা। কারণ, বিজ্ঞান- প্রযুক্তি-শিক্ষার দিক দিয়ে বিশ্বে এ দেশের জুড়ি মেলা ভার। এই দেশের রাজধানী অসলো, ভাষা নরওয়েজিয়ান আর মুদ্রা নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। আপনিও যদি উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান এই দেশে তাহলে এই পুরো লেখাটি আপনার জন্য।

Study in Norway
Image Source: Internet

নরওয়েতে পড়ার ন্যূনতম যোগ্যতা

নরওয়ে তে পড়ার জন্য অবশ্যই আপনার কিছু নূন্যতম যোগ্যতা থাকতে হবে। একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে আপনাকে ৬০% নম্বর পেতে হবে। আপনি যদি যেতে চান ব্যাচেলর ডিগ্রীর জন্য তাহলে আপনাকে HSC + ১ বছর বাংলাদেশি যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হবে। অন্যদিকে মাস্টার্স করতে আগ্রহী প্রার্থীদের অব্যশই ৩ বছরের ব্যাচেলর কোর্স কমপ্লিট থাকতে হবে। পক্ষান্তরে ২ বছরের মাস্টার্স কোর্স ম্যান্ডাটরি যদি আপনি PhD কোর্সে পড়তে যেতে চান।

নরওয়ে-তে আপনি পেয়ে যাবেন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে মোট ৯ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনে রয়েছে ১৫০টির মত কলেজ এবং ২ টি পাবলিক আর্টস ইন্সটিটিউট। নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

  1. University of Oslo
  2. Norwegian University of Science & Technology
  3. University of Bergen
  4. University of Stavanger
University of Oslo, Norway
Image Source: Internet

এদেশে চাইলেও আপনি নরওয়েজিয়ান বা ইংরেজ- যে কোন ভাষায় পড়াশুনা করতে পারেন। কিন্তু নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়তে গেলে এ ভাষায় ভালো দখল থাকতে হবে।

IELTS স্কোর

সাধারণত এ দেশে পড়তে আপনাকে IELTS এ তুলতে হবে কমপক্ষে ৬.০ স্কোর। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে তুলতে হবে ৬.৫ – তবেই আপনি Safe Zone এ থাকবেন।

আবেদনের সময়সীমা

সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে আবেদন পর্ব। যদিও এটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্নতা আনে, তাই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে গিয়ে সঠিক ভাবে তথ্য উপাত্ত ঘেটে দেখতে হবে।

কোর্স বাছাই

নরওয়েতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইংরেজী কোর্স অফার করা হয়। তাই, আপনি আগে থেকে দেশের জব মার্কেট, আর যদি নরওয়েতেই থাকতে চান তাহলে সে দেশের জব মার্কেট বুঝে সাবজেক্ট বাছাই করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

https://www.studyinnorway.no/

Students in Norway
Image Source: Internet

যেসব বিষয়ে পড়া যায়ঃ এডুকেশন, অডিওলজি, আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন, লাইব্রেরি সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, অকুপেশনাল থেরাপি প্রোগ্রাম, ফুড সায়েন্স, স্পেশালাইজড টিচার এডুকেশন, ফার্মাসি, ফিশারিজ, ফিজিওথেরাপি, হিউম্যানিটিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, জার্নালিজম, ল, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, অ্যাগ্রিকালচার সায়েন্স, মেরিটাইম সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, ডেনটিস্ট্রি, অর্থোপেডিকস, রেডিওলজি, ন্যাচারাল সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স, আর্কিটেকচার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস স্টাডিজ, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, সোশ্যাল ওয়ার্ক প্রোগ্রাম, নার্সিং, থিওলজি, ভেটেরিনারি মেডিসিন, ম্যাথমেটিকস, বিবিএ, এমবিএ ইত্যাদি।

ক্রেডিট ট্রান্সফার

ক্রেডিট ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মাবলী আছে। যেমনঃ অবশ্যই আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন তা গ্রেড- বি (Grade B) এর আওতায় থাকতে হবে। আপনি যদি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০% এর অধিক কোর্স সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে ক্রেডিট ট্রান্সফার আর সম্ভব নয়। আর অবশ্যই আপনাকে শেষ করা সকল কোর্সের কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে হবে।

সেমিস্টার ফি / টিউশন ফি

নরওয়েতে সাধারণত কোন টিউশন ফি লাগে না। তবে আপনাকে সেমিস্টার ফি দিতে হবে এবং তা হল প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা। তবে, কিছু প্রোগ্রাম বা কোর্সের ক্ষেত্রে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিউশন ফি নেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টারে ৫১-১০১ মার্কিন ডলার ফি খরচ হয়।

স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

বর্তমানে নরওয়েতে বাংলাদেশিদের জন্য কোন কোটা ভিত্তিক স্কলারশিপ নেই। তবে চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই- এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেক ধরণের স্কলারশিপ। আপনার সুবিদার্থে লিঙ্কটি দেওয়া হলঃ

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/find-available-scholarships-and-grants

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা স্কলারশিপ রয়েছে। যদি আপনি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে সব ধরণের খরচের জন্য থাকবে অর্থ বরাদ্দ।

বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্ত্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কাগজপত্রের ধরণও ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই আপনাকে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে তথ্য উপাত্ত ঘেটে আবেদন করতে হবে।

আপনার বোঝা ও জানার সুবিধার্থে নিচে কি কি ডকুমান্টেস জমা দিতে হবে তার একটি লিস্ট দেওয়া হলঃ

১। প্রথমে নির্দিষত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে- সেটা অনলাইন বা অফলাইন দুটোই হতে পারে। এটা পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল।

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট,

৩। IELTS সনদ

৪। পাসপোর্টের কপি (পাসপোর্টে কমপক্ষে ১ বছর মেয়াদ থাকতে হবে)

৫। মোটিভেশন লেটার (Motivation Letter)

৬। রিকমেন্ডেশন লেটার (Recommendation Letter)

৭। চাকুরীর অভিজ্ঞতার সনদ (যদি থাকে)

University of Oslo-Norway
Image Source: Internet
ব্যাংক সলভেন্সির সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উল্লেখ্য যে, অফার লেটার পাওয়ার পর আপনাকে ১,০৩,৯৫০ নরওয়েজিয়ান ক্রোনা নরওয়ের ব্যাংকে পাঠাতে হবে। অবশ্য, ব্যাংক ও কোন একাউন্টসে পাঠাতে হবে সেটা আপনাকে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিবে। চিন্তার কারণ নেই- নরওয়ে যাবার পর পরই আপনি চাইলে পুরো টাকা একবারে তুলে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। আর যদি আপনি ভিসা না পান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে পুরো টাকাটাই ফেরত পাঠিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে হয়ত ডলারের দাম বাড়া বা কমার কারণে হয়ত কিছু ক্ষতি হতে পারে। কাগজপত্র হার্ড কপি নাকি সফট কপি পাঠাতে হবে সেটাও নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। তাই, আগে ভাগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইল করে জেনে নিন সঠিক তথ্য। সকল ডকুমেন্টস সত্যায়িত হতে হবে। আর কোনটি যদি ইংরেজীতে না হয়, তাহলে ইংরেজীতে অনুবাদ করার পর নোটারী করে পাঠাতে হবে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

যদি আপনি এডমিশন পেয়ে যান, তাহলে টাকা জমা করা ও কাগজপত্র নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর পর কাজ হবে এম্বেসীতে ভিসার জন্য আবেদন করা। এজন্য যা যা প্রয়োজনঃ

১। স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিট এপ্লিকেশন

২। পাসপোর্টের কপি

৩। ভিসা ফি

৪। অফার লেটার

৫। মোটিভিশন লেটার

৬। IELTS সনদ

৭। Housing ডকুমেন্ট

৮। ব্যাংক স্টেটমেন্ট

Visa Application
Image Source: Internet

উল্লেখ্য, নরওয়েতে ভিসা এপ্লিকেশনের জন্য যে ইন্সুরেন্স লাগে, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়ে দেয়। সঠিক তথ্যের জন্য চেকলিস্ট এম্বেসী ওয়েবসাইটে দেখে নিতে হবে- সে জন্য নিচে একটি লিঙ্ক দেওয়ায় হলঃ

https://www.norway.no/en/bangladesh/

https://www.studyinnorway.no/study-in-norway/student-residence-permit

হাউজিং বা থাকার ব্যবস্থা

এক্ষেত্রে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না, কারণ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধা নিতে আপনাকে আবেদন করতে হবে কর্তৃপক্ষ বরাবর।

পার্ট টাইম জব এবং লিভিং এক্সপেন্স

নরওয়েতে থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলক ভাবে বেশি। এখানে প্রায় ৪০০-৮০০ ইউরো গুনতে হবে এই খাতে। এখানে, ক্যাফে, বার, সামার জব, সিজোনাল জব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর, হেলথ সেক্টর, ফিশিং সেক্টর, সোপ, ক্লিনার, ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং, এনজিও, সেলস, কল সেন্টার, ট্রাভেল, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে কাজ করে ঘণ্টায় ৭-২২ মার্কিন ডলার আয় করা যায়।

হ্যা- আপনি নরওয়েতে গিয়ে পার্ট টাইম জবের সুযোগ পাবেন- তবে সেটা সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি নয়। তবে সামার ভ্যাকেশনে আপনি চাইলে ফুল টাইম জব করতে পারবেন। নরওয়েজিয়ান ভাষা জানা না থাকলে জব পেতে খুব কষ্ট হবে। তাই দেশ ছাড়ার আগে নরওয়েজিয়ান ভাষা শিখে যাওয়াই উত্তম।

Life in Norway
Image Source: Internet

পারমানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট

একটানা ৩ বছরের বেশি সময় বৈধভাবে এ দেশে থাকলে আপনি পি,আর – এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মাস্টার্স শেষে ১ বছর আপনার সাবজেক্ট রিলেটেড জব করার পর আপনি পি,আর- এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাছাড়া, মাস্টার্সের পর আপনি পিএইচডি-তে এপ্লাই করেন তাহলেও আপনি পি,আর-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এদেশে পিএইচডি-কে জব হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

যদি প্রথম থেকে আপনার ইচ্ছা থাকে নরওয়েতে খুটি গাড়ার, তাহলে উচিত হবে প্রথম সপ্তাহ থেকেই নরওয়েজিয়ান ভাষা রপ্ত করা। এ দেশে আপনি চাইলে পরিবার নিয়েও আসতে পারেন- সে জন্য আপনাকে লিভিং কস্টের জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক সলভেন্সি দেখাতে হবে।

https://www.udi.no/en/want-to-apply/permanent-residence/

শান্তির এই দেশে আপনিও যেতে পারেন নিজের জ্ঞানের ক্ষুধা নিবৃত করতে। তাই ভাষা শিখে নিন আর প্রস্তুতি  নিন নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা লাভের অন্যতম পীঠস্থান হল সুইডেন। উন্নত জীবন, পড়াশুনা, এবং গবেষণার অপার সমাহার রয়েছে এই দেশটিতে। আর এসব কারণেই উচ্চ শিক্ষা পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সুইডেন।

সুইডেন ইউরোপের অন্যতম অত্যাধুনিক দেশ। এ দেশের মুদ্রার নাম ক্রোনা। এ দেশে শিক্ষার হার ৯৯%। শিক্ষার্থীদের এই পছন্দের ডেস্টিনেশন নিয়ে আপনাদের সামনে তথ্য উপাত্ত সহ আমরা আলোচনা করবো সুইডেনে উচ্চশিক্ষার সকল খুটি নাটি বিষয় সম্পর্কে।

Castel in Sweden
Image Source: pixabay.com

সুইডেনের একাডেমিক স্ট্রাকচার ও সেমিস্টার

সুইডেনের শিক্ষা ব্যবস্থা “National Standard of Academic Education” এর অন্তর্ভুক্ত। এখানে বিভিন্ন বিষয়ে প্রফেশনাল এডুকেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। এ দেশে অনার্স প্রোগ্রামে সুইডিশ ভাষা জানা থাকলে ভালো- তবে না জানা থাকলেও সমস্যা নেই, কারণ, এ দেশের Second Language হল ইংলিশ।

স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধিকাংশ কোর্স হল ইংরেজী মাধ্যমে অফার করা হয়। প্রায় ৬০০ এর বেশি কোর্স মাস্টার্স প্রোগ্রামে অফার করা হয় এবং সবগুলোই ইংরেজী মাধ্যমে অফার করা হয়।

সুইডেনে ব্যাচেলর প্রোগ্রাম ৩-৪ বছরের, মাস্টার্স প্রোগ্রাম ১-২ বছরের হয়ে থাকে। এদেশে ৬ মাসের ডিপ্লোমাসহ PhD, Post-Doctoral এর সুযোগ রয়েছে। আর আপনি যদি প্রশিক্ষণমূলক পড়াশুনা করতে চান তারও ব্যবস্থা রয়েছে এই দেশে। প্রশিক্ষণমূলক কোর্সসমূহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় “National Agency for Higher Vocational Education” এর মাধ্যমে।

Study in Sweden - Select University
Image Source: Internet

আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিস্ট এখানে সংযুক্ত করা হলঃ

  1. Uppsala University
  2. KTH Royal Institute of Technology
  3. Lund University
  4. University of Gothenburg
  5. Linkoping University
  6. Umea University
  7. Chalmers University of Technology
  8. Stockholm University

সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে দুইটি সেমিস্টার রয়েছে- স্প্রিং সেমিস্টার ও অটাম সেমিস্টার

(স্প্রিং সেমিস্টার (Spring Semester) শুরু হয় মধ্য জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত। এই সেমিস্টারে আবেদন করা শুরু হয় মে মাস থেকে।

(অটাম সেমিস্টার (Autumn Semester) শুরু হয় পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত আর এই সেমিস্টারের আবেদন শুরু হয় মধ্য অক্টোবর থেকে।

এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল স্প্রিং সেমিস্টারে শুধু শর্ট কোর্স (৬ মাস ) অফার করা হয়ে থাকে। তাই এই সেমিস্তারে এপ্লাই করলে সাধারণত আপনি ৬ মাসের ভিসা পাবেন। অন্য দিকে অটাম সেমিস্টারে সাধারণত অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আপনি মাত্র ১৩ মাসের ভিসা পাবেন- যদিও কোর্স ডিউরেশন ৩/ ৪ বছর অথবা ১/২ বছরের হয়ে থাকে। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই- আপনি চাইলে আবেদন করে সময় সীমা বাড়িয়ে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ হওয়ায়  আপনাকে হাতে সময় রেখে মাঠে নামতে হবে।

কোর্স বাছাই ও ভর্তি আবেদন পর্ব

সুইডেনে কেবল একটি ওয়েবসাইট দিয়ে সব বিশ্ববদ্যালয়ে আবেদন করা হয়। এর অন্য কোন উপায় নেই। আপনার সুবিধার্থে লিঙ্কটি নিচে দেওয়া হলঃ

https://www.universityadmissions.se/intl/start  

https://www.universityadmissions.se/intl/search

প্রথমে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার নিজের সঠিক তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় ও আপনার পছন্দের কোর্সটি বাছাই করতে হবে। মনে রাখবেন, একই তথ্য দিয়ে একাধিক একাউন্ট খুললে সবগুলো একাউন্ট ব্যান হয়ে যাবার সম্ভবনা থাকে। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব পোর্টাল ঘুরে কোর্স পছন্দ করে এই ওয়েব সাইটে সেটা সিলেক্ট করে দিতে পারবেন।

একটি সেমিস্টারে আপনি ৪ টির বেশি কোর্সে এপ্লাই করতে পারবেন না ।

Students in Sweden
Image Source: pixabay.com

ভর্তি আবেদন ফি ও কাগজপত্র পাঠানোর উপায়

প্রথমেই বলে রাখি, আবেদনের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ৯০০ ক্রোনা। মূলত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিন্ত আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড নাও থাকে তবে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমেও এই অর্থ পরিশোধ করা যাবে।

এখন আসি কি কি ডকুমেন্টস পাঠাতে হবে তার ফিরিস্তত নিয়ে। সাধারণত ব্যাচেলর এবং মাস্টার্সের মার্কশীট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সত্যায়িত করে হার্ড কপি পাঠাতে হবে। এটি আপনি সরকারি ডাক বিভাগ বা DHL এর মাধ্যমেও পাঠাতে পারবেন। আর IELTS স্কোর, মোটিভেশন লেটার (Motivation Letter), পাসপোর্টের কপি, এবং কিছু ক্ষেত্রে সিভি (CV) ইত্যাদির সফটকপি Upload করতে হবে। এই তথ্যগুলো কোর্সের ওয়েবসাইটে সঠিক ভাবে খুঁজে দেখতে হবে। ভুলে করলে একদমই চলবে না।

লিঙ্কঃ https://www.universityadmissions.se/en/All-you-need-to-know1/Applying-for-studies/Documenting-your-eligibility-for-studies/Instructions-for-Masters-applicants/Specific-requirements-for-my-country1/bangladesh/

সুইডিশ না ইংলিশঃ IELTS প্রয়োজন কি না?

IELTS ছাড়া আপনি ভর্তির আবেদন করতে পারবেন যদি আপনার Medium of Instruction হয় ইংরেজী। কিন্তু, মনে রাখবেন IELTS ছাড়া আবেদন করা গেলেও সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসা পাওয়ার সম্ভবনা কমে যাবে। তাই আমার ব্যক্তিগত মতামত, IELTS দিয়েই আবেদন করা উচিত। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য 6.0 আর মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য 6.5 স্কোর থাকলে ভালো হয়।

সেমিষ্টার টিউশন ফি ও মাসিক বসবাসের খরচ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে টিউশন ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে বছরে আনুমানিক প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,৪০,০০০ ক্রোনা টিউশন ফি দিতে হবে যদি আপনি সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়তে চান। এখানে খাওয়া থাকা বাবদ ৫০০০ – ৮০০০ ক্রোনা প্রয়োজন পড়ে প্রতি মাসে। তবে আপনি পার্ট টাইম জব করে সহজেই এই খরচ বহন করতে পারবেন।

Life in Sweden 01
Image Source: pixabay.com

আছে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

স্কলারশিপ সুইডেনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দেশে দুই ধরণের স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে- প্রথমটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং অপরটি দেওয়া হয় সুইডিশ সরকারের পক্ষ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপটি শুধু টিউশন ফি এর উপর দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি স্কলারশিপেরও সু্যোগ রয়েছে। এই সরকারি স্কলারশিপে টিউশিন ফি এর পাশাপাশি মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়ে থাকে। এটি SI স্কলারশিপ নামে পরিচিত।

নিচে SI স্কলারশিপের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

https://studyinsweden.se/scholarships

মনে রাখবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হবার পর এই স্কলারশিপের আবেদন করতে হয় এবং সাধারণত মার্চ মাস থেকে এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আর্থিক সচ্ছলতা বা ব্যাংক সলভেন্সি

আপনি যদি এক বছরের জন্য পড়তে চান, তাহলে আপনাকে ৮,১৯০ করে ১০ মাসের খরচ ব্যাংকে রাখতে হবে। আবার যদি দুই বছরের জন্য যান তাহলে আনুপাতিক হারে এই টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকবে। মনে রাখবেন এই অর্থ আপনার নামে ব্যাংকে রাখতে হবে আর ভিসা আবেদনের ৩ মাস আগ থেকে এই টাকা আপনার একাউন্টসে থাকতে হবে। এই ব্যাপারে আরো স্বচ্ছ ধারণা পেতে সুইডিশ এম্বেসীতে যোগাযোগ করতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তি নিশ্চিত হবার পর যদি স্কলারশিপ না পেয়ে থাকেন তবে টিউশন ফি জমা দিতে হবে। এরপর টিউশন ফি জমা দেওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

আপনার সুবিধার্থে চেকলিস্ট করে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার

২। টিউশন ফি-এর পেমেন্ট কপি বা স্কলারশিপের ডকুমেন্ট

৩। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৪। পাসপোর্টের কপি

৫। স্টাডি পারমিটের পূরণকৃত এপ্লিকেশন ফর্ম (ফ্যামিলি ডিটেল সহ)

৬। ভিসা ফি

Visa Application - Sweden
Image Source: pixabay.com

প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য এম্বেসী ওয়েবসাইট ভিসিট করুণ। মনে রাখবেন, খুটিনাটি বিষয়ের জন্য ভিসা রিজেক্ট হয়ে থাকে।

সকল কাগজপত্র জমা দিয়ে ইন্টারভিউ দিলে পেয়ে যাবেন সেই কাঙ্ক্ষিত ভিসা।

লিঙ্কঃ

http://www.swedenabroad.com/en-GB/Embassies/Dhaka

http://www.migrationsverket.se/English/Private-individuals/Moving-to-someone-in-Sweden.html

স্পাউস ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া

আপনি চাইলে পুরো পরিবার অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী- সন্তানাদিসহ সুইডেনে যেতে পারবেন। আর তাই সুইডেন শিক্ষার্থীদের কাছে এত জনপ্রিয়। এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক সলভেন্সির পরিমাণ বাড়াতে হবে।

নিচে একটা রাফ এস্টিমেট দেওয়া হলঃ

১। নিজের জন্য ব্যয়ঃ ১০ x ৮,১৯০ ক্রোনা / প্রতিবছর

২। স্পাউসের জন্য ব্যয়ঃ ১২ x ৩,৫০০ ক্রোনা / প্রতিবছর

৩। বাচ্চার জন্য ব্যয় (প্রতি জন): ১২ x ২১০০ ক্রোনা / প্রতিবছর

যোগ করার পর প্রাপ্ত অর্থ আপনার ব্যাংকে দেখাতে হবে। আশার কথা হল। স্ত্রী বা স্বামী একই সাথে জব করতে পারবেন। এরজন্য আপনার আলাদা কোন ভিসার দরকার হবে না।

ওয়ার্ক পারমিট এবং পার্ট টাইম জব

সুইডেনে পার্ট টাইম জবের কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। শিক্ষার্থীরা নিজের ইচ্ছা মত পার্ট টাইম জব করতে পারবে। এখানে বড় শহরগুলোতে খুব সহজেই পার্ট টাইম জব পাওয়া যায়। তবে ছোট শহরগুলতে সুযোগ একটু কম।

সুইডেনে ৩০ ক্রেডিট শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন। কাজ পাওয়ার পর আপনি ওয়ার্ক পারমিট প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে হবে। ফুল টাইম জবের সময় সীমা সাধারণত ৮-১০ ঘন্টা হয়ে থাকে। সুইডিশ ভাষা জানা না থাকলে কাজ পাওয়া একটু কঠিন হয়ে যায়। তাই, আমার অনুরোধ, সুইডেনে যাবার আগে অবশ্যই সুইডিশ ভাষার কোর্স করে যাবেন।

Life in Sweden
Image Source: pixabay.com

কোর্স শেষে চাকুরীর সুযোগ ও পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির সুযোগ

পড়াশুনা শেষে আপনি ৬ মাসের জন্য জব সার্চ ভিসা এপ্লাই করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিটে আবেদনের পর আপনি পেয়ে যাবেন ২ বছরের রেসিডেন্স পারমিট ও পরে আবার ২ বছর এই পারমিট বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

এই ৪ বছর পর আপনি পার্মানেন্ট রেসিডেন্সীর জন্য আবেদন করতে পারবেন।সুতরাং, আপনার যদি গন্তব্য হয় সুইডেন তাহলে আজই নেমে পড়ুন প্রস্তুতি নিতে।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

The Germany Academic Exchange Service যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ডাড স্কলারশিপ- যা একটি জার্মানভিত্তিক স্কলারশিপ। জার্মানীর অন্যতম প্রেস্টিজিয়াস স্কলারশিপ হল ডাড স্কলারশিপ। যারা উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান জার্মানী, তাদের জন্য ডাড একটি লোভনীয় স্কলারশিপ। মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপে আপনি ১০ থকে ১৪ মাস মেয়াদী মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে পারবেন বা এই সময়ের জন্য সার্বিক সহযোগিতা পাবেন। এটি প্রথম চালু হয় ১৯২৫ সালে আর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারে।

স্কলারশিপ এর নাম

ডাড (DAAD ) স্কলারশিপ

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

এই স্কলারশিপে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সের জন্য শিক্ষা সহায়তা পাওয়া যায়। নিচের লিস্টের ফিল্ডসগুলর বিভিন্ন সাবজেক্টের জন্য আপনি স্কলারশিপ আবেদন করতে পারবেনঃ

Economic Sciences/Business Administration/Political Economics, Development Cooperation, Engineering and Related Sciences, Mathematics, Regional and Urban Planning, Agricultural and Forest Sciences, Natural and Environmental Sciences, Medicine and Public Health, Social Sciences, Education and Law, Media Studies

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

জার্মানী। জার্মান সরকার (Deutscher Akademischer Austauschdienst (DAAD))

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

ডাড স্কলারশিপের আওতায় আপনি যা যা পাবেনঃ

১। টিউশন ফি ও পরীক্ষার ফি

২। মাসিক ভাতা (মাস্টার্স প্রোগ্রামে ৮৫০ ইউরো, পিএইচডি-র জন্য ১২০০ ইউরো)

৩। বিমান ভাড়া

৪। স্বাস্থ্যবীমা

৫। বিশেষ ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা

আবেদনের যোগ্যতা

ডাড স্কলারশিপের জন্য আপনার থাকতে হবে নিম্নোক্ত যোগ্যতাঃ

১। ন্যূনতম বি,এসসি ডিগ্রী থাকতে হবে।

২। কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ২ বছর।

৩। IELTS Score প্রয়োজন পড়বে ৬.৫। তবে বেশ কিছু প্রোগ্রামে আবেদন করতে Medium Instruction English থাকলেই চলবে। তাই অবশ্যই আবেদনের সময় জেনে নিতে হবে আসলে আপনার কি কি লাগছে।

৪। প্রার্থীকে উন্নয়নশীল দেশের হতে হবে।

চেষ্টা করবেন, আপনার স্টাডি গ্যাপ যেন ৬ বছরের বেশি না হয়। ৬ বছরের যত কম হবে, তত ভালো।

DAAD Scholar
Image Source: Internet

আবেদনের সময়সীমা

ডাড (DAAD) স্কলারশিপের বিভিন্ন ফিল্ডের বিভিন্ন সাবজেক্টের আবেদনের সময়সীমা বিভিন্ন। তাই আপনাকে সহযোগিতা নিতে হবে নিচের লিংকের, যার সাহায্যে জেনে নিতে পারবেন আপনাকে কখন আবেদন করতে হবে।

https://www.daad.de/en/

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

বিশ্বের অনেক দেশ সহ বাংলাদেশের জন্য এই স্কলারশিপ ওপেন আছে।

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রথমেই ডাডের অনুমোদিত কোর্সগুলো থেকে কোর্স নির্বাচন করে আপনাকে বেছে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর করে ফেলুন আপনার আবেদন। মনে রাখবেন আপনি সর্বোচ্চ তিনটি কোর্সে আবেদন করতে পারবেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করবে। আর তারাই আপনাকে ডাড স্কলারশিপে আবেদন করতে বলবেন। এরপর আপনি নিচের লিঙ্কে গিয়ে আবেদন করে ফেলুনঃ

https://www.mydaad.de/en/

ডাড স্কলারশিপের প্রোগ্রামের জন্য আপনাকে জমা দিতে হবেঃ

১। Online আবেদন ফর্ম

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট

৩। Euro Pas Formatted CV

৪। SOP

৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের offer Letter (যদি থাকেন, তাহলে আবেদনের সাথেই দিতে হবে)

৬। রিকমেন্ডেশন লেটার (২ টি) – সাইন ও সীল দিয়ে সীলড অবস্থায় দিতে হবে।

৭। Work Experience Certificate

৮। IELTS Certificate (যদি প্রয়োজন হয়)

৭। NID

৮। পাসপোর্টের কপি

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!