Loading...
November 23, 2022

বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক স্কলারশীপগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য সরকার প্রদত্ত কমনওয়েলথ স্কলারশীপ অন্যতম। কমনওলেথ স্কলারশিপ দেওয়া হয় কমনওলেথ ভিত্তিক অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের। এই স্কলারশিপের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সাল থেকে আর এই প্রোগ্রামের অর্থায়ন করে Department of International Development। প্রায় ৩৫০০০ জন এখন পর্যন্ত কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ পেয়েছেন। প্রতি বছর প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীকে এই বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। বাংলাদশ কমনওলেথের আওতায় হওয়ায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারে। এই বৃত্তি উদ্যোমী ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে।

স্কলারশিপ এর নাম

কমনওয়েলথ স্কলারশীপ

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

বিবেচিত বিষয় সমুহ সম্পর্কে জানতে নিম্মোক্ত ওয়েবসাইট স মুহের সাহায্য নিতে পারেন –

www.cscuk.dfid.gov.uk (কমনওয়েলথ বৃত্তি–সংক্রান্ত বেশির ভাগ তথ্য পাওয়া যাবে এই অফিশিয়াল ওয়েবপেজে)

www.ugc.gov.bd । www.britishcouncil.org.bd

একজন আবেদনকারীকে মাস্টার্স অথবা পিএইচডি যেকোনো একটি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

কমনওয়েলথ কমিশন সচিবালয়, লন্ডনের মাধ্যমে আর্থিক অনুদান দেয় যুক্তরাজ্য সরকারের ‘আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ বা ডিএফআইডি’

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

কমনওয়েলথ বৃত্তির আর্থিক সুবিধা

১. স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির সম্পূর্ণ টিউশন ফি বহন করবে কমনওয়লেথ কমিশন

২. যুক্তরাজ্যে যাওয়া–আসার বিমানের টিকিট।

৩. লন্ডন অথবা লন্ডনের বাইরে বসবাসের মাসিক ভাতা

৪. মাসিক ভাতার বাইরেও এককালীন টাকা পাওয়া যায়

৫. ‘স্টাডি ট্রাভেল গ্র্যান্ট’

৬ ‘থিসিস গ্র্যান্ট’

৭. এ ছাড়া কমনওয়েলথ কমিশন কর্তৃক আয়োজিত যেকোনো প্রশিক্ষণ, স্বল্পমেয়াদি কোর্স, ওয়েলকাম ইভেন্ট ও আঞ্চলিক সম্মেলন যোগদানের জন্য ট্রেনের টিকিট, থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়।

আর এ খরচ বহন করা হয় পুরো কোর্স সময়কালে।

আবেদনের যোগ্যতা

কমনওলেথ স্কলারশিপে আবেদনের জন্য আপনার নিম্নোক্ত যোগ্যতা থাকতে হবেঃ

১। কমনওলেথ দেশের নাগরিক অথবা শরণার্থী হতে হবে

২। UK-এ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের আবেদন করতে হবে আর আবেদনের জন্য প্রয়োজইনীয় সকল যোগ্যতা থাকতে হবে

৩। দ্বিতীয় মাস্টার্স করতে চাইলে, কেন দ্বিতীয় মাস্টার্স করতে চাচ্ছেন তার কারণ দর্শাতে হবে

৪। আবেদনকারীর কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির (২:১) স্নাতক বা স্নাতকোত্তর থাকতে হবে, যা সিজিপিএ ৩.০–এর সমতুল্য। তবে সিজিপিএ যত বেশি হবে, বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।

৫। যাঁরা আগে বিদেশে থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন, তাঁরা স্নাতকোত্তরের জন্য বিবেচিত হবেন না। তবে অন্য কোনো বৃত্তির অধীনে স্নাতকোত্তর করে থাকলে পিএইচডিতে আবেদন করতে পারবেন।

৬। দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে পিএইচডির জন্য নিবন্ধন করলে বৃত্তির জন্য বিবেচিত হবেন না।

৭।  কমনওয়েলথভুক্ত বা নিজ দেশের বাইরে অবস্থানকালে কেউ আবেদন করলে গ্রহণযোগ্য হবেন না।

৮। যুক্তরাজ্যে কেউ শিক্ষারত অবস্থায় এই স্কলারশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না।

আবেদনের সময়সীমা

আবেদনের হালনাগাদ সময়সীমা জানতে নিম্মোক্ত ওয়েবসাইট এর সাহায্য নিতে পারেন-

www.cscuk.dfid.gov.uk (কমনওয়েলথ বৃত্তি–সংক্রান্ত বেশির ভাগ তথ্য পাওয়া যাবে এই অফিশিয়াল ওয়েবপেজে)

www.ugc.gov.bd | www.britishcouncil.org.bd

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩টি দেশের তরুণ শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য দেওয়া হয় ৮০০টি বৃত্তি (স্নাতকোত্তর, পিএইচডি ও স্প্লিট–সাইট স্টাডি)

Commonwealth Scholarship - UK
Image Source: Internet

আবেদন প্রক্রিয়া

কমনওয়েলথ স্কলারশীপের নির্বাচন প্রক্রিয়াও দীর্ঘমেয়াদী যা কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। ১ বছরেরও বেশি সময় লাগে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে।

কমনওলেথ স্কলারশিপের আবেদন শুরু হয় প্রতি বছর নভেম্বর মাস থেকে। এপ্লিকেশন প্রথম দিকে করাই ভালো। পরে এপ্লিকেশনের প্রেশার বাড়লে সার্ভার অনেক সময় স্লো হয়ে যায়। তাই হাতে সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন করতে ব্রাউজ করুনঃ

http://cscuk.dfid.gov.uk/apply/masters-scholarships/

প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক মনোনীত প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত আছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি হলো আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। প্রতিবছর ইউজিসি কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরখাস্ত আহ্বান করে। www.ugc.gov.bd

আবেদনের নিয়মাবলীঃ

১। যুক্তরাজ্যের যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় কমনওয়েলথের এই স্কলারশিপের সাথে চুক্তিবদ্ধ, সেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সিএসসি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করে আবেদন করতে হবে।

২। সকল ফাইল স্ক্যান করে PDF ফরম্যাটে সাবমিট করতে হবে আর ডকুমেন্ট সাইজ ৫ মেগাবাইটের বেশী হতে পারবে না।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

১। পাসপোর্ট/ নাগরিকত্ব সনদ

২। একাডেমিক সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট

৩। রেফারেন্স লেটার- পরবর্তীতে যিনি রেফারেন্স দিয়েছেন, তাকে মেইল করা হবে।

তথ্যসুত্রঃ

November 22, 2022

আমেরিকায় পড়াশুনার জন্য প্রদত্ত অন্যতম সম্মানজনক ও খ্যাতমান স্কলারশিপ প্রোগ্রাম হল ফুলব্রাইট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর জেমস উইলিয়াম ফুলব্রাইট সেপ্টেম্বর, ১৯৪৫ সালে সিনেটে স্কলারশিপ দেওয়ার জন্য বিল উত্থাপন করেন এবং ১৯৪৬ সাল থেকে উনার নাম অনুসারে এই স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু হয়।

আমেরিকায় পড়তে আসা প্রতিভাবান গবেষক, ইয়াং প্রোফেশন্যালদের এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। ফুলব্রাইট  স্কলারশিপ হোল্ডারের ৫৪ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন আর ৮২ জন পেয়েছেন পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন।

স্কলারশিপ এর নাম

ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রাম

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভের সুযোগ পান।

বিজনেসের ক্ষেত্রে এমবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট/ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস/ অপারেশন্স ম্যানেজমেন্ট/ হেলথ কেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। আর বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে- বায়োলজি/ কেমিস্ট্রি/ ফিজিক্স/ ফার্মাসি। ইকোনমিকসে-ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস/ট্রেড অ্যান্ড ফিন্যান্স/পলিসি/এনভায়রনমেন্টাল/ন্যাচারাল রিসোর্সেস ইকোনমিকস। অ্যাডুকেশনে-হায়ার অ্যাডুকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন/ অ্যাডুকেশন পলিসি, প্ল্যানিং এবং ম্যানেজমেন্ট/ কারিকুলাম অ্যান্ড ইনস্ট্রাকশন্স। অ্যানভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, ফ্যাশন অ্যান্ড টেক্সটাইল ডিজাইন পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন/ পাবলিক পলিসি সাইকোলজি : ক্লিনিক্যাল/কাউন্সেলিং সিকিউরিটি স্টাডিজ, সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ-পলিটিক্যাল সায়েন্স/ সোশিওলজি/ হিস্টোরি/ লিটারেচার আরবান প্ল্যানিং : জেনারেল প্ল্যানিং/ল্যান্ড ইউজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল প্ল্যানিং/ ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম/ আরবান/ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট।

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

United States Education Foundation (আমেরিকা)

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

ফুলব্রাইট স্কলারশিপের আওতায় আপনি যা যা পাবেনঃ

১। আসা-যাওয়া বিমান ভাড়া ও অতিরিক্ত ব্যাগেজ অ্যালাউন্স

২। টিউশন এবং সংশ্লিষ্ট একাডেমিক ফি ও বুক এ্যালাউন্স

৩। হেলথ ও এক্সিডেন্ট ইনস্যুরেন্স

৪। ট্রাভেল ও বসবাসের জন্য মাসিক স্টাইপেন্ডসহ অন্যান্য

৫। আকস্মিক ব্যয়ের জন্য মাসিক স্টাইপেন্ড

আর এ খরচ বহন করা হয় পুরো কোর্স সময়কালে।

আবেদনের যোগ্যতা

ফুলব্রাইট স্কলারশিপের জন্য আপনার থাকতে হবে নিম্নোক্ত যোগ্যতাঃ

১। এই স্কলারশিপ মাস্টার্স প্রোগ্রামে দেওয়া হয়। তাই আপনার প্রয়োজন পরবে ৪- বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রী ও খুব ভালো একাডেমিক প্রোফাইল থাকতে হবে।

২। পূর্বের কোন US ডিগ্রী থাকতে পারবে না। এমনকি তৃতীয় কোন দেশ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী থাকলে তিনি এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য বিবেচিত হবেন না।

৩। কমপক্ষে দুই বছরের প্রফেশনাল জব এক্সপেরিয়েন্স থাকতে হবে।

৪। স্কলারশিপে আবেদন করতে কমপক্ষে TOEFL iBT স্কোর ৮০ বা IELTS স্কোর ৭.০ থাকতে হবে।

৫। ফুল ব্রাইটের জন্য আপনাকে বাংলাদেশী, ইংরেজীতে দক্ষ ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।

৬। আবেদনের সময়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।

ফুলব্রাইট স্কলারশিপ প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য আপনার বয়স হতে হবে ২৪ থেকে ৩০ বছর।

আবেদনের সময়সীমা

সাধারণত এপ্রিল-মে-জুন মাসে এই প্রোগ্রামের জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্ট প্রোগ্রামসংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য ঢাকার আমেরিকান সেন্টারে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

Fullbright Scholar
Image Source: Internet

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

বাংলাদেশ সহ আরোও ১৬০ টি দেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়ে থাকে।

আবেদন প্রক্রিয়া

অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস ও ট্রান্সক্রিপ্ট স্ক্যান করে আপলোড করে আবেদন করতে হবে। সাধারণত এপ্রিল – মে মাসে আবেদন কার্যক্রম শুরু করতে হয়। তাই, এই সময়টা একটু ওয়েব সাইটে ঘুরে ঘুরে দেখতে হবে। আর সকল সময়ই আবেদন হাতে সময় রেখে করা উচিত।

নিচে উল্লিখিত লিংক থেকে অনলাইন আবেদন ফরম সংগ্রহ ও তা পূরণের বিস্তারিত নির্দেশাবলি পাওয়া যাবে। সম্ভাবনাময়ী প্রার্থীদের আবেদনপত্র পূরণের আগে আবেদনপত্র পূরণের নির্দেশাবলি ভালোভাবে পড়ে বুঝে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। https://bd.usembassy.gov/education-culture/student-exchange-programs/ প্রার্থীরা সরাসরি এই ওয়েবসাইট থেকেও অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন https://iie.embark.com/ apply/ffsp

ফুলব্রাইট স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য আপনাকে জমা দিতে হবেঃ

১। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট

২। রিকমেন্ডেশন লেটার (৩ টি)

৩। একাডেমিক রিপোর্ট ফর্ম (ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে)

৪। সিগনেচার ফর্ম (ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে)

৫। IELTS/ TOEFL স্কোর

৬। GRE/ GMAT স্কোর (এই কম্পিটিটিভ টেস্টের রেজাল্টও জমা দিতে হবে। এই স্কোর আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজন। আর ভালো GRE/GMAT স্কোর থাকলে আপনি স্কলারশিপ পাওয়ার দৌড়েও এগিয়ে থাকবেন)

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ https://foreign.fulbrightonline.org

আবেদন করতে ভিজিট করুনঃ  https://apply.iie.org/ffsp2021

আর আবেদনের বিষয়ে বা কোন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশে অবস্থিত আমেরিকা সেন্টারের রেহানা সুলতানা’র সাথে মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন, তার মেইল এড্রেসঃ
[email protected]

ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সম্মানজনক স্কলারশিপ। বেশ প্রতিযোগিতা পেড়িয়ে আপনাকে ছিনিয়ে নিতে হবে এই সম্মানজনক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। তাই, নিজেকে তৈরী করুন আর সব কিছু গুছিয়ে আবেদন করুন ফুল ব্রাইট স্কলারশিপের জন্য।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

ডেনমার্ক বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে এক আকর্ষণীয় বিদ্যালাভের পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত। এ দেশের রাজধানি কোপেনহেগেন আর মুদ্রা হল ডেনিস ক্রোনা এবং ভাষা ডেনিস।

অতি সুন্দর মনোমুগ্ধকর এই দেশে আপনিও যদি পড়তে যেতে চান তাহলে এখনি পড়ে ফেলুন গোটা লেখাটা, কারণ এটা আপনার জন্যই লেখা।

কেন ডেনমার্কে পড়তে যাবেন?

উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক মানুষই দুঃশ্চিন্তায় ভোগেন আর বুঝে উঠতেই পারেন না- কোন দেশ হবে তাদের গন্তব্য? অধিকাংশ মানুষই মনে করেন আমেরিকা, কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়া হবে তাদের জন্য বিদ্যার্জনের গন্তব্য। কিন্তু, এই দেশগুলোতে ভালো CGPA, IELTS, GRE/ GMAT থাকা সত্ত্বেও আপনি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবেন না- আপনি এদেশে ভিসা পেয়ে পড়তে যেতে পারবেন। বরং ইউরোপের এই দেশে আপনার ভালো CGPA ও IELTS স্কোর থাকলেই পেয়ে যাবেন আপনার ডেনমার্কে পড়ার টিকিট। তাই বলে এটা ভাবার কারণ নেই যে, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভালো নয় বা এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking-এর মধ্যে নেই। বরং এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক উন্নতদেশের চেয়ে ভালো।

Higher Study in Denmark
Image Source: Internet

আপনাদের জন্য World Ranking-এ কিছু ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  1. University of Copenhagen
  2. Roskilde University
  3. University of Southern Denmark
  4. IT University of Copenhagen
  5. Copenhagen Business School
  6. Copenhagen Business Academy
  7. VIA International College
  8. University College Zealand
  9. Aarhus University
  10. Technical University of Denmark
  11. Aalborg University
  12. Copenhagen University
  13. Odense University
  14. Danish University of Education
  15. Royal Academy of Music

ডেনমার্কে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ডেনিশ কিংবা ইংরেজী ভাষায় পড়াশুনা করতে পারবেন। ডেনিশ ভাষায় পড়তে গেলে অবশ্যই আপনাকে “Denisake Foreign Language” বা “Denish Test 2” পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হতে হবে। আর যদি ইংরেজী ভাষায় পড়তে চান, তাহলে IELTS স্কোর 5.5 – 6.5 থাকতে হবে, একাডেমিক পরীক্ষায় অবশ্যই ৫০% মার্ক থাকতে হবে। যদি আপনি ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জনের জন্য যান, তাহলে HSC + ১ বছর বাংলাদেশে পড়াশুনা করতে হবে। আবার মাস্টার্সে আবেদনের জন্য ৪ বছরের ব্যাচেলর এবং পিএইচডি পড়তে যেতে আপনাকে ২ বছরের মাস্টার্স থাকতে হবে।

কোর্স সার্চ ও কোর্স নির্বাচন

কোর্স সার্চের জন্য আপনি বিভিন্ন ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখতে পারেন অথবা, ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট আছে ( https://www.optagelse.dk), সেখানে গিয়েও দেখতে পারেন। কোর্স বাছাই-এর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ইন্টারেস্ট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মাথায় রেখে কাজ করবেন। মনে রাখবেন, ডেনিশ ও বাংলাদেশের চাকুরীর বাজার ভিন্ন। তাই ডেনমার্কে থাকবেন নাকি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এইসব ভালো করে চিন্তা করেই আপনি আপনার কোর্স নির্বাচন করবেন।

ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি পিএইচডি সহ ৬শয়েরও বেশি বিষয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে ডেনমার্কে। বিষয়গুলোর মধ্যে আছে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস এন্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, এস্ট্রোনমি, অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি, ডিজিটাল মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং, এপ্লায়েড ম্যাথমেটিকস, আইসিটি ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিস, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিকস, একাউন্টিং এন্ড ফিন্যান্স, ফ্যাশন এন্ড টেক্সটাইলস ডিজাইন, ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ ইত্যাদি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা

ডেনিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত সাবজেক্ট ও ইন্সটিটিউটভেদে আবেদনের সময়সীমা পরিবর্তিত হয়। কিন্তু, সাধারণত EEU এর বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনের শেষ সীমা ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত হয়ে থাকে আর সব ধরণের ফরমালিটি শেষে ক্লাশ শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাস থেকে। কিন্তু, অবশ্যই ওয়েবসাইট ঘেটে আবেদনের সীমা ও এবং ক্লাশ শুরু হবার তারিখ ভাল করে দেখে নেবেন।

Study in Denmark - Aalborg University
Image Source: Internet

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ডেনমার্কে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে- যার লিঙ্কটি হলঃ

https://www.optagelse.dk/

এই লিঙ্কে গিয়ে আপনাকে আবেদন করতে হবে। এছাড়া অন্য কোন উপায়ে আবেদন করা যায় না।

 

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। IELTS এর সনদ

৩। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। CV

৫। পাসপোর্টের কপি

অফার লেটার (Offer Letter) /এডমিশন লেটার(Admission Letter)

যদি ডেনমার্কের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার এডমিশন হয়, তাহলে আপনাকে একটি কনডিশনাল এডমিশন লেটার দেওয়া হবে। এর পর আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টসে টিউশন ফি জমা করতে হবে। তাহলেই আপনি পাবেন এডমিশন লেটার। চিন্তার কোন কারণ নেই- ভিসা না পেলে টিউশন ফি ফেরত পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, এডমিশন লেটারের সাথে ST-1 নামক একটি ফর্ম পাঠানো হয়। সেখানে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও নিজের তথ্য থাকে।

টিউশন ফি

সাধারণতঃ ডেনমার্কে পড়তে গেলে আপনাকে টিউশন ফি গুনতে হবে ৬০০০-১৬,০০০ ইউরো পর্যন্ত। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে এই টিউশন ফি কম ও বেশি হতে পারে।

Students in Denmark
Image Source: Internet

স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ

ডেনমার্কে বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ রয়েছে। আপনি যদি সেখানে সরকারি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে আপনি শুধু পড়াশুনার নয়, মাসিক খরচও বহন করে থাকে। কিছু স্কলাশিপের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

১। NORDPLUS

২। ERASMUS

৩। ERASMUS MUNDUS

৪। Full Bright Commission

স্কলারশিপ খুঁজে পেতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ

https://studyindenmark.dk/study-options/tuition-fees-scholarships

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ডেনমার্কে আপনাকে কোন ব্যাংক সলভেন্সি দেখাতে হবে না। যদি আপনি আপনার স্পাউস নিয়ে যেতে চান, তাহলেই আপনার একাউন্টসে ৭১২৯২ ডেনিস ক্রোনা দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

ভিসা প্রক্রিয়া চাইলে আপনি অনলাইনে সেরে নিতে পারেন। অথবা, VFS Global Service Pvt. Ltd. তে গিয়েও সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই ভিসা প্রক্রিয়া একটু সময় সাপেক্ষ- ডেনমার্কের ভিসার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে প্রায় ২ থেকে ৩ মাস। তাই, এই সময় সাপেক্ষ কাজ সারার জন্য হাতে থাকতে হবে পর্যাপ্ত সময়। না হলে, আপনার ভিসা পেতে গিয়ে সেমিস্টার লসও হতে পারে।

Visa Denmark
Image Source: Internet

ভিসার জন্য আপনাকে জমা দিতে হবে নিম্নোক্ত কাগজপত্রঃ

১। পাসপোর্ট ও রিসেন্ট ছবি

২। মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। IELTS স্কোরের কপি

৪। এডমিশন লেটার

৫। সকল তথ্য দিয়ে সঠিকভাবে পূরণকৃত ST-1 ফর্ম

যোগাযোগের জন্য ঢাকা অফিসের লিঙ্ক দেওয়া হলঃ

https://bangladesh.um.dk/

ডেনমার্কে আবাসিক ব্যবস্থা

চিন্তার কোন কারণ নেই- এই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই আছে আবাসিক হল। বিশেষত আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে অন্তর্জাতিক মানের সু্যোগ সুবিধাসহ হলের। যদি হোস্টেলে সিট না পেয়ে থাকেন কিম্বা হোস্টেলে থাকতে না চান, তাহলে আপনি বাসা ভাড়া করেও থাকতে পারেন।

এজন্য নিচে একটি খরচের এস্টিমেট দেওয়া হলঃ

হোস্টেল – ২৪০ – ৪০০ ইউরো

ফ্যামিলি বাসা- ২০০- ৫০০ ইউরো

শেয়ারড ফ্লাট- এটি আর কম হয়ে থাকে, সাধারণত আপনার ফ্লাটমেটের সংখ্যার উপর নির্ভর করবে।নিচের লিঙ্কে ঘাটলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেনঃ

https://studyindenmark.dk/live-in-denmark/housing-1/how-to-find-housing

মাসিক খরচ এবং পার্ট টাইম জব এর সুযোগ

ডেনমার্কে থাকা খাওয়া বাবদ ৭৫০-৯০০ ইউরোর মত খরচ করতে হবে। যদিও এই খরচের পুরোটাই ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভরশীল। অনেকের অনেক কমও লাগতে পারে, আবার অনেক সুময় অনেক বেশিও খরচ হয়ে যায়।

ডেনমার্কে আপনি সাধারণত ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করার অনুমতি পাবেন। তবে যে কোন ছুটি বা সামার ভ্যাকেশনে ফুল টাইম জব করার অনুমতি পাবেন।

Life in Denmark
Image Source: Internet

কোর্স শেষে চাকুরীর সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস

এই দেশে Establish Card নামক এক ধরণের কার্ডের প্রচলন রয়েছে। আপনার মাস্টার্স বা পিএইচডি শেষ হবার পর আপনি এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই কার্ড থাকলে আপনি দুই বছর চাকুরী খোঁজার বা করার সুযোগ পাবেন।

আর যদি স্থায়ী বসবাস করতে চান, তাহলে আপনাকে টানা ৮ বছর থাকতে হবে। এই ৮ বছর সময়ের শেষের ৪ বছরের মধ্য ৩.৫ বছর আপনাকে ফুল টাইম চাকুরীর সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকতে হবে। তাহলেই মিলেবে ডেনমার্কে স্থায়ী নাগরিক হবার সুযোগ।

 

ডেনমার্ক ইউরোপের একটি সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। এদেশে বসবাস করতে এখন অনেকেই আগ্রহী। তাই, আর দেরী কেন? চলুন আবেদন করি এখনি।

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!