Loading...
November 23, 2022

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষা অর্জনের ডেস্টিনেশন হল ইংল্যান্ড, যাকে সাংবিধানিক ভাষায় বলা হয় United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland. সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে এই দেশের ইতিহাস বহু সমৃদ্ধ- বহু প্রাচীন। জ্ঞানের অন্যতম পীঠ হল এই দেশ। তাই তাবদ দুনিয়ার জ্ঞান পিপাসুরা ভিড় জমায় এই দেশে এসে। আর শিক্ষার্থীদের চাহিদার দিকে তাকিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের বিভিন্ন রকম প্রতরণার ফাঁদে ফেলছে। অনেকে আবার না বুঝে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে নাম-সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে। যখন তাদের ভুল তারা বুঝতে পারে, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি, ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত বিবরণ। তাই, যদি স্বপ্ন হয় ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা তাহলে আর দেরি না করে আর্টিকেলটা পড়ে দেখুন, বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন আর নিজেই করুন নিজের আবেদন।

কেন ইংল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইংল্যান্ড বিশ্বজুড়ে পড়াশুনা করার জন্য অন্যতম স্থান। প্রতি বছর এই পূন্যভূমিতে বিদ্যার্জনের জন্য পাড়ি দেয় প্রায় ৫,০০,০০০ জ্ঞানপিপাসু। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অফার করা হয় ৫০,০০০ এর বেশি কোর্স আর আছে ২৫ এর বেশি সাবজেক্ট এরিয়া। আর বিশ্বে চাকুরীদাতা থেকে শুরু করে সকল নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংল্যান্ডের ডিগ্রীর কদরও কম নয়। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ও নিজেকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার জন্য আপনার গন্তব্যও হতে পারে ইংল্যান্ড।

Study in England
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইংল্যান্ডে ৩-৪ বছরের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হতে প্রয়োজন পড়বে ১২ বছরের শিক্ষা জীবনের আর সাথে প্রয়োজন পড়বে IELTS স্কোর কমপক্ষে ৬.০ -৬.৫। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে পড়তে যেতে প্রয়োজন পড়বে ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন ও সাথে IELTS স্কোর ৬.৫ – ৭.০। এদেশে পড়াশুনা করতে আপনাকে আপনার একাডেমিক কোর্সে ৫০-৫৫ শতাংশের বেশি মার্ক্স অর্জন করে আসতে হবে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

ইংল্যান্ডে নানা ধরণের কোর্স অফার করা হয়। আর আপনি ডিপ্লোমা, কারিগরী কোর্স, ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পোস্ট গ্রাডুয়েট ডিপ্লোমা, পিএইচডি- সব ধরণের কোর্সের জন্য আসতে পারেন ইংল্যান্ডে। আপনি আপনার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বেছে নিবেন আপনার জন্য বেস্ট কোর্স। সাধারণত ইংল্যান্ডে Business School, Hospitality, Tourism and Hotel Management, Pure Science and Engineering, Education Science, Law ও Health & Medicine – এই সব স্কুলের কোর্সগুলো খুবই জনপ্রিয়। MBA, MSC, BBA, ACCOUNTING, MARKETING, HRM, ENGINEERING, LAW, IT, SOCIAL SCIENCE, PUBLIC HEALTH, PHARMACY, DIPLOMA সহ আরও নানা ধরনের বিষয়ে পড়াশুনা করতে পারবেন ।আপনি এই ইন্ডান্স্ট্রিতে অনেক জবও পাবেন। তাই, ভেবে দেখুন ও সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজের পছন্দের কোর্স বেছে নিন।

ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীকে প্রথমে ব্রিটিশ কাউন্সিলে যোগাযোগ করতে হয়।ইংল্যান্ডে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি তথ্য সম্ভার হিসেবে কাজ করে। ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ইংল্যান্ডের কোর্সগুলো ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে থাকে।

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্ত নেই। তবে যে বিশ্ববিদ্যালয়েই যান-না-কেন, সে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে আগে একটু অন-লাইন রিসার্চ করে নিতে ভুলবেন না। কারণ, অনেকেই ভুলে করে এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন, যাদের কোর্স অফার করার লিগাল অথরিটি নেই। World Ranking-এ আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেখে নিন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হল, খুঁজে দেখুন আর পছন্দ করে দেখুন আপনার জন্য প্রযোজ্য কোর্স কোনটি হবেঃ

  1. University of Oxford
  2. University of Cambridge
  3. Imperial College London
  4. UCL
  5. London School of Economics and Political Science
  6. University of Edinburgh
  7. King’s College London
  8. University of Manchester
  9. University of Warwick
  10. University of Bristol
University in England
Image Source: pexels.com

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ইংল্যান্ডে বছরে দুইটি সেশন আছেঃ

১। অটাম সেশন ও

২। স্প্রিং সেশন

অটাম সেশন শুরু হয় সাধারণত সেপ্টেম্বর – জানুয়ারি মাসে আর স্প্রিং সেশন শুরু হয় জানুয়ারি – জুন মাসে। ইংল্যান্ডে বিভিন্ন ধরণের ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট খুঁজে দেখলে আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পাবেন ভর্তির আবেদন পত্র, সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে করতে পারবেন আবেদন। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আবার দেয় অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ। আপনি যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন এডমিশন অফিসের সাথে- তারা আপনাকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে। ইংল্যান্ডে ভর্তির আবেদন বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার- প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়, সব কিছু প্রসেস করতে। তাই হাতে প্রায় ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

নিচে ইংল্যান্ডে আবেদনের জন্য মূল ডকুমেন্টসগুলোর তালিকা দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট- অবশ্যই ইংরেজীতে ও নোটারাইজ করে দিতে হবে।

২। IELTS এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে ইংল্যান্ডে পড়াশুনার ব্যয় অনেক কম-বেশি হয়। এই দেশে পড়াশুনার ব্যয় ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি মূলত ফাউন্ডেশন কোর্স বা প্রিলিমিনারি কোর্সে পড়তে প্রতি বছর খরচ হয় ৪,০০০-১২,০০০ পাউন্ড। কলা বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে অনুমানিক ৭,০০০ – ৯,০০০ পাউন্ড। আবার, বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে আপনার প্রয়োজন পড়বে ৭,০০০ – ১২,০০০ পাউন্ড। মেডিক্যাল বিষয়ে পড়তে সব জায়গায় খরচ একটু বেশিই হয়। সাধারণত মেডিক্যাল সাইন্সে আপনার খরচ ১০,০০০ – ২১,০০০ পাউন্ড। ইংল্যান্ডে বিজনেস স্কুল বেশ জনপ্রিয়। এখানে বিজনেস স্কুলে পড়তে প্রতি বছর ৪,০০০ পাউন্ড থেকে ৩০,০০০ পাউন্ড খরচ হবে।

Students in England
Image Source: pixabay.com

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বেশি হলেও এখানে অনেক ধরণের স্কলারশিপেরও সুযোগ আছে। সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েব সাইটেই পাবেন বিভিন্ন স্কলারশিপের খবরা-খবর।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ইংল্যান্ডে পড়তে আপনাকে টিউশন ফি ও লিভিং কস্ট বাবদ ব্যাংকে ১০,০০০ – ১৫,০০০ পাউন্ড দেখাতে হবে। এই পরিমাণ অর্থ আপনাকে কমপক্ষে ১ মাস আপনার একাউন্টসে আছে এমন দেখাতে হবে। তবে চিন্তা নেই- ভিসা পাওয়ার পর এই টাকা আপনি তুলে ফেলতে পারবেন। জার্মানীর মত ব্লক একাউন্টসে টাকা রাখতে হবে না আপনাকে।

ভিসার জন্য আবেদন

ইংল্যান্ডে ভিসার কাজ শেষ করতে ৩ থেকে ৩.৫ মাস সময় লাগে। তাই সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে।

ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা নামে কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। মূলত, স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, যেটাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলা হয়। এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি ইংল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

Visa Application - England
Image Source: Internet

এবার জেনে নিন ভিসা আবেদনর জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

২। CV, মোটিভেশন ও রেফারেন্স

৩। সকল মার্কশিট ও সনদ

৪। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৫।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ও টিউশন ফি প্রদানের রশিদ

৬। ব্যাংক সলভেন্সি পেপার

৭। পুলিশ ক্লিয়ারান্স ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টস

৮।IELTS এর কপি

৯। মেডিকেল চেক আপ রিপোর্ট

ইংল্যান্ডে থাকাকালীন আপনার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে তার প্রমাণপত্র হিসেবে যুক্ত করুন

১. ইংল্যান্ডের ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

২. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

৩. ব্যাংক ড্রাফট।

৪. এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।

৫. যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি।

৬. আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।

ইংল্যান্ডে পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ইংল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন আর ছুটিতে আপনি ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার আপনার সাথে আপনার স্পাউস থাকলে তিনিও কাজ করার সুযোগ পাবেন। বর্তমানে ইউকে গভারন্মেন্ট স্টুডেন্টদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে ।

ইংল্যান্ডে আপনি কোথায় বসবাস করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার দৈনন্দিন খরচ ও আবাসিক ব্যবস্থার জন্য কত খরচ হবে। আপনি চাইলে আবাসিক ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের খরচ ৪০০ – ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে মেটাতে পারবেন।আপনি কি মানের লাইফ লিড করতে চান তার উপর এটা ডিপেন্ড করে ।

Road in London
Image Source: pexels.com

ইংল্যান্ডে স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আর আপনি বৈধভাবে ৮ থেকে ১০ বছর থাকার পর PR এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে রাখি ইংল্যান্ড ২০২১ সাল থেকে তাদের PR সংক্রান্ত নীতিমালায় বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। যদি ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষার্থী পড়াশুন শেষ করেন, তাহলে তিনি ২ বছর মেয়াদী Post Study Work (PSW) ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। আর আপনি যদি কমপ্লিট করেন পিএইচডি, তাহলে আপনি ৩ বছর মেয়াদী PSW ভিসা। যদি দুর্ভাগ্যবশত এই ভিসার এই সময়ে যদি আপনি কোন জব ম্যানেজ করতে না পারেন, তাহলে আপনি আবার কোন কোর্সে পড়া শুরু করতে পারেন এবং ডবল ডিগ্রী অর্জন করতে পারেন। পরবর্তীতে আবার আপনি PSW ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে আপনি চাইলে, আপনার বেটার-হাফ (স্বামী/ স্ত্রী)- কে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারেন আর আগেই তো বলেই, আপনার স্পাউস এলে তিনি ফুল-টাইম জব করার সুযোগ পাবেন।

ইংল্যান্ড অপার সম্ভবনার দেশ। এই দেশে আপনি আপনার নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডে যেমন সম্ভবনা তৈরী হয়েছে, তেমনি প্রতারক চক্রও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই যাচাই বাছাই করে আবেদন করুন আর গড়ে তুলুন নিজের ভবিষ্যৎ।

City of London
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ আমেরিকা। বলা যেতে পারে, সব সম্ভবের দেশ হল আমেরিকা। আর রিসার্চ, পড়াশুনা, জ্ঞানচর্চার আর এরপর ভালো সুযোগ ও বেতনের চাকুরির জন্য সবচেয়ে ভালো ডেস্টিনেশন এখন আমেরিকা। আর বিশ্বের সকল দেশের একগুচ্ছ ভালো শিক্ষার্থী প্রতি বছর জড়ো হচ্ছে এই United Stated of America-এ আর গড়ে তুলছে নিজেরদের ভবিষ্যৎ। অন্যভাবে দেখলে বলা যায়, বিশ্বে পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আমেরিকা তৈরী করেছে অপার সুযোগ ও নিশ্চিত ভবিষ্যৎ- আর এই শক্তিশালী মেধাবীরাই গড়ে তুলেছে উন্নত আমেরিকা। বিশ্বের সব দেশের সব ভাষার শিক্ষার্থীদের আমেরিকা নিয়ে উৎসাহের কমতি নেই- আর সেই উৎসাহের ও উদ্দীপনার কথা মাথায় রেখে আজ আমরা আপনাদের তুলে ধরছি আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার বিষয়ে।

কেন আমেরিকায় পড়তে যাবেন?

জ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, আগে প্রাচ্য ছিল জ্ঞানের আধার। চীন, ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষ আসত জ্ঞান লাভের জন্য। কালের পরিক্রমায় আজ পাশ্চাত্যের আমেরিকা হয়েছে জ্ঞান ও বিজ্ঞানের আখড়া। শুধু আপনি জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করে আনন্দিত হবেন আমেরিকায় তাই নয়- পরবর্তীতে ভালো চাকুরী প্রাপ্তির সম্ভবনা ও সুযোগ সবটাই আছে এই দেশে। সাধারণ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা বাৎসরিক ৫০-৬০ হাজার ডলার রেমুনারেশন পেয়ে থাকে। আর ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এই দেশে আরো কিঞ্চিৎ বেশি। অনেক ক্ষেত্রে আপনার বাৎসরিক বেতন আরো বেশি হতে পারে। বুঝতেই পারছেন- এই দেশে টেকনিক্যাল বিষয়ে চাকুরীর সুযোগ অনেক অনেক বেশি ও সম্ভবনাময়।

Statue of Liberty
Image Source: pixabay.com

আমেরিকা ৫০ টি স্টেটস বা অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত যার আয়তন ৯৮,৩৩,৫২০ বর্গকিলোমিটার আর জনসংখ্যা ৩২৮ মিলিয়ন। এই দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডি,সি আর সবচেয়ে বড় শহর নিউ ইয়র্ক। অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ এই দেশের জিডিপি ২২.৩ ট্রিলিয়ন। আর আবহাওয়া এই দেশের অঞ্চলভেদে পরিবর্তন করে আর এই দেশের মধ্যেই আছে ৯টি স্টান্ডার্ড টাইম জোন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এই দেশ কতটা বড় আর কতটা বৈচিত্র্যময়।

আমেরিকায় পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

আপনি যদি অনার্স বা ব্যাচেলর পড়তে যেতে চান, তাহলে SAT বা ACT পরীক্ষায় বসতে হবে। এরপর আপনার পছন্দের কলেজ কিম্বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফর্ম ফিলাপ করে আবেদন করতে হবে। ব্যাচেলরে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলো মূলত তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে- কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে ভর্তি করে না। আর ব্যাচেলর কোর্সে প্রথম দুই বছর সব ডিসিপ্লিনে একই বিষয় পড়ানো হয়। তাই, কোন নির্দিষ্ট বিষয় না সিলেক্ট করেই আপনি প্রথম দুই বছর পার করে দিতে পারেন। পরবর্তীতে আপনি আপনার যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী, আপনার কোর্স বেছে নিতে পারবেন।  আর মাস্টার্স করতে গেলে আপনাকে GRE/ GMAT স্কোর প্রয়োজন পরবে। মাস্টার্সে গেলে আপনাকে আপনার ব্যাচেলরের ডিগ্রীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে কোন বিষয় নির্বাচন করে নিতে হবে। মাস্টার্সে দুইটি ক্যাটেগরী থাকেঃ কোর্স বেজড ও থিসিস বেজড।

আমেরিকায় পড়তে যাবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নূন্যতম রিকোয়ারমেন্ট থাকে GRE/GMAT আর  IELTS/TOEFL। অর্থাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার জন্য এই যোগ্যতা থাকতে হবে- মূলত এই স্কোর আপনার ভর্তি নিশ্চিত করে না। যদিও ভালো GRE/ GMAT স্কোর ভর্তির দৌড়ে আপনাকে এগিয়ে রাখবে। আমেরিকায় বিভিন্ন রেঞ্জের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে- আপনি আপনার সুবিধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পেয়ে যাবেন।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

আমেরিকায় আপনি পড়তে পাড়বেন যেকোন বিষয়। বিজ্ঞানের যে কোন শাখায়, ইঞ্জিনিয়ারিং-এর যেকোন অঙ্গনে, বিজনেস স্কুলের যেকোন অলি-গলি কিম্বা মেডিকেল টেকনোলজী বা সাইন্স সব বিষয়েই পড়তে পারবেন। তবে আমেরিকায় কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, ম্যাথ, বায়োলোজী, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, আইন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বা মূলত গবেষণামুলক বিষয়ে পড়তে বেশি উৎসাহিত করা হয়। প্রযুক্তিবিদ্যা ও এপ্লাইড সায়েন্সর কদর এই মুলুকে একটু বেশি।

কোন ইউনিভার্সিটি বেছে নেবেন? কেন বেছে নেবেন?এ ব্যাপারে কখন কিভাবে আগাবেন? ব্যাপারগুলো খুব কনফিউজিং বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একটু পরিচিত হয়ে গেলে সেটা সহজ হয়ে আসবে আপনার জন্য।

Harvard University USA
Image Source: Internet

কোন ইউনিভার্সিটি সেরা এটা একটা খুব সাধারন জিজ্ঞাসা। আর এই জিজ্ঞাসাকে সামনে রেখে ইউএসনিউজ প্রতিবছর একটা র‍্যাঙ্ক লিস্ট (https://www.usnews.com/best-graduate-schools) প্রকাশ করে। এই র‍্যাঙ্ক লিস্টকে মোটামুটি সবাই বেশ ভাল বলেই মেনে নেয়। এই র‌্যাঙ্কিং করার সময় ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকের কোয়ালিটি, তাদের মোট প্রকাশ করা পেপার, সেই পেপারগুলোর মান, ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের দেয়া আর্থিক সাহায্য এই সবকিছুকে বিবেচনা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটিতে পার্কিং সুবিধার মত অদরকারী বিষয়গুলোও বিবেচনা করা হয়, সেজন্য অনেকে এই র‌্যাঙ্কিং প্রথার বিরুদ্ধে মতামত দিয়ে থাকেন। এই র‍্যাঙ্ক লিস্টটা দেখতে হলে পয়সা দিতে হয়। তাই কেবল উপরের দিকের কয়েকটা ইউনিভার্সিটির নাম দেখা ছাড়া আর কিছুই করা যায় না এ দিয়ে।

 

আমেরিকায় বিশ্বমানের অনেক অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এই দেশে গড়ে উঠেছে বিশ্বের নামী দামী বিশ্ববিদ্যালয়। আপনি আপনার যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে নিজের আসন জোগাড় করে নিতে পারবেন এইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিচে আমেরিকার কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম তুলে ধরা হলঃ

১। Massachusetts Institute of Technology

২। Stanford University

৩। Harvard University

৪। California Institute of Technology

৫। University of Chicago

ফান্ড বা স্কলারশিপ এর সুযোগ

ফান্ড বা স্কলারশিপ পেতে গেলে আপনাকে থিসিস বেজড মাস্টার্স নির্বাচন করে প্রফেসর খুঁজে নিয়ে তার আন্ডারে রিসার্চ করার জন্য যেতে হবে।  আপনাকে প্রফেসরদের খুঁজে তাদের রিসার্চ এরিয়া-ভিত্তিক নিজের পোর্ট-ফোলিও সাজিয়ে তাকে মেইল করতে হবে এবং তাকে কনভিন্স করতে হবে। প্রফেসররা সাধারণত স্কাইপি, অথবা অন্য মিডিয়ামে আপনার ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। আমেরিকায় প্রফেসররা অনেক ক্ষমতার অধিকারী। তারা চাইলে আপনাকে ডিরেক্ট এডমিশন দিতে পারেন। প্রফেসর আপনাকে রিকমেন্ডেশন করলে, বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি আপনাকে ভর্তির বিষয়ে অনেক সহায়তা করে থাকে আর স্কলারশিপ পেতে আর কোন বাধা থাকে না। অনেক সময় প্রফেসর তার কাছে বরাদ্দ রিসার্চ ফান্ড থেকে আপনাকে RA (Research Assistant) পোস্ট অফার করে থাকে অথবা আপনাকে TA (Teacher’s Assistant) অফার করে কোর্স ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। অন্যদিকে পিএইচডি মাত্রই রিসার্চ বেজড। তাই রিসার্চ করার মন ও মানসিকতা নিয়েই আপনাকে পিএইচডি-তে এপ্লাই করতে হবে।

ভাষাগত দক্ষতা

ভাষাগত দক্ষতার জন্য আপনাকে বসতে হবে TOEFL অথবা IELTS পরীক্ষায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রিকোয়ারমেন্ট ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই আপনি আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান, সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির জন্য কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন পরবে দেখে নিন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তির জন্য TOEFL/ IELTS চায় না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় না চাইলেও এই পরীক্ষা দিয়ে রাখা ভালো- তাহলে ভিসা প্রাপ্তিতে সুবিধা হবে।

Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

আমেরিকায় ভর্তির জন্য প্রথমেই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং আবেদন ফি জমা দিতে হবে। আবেদন ফি জমা না দেওয়া পর্যন্ত আবেদন প্রসেস শুরু হবে না। আমেরিকায় আপনি ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি সকল ধরণের প্রোগ্রামে যাবার সুযোগ আছে।

আমেরিকায় বছরে তিনটি সেমিস্টার থাকে, যথাঃ Spring সেমিস্টার, Summer সেমিস্টার ও Fall সেমিস্টার। Spring সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত আর Summer সেমিস্টার মে থেকে জুলাই পর্যন্ত হয়ে থাকে। মূলত Fall Semester এ International Student ভর্তি কয়া হয়ে থাকে এবং এই সময়েই বেশি স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে। Fall Semester এর ব্যাপ্তি আগস্ট থেকে ডিসেম্বর। মনে রাখবেন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সীমা আলাদা। তাই আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে দেখে নেওয়া উচিত আর কোন বিভ্রান্তি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন আফিসে যোগাযোগ করা উচিত।

নিচে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিয়া দেওয়া হলঃ

১। সকল একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট [অবশ্যই ইংরেজীতে হতে হবে]

২। রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার সম্পর্কে ভালো কমেন্ট থাকতে হবে।

৩। Statement of Purpose (SOP)

৪। পাসপোর্টের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৫। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র

৬। TOEFL/IELTS এবং GRE/GMAT [For Post-Grad] বা SAT/ACT [For Under graduation]

আমেরিকার অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য রিকোমেন্ডেশন লেটার প্রয়োজন পরে- তাই আপনার সমন্ধে যিনি পজিটিভ লিখবেন সেরকম কোন স্বনামধন্য প্রফেসরের কাছ থেকে রিকোমেন্ডেশন লেটার নেওয়ার চেষ্টা করুন। রিকোমেন্ডেশন লেটার আপনার ভর্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অপর যে ডকুমেন্টসটি আপনার প্রয়োজন পরবে সেটা হল স্টেটমেন্ট অব পারপাস। তাই অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেখার চেষ্টা করুন।এ ব্যাপারে জানতে  http://www.statementofpurpose.com/ ।

এই সমস্ত জিনিস ছাড়াও অনেক ইউনিভার্সিটি স্পেশাল জিনিস পত্র চাইতে পারে। যেমন অনেকের আপনার ইউনিভার্সিটির নম্বরের আর্ন্তজাতিক ইক্যুইভ্যালেন্ট নম্বর চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ডব্লিউ.ই.এস. (http://www.wes.org/) বলে একটি সার্ভিসের শরনাপন্ন হতে হবে। তাদের কাছে আপনার রেজালটের এক কপি পাঠালে তারা আপনার ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে আরো এক কপি চাইবে। এই দুই কপিকে যাচাই করে ইউএস ইকুইভ্যালেন্ট নাম্বার পাঠাবে আপনার পছন্দের ইউনিভার্সিটিতে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬ থেকে ৮ মাসের মত সময় নেয় ভর্তি বিষয়ক তাদের ফলাফল জানানোর জন্য। তাই হাতে কমপক্ষে ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করুন।

সাহায্য নিতে পারেন নিম্মোক্ত ওয়েবসাইট সমুহের –

১। https://educationusa.state.gov/

২। https://www.commonapp.org/

Students- USA
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

আমেরিকায় ব্যাচেলর প্রোগ্রামে আপনার সব মিলিয়ে খরচ হবে ১৫ – ২০ লাখ টাকা। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রতি টার্মে ৩০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা খরচ হবে।

আমেরিকায় ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। আমেরিকায় ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়।

ভিসার জন্য আবেদন

আমেরিকার এম্বেসী বাংলাদেশে আছে তাই আপনি ঢাকাস্থ আমেরিকান এম্বেসী থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত অফার লেটার ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সমেত আবেদন করতে হবে ভিসার জন্য।

নিচে কাগজপত্রের জন্য প্রয়োজনীয় তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট

সব কিছু ঠিকমত রুল অনুযায়ী জমা দিতে হবে। ছোট খাট ভুলের জন্যই ভিসা রিজেক্ট হয়।

Hollywood Sign - USA
Image Source: pexels.com

আমেরিকায় আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

আমেরিকায় যাবার আগেই আপনাকে করতে হবে সেইদেশে থাকার ব্যবস্থা। সাধারণত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে নিজস্ব হোস্টেল ব্যবস্থা। কিন্তু এইসব হোস্টেল তুলনামূলক ব্যয়বহুল। তাই আপনি চাইলে যাতায়াত ব্যবস্থা, দূরত্ব ও অন্যান্য হিসেব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসে-পাশে আপনার স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেন। এজন্য আপনি পাবেন মোড়েল। শেয়ারড ফ্ল্যাট, পেইং গেস্ট সুবিধাসহ অনেক ব্যবস্থা।

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

আমেরিকায় পার্ট টাইম জবের সুযোগ রয়েছে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা। ব্যাচেলর স্টুডেন্টদের প্রথম ১ বছর জব করার সুযোগ থাকে না। ইউনিভার্সিটিতে ঘন্টা ভিত্তিক কাজ খুব সুলভ না হলেও মোটামুটি পেতে খুব সমস্যা হয় না। ব্যাচেলরের স্টুডেন্টগণ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ করতে পারেন। এসব কাজ করলে আপনি ঘন্টায় ৬-২৫ ডলার করে আয় করতে পারবেন।  সমস্যা এখানে থাকা-খাওয়ার খরচটা উঠে আসলেও টিউশনটা আপনাকেই পরিশোধ করতে হবে।

আমেরিকায় পড়াশুনার শেষে ১-৩ বছরের Work Permit পাবেন। এরপর বিভিন্ন শর্ত পূরণ সাপেক্ষে আপনি নাগরিকত্ব পাবেন। আমেরিকায় নাগরিকত্ব পেতে আপনাকে সেখানে থাকতে হবে কমপক্ষে বছর দশেক।

Life in USA
Image Source: Internet

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এমন শিক্ষার্থীদের কাছে সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি বৃত্তি হচ্ছে ভেনিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ। পিএইচডি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের কানাডাতে পড়ালেখা করার সুযোগ করে দিতেই কানাডার সরকার এ বৃত্তি দিয়ে থাকে। আর প্রতি বছর দেওয়া হয়ে থাকে ১৬৭টি বৃত্তি। সাধারণত পিএইচডি গবেষণার জন্য এ বৃত্তি দেয়া হয়। বৃত্তির মেয়াদ তিন বছর।

স্কলারশিপ এর নাম

ভেনিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ (Vanier Canada Graduate Scholarships)

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

এই স্কলারশিপের আওতায় পিএইচডি প্রোগ্রাম করানো হয়। হেলথ রিসার্চ, ন্যাচারাল সাইন্স রিসার্চ, ইঞ্জিনিয়ারিং সাইন্স রিসার্চ, সোশ্যাল সাইন্স রিসার্চ ও হিউমানিটি রিসার্চ করা যাবে এই প্রোগ্রামে।

সকল বিষয় এর লিষ্ট জানতে ভিজিট করুন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – https://vanier.gc.ca/en/home-accueil.html

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

কানাডা। কানাডিয়ান সরকার।

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

এই স্কলারশিপের আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বছরে ৫০,০০০ কানাডিয়ান ডলার দেওয়া হবে, ৩ বছরের জন্য।

আবেদনের যোগ্যতা

স্কলারশিপের জন্য আপনার থাকতে হবে নিম্নোক্ত যোগ্যতাঃ

১. একাডেমিক এক্সিলেন্স (৮০% মার্কস) থাকতে হবে।
২. রিসার্চ এবিলিটি (জার্নাল পাবলিকেশন) থাকতে হবে।
৩. ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি (স্কোর ৭.৫) থাকতে হবে।
৪. কমিউনিকেশন ও লিডারশিপ দক্ষতা থাকতে হবে।

Vanier Canada Graduate Scholarship
Image Source: Internet

আবেদনের সময়সীমা

আবেদনের সময় প্রতি বছর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে হালনাগাদ ডেডলাইন জানতে নজর রাখতে হবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ- https://vanier.gc.ca/en/home-accueil.html

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

এই স্কলারশিপটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। বিশ্বের সকল দেশের শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রার্থীরা যে কানাডিয়ান ইন্সটিটিউশনে পড়তে চান, তাদের দ্বারা অবশ্যই মনোনীত হতে হবে। আপনাকে প্রথমে কানাডিয়ান কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে। কানাডার বিখ্যাত কিছু বিশ্ববিদ্যালয় -টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়, আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।

স্কলারশিপের অফিশিয়াল লিঙ্কঃ

https://vanier.gc.ca/en/home-accueil.html

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

উচ্চশিক্ষার স্বর্গরাজ্য কানাডায় অনেকেই যাবার স্বপ্ন দেখেন,দেখেছেন হয়তবা দেখছেন। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও বিষয়গুলো সমন্ধে ভালোমত না জানার কারণে স্বপ্ন হয়ত রয়ে যাচ্ছে অধরা। কিন্তু আর চিন্তা নেই? আমরা প্রস্তুত আপনার স্বপ্নকে বাস্তবতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে। চলুন, শুরু করি স্বপ্নরাজ্য কানাডার দিকে পথ বাড়ানোর জন্য আমাদের আজকের আয়োজন।

কেন কানাডায় পড়তে যাবেন?

নর্থ আমেরিকার দেশ কানাডা  দ্বিতীয় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দেশ। এই দেশের আয়োতন ৯.৯৮ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার আর জনসংখ্যা ৩,৭৯,৭১,০২০ জন। এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা ফ্রেঞ্চ ও ইংরেজী এবং মুদ্রা কানাডিয়ান ডলার। এই দেশের জিডিপি $১.৮১২ ট্রিলিয়ন আর পার কাপিটা জিডিপি হল ৪৯,৯৩১ ডলার। এই দেশের রাজধানী অটোয়া আর সর্ববৃহৎ শহর টরেন্টো। এই দেশ মূলত শীত প্রধান।

Niagra Waterfall Canada
Image Source: pixabay.com

কানাডায় পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

কানাডায় পরাশুনা করতে কমপক্ষে ৭০% নম্বরের প্রয়োজন পড়বে। কানাডায় ব্যাচেলর করতে আপনার HSC এ ভালো মার্ক্স ও IELTS এ ৬.০ কিন্তু কোন সাব-সেকশনে ৫.৫ এর নিচে পেলে চলবে না। আবার আপনি যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে যেতে চান, তাহলে ব্যাচেলরে আপনার ৭০% নম্বরের বেশি থাকতে হবে, IELTS এ থাকতে হবে ৬.৫, কিন্ত কোন সাব-সেকশনে ৬.০ এর নিচে নয়। ব্যাচেলরে অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ GRE / GMAT চাইতে পারে। কিন্তু স্কলারশিপ পেতে গেলে আপনার GRE/ GMAT থাকাটা আবশ্যকীয়। পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে মাস্টার্স থাকতে হবে এবং অন্যান্য যোগ্যতা মাস্টার্স করতে গেলে যেসব যোগ্যতা লাগে তার সমতুল্য।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

বিশ্বে অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় এই কানাডায় অবস্থিত। তাইতো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে, প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ লোক বিদ্যার্জনের আশায় পাড়ি জমায় কানাডায়। কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

সেরা  টি বিশ্ববিদ্যালয়

১) University of Toronto

২) Mcgill University

৩) University of British Columbia

৪) Mcmaster University

৫) University of Alberta

৬) University of Waterloo

মধ্যম সারির বিশ্ববিদ্যালয়

৭) Ottawa University

৮) University of Western Ontario

৯) York University

১০) University of Montreal

১১) Dalhousie University

১২) Carleton University

১৩) Queens University

১৪) Simon Fraser University

১৫) University of Manitoba

১৬) University of Victoria

১৭) Memorial University

১৮) University of Saskatchewan

আবেদন করার সময় অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও র‍্যাঙ্কিং বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। অনেক সময় ওয়েবসাইটে কিছু Misleading তথ্য দেওয়া থাকে- যা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে। অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে অনেক টাকা খুইয়ে ফেলেন। তাই, সবসময় বিভিন্ন সোর্স থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্ধে জানার চেষ্টা করা উচিত। আর গুগল সার্চতো আছেই।

এই দেশে পড়াশুনার মাধ্যম ইংরেজী ও ফ্রেঞ্চ। তবে আবেদনের সময় অবশ্যই আপনাকে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে আপনি কোন মাধ্যমে পড়তে চান।

University in Canada
Image Source: Internet

কানাডায় আপনি আপনার পছন্দের সকল কোর্সই পেয়ে যাবেন। কম্পিউটার সায়েন্স, বায়োলজি, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ফুড সায়েন্স, কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড রিসোর্সেস, ইলেকট্রনিক্স, মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস, মেরিন অ্যাফেয়ার্স, এগ্রিকালচার, ইকোনোমিক্স, অ্যাপ্লায়েড কম্পিউটার সায়েন্স, ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাসট্রোনমি, অ্যাপ্লায়েড জিওগ্রাফি, আর্কিটেকচারাল সায়েন্স, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, এডুকেশন, হোম ইকোনোমিক্স, মিউজিক, ফিলোসফি, হিস্ট্রি অ্যান্ড রিলিজিওন, ইংলিশ, ল, থিয়েটারসহ আন্ডার র্গ্যাজুয়েট পর্যায়ে প্রায় দশ হাজার বিষয় এবং পোস্ট র্গ্যাজুয়েট পর্যায়ে প্রায় তিন হাজার বিষয় পড়তে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

কানাডায় ভর্তির জন্য প্রথমেই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং আবেদন ফি জমা দিতে হবে। আবেদন ফি জমা না দেওয়া পর্যন্ত আবেদন প্রসেস শুরু হবে না। কান্ডায় আপনি ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি সকল ধরণের প্রোগ্রামে যাবার সুযোগ আছে। কানাডায় মাস্টার্স কোর্স দুই ধরণেরঃ কোর্স-বেজড ও থিসিস-বেজড। কোর্স বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে সাধারণত স্কলারশিপ পাওয়া যায় না। তবে থিসিস-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে আপনার ফান্ড বা স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ আছে। থিসিস-বেজড মাস্টার্স প্রোগ্রামে গেলে অবশ্যই প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলে নিতে হবে। এই প্রফেসর খোঁজা বেশ জটিল ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া। কারণ আপনাকে প্রফেসরদের খুঁজে তাদের রিসার্চ এরিয়া-ভিত্তিক নিজের পোর্ট-ফোলিও সাজিয়ে তাকে ইমেইল করতে হবে এবং তাকে কনভিন্স করতে হবে। প্রফেসররা সাধারণত স্কাইপি, অথবা অন্য মিডিয়ামে আপনার ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। কানাডায় প্রফেসর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি আপনাকে রিকমেন্ডেশন করলে, বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি আপনাকে ভর্তির বিষয়ে অনেক সহায়তা করে থাকে আর স্কলারশিপ পেতে আর কোন বাধা থাকে না। অনেক সময় প্রফেসর তার কাছে বরাদ্দ রিসার্চ ফান্ড থেকে আপনাকে RA (Research Assistant) পোস্ট অফার করে থাকে অথবা আপনাকে TA (Teacher’s Assistant) অফার করে কোর্স ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

কানাডায় বছরে তিনটি সেমিস্টার থাকে, যথাঃ Winter সেমিস্টার, Summer সেমিস্টার ও Fall সেমিস্টার। Winter সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আর Summer সেমিস্টার মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মূলত Fall Semester এ International Student ভর্তি কয়া হয়ে থাকে এবং এই সময়েই বেশি স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে। Fall Semester এর ব্যাপ্তি সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর- আর ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় মার্চ-এপ্রিল থেকে আর ডেডলাইন থাকে জুন মাসে। মনে রাখবেন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সীমা আলাদা। তাই আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে দেখে নেওয়া উচিত আর কোন বিভ্রান্তি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন আফিসে যোগাযোগ করা উচিত।

নিচে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিয়া দেওয়া হলঃ

১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৩। Statement of Purpose (SOP)

৪। পাসপোর্টের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৫। রেফারেন্স লেটার- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার সম্পর্কে ভালো রিমার্ক্স থাকতে হবে।

৬। IELTS এবং প্রয়োজনে GRE/GMAT

৭। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র

সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে আপনার ভর্তি কার্যক্রম নিশ্চিত করে। তাই হাতে ১ বছর সময় নিয়ে আবেদন করা উচিত। মনে রাখবেন, আপনার পড়াশুনার মাঝে গ্যাপ ২ বছরের বেশি হলে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

Niagra Waterfall Canada
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

কানাডায় ব্যাচেলর প্রোগ্রামে আপনার খরচ হবে প্রতি বছর ১৪,০০০ থেকে ২৭,০০০ কানাডিয়ান ডলার। মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রতি বছর ১৬,০০০ থেকে ২০,০০০ কানাডিয়ান ডলার খরচ হবে।

কানাডায় ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। কানাডায় ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়।

ভেনিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ: কানাডায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক এমন শিক্ষার্থীদের কাছে সর্বাধিক জনপ্রিয় বৃত্তি এটি। কানাডার সরকার এই বৃত্তি দিয়ে থাকে।বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে বছরে ৫০ হাজার কানাডীয় ডলার দেওয়া হয়। মেয়াদ তিন বছর।

আইডিআরসি ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড: এই বৃত্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পায়। প্রতিবছরই এই বৃত্তি প্রদান করা হয়।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

কানাডায় পড়ালেখার জন্য শক্ত পৃষ্ঠপোষক দেখাতে হয়। শিক্ষার্থীকে তাঁর পৃষ্ঠপোষকের ন্যূনতম ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক হিসাব দেখাতে হবে এবং এই টাকা ন্যূনতম ৬ মাস থেকে এক বছর ব্যাংকে থাকতে হবে।

যদি স্পন্সর (মা অথবা বাবা) থাকে, তাহলে তার ট্যাক্সের কাগজ-পত্র ও ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ভিসা পেতে আপনাকে দ্বারস্থ হতে হবে ঢাকায় অবস্থিত কানাডিয়ান এম্বেসী-এর। আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত অফার লেটার ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সমেত আবেদন করতে হবে ভিসার জন্য।

নিচে কাগজপত্রের জন্য প্রয়োজনীয় তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫। No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট

সব কিছু ঠিকমত রুল অনুযায়ী জমা দিতে হবে। ছোট খাট ভুলের জন্যই ভিসা রিজেক্ট হয়।

University in Canada
Image Source: Internet

কানাডিয়ান হাই কমিশনের ঠিকানা:

High Commission of Canada

United Nations Road, Baridhara, Dhaka-1212, Bangladesh

Telephone: +880 2 988 7091 to 988 7097

Fax: +880 2 882 3043  +880 2 882 6585

Email: [email protected] | www.vfs-canada.com.bd

ইমিগ্রেশন এ্যাণ্ড সেটেলমেন্ট টিমের ভলান্টিয়ারগণ বিনামূল্যে তাদের ওয়েবসাইট এবং ফোরামের মাধ্যমে কানাডার স্টুডেন্ট ভিসা এবং ইমিগ্রেশনের সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। আপনিও চাইলে তাদের ওয়েবসাইট এবং ফোরাম থেকে ঘুরে আসতে পারেন:

ওয়েবসাইট:  http://immigrationandsettlement.org/Home/Index

ফোরাম: http://forum.immigrationandsettlement.org/

কানাডায় আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

কানাডায় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের ৬ মাস হোস্টেলে থাকা বাধ্যতামূলক। এখানে থাকা বাবদ প্রতি ৪ মাসের জন্য দিতে হয় ৪,০০০ থেকে ৭,০০০ কানাডিয়ান ডলার। কিন্তু বাইরে আপনি খুব কম খরচে রুম পেয়ে যাবেন। বাইরে থাকা- খাওয়া আপনি প্রতি মাসে ৬০০ – ৮০০ কানাডিয়ান ডলারে মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে এই খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন শহরে আছেন আর কিভাবে জীবন যাপন করছেন।

পার্ট টাইম জব এর সুযোগ

কানাডায় পার্ট টাইম জবের সুযোগ রয়েছে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা। ব্যাচেলর স্টুডেন্টদের প্রথম ১ বছর জব করার সুযোগ থাকে। না তবে ব্যাচেলরের স্টুডেন্টগণ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে TA, RA, Office Assistance- হিসেবে জব করতে পারে। কিন্তু মূলত এই জবগুলো মাস্টার্স বা পিএইচডি-এর শিক্ষার্থীদের অফার করা হয়।

এ ছাড়াও অফ ক্যাম্পাস ওয়ার্ক পারমিট-এর সুবিধা আছে। এই সুবিধা পেতে অবশ্য প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। ৬ মাস ফুল টাইম পড়া শুনার পরে আপনি এপ্লাই করতে পারবেন, কিন্তু কাগজ যোগাড় করতে সময় লাগায় মোট ৭-৮ মাস লেগে যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ-কে সন্দেহজনক দেশ-এর তালিকায় যুক্ত করায় প্রসেসিং সময় ১৫ দিনের বদলে কমপক্ষে ৩ মাস লাগে। সব মিলিয়ে প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হবে কাজ করার পারমিশন এর জন্য।এর আগে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করা অবৈধ। তার আগে এবং পরে অন ক্যাম্পাসে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন যা পাওয়ার সম্ভাবনা শুরুর দিকে খুবই ক্ষীণ। অফ/অন ক্যাম্পাস কাজ করে থাকা খাওয়ার খরচ তোলা সম্ভব হলেও টিউশন ফী দেওয়া সম্ভব না।

Students in Canada
Image Source: pixabay.com

স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

পড়াশুনা শেষ করে শিক্ষার্থীরা ১-৩ বছরের ওয়ার্কপারমিট পান এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে আবেদন করতে পারেন। কানাডার প্রভিন্সগুলোর মধ্যে সাসকাচুয়ান, ম্যানিটোবা, নিউ ফাউণ্ডল্যান্ড এ্যাণ্ড ল্যাব্রাডরে শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে আবাসনের সুযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে অন্টারিও প্রভিন্সের মাস্টার্স প্রোগ্রাম কমপ্লিট করার পরেও একজন শিক্ষার্থী স্থায়ীভাবে থেকে যাবার জন্যে আবেদন করতে পারেন। সম্প্রতি রুরাল এ্যাণ্ড নর্দার্ন পাইলট প্রোগ্রামটিও শিক্ষার্থীদেরকে আশার আলো দেখাচ্ছে।

কিছু প্রয়োজনীয় সাইট-এর এড্রেস

১। http://www.ouac.on.ca – এটি অন্টারিওর বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির অনলাইন সাইট। এটার মাধ্যমে এপ্লাই করতে পারেন অথবা সরাসরি এপ্লাই করতে পারেন। এটা নির্ভরযোগ্য। খরচ একটু বেশী- কিন্তু টাকা কোথায় ঢাললেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবেনা এবং অনলাইনে আপনার ভর্তির স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। এপ্লাই করার পর এই সাইট নিয়মিত চেক করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ: সঠিক ফরম পূরণ করবেন।

২। http://www.aucc.ca/index_e.html – কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাইট। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন। কিন্তু সব সঠিক নয় (কিছুটা এদিক সেদিক)।

৩। http://oraweb.aucc.ca/dcu_e.html – প্রোগ্রাম অনুসারে সার্চ করে, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি লিস্ট বানাতে পারেন।

৪। http://cic.gc.ca/english/study/index.asp  – সরকারী সাইট- এখানে স্টাডি পারমিট এবোং পড়াশুনা বিষয়ক সব ধরণের ফর্ম এবং সরকারী সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন।

৫। http://www.studyincanada.com/english/index.asp – আরেকটি উপকারী সাইট।

Life in Australia
Image Source: pexels.com

অপার সম্ভবনার দেশ কানাডা। আপনার নিজের সম্ভবনা তৈরীর জন্য কানাডায় পাড়ি জমাতে পারেন। শুভ কামনা রইলো আমাদের পক্ষ থেকে।

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

মধ্য ইউরোপের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি যেখানে জন্ম নিয়েছিলেন কিংবদন্তি নেতা মার্শাল টিটো সেই দেশের নাম স্লোভেনিয়া। আর এই দেশই আজ আমাদের কেন্দ্রবিন্দু। উচ্চশিক্ষার জন্য যারা ইউরোপের স্বপ্ন দেখছেন- এই লেখাটি আসলে তাদেরই জন্য। তাহলে আর দেরি কেন? শুরু করি আজকের পর্ব।

কেন স্লোভেনিয়ায় পড়তে যাবেন?

পাহাড়-নদী-হ্রদ বেষ্টিত স্লোভেনিয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার লোকের ঢল নামে এর অনাবিল সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য। এই দেশের আয়তন ৭,৮৮৭.৪ বর্গ মাইল এবং রাজধানী লুবলিয়ানা। এই শহর কার্যত স্লোভেনিয়ার সকল প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু- যদিও আয়তনের বিচারে শহরটি বেশ ছোট। এই দেশের মুদ্রার নাম ইউরো এবং ভাষা স্লোভিন- আর দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজী। এখানে সকলেই প্রায় ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। এ দেশের মোট জনসংখ্যা ২০,৮১,৯৪৫ জন। এই দেশের মোট জিডিপি ৫৪ বিলিয়ান মার্কিন ডলার আর কমপক্ষে গড়ে ৮৮৬ ইউরো এই দেশে বেতন দেওয়া হয়।

Study in Slovenia
Image Source: pixabay.com

সামগ্রিক বিচারে এই দেশ হতেই পারে আপনাদের পছন্দের ডেস্টিনেশন।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

স্লোভেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। তাই নিঃসন্দেহে এই দেশে পড়তে আসার জন্য মনস্থির করতে পারেন।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  • University of Ljubljana‎
  • University of Maribor‎
  • University of Nova Gorica‎
  • University of Novo Mesto‎
  • University of Primorska‎

এই দেশে আপনি সকল সাবজেক্টেই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। আর্টস, বিজনেস অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং যে কোন বিষয়েই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। এখানে কোর্সসমূহ স্লোভেনিয়া আর ইংরেজী ভাষায় অফার করা হয়। বিভিন্ন কোর্স বিভিন্ন ভাষায় হওয়ায় আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত কোর্স কোন ভাষায় অফার করা হয়েছে?

স্লোভেনিয়াতে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

স্লোভেনিয়ায় পড়াশুনার জন্য আপনার জন্য প্রয়োজন পড়বে ইংরেজী ভাষাগত যোগ্যতা। পড়তে যেতে আপনাকে অর্জন করতে হবে B2 গ্রেডের বা IELTS এ ৬.০ অর্জনের প্রমাণপত্র। আর স্বাভাবিকভাবে আপনাকে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে অর্জন করতে হবে HSC আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে আপনার থাকতে হবে ব্যাচেলর আর পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে আপনার থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রী।

ভর্তি আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

স্লোভেনিয়ায় Autumn সেশনে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। অক্টোবার মাস থেকে ক্লাস শুরু হয় এই সেশনের এবং ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্লিকেশন নেওয়া শুরু হয়- আর শেষ হয় জুন মাসে। অন্যদিকে Winter সেশনে কম সংখ্যক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নেওয়া হয়। এদেশে আবেদন করতে হয় একটি কমন ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে, যার লিংক নিচে দেওয়া হলঃ

https://portal.evs.gov.si/prijava/?locale=en

এরপর, এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে আর দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চয়েস লিস্ট। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে মেইল করে আপনাকে একটি ডকুমেন্ট দেওয়া হবে, এই ডকুমেন্ট নিজ হস্তে স্বাক্ষর করে অন্যান্য সত্যায়িত ডকুমেন্টসের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।

University in Slovenia
Image Source: Internet

নিচে প্রায়শঃ আবশ্য ডকুমেন্টসের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। যথাযথভাবে সত্যায়িত সকল একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। সহস্তে স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র

৩। IELTS এর সনদ

৪। CV,

৫। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

এরপর আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে Letter of Acceptance দেওয়া হবে। যদি এটিতে উল্লেখ থাকে, ভিসা আবেদনের পূর্বে আপনাকে টিউশন ফি দিতে হবে তাহলে আগে টিউশন ফি দিয়েই আপনাকে আবেদন করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে থাকে, তারা ভিসা প্রাপ্তির পর টিউশন দিতে বলে। তাই আপনার জন্য কোনটি হচ্ছে, সেটা Letter of Acceptance পড়ে ভালো করে বুঝে নিতে হবে।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

স্লোভেনিয়ার জন্য ডকুমেন্টস সত্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া।

(১) প্রথমে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার ডকুমেন্টস সত্যায়ন করিয়ে নিতে হবে।

(২) তারপর যেতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়নের জন্য।

(৩) এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়ন করতে হবে।

(৪) এবার এই ডকুমেন্টস অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশের এম্বেসী থেকে সত্যায়ন করাতে হবে- এজন্য ফি দিতে হবে প্রতি পেজ ১০ ইউরো। মনে রাখবেন, অরিজিনাল কাগজ ছাড়া তারা ডকুমেন্টস সত্যায়ন করে না। তাই অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত আপনার কোন বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনকে অথরাইজ করে দিতে হবে এবং তিনি আপনার অরিজিন্যাল ডকুমেন্টস দেখিয়ে সত্যায়িত করিয়ে আনবেন।

(৫) এরপর সত্যায়ন করাতে হবে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া থেকে। এখানে প্রতি পেজ সত্যায়ন করাতে ক্ষরচ হবে ৩ ইউরো। এরা কোন কুরিয়ার কপি গ্রহণ করে না। তাই আপনাকে আবার দ্বারস্থ হতে হবে প্রবাসী বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনের। আপনি চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়েরও সহযোগিতা নিতে পারেন। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই জন্য আপনার কাছ থেকে চার্জ নিবে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ এম্বেসী যদি ডকুমেন্টস সত্যায়ন না করে তাহলে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া এই ডকুমেন্টস সত্যায়ন করবে না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ও আপনার ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে না।
Students in Slovenia
Image Source: Internet

টিউশন ফি

স্লোভেনিয়ায় আপনাকে পড়াশুনার জন্য আপনাকে দিতে হবে ২,৫০০-৪০০০ ইউরো। আবার আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা হয়ে থাকে তাহলে টিউশন ফি হতে পারে ৮,০০০ ইউরো পর্যন্ত।

স্লোভেনিয়ায় আবাসন ব্যবস্থা

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে হোস্টেলের ব্যবস্থা। আবাসনের জন্য আগে থেকেই আবেদন করা বুদ্ধিমানের কাজ। স্লোভেনিয়ায় থাকা- খাওয়া বাবদ আপনার মাসিক খরচ হবে ৩০০-৩৫০ ইউরো।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

স্লোভেনিয়ায় ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে সেদেশে এক বছর চলার মত পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান দেখাতে হবে। সাধারণত এই দেশে একজনের জন্য বার্ষিক প্রায় ৬০০০-৭০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

বাংলাদেশে স্লোভেনিয়ার এম্বেসী না থাকায় আপনাকে যেতে হবে ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীতে। এজন্য আপনাকে আগে থেকেই নিতে হবে এপয়েন্টমেন্ট। ভিসা ফি দিতে হবে ৮০ ইউরো। এখানে আপনাকে টেম্পোরারী রেসিডেন্স পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

ই-মেইলের মাধ্যমেও আপনি স্লোভেনিয়ার দূতাবাসে ভিসার জন্য অ্যাপোয়েনমেন্ট পেতে পারেন। দিল্লিতে অবস্থিত স্লোভেনিয়ার দূতাবাসের ওয়েবসাইট (http://www.newdelhi.embassy.si)।

Students in Slovenia
Image Source: Internet

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Offer Letter

২। স্লোভেনিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো Observation Letter, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফর্মালিটি শেষ হবার পর পাঠানো হয়ে থাকে

৩। পাসপোর্ট [কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ ও ২ টি ফাকা পেজ থাকতে হবে]

৪। ফটোগ্রাফ (৪.৫ সেঃমিঃ x ৩.৫সেঃমিঃ) – দুইটি

৫। মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স ও পুলিশ ক্লিয়ারান্স সার্টিফিকেট [অনধিক ৩ মাসের পুরাতন]

৬। ফ্লাইট রিজার্ভেসনের ডকুমেন্টস

৭। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৮। জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট [ইংরেজীতে হতে হবে]

৯। IELTS এর সনদ

১০। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

১১। সকল সত্যায়িত ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

১২।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে বসতে হবে ইন্টারভ্যিউ-এ। আর ভিসা পেতে সময় লাগবে ৪-৬ সপ্তাহ।

ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীর ঠিকানাঃ

A – 5/4, Vasant Vihar, New Delhi 110 057, India

T: + 91 11/ 41662891

Visa section:

T: + 91 11/ 41662893 F: + 91 11 /41662895 E: [email protected]

পার্ট টাইম জব ও জীবন-যাপন ব্যয়

অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ডে যে রকম নিয়ম আছে যে স্টুডেন্ট অবস্থায় একজন ব্যক্তি এক সপ্তাহে বৈধভাবে বিশ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না, স্লোভেনিয়ার আইনে এ রকম সুনির্দিষ্ট করে এখনো কিছু উল্লেখ নেই। তাই এখানে চাইলে একজন শিক্ষার্থী ফুলটাইম কাজ করতে পারেন। MJob Service আর E-studentski Servis নামক দুইটি সংস্থা শিক্ষার্থীদের জব খোঁজার ব্যাপারে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

মাসিক খরচ নির্ভর করে আপনার জীবন যাপনের উপর। সাধারনত স্লোভেনিয়ায় আপনি ৩০০-৩৫০ ইউরো দিয়ে ১মাস চলতে পারবেন।

Life in Slovenia
Image Source: Internet

স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আপনি যদি ফুল টাইম কাজের অভিজ্ঞতা ও টানা ৫ বছর এই দেশে থাকেন তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন PR -এ আবেদন করার সুযোগ। আর যদি আপনি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, টানা ১০ বছর থাকতে হবে।

অর্থাৎ শিক্ষার্থী অবস্থায় পার্মানেন্ট রেসিডেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুই বছরকে এক বছর হিসেবে বিবেচনা হয়। উদাহরণস্বরূপ: কেউ যদি তিন বছরের ব্যাচেলর কোর্স সম্পন্ন করেন স্লোভেনিয়া থেকে, তাহলে এ তিন বছরকে অর্ধেক অর্থাৎ দেড় বছর এবং সেই সঙ্গে আরও সাড়ে তিন বছর ফুলটাইম কাজ করার অভিজ্ঞটা দেখাতে পারলেই তিনি স্লোভেনিয়ার পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তাহলে , শুরু স্লোভেনিয়া যাত্রার শুভ সূচনা।

Life in Slovenia
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

ইউরোপ-আমেরিকার ব্যয়বহুল শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশীদের জন্য হয়ে ওঠে দূরের স্বপ্ন। কিন্তু, যদি কম খরচে আপনি বিদ্যার্জন করতে চান অথবা পড়াশুনা করতে চান নির্বিঘ্ন পরিবেশে আর অর্জন করতে চান বৈশ্বিক জ্ঞান তাহলে আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ ডেস্টিনেশন হল রাশিয়া। রাশিয়া বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং এই দেশে বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জন করতে পাড়ি জমাচ্ছে। তাই আজ আমরা আলোচনা করবো রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে। আপনাদের সামনে তুলে ধরবো রাশিয়ায় জ্ঞান অর্জনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত, যেন আপনারা নিজেরাই করতে পারেন নিজের আবেদন।

কেন রাশিয়ায় পড়তে যাবেন?

রাশিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় বিশালাকার দেশ। এই দেশের আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল) আর জনসংখ্যা ২০১৮ হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১৪৭ মিলিয়ন। এই দেশের মুদ্রা রুবেল। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো আর অফিসিয়াল ভাষা রুশ। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ ১৯৯১ সালে ভেঙ্গে যাবার পর বেশ দুর্বল হয়ে যায়। তবে এখন অর্থনৈতিক ভাবে এখনো রাশিয়া অনেক সমৃদ্ধ দেশ। এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় রুশ ভাষায়ই সচরাচর শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। রাশিয়া মূলত শীতপ্রধান- এদেশে শীতের সময় তাপমাত্রা শূন্যের নীচে নেমে যায়।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ‘মৈত্রী ও সহযোগিতা’ চুক্তি সম্পাদিত হয় আর এই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে রাশিয়ায় পড়াশোনার সুযোগ পায়। রাশিয়াও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। তাই বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের অন্যতম বিদ্যার্জনের গন্তব্য হতে পারে রাশিয়ান ফেডারেশন।

Study in Russia
Image Source: Internet

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

রাশিয়ায় বিভিন্ন মানের ও World Ranking এর বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। রাশিয়ার উচ্চশিক্ষার ইতিহাস অনেক বছরের পুরাতন। এই দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বহু যুগের সম্ভ্রান্ত ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট।

আপনার যদি নির্দিষ্ট একটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধে হয়, তবে নিচের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

১. মস্কো স্টেইট ইউনিভার্সিটি

২. আলটায় স্টেট ইউনিভার্সিটি

৩. কাজান ইউনিভার্সিটি

৪. ডুবনা ইউনিভার্সিটি

৫. চেলিয়াবিনস্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি

৬. ইরকুটস্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি

৭. মস্কো ইউনিভার্সিটি টোউরো

৮. দি রাশিয়ান স্টেট হিউম্যানিটিস ইউনিভার্সিটি

রাশিয়ায় বেশির ভাগ কোর্স রুশ ভাষায় হলেও আপনি ইংরেজী ভাষার কোর্সও খুঁজে পাবেন। কিন্তু এজন্য আপনি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কনফর্ম হয়ে নেবেন, যেন এই দেশে এসে বিপদে না পড়তে হয়।

রাশিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়, একাডেমি, ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল কলেজ ও স্পেশালাইড ইনস্টিটিউশন এই কয়েকটি স্তরে বিন্যস্ত। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞান, কলা, বাণিজ্য শাখার সব বিষয়ে পড়া সম্ভব। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাচেলর ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি ও পিএইচডিসহ বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

Medical University in Russia
Image Source: Internet

রাশিয়ায় অনেকে মেডিকাল সাইনস পড়তে উৎসাহী হয়ে থাকে। আর এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক ডাইভারসিফাইড কোর্স অফার করে থাকে। তাই, কোর্স নির্বাচনে আপনি একতা বিশাল ক্ষেত্র পাবেন।

রাশিয়ায় পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

রাশিয়ায় আবেদন করতে আপনাকে একাডেমিক ক্যারিয়ারে পেয়ে আসতে হবে কমপক্ষে ৫০% নম্বর। এদেশে পড়তে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় IELTS/ TOEFL চেয়ে থাকে। কিন্তু অধিকাংশ কোর্স এদেশে রুশ ভাষায় অফার করা হয়। তাই রুশ ভাষা জানা থাকলে এই সব কোর্সে আবেদন করতে সুবিধা হবে। রুশ ভাষা জানা না থাকলেও সমস্যা নেই, কারণ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের রাশিয়ায় ১ বছরের রুশ ভাষার কোর্স করতে বলে থাকে। এদেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশেষ করে স্কলারশিপে পড়তেও আপনাকে এই দেশে এসে ১ বছরের রুশ ভাষার কোর্স করে আপনি পরবর্তীতে মেইন কোর্সে এনরোল করার সুযোগ পাবেন।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

রাশিয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই সত্যায়িত ডকুমেন্টস চাওয়া হয়। এজন্য প্রার্থীকে প্রথমেই সকল কাগজপত্র শিক্ষা বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করাতে হবে। এরপর সকল কাগজ রাশিয়ান ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। এবার এই অনুদিত ডকুমেন্টস রাশিয়ান দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হবে। কিন্তু অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার সত্যায়নের ঝামেলা বা ধাপসমূহ ভিন্ন। তাই আপনি আগেই এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন অফিসের সাথে কথা বলে নিবেন এবং জেনে নিবেন আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করছেন তাদের Requirements কি?

Moscow State University
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

রাশিয়ায় বছরে দুইটি সেমিস্টার অফার করা হয়ে থাকে- যথাক্রমে সামার সেমিস্টার ও উইন্টার সেমিস্টার। সামার বা গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারি থেকে আর এই সেমিস্টারে আবেদন করতে হয় জানুয়ারি মাসে। উইন্টার সেমিস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বরে। আর এই সেমিস্টারের আবেদন শুরু জুলাই- আগস্ট মাসে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনের সবচেয়ে ভালো সময় হল উইন্টার সেমিস্টার। কারণ মূল কোর্সগুলো এই সেমিস্টারে অফার করা হয়। অন্যদিকে সামার সেমিস্টারে অফার করা হয় ল্যাংগুয়েজ কোর্স।

এই দেশে আবেদন করতে প্রথমেই আপুনাকে আপনার পছন্দের কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেবার পর আপনি অনলাইনে আবেদন করবেন। পরবর্তীতে আপনাকে আপনার আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে।

আবেদন করতে আপনার প্রয়োজন পড়বে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টসমূহেরঃ

১। সকল একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৩। পাসপোর্টের কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৪। আবেদন ফর্ম

৫। IELTS (যদি প্রয়োজন হয়)

৬। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (যদি প্রয়োজন হয়)

নোটঃ কিছু ইউনিভার্সিটি আপনার একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলোর রাশিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ এ ট্রান্সলেট কপির স্কান কপি চাইতে পারে। যদি আপনি মনোনীত হন, বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে অফার লেটার ইস্যু করবে যার জন্য ৩০-৪৫ দিন সময় লাগবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অ্যাকাউন্টে আপনাকে ১ বছর বা ১ সেমিস্টারের টিউশন ফী প্রদান করতে বলবে। তবে, কথা বলে নেবেন। কারণ, এটি রাশিয়াতে বাধ্যতামূলক নয়।

Students in Russia
Image Source: Internet

টিউশন ফি

রাশিয়ায় আপনাকে বিভিন্ন কোর্সে দিতে হবে বিভিন্ন মাত্রায় টিউশন ফিস। তবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করছেন, বিষয় ও শহর-নগর ভেদে এই ফি-এর হার বহুলাংশে নির্ভর করে। তবে তা বাৎসরিক ১৬০০$ থেকে ৫৬০০$ এর মধ্যে। কিন্তু অধিকাংশই ২০০০$ বা তার কাছাকাছি কোনো সংখ্যায়। বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ থেকে চার লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। গড়পড়তায় দুই লাখ টাকার কমবেশি। আবার কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে আপনাকে আবেদন ফি বাবদ দিতে হতে পারে ১০০ মার্কিন ডলার।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

রাশিয়ায় ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে সেদেশে এক বছর চলার মত পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহ করবে। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার পর যদি আপনার আবেদন গৃহীত হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি অফার লেটার ইস্যু করবে।অফার লেটার পেতে ৪০-৬০ দিন সময় লাগতে পারে। ধৈর্য হারাবেন না। অফার লেটার পাওয়ার পর রাশিয়ান দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন নিয়ম অনুসারে। সবকিছু ঠিক থাকলে ভিসা পাওয়া কোনো প্রকার ঝামেলা নয়।

এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভালো, রাশিয়ায় এম্বেসী সপ্তাহে ৩ দিন যথাঃ রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ৮:৪৫ থেকে ১১:৪৫ পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করে থাকে।

Students in Russia
Image Source: Internet

ভিসা আবেদন করতে আপনাকে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস নিতে হবেঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৪।সকল মার্কশিট ও সনদ,

৫। IELTS [ যদি প্রয়োজন থাকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১০।মেডিক্যাল রিপোর্ট

সব কিছু ঠিকমত রুল অনুযায়ী জমা দিতে হবে। ছোট খাট ভুলের জন্যই ভিসা রিজেক্ট হয়।

রাশিয়ায় আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

জীবনযাত্রার খরচ বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাকা) পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চেয়ে কম। বলতে গেলে পাঁচ হাজার টাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করা যায়। বাকিটুকু নিজের ওপরে।

রাশিয়ায় আপনি পড়তে গেলে নামমাত্র মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হোস্টেলে থাকতে পারবেন। এসব হোস্টেল নিরাপদ ও অনেক উন্নত। থাকা খাওয়া মিলিয়ে আপনার খরচ হবে ১৫০-২০০ মার্কিন ডলার।

Study in Russia
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব এর সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস

আপনি রাশিয়ায় সামারে কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই পার্ট টাইম চাকুরী করতে পারবেন। কিন্তু যদি ভাষাগত দক্ষতা না থাকে তবে পার্ট টাইম জব পেতে আপনাকে বেশ খানিকটা বেগ পোহাতে হবে। আর বছরের অন্য সময় এই দেশে পার্ট টাইম জব করতে আপনাকে অনুমতি নিতে হবে Federal Migration থেকে- কিন্তু মজার ব্যাপার হল, এই সংস্থা থেকে পার্ট টাইম জবের অনুমতি আনতে আপনাকে বেশ শ্রম দিতে হবে।

রাশিয়ায় আপনি যদি কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে থাকেন এবং আপনার যদি ১ বছরের ভেরিফাইড বাস্তব কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তাহলেই আপনি রাশিয়ায় স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

রাশিয়ায় আবেদনের যাবতীয় বিষয়াবলী আপনাদের সামনে তুলে ধরা হল বিস্তারিত। তাহলে আর দেরী কেন – আজই   করুন নিজের আবেদন নিজেই ।

Life in Russia
Image Source: Internet

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

নিজেই করুণ নিজের আবেদনের আজকের পর্ব সাজানো হয়েছে বিশ্বের অন্যতম এক ধনী দেশকে নিয়ে, যে দেশ উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত এবং ১৯২১ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। আমার আশা অনেকেই বুঝতে পেরেছেন আজ  আমরা কথা বলবো আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা নিয়ে। তাহলে আর দেরী না করে শুরু করে দেই আজকের আলোচনা আর আপনারাও তৈরি হয়ে যান আয়্যারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য – নিজেরাই করে ফেলুন নিজের আবেদন।

কেন আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবেন?

ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ আয়ারল্যান্ড। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী এখন পাড়ি জমাচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে। আয়ারল্যান্ড দেশটির অফিসিয়াল নাম “রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড” আর অফিসিয়াল ভাষা আইরিশ ও ইংরেজী। এই দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী হল ডাবলিন। ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির উৎকর্ষে অবস্থিত এই দেশে মুদ্রা ইউরো। এই দেশ মূলত শীত প্রধান এবং এই দেশের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। আয়ারল্যান্ডের আয়তন ৭০,২৭৩ বর্গকিঃমিঃ আর  লোকসংখ্যা ৪৭,৫৭,৯৭৬ জন। এই দেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ৬৯,০০০ মার্কিন ডলার। তবে আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, আয়ারল্যান্ড সেঞ্জেনভুক্ত দেশ নয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষার আশায় চলে আসছে আয়ারল্যান্ডে।

এই দেশের অন্যতম অফিসিয়াল ভাষা ইংরেজী হওয়ায় অনেক কোর্স রয়েছে ইংরেজী ভাষায়। এই দেশে ব্যাচেলর ডিগ্রি সাধারণত ৩ – ৪ বছরের হয়ে থাকে, মাস্টার্স ১.৫ – ২ বছর এবং ডক্টরেট ৩-৪ বছরের হয়ে থাকে। তাই আপনার জন্যও হতে পারে এই দেশ বিদ্যাশিক্ষার অন্যন্য স্থান।

Study in Ireland
Image Source: internet

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জনপ্রিয় কিছু কোর্স –

অ্যাকাউন্টিং, অ্যাগ্রিকালচার, অ্যানাটমি, অ্যাপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স, আর্কিটেকচার, ডিজাইন, আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, অডিও ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং, এভিয়েশন স্টাডিজ, ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স, বায়োমেডিকেল সায়েন্স, বায়োটেকনোলজি, সিরামিকস, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া, ডান্স, ড্রামা, ই-কর্মাস, ইকোনমিকস, একাউনট্যান্সি, এবরোজিনাল এন্ড ইনডিজিনাস স্টাডি, অলটারনেটিভ মেডিসিন, এনথ্রপলজি, অ্যাপায়েড ম্যাথমেটিকস, একুয়াকালচার, কেমিষ্ট্রি, এনভায়রোনমেন্টাল স্টাডিজ, বিজনেস এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করা যায়।

কয়েকটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

১. ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি (www.dcu.ie )
২. ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অ্যায়ারল্যান্ড (www.nuigalway.ie )
৩. ট্রিনিটি কলেজ, ডাবলিন (www.tcd.ie )
৪. ইউনিভার্সিটি কলেজ, ডাবলিন (www.ucd.ie )
৫. রকওয়েল কলেজ (www.rockwellcollege.ie )
৬. গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি (www.gcd.ie )
৭. অ্যাথোলেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (www.ait.ie )

Study in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

আয়ারল্যান্ডে বছরে দুইটি সেমিস্টার পড়ানো হয়। একটি ফল সেমিস্টার অপরটি স্প্রিং সেমিস্টার। ফল সেমিস্টার চলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আর স্প্রিং সেমিস্টার চলে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত।

ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যদি এই দেশে পড়তে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১২ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ এইচএসসি পাস হতে হবে। আর আপনাকে IELTS-এ ৫.৫ থেকে ৬.০ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ বা IBTতে ৭৯ থেকে ৮০ পয়েন্ট হতে হবে। অন্যদিকে, আপনি যদি মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আপনার থাকতে হবে ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন অর্থাৎ, আপনাকে শেষ করতে হবে ব্যাচেলর ডিগ্রী। এবং আপনাকে IELTS-এ ৬.০ থেকে ৬.৫ পয়েন্ট পেতে হবে অথবা TOEFL-এর CBT-তে ২১৩ থেকে ২৩৭ বা IBT-তে ৭৯ থেকে ৯৩ পয়েন্ট থাকতে হবে। আপনার GRE/GMAT প্রয়োজন হবে কি না সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন তার উপর।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সাধারণত ফল সেমিস্টারে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয় আয়ারল্যান্ডে। স্প্রিং সেমিস্টারে কোন কোন কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অল্প পরিমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। আবেদন করতে আপনাকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভর্তি শাখা’ বরাবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফিসহ আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

ইউনিভার্সিটিতে আবেদনের জন্য ডকুমেন্টস চেকলিস্টঃ

১। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস ও মার্কশীট

২। পাসপোর্ট/জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি

৩।  অ্যাপ্লিকেশন ফরম

৪। আইইএলটিএস এর সার্টিফিকেট

৫। এপ্লিকেশন ফি পরিশোধের প্রমাণ কপি

University in Ireland
Image Source: internet

আয়ারল্যান্ডে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন ফি বিভিন্ন রকমের। সাধারণত এই ফি ৪৫ থেকে ৯০ ইউরো পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবেদন করার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন যাচাই বাছাই করে এবং যোগ্য শিক্ষার্থীদের আয়ারল্যান্ডে পড়াশুনা করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনকে যথার্থ মনে করলে তারা সরাসরি আপনাকে Offer Letter পাঠিয়ে দিতে দেরি করবে না।

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর ডিগ্রির ক্ষেত্রে বছরে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ১৫০ ইউরো এবং মাস্টার ডিগ্রির ক্ষেত্রে সাত হাজার ৪০০ থেকে ১৫ হাজার ৭২০ ইউরো টিউশন ফি লাগে। তবে কলেজে পড়াশোনা করতে প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ কম হয়। প্রতি মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ ইউরো দিয়েই অনায়াসে থাকা, খাওয়া, যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ মেটাতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

আয়ারল্যান্ডে ব্যাচেলর লেভেলে স্কলারশিপের সুযোগ ক্ষীণ। কিন্তু মাস্টার্স প্রোগ্রামে স্কলারশিপের সু্যোগ তুলনামূলক বেশি। আয়ারল্যান্ডে ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রোগ্রামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়। এই দেশে প্রায় ১০০ এর মত বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ অফার করা হয়ে থাকে।

নিচের লিঙ্কে স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেনঃ
http://www.educationinireland.com/en/How-Do-I-Apply-/Tuition-Costs-Scholarships/Scholarships/

আয়ারল্যান্ডে আবাসন ব্যবস্থা ও জীবন-যাপন খরচ

আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা। এই আবাসন ব্যবস্থা অনেক উন্নত। কিন্তু, বাইরের শেয়ারড এপার্টমেন্ট থেকে এই আবাসন ব্যবস্থা কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকে।  জীবনযাত্রার খরচ হিসাব করতে বসলে, আয়ারল্যান্ড অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির অনুরূপ- বেশ খানিকটা ব্যয়বহুল। তবে, আপনি যদি বড় শহরে বাস করেন, তবে আপনার খরচ বেশি হবে। অন্যদিকে,  আপনি ছোট শহরে বসবাস করেন তাহলে ব্যয় বেশ খানিকটা কমে যাবে। এই দেশে আপনাকে প্রতিমাসে জীবন ধারণের জন্য ৫০০ থেকে ৮০০ ইউরো খরচ করতে হতে পারে। আর শিক্ষার্থীদের জন্য অন্য একটি ব্যয় হলে স্বাস্থ্যবীমা।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

আয়ারল্যান্ডে ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে প্রায় ১০,০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবে। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

Students in Ireland
Image Source: internet

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

আয়ারল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার ভর্তি নিশ্চিত হবার পর আপনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবেন একটি Offer Letter. এই Offer Letter পাবার পর আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। তাই আপনাকে যোগাযোগ করতে হবে দিল্লীস্থ আয়ারল্যান্ড এম্বেসীর সাথে।

দিল্লীস্থ আইরিশ এম্বেসীর ঠিকানা নিম্নে দেওয়া হলঃ

230 Jor Bagh, New Delhi-110003, India

For Visa: +91-11 462671

আপনি ফোন করে তাদের সাথে যাবতীয় সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়া আপনি অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন নিচের ওয়েব লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

https://www.dfa.ie/irish-embassy/india/contact-us/

এবং এই পিডিএফ ফাইলটা  ভিসার যাবতীয় তথ্যের জনঃ
http://www.vfsglobalirelandvisa.com/india/pdf/bangladesh_271115.pdf

ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য ও ডকুমেন্টসঃ 

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Pages/Study

http://www.inis.gov.ie/en/INIS/Student%20Finances.pdf/Files/Student%20Finances.pdf

নিচে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম

২। পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ

৩। CV, Statement of Purpose (SOP)  ও রেফারেন্স

৪।  সকল মার্কশিট ও সনদ, IELTS-GRE সনদ

৫।  No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]

৬।  অফার লেটার

৭। ব্যাংক সলভেন্সি পেপ্যার

৮। ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট

৯। পুলিশ ক্লিয়ারান্স

১১। হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট ইত্যাদি

Life in Ireland
Image Source: internet

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আয়ারল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন। আর আপনি সামারে সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা জব করার সুযোগ পাবেন।  রেস্টুরেন্ট, দোকান, শপিং মলে কাজ করে ঘণ্টায় ৭ থেকে ১২ ইউরো পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।  আয়ারল্যান্ডে আপনি পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন কিন্তু এই পার্ট টাইম জব করে পুরো টিউশন ফি জোগাড় করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।

আর ৫ বছর আয়ারল্যান্ডে বৈধভাবে বসবাস করলে আপনি আবেদন করতে পারবেন PR এর জন্য।

আয়ারল্যান্ড ইউরোপের পশ্চিম উপকূলের অন্যতম সুন্দর দেশ। আপনি এই দেশে অনেক সুবিধা পাবেন। হয়ত আয়ারল্যান্ড আপনার জন্য উন্মোচন করবে সুন্দর ভবিষ্যতের অনেক সম্ভবনা। তাই আজই  করুন নিজের আবেদন নিজেই- আর সেরে নিন আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা।

Life in Ireland
Image Source: internet

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

ইতালি ইউরোপের মধ্যে নামকরা এক বিদ্যা পীঠস্থান- কারণ এদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পাড়ি জমায় তাদের জ্ঞান পিপাসা পিটাতে। আর আপনিও যদি সেই দলের পথিক হতে চান, তাহলে জেনে নিন ইতালিতে পাড়ি জমানোর সকল খুঁটি নাটি। আর আজই করে ফেলুন নিজেই নিজের আবেদন।

Higher Study in Italy
Image Source: pexels.com

কোর্স নির্বাচন ও সেমিস্টার

ইতালিতে সরকারি ও বেসরকারি ওয়াল্ড র‍্যাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজী ও ইতালীয় উভয় ভাষায় কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। যদি আপনি ইতালীয় ভাষায় পারদর্শী না হয়ে থাকেন- তাহলে অবশ্যই ইংরেজী কোর্স চয়েস করুন। এদেশে মোত ৫৮ টি সরকারি ও ১৭ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভিজিট করে নিজের কোর্স বেছে অবশ্যই এডমিশন অফিসে মেইল করে খুঁটি নাটি বিষয় জেনে নিবেন।

আপনার সুবিধার্থে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

১। Sant’Anna School of Advanced Studies – Pisa (World Rank  149)

২। Scuola Normale Superiore di Pisa (World Rank  152)

৩। University of Bologna (World Rank  168)

 

এখানে বছরে সাধারণত দুইটি কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। প্রথম সেমিস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর – অক্টোবর মাসে আর শেষ হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। অপরদিকে, দ্বিতীয় সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাসে আর শেষ হয় জুলাই মাসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে তা পরিবর্তিত হতে পারে। এজন্য আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে ভালো করে জেনে শুনে তারপর প্রসেস শুরু করবেন।

ভাষাগত যোগ্যতা

বর্তমানে ইতালীতে ভিসার জন্য IELTS এ ৬.০০ ব্যান্ডস্কোর প্রয়োজন। অন্যদিকে ইতালীয় ভাষার জন্য কমপক্ষে B2 Level Euro pass Language Passport Classification প্রয়োজন। তবে বি-২ লেভেল পাস করলে ইতালিতে গিয়ে আপনাকে ভার্সিটিতে আবার পরীক্ষায় বসতে হবে। আর যদি আপনি C2 Level Euro Pass Language Exam পাশ করেন তাহলে আপনাকে আর কোন পরীক্ষার ধার ধারতে হবে না।

টিউশন ফি

ইতালিতে টিউশন ফি তুলনামূলক কম হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী এ দেশকে উচ্চ শিক্ষার গন্তব্যস্থল হিসেবে মনে করে। এই দেশে প্রতি বছরে পড়াশুনা বাবদ ১৮০০ থেকে ৮০০০ ইউরো খরচ হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে এই খরচ বাড়তে বা কমতে পারে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলে কয়েক গুন বেশি খরচ গুণতে হবে শিক্ষার্থীদের।

University of Bologna
University of Bologna, Image Source: pexels.com

স্কলারশিপ

ইতালিতে বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। সরকারিসহ বিভিন্ন স্কলারশিপে বিভিন্ন ধরণের অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। বিশ্বমন্দার কথা মাথায় রেখে আমার সাজেশন থাকবে অবশ্যই স্কলারশিপের জন্য চেষ্টা করবেন। কারণ পার্ট টাইম জব করে ইতালিতে পড়াশুন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে দিন-কে-দিন।

স্কলারশিপের তথ্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে গিয়ে স্কলারশিপ সেকশনে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন পর্ব

ইতালিতে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে যেতে আপনাকে নূন্যতম HSC পাশ করতে হবে এবং আবেদনের সাথে আপনাকে আপনার কলেজ থেকে অবশ্যই টেস্টিমোনিয়াল নিতে হবে। আপনাকে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রীধারী এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করতে হবে।

এই দেশে প্রথমেই আপনাকে আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের সকল তথ্য দিয়ে ইমেইলের মাধ্যমে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্য কিনা সেটা যাচাই করিয়ে নিতে হবে। তারপর এম্বেসীতে গিয়ে প্রি-এপ্লিকেশন রিকোয়েস্ট করতে হবে এবং ভর্ত্তির আবেদনপত্র সহ সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

এম্বেসী সেই আবেদন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবে এবং পরবর্তীতে আপনাকে রেজাল্ট জানিয়ে দেওয়া হবে।

Italian Students
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া হলঃ

  1. Identity Documents and Passport size Photo
  2. All Academic Certificates and Marksheets
  3. CV
  4. Recommendation Letter and Motivational Letter
  5. IELTS/ TOEFL Test Score
  6. University Application Form

ইতালিতে যেতে সকল শিক্ষার্থীদের International Organization for Migration (IOM) এর মাধ্যমে সকল কাগজপত্র ভেরিফিকাশন করাতে হবে। তবে এই বিষয়ে চিন্তার কারণ নেই- ঢাকাতেই আছে IMO এর আফিস।

ব্যাঙ্ক সলভেন্সি

ইতালিতে আপনাকে পড়ার খরচ চালাতে পারবেন এমন পরিমাণ টাকা ব্যাঙ্কে জমা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ৮,০০০-১২,০০০ ইউরো আপনার ব্যাঙ্কে জমা দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদন পর্ব

ইতালিতে সাধারণত তিন ধরণের স্টুডেন্ট ভিসা অফার করা হয়ে থাকে। যথাঃ

(১) স্টুডেন্ট ভিসা সাব ক্লাস ৫০০- এই ৫ থেকে ৬ বছর মেয়াদী এই ভিসার কোন স্পন্সর দরকার পড়ে না এবং  এই ভিসা পেলে আপনি ইতালিতে পার্ট টাইম জবও করতে পারবেন।

(২) স্টুডেন্ট গার্ডিয়ান ভিসা সাবক্লাস ৫৯০ – এই ভিসায় স্টুডেন্ট আবেদন করতে পারে কিন্তু এই ভিসা পেতে ৩০,০০০-৩৫,০০০ টাকা খরচ হবে এবং আপনার একাউন্টসে যথেষ্ঠ পরিমাণ অর্থ দেখাতে হবে আথে পরিবারের কাউকে আগে থেকেই ইতালির অধিবাসী হতে হবে। আপনআর বয়স ২১ বছরের বেশি হলেই আপনি এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ভিসায় আপনি চাইলেই পার্ট টাইম জব করতে পারবে।

(৩) স্পেশাল ক্যাটেগরী স্টুডেন্ট ভিসা সাবক্লাস ৪৪৪- এই ভিসায় আপনি চাকুরি করা থেকে শুরু করে অন্যান্য সুবিধা যেমনঃ এই ভিসার কোন মেয়াদ থাকে না, আপনার আবেদনের খরচ প্রয়োজন পরেনা সহ ইত্যাদি থাকে। তবে এই ভিসা পেতে গেলে আপনার পরিবারের কাউকে ইতালির অধিবাসী হতে হবে।

আপনি কোন ধরণের ভিসার জন্য আবেদন করবেন সেটা নির্বাচন করে সেই ফর্ম এম্বেসীর ওয়েব সাইট থেকে ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে। সাপোর্টেড ডকুমেন্টস দিয়ে এম্বেসীতে জমা দিতে হবে। আবার কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সাপোর্টেড ডকুমেন্টস স্ক্যান করে জমা দিতে হয়।

ভিসা আবেদনের জন্য সাধারণ চেকলিস্ট হলঃ

  1. Passport with 4 copies passport size photographs
  2. Offer Letter
  3. All Certificates and Marksheets
  4. IELTS/ TOEFL Certificate
  5. Application Form
  6. Bank Solvency Paper
  7. Visa Application form

ভিসা আবেদন ও ভর্ত্তির আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৯০ – ১২০ দিন সময় লাগে।

Venice City, Italy
Venice City, Image Source: pexels.com

জীবন-যাত্রার ব্যয়

ইতালিতে আবাসন খাতে আপনাকে গুণতে হবে ৩০০ থেকে ১০০০ ইউরো এবং থাকা খাওয়া সব মিলিয়ে খরচ হবে ১০০০ থেকে ১৫০০ ইউরো।

ইতালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই- প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন খোঁজার জন্য নিজস্ব আফিস থাকে। এই অফিস কম খরচে আপনার থাকার ব্যবস্থা করে দিবে।

পার্ট টাইম জব

ইতালীতে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু, বর্তমানে পার্ট টাইম জব পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ইতালীয় ভাষা ও পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা আপনাকে কাজ পেতে সাহায্য করবে।

কোর্স শেষে স্থায়িভাবে বসবাসের সুযোগ

ইতালিতে ফুল টাইম কাজের সনদ জমা দিয়ে স্টুডেন্ট ভিসা থেকে পি,আর ক্যাটেগরীতে ভিসা পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। তবে এই কাজটি একটু সময় সাপেক্ষ- এই ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ বছর সময় লাগে। পি,আর পাওয়ার পর আপনি যদি ইতালিতে নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে বৈধ ভাবে সেখানে ১০ বছর বসবাস করতে হবে।

Life in Italy
Image Source: pixabay.com

এই ছিল ইতালিতে পড়াশুনার যাবতীয়। আশা করি ইতালিতে পড়তে গিয়ে আপনিও নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন। আমাদের পক্ষ থেকে শুভ কামনা রইলো।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

প্যারিসের ঘুরতে, দেখতে যাবার অথবা আইফেল টাওয়ারের সামনে বসে কফিতে চুমুক দেবার স্বপ্ন দেখেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া আসলেই মুসকিল। হ্যাঁ, আজ কথা বলছি ফ্রান্সের। পশ্চিম ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস আর মুদ্রা ফ্র্যাঙ্ক, তবে এ দেশে ইউরো প্রচলিত। আর্ট, শিল্প সাহিত্যের আঁতুড় ঘর ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আপনি সাহিত্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ নানা বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন। আর সেই পথ বাৎলে দিতে আমাদের আজকের আয়োজন। তাই, দেরী না করে এক বসায় পড়ে ফেলুন আজকের পর্ব।

Study in France
Image Source: eurocentres.com

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার মাধ্যম

ফ্রানের আন্তর্জানিক মানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে আপনি লিটারেচার, হিস্ট্রি, ল’, স্যোশাল সাইন্স, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, ফিজিক্স, ম্যাথেমাটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্যুরিজম, ডিজাইন ক্রাফট, থিয়েটার ও ফিল্ম, ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক, স্কাপচার, ড্রয়িং, পেইন্টিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, ব্যালেট ড্যান্স সহ নানাবিধ বিষয়ে অর্জন করতে পারবেন জ্ঞান।

বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানোর মাধ্যম ফ্রেঞ্চ। তাই, এদেশে পড়তে চাইলে আপনাকে অব্যশই জানতে হবে ফেঞ্চ ভাষা। তবে, শুধু ফেঞ্চ নয়, অল্প পরিসরে হলেও ইংরেজীতেও এদেশে কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। তাই আবেদনের সময় খেয়াল করবেন কোন ভাষায় পাঠদান করা হয়ে থাকে।

নিচে ফ্রান্সের কয়েকটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হল। গুগল সার্চেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাড়ি নক্ষত্র জানতে পারবেন।

  • Université Paris 6 Pierre and Marie Curie
  • Université Paris Sud (Paris XI)
  • École Normale Supérieure Paris
  • Université Claude Bernard Lyon 1
  • Université de Bordeaux
  • Université Denis Diderot Paris 7
  • Université de Strasbourg

ফ্রান্সে অধ্যয়নের যোগ্যতা

আপনি ফ্রান্সে ব্যাচেলর, মাস্টার্স অথবা পিএইচডি- যে কোন প্রোগ্রামের জন্য পাড়ি জমাতে পারবেন। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই এইচ,এস,সি আর মাস্টার্সের জন্য ব্যাচেলর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য অবশ্যই আপনার মাস্টার্স ডিগ্রী থাকতে হবে।

আপনার কোর্স যদি ফ্রেঞ্চ ভাষায় হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতার প্রমাণপত্র দিতে হবে। আর এজন্য আপনার যোগাযোগ করতে হবে Alliance Francaise আর করে ফেলতে হবে ফ্রেঞ্চ ভাষার উপর কোর্স। আপনাদের সহায়তার জন্য Alliance Francaise de Dhaka এর লিঙ্কটি হলঃ (https://www.afdhaka.org/)।

ইংরেজী ভাষার কোর্সের জন্য আপনাকে IELTS/ TOEFL পরীক্ষার সনদ দিতে হবে। ব্যাচেলরে আবদনের জন্য ন্যূনতম ৫.৫ চাওয়া হলেও ৬.০ থাকলে আপনার আবেদন গৃহীত হবার সম্ভবনা থাকে। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে ৬.০ প্রয়োজন পড়বে আর ৬.৫ থাকলে আপনার ভিসা ও অন্যান্য সুবিধা পেতে সুবিধা হবে। আর TOEFL দিয়ে আবেদন করতে আপনাকে ব্যাচেলরে আবেদনের জন্য ৫৫০ আর মাস্টার্সের জন্য ৬০০ স্কোর অর্জন করতে হবে। তবে আপনার স্কোর বেশি থাকলে ভিসা আবেদনে আপনি এগিয়ে থাকবেন।

এখানে একটা কথা না বললেই নয়, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনার ইংরেজী পারদর্শিতা যাচাই করার জন্য অনলাইন টেস্ট বা স্কাইপিতে ইন্টারভিয় নিয়ে থাকে।

University in France
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া

ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। এখানে বছরে তিনটি সেমিস্টার পড়ানো হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহঃ

১। আবেদন পত্র

২। সকল মূল সনদ ও মার্কশীট এর কপি

৩। জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা সনদ ও পাসপোর্ট- এর কপি

৪। IELTS/ TOEFL / French Language সনদ

৫। মোটিভেশন লেটার/ রেফারেন্স লেটার/ সিভি [প্রযোজ্য ক্ষেত্রে]

এই সকল ডকুমেন্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই, আবেদনের পূর্বে অবশ্যই সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে নিতে ভুলবেন না।

টিউশন ফি

২০১৯ সালের তথ্য ও উপাত্ত অনুযায়ী, ফ্রান্সের লাইসেন্সড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর কোর্সে পড়তে আনুমানিক ২৭৭০ ইউরো/ প্রতি বছর আবার, মাস্টার্স কোর্সে পড়তে প্রয়োজন পড়বে ৩৭৭০ ইউরো / প্রতি বছর। ডক্টোরাল কোর্সের জন্য লাগবে ৩৮০ ইউরো/ প্রতি বছর। তবে এই হিসাব নিকাষ বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।

স্কলারশিপ বৃত্তান্তঃ

ফ্রান্সে সরকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক বিভিন্ন স্কলারশিপের সুযোগ রয়েছে। এসব স্কলারশিপে আংশিক বা পুরো টিউশন ফি মওকুফ হতে পারে। কিছু কিছু স্কলারশিপে মাসিক ভাতাও প্রদান করা হয়ে থাকে।

এসব স্কলারশিপ খুঁজতে আবেদন করতে হবে নিচের লিঙ্কের মাধ্যমেঃ

http://www.diplomatie.gouv.fr/en/coming-to-france/studying-in-france/finance-your-studies-scholarships/

Image Source: Internet

ব্যাংক সলভেন্সি

ফ্রান্সে ভিসার ক্ষেত্রে ব্যাংকে আপনাকে ১০ থেকে ১৫ হাজার ইউরো দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি আপনাকে ব্যাংক স্পন্সরশিপ বহন করবেন, সে যদি প্রথম রক্তের সম্পর্কের অভিভাবক হন, তাহলে ভিসার ক্ষেত্রে আপনি সুবিধা পাবেন। এছাড়া অন্য যে কোন অভিভাবক আপনাকে স্পন্সর করতে পারবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক কাগজপত্র ও প্রমাণাদি এম্বাসীতে জমা করতে হবে। আপনি চাইলে নিজের নামেও ব্যাংকে টাকা দেখাতে পারেন। ভিসা পাবার পর আপনি চাইলে এই টাকা যেকোন সময় তুলে নিতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ফ্রান্সে প্রবেশকালে ইমিগ্রেশনে আপনাকে ব্যাংক সলভেন্সি পেপার দেখানোর জন্য অনুরোধ করতে পারে। সুতরাং, যাত্রার সময় সলভেন্সি পেপার আপনার সাথেই রাখবেন।

ভিসা আবেদন পর্ব

ভিসার জন্য প্রথমে এম্বাসীতে ই-মেইল করে এপন্টমেন্ট নিতে হবে। সকল কাগজপত্র সহকারে এম্বাসীতে উপস্থিত হলে ওই দিনই দ্বিতীয়বারের জন্য আরেকটি এপন্টমেন্ট দেওয়া হবে। ভিসার সকল কাগজপত্র জমা দেবার পর আপনাকে কমপক্ষে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ভিসা পাবার জন্য।

Visa Application France
Image Source: Internet

সাধারণত যে সকল কাগজপত্র ভিসার জন্য জমা করতে হবে তা নিচে দেওয়া হল। তবে এম্বেসীতে যোগাযোগ করে আপনাকে অবশ্যই চেকলিস্টটা আরেক বার দেখে নিতে হবে, কারণ এম্বেসী অনেক সময় তাদের চেকলিস্ট পরিবর্তন করে থাকে।

১। পাসপোর্ট (অবশ্যই ৬ মাসের অধিক মেয়াদ থাকতে হবে)

২। অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ও পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি

( অ্যাপ্লিকেশান ফর্ম ডাউনলোড করুন এখান থেকেঃ https://bd.ambafrance.org/Download-the-application-form-for  )

৩। ফ্লাইট বুকিং টিকেট (এটা করতে কোন টাকা লাগে না, শুধু বুকিং দিবেন)

৪। ভিসা অ্যাপ্লিকেশান ফি বা স্কলারশিপ লেটার (যদি পেয়ে থাকেন)

(স্কলারশিপ প্রাপ্তদের ফি লাগে না)

৫। হেলথ ইস্যুরেন্স (যতদিন এর কোর্স ততদিনের করতে হবে)

৬। জন্ম নিবন্ধন

৭। সিভি/রিজিউমি

৮। সকল একাডেমিক ডকুমেন্টস

৯। ইউনিভার্সিটির অফার লেটার

১০। ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সল্ভেন্সি (যিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন তার অর্থাৎ স্পন্সরের)

১১। হাউজিং সার্টিফিকেট/ ডকুমেন্ট (যদি ফ্রান্সে কোন আত্মীয়ের বাসাকে হাউজিং এর জন্য দেন তাহলে ঐ শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত উনার/উনাদের বাসার সকল কন্ট্রাক্ট পেপার দেখাতে হবে)

১২। স্পন্সরের জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট কপি, যা দ্বারা আপনার সাথে উনার সম্পর্ক কি টিউশন ফি পরিশোধের কপি/প্রমাণ

১৩। IELTS/ TOEFL/ফ্রেঞ্চ ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (Alliance Française Certificates)

১৪। ট্রেনিং সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

১৫। কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)

আবাসন ও জীবনযাত্রার ব্যয়

ফ্রান্সে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হোস্টেল রয়েছে। আপনি চাইলে পেইং গেস্ট অথবা শেয়ারিং এপার্টমেন্ট থাকতে পারবেন। এদেশে থাকা খাওয়ার জন্য আপনাকে মাসে খরচ করতে হবে ৪০০-৬০০ ইউরো। তবে এই খরচ পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করে। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স বাবদ আপনার খরচ করতে হবে ৪২ ইউরো/ প্রতি জন/ প্রতি মাস।

Life in France
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব

ফ্রান্সে বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ফ্রেঞ্চ সরকার বিদেশী নাগরিকদের বছরে ৯৬৪ ঘন্টা কাজ করার অনুমতি প্রদান করে।

ফ্রান্সে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

পড়াশুনা শেষ করার পর আপনি ফান্সে ১ বছর জব খোঁজার জন্য সময় পাবেন। আর আপনি যদি হয়ে থাকেন তরুণ গবেষক, কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বা ইনোভেটিভ ইকোনমিক প্রোজেক্টের ডিজাইনার, ফ্রেঞ্চ টেক প্রোগ্রামের অংশ গ্রহণকারী, আর্টিস্ট, উচ্চ পর্যায়ের অ্যাথলেট তাহলে আপনার জন্য ইস্যু করা হবে Plurennial Residence Card (“Passeport Talent”) – এই কার্ডটির আওতায় আপনি ও আপনার পরিবারকে ৪ বছরের ভিসা দেওয়া হবে, আর এই সময়ে আপনি চাকুরী করতে পারবেন।

ফান্সে একটানা ৫ বছর বৈধভাবে থাকার পর শর্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) জন্যে আবেদন করতে পারবেন। সব শর্ত রক্ষিত হলে পেয়ে যাবেন ফ্রান্সের নাগরিকত্ব।

Life in France
Image Source: Internet

ফ্রান্স একাধারে আধুনিক কিন্তু সম্ভ্রান্ত ও প্রাচীন। ফ্রান্স ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী বা সাহিত্যিকদের জন্য যেন কাঙ্ক্ষিত ও আরাধ্য স্থান। তাই, বসবাস ও পড়াশুনার জন্য ফ্রান্স এত বেশি লোভনীয়।

তথ্যসুত্র

November 21, 2022

হাজার হৃদের দেস নামে পরিচিত সবুজ অরণ্যে ঘেরা ইউরোপের সবচেয়ে উত্তরের দেশ ফিনল্যান্ড। হেলসিংকি এ দেশের সর্ববৃহৎ শহর ও রাজধানী। ফিনল্যান্ড বর্তমানে উচ্চশিক্ষা আকাঙ্ক্ষীদের জন্য স্বর্গে পরিণত হয়েছে যার একমাত্র কারণ উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থা। আর আপনাদের সুবিধার্থে আজ আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি ফিনল্যান্ড নিয়ে যেন আপনারা নিজেরাই করতে পারেন নিজেদের আবেদন- আর সহজেই পৌছে যেতে পারেন ফিনল্যান্ড।

Higher Study in Finland
Image Source: pixabay.com

ফিনল্যান্ডের যত বিশ্ববিদ্যালয়

ফিনল্যান্ডে ১৬টি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও ২৭টি এপ্লাইড সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় ফিনল্যান্ড ও ইউরোপীয় আধিবাসীদের জন্য ফ্রী হলেও ২০১৭ সালের পর থেকে নন-ইউরোপীয়দের জন্য টিউশন ফি পরিশোধ করতে হয়। ফিনল্যান্ডের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম তুলে দেওয়া হল।

Aalto University

E-mail: [email protected] । http://www.aalto.fi/en/studies

Tampere University of Technology

[email protected] | http://www.tut.fi/en/admissions

University of Eastern Finland

[email protected] | http://www.uef.fi/admissions

University of Helsinki

[email protected] | https://www.helsinki.fi/en/studying/how-to-apply

University of Lapland

[email protected] | https://www.ulapland.fi/EN/Admissions

University of Oulu

[email protected] | http://www.oulu.fi/english/admissions

University of Vaasa

[email protected] | http://www.uva.fi/en/for/prospective/

ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা

এদেশে ৩ ভাষায় শিক্ষা প্রদআন করা হয়, যথাঃ ইংরেজী, সুইডিশ আর ফিনিশ। তবে মজার ব্যাপার হল, এদেশে প্রায় সবাই ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী ভাষায় সীমিত সংখ্যক কোর্স রয়েছে- তবে আশার কথা, Applied Science বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী ভাষায় বিস্তর সংখ্যক কোর্স রয়েছে। তাই যারা Applied Science এর উপর কোর্স করবেন, তাদের জন্য এদেশে সুযোগ একটু বেশি। ফিনল্যান্ডে মাস্টার্স কোর্সে ভর্ত্তির জন্য বয়সের কোন বাধা নেই।

ফিনল্যান্ডে আপনি চারটি বিশ্ববিদ্যালয় বা চারটি বিষয়ে পড়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ দেশের মাস্টার্স প্রোগ্রাম টেকনিক্যাল ভিত্তিক- আর ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্ত্তি হতে গেলে আপনাকে বসতে হবে পরীক্ষায়। এই ভর্ত্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হবে সাধারণ গণিত, আই,কিউ বিষয়ক এবং বিশ্লেষণাত্মক বিষয় নিয়ে। তাই আপনাকে আবার নিজেকে একটু ঝালিয়ে নিতে হবে। মাস্টার্সে প্রোগ্রামে সাধারণত ভর্ত্তি পরীক্ষায় বসতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বর্ণিত যোগ্যতা থাকলেই চলবে।

University in Finland
Image Source: Internet

পছন্দের কোর্স নির্বাচন

প্রথম কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের Website ঘেটে, নিজের পছন্দ মত কোর্স বেছে নিতে হবে। ফিনল্যান্ডে Engineering সেকশনের কোর্সগুলোর চাহিদা বেশি। তাই, ফিনল্যান্ডে ভবিষ্যৎ খুঁজতে চাইলে অবশ্যই Engineering Stream -এ আবেদন করা শ্রেয়।

অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মত এখানে দুই টি সেশন আছে। যথাঃ এটাম সেশন (Autumn Session) এবং স্প্রিং সেশন (Spring Session) । এটাম সেশন চলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর আর স্প্রিং সেশন চলে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত।

ফিনল্যান্ডে মাস্টার্স প্রোগ্রাম ১.৫ থেকে ২ বছরের হয়ে থাকে আর এই প্রোগ্রামে আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে ১২০ ক্রেডিট। আপনাকে অবশ্যই ৪ বছরের মধ্য মাস্টার্স কোর্স শেষ করতে হবে। আর ডক্টোরাল কোর্সে সময় দেওয়া হয়ে থাকে ৩ থেকে ৬ বছর। ডক্টোরাল সকল কোর্সের জন্য ইংরেজী ভাষাগত দক্ষতা বাধ্যতামূলক। মাস্টার্স বা ডক্টোরাল কোর্সে আবেদন করতে আপনার নূন্যতম IELTS Score 6.5 বা TOEFL- এ 550 Score থাকতে হবে।

ফিনল্যান্ডে ভর্তি আবেদন

সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবার তারিখের হের ফের হয়ে থাকে। তবে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় ডিসেম্বরে আর সেটা শেষ করতে হয় ফেব্রুয়ারির মধ্যে। তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে মার্চ পর্যন্ত সম্য দিয়ে থাকে। আবেদন করার জন্য আপনাকে শরণাপন্ন হতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব  সাইটের। প্রতিটি ফিনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে। আর আপনার প্রয়োজনীয় যোগ্যতাও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। আপনি চাইলে আবেদন করতে পারবেন অন-লাইনে (On Line). আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ডাক যোগে ফর্ম পাঠিয়ে দেয়। সেই নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে হয়। আপনার আবেদনের উপর ভিত্তি করে আপনাকে দেওয়া হবে অফার লেটার (Offer Letter)। আবেদন প্রক্রিয়ায় অনেক সময় বছর খানেক সময় লাগে। তাই, হাতে সময় নিয়ে আবেদন করা উচিত। ফিনল্যান্ডে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হতে পারে। তাই আগেই ওয়েব সাইট ঘেটে জেনে নিন আপনার নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সবকিছু।

আবেদন করতে মূলত প্রয়োজন পরবেঃ

১। সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ও মার্কসীটের ইংরেজি ভার্সন

২। সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র

৩। ভাষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র

৪। রিকমেন্ডেশন লেটার

৫। মোটিভেশন লেটার

৬। পাসপোর্টের ফটোকপি

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে অন্যান্য ডকুমেন্টস লাগতে পারে।

Students in Finland
Image Source: Internet

টিউশন ফি

ফিনল্যান্ডে কোর্স থেকে ভেদে পড়তে আপনাকে খরচ করতে হবে ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ ইউরো। এদেশে সাধারণত স্কলারশিপ প্রোগ্রাম বেশি নেই। এদেশে পড়ার জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ইরাসমাস মুন্ডাস।

ফিনল্যান্ডে আবাসন ও জীবনযাত্রা

ফিনল্যান্ডে থাকার জন্য স্টুডেন্ট এপার্টমেন্ট আছে। সাধারণত এসব এপার্টমেন্টেই শিক্ষার্থীরা থাকে। শেয়ারড এপার্টমেন্টও পাওয়া যায় এদেশে।

এদেশে জীবনযাত্রার একটি ব্যয়ের প্রাক্কলণ দেওয়া হলঃ

আবাসন বাবদ খরচঃ ২২০ – ২৪০ ইউরো

খাওয়া বাবদ খরচঃ ৮০ – ৯০ ইউরো

আনুষঙ্গিক ব্যয়ঃ ২০-৫০ ইউরো

স্বাস্থ্য বীমাঃ ২৫- ৭৫ ইউরো

Student Housing in Finland
Image Source: Internet

ভিসা নিয়ে যত কথা

ফিনিশ ভিসার জন্য আপনাকে যেতে হবে ইন্ডিয়া, কারণ ফিনল্যান্ডের এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। এই দেশের ভিসা পেতে আপনার নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস দরকার পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট

২। ভিসা আবেদনের ফর্ম

৩। ভার্সিটির অফার লেটার

৪। পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি

৫। ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট

৬। ইনকাম এর উৎস

৭। টিউশন ফি পরিশোধের প্রমাণ

৮। ইন্স্যুরেন্স ও চাকুরির অভিজ্ঞতা (যদি থাকে)

আপনাকে ২ বছরের পারমিট এর জন্য আপনার নিজের একাউন্টসে ১৩,৪৪০ ইউরো দেখাতে হবে আর ১ বছরের পারমিট এর জন্য ৬৭২০ ইউরো দেখাতে হবে। আপনার থাকার ব্যয় যদি বিশ্ববিদ্যালয় বহন করে তাহলে ২৮০ ইউরো প্রতি মাসে, আর যদি আপনাকে নিজেকেই থাকা ও খাওয়ার খরচ বহন করে তাহলে প্রতি মাসে ১৯৫ ইউরো করে যত বছরের পারমিটের জন্য আবেদন করবেন তত দিনের দেখাতে হবে।

আপনার স্পন্সর যদি পিতা-মাতা হয়, তাহলে অতিরিক্ত কাগজপত্র দেখাতে হতে পারে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, পিতা-মাতা ছাড়া অন্য কেউ স্পন্সর হবার সুযোগ নেই।

Life in Finland
Image Source: Internet

ফিনল্যান্ডে পার্টটাইম জব

ফিনল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সু্যোগ পাবেন। আবার সামারে আর উন্টারে পাবেন ফুল টাইম টাইম কাজ করার সুযোগ। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী এই দেশে কাজ করার রয়েছে বিপুল সুযোগ। আবার ২০-৫০ ক্রেডিট সম্পন্ন করার পর আপনি Teachers’ Assistant হিসেবে আবেদন করতে পারবেন। তবে পার্ট টাইম চাকুরী করতে আপনাকে সুইডিশ ভাষা জানা থাকলে পাবেন অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা।

ফিনল্যান্ডে কোর্স শেষে চাকুরির সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস এর সম্ভাবনা

ফিনল্যান্ডে ছাত্র হিসাবে থাকাকালে আপনাকে B Status-এ গণ্য করা হবে। এরপর চাকুরী শুরু করলে আপনাকে দেওয়া হবে A Status। আপনি যদি ৪ বছর A Status নিয়ে ফিনল্যান্ডে থাকেন তাহলেই আপনি বৈধ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য আপনার ভাষাগত প্রমাণপত্র ও চাকুরীর প্রমাণপত্র দিয়েই স্থায়ী নাগরিক হিসেবে ফিনল্যান্ডে থাকতে পারবেন।

Life in Finland
Image Source: Internet

ফিনল্যান্ড ইউরোপের সমৃদ্ধ ও অপার সম্ভবনাময় এক দেশ। আপনি চাইলে নিজের সম্ভবনার খোঁজে আসতে পারেন ফিনল্যান্ডে।

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!