Loading...
November 22, 2022

মধ্য ইউরোপের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি যেখানে জন্ম নিয়েছিলেন কিংবদন্তি নেতা মার্শাল টিটো সেই দেশের নাম স্লোভেনিয়া। আর এই দেশই আজ আমাদের কেন্দ্রবিন্দু। উচ্চশিক্ষার জন্য যারা ইউরোপের স্বপ্ন দেখছেন- এই লেখাটি আসলে তাদেরই জন্য। তাহলে আর দেরি কেন? শুরু করি আজকের পর্ব।

কেন স্লোভেনিয়ায় পড়তে যাবেন?

পাহাড়-নদী-হ্রদ বেষ্টিত স্লোভেনিয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার লোকের ঢল নামে এর অনাবিল সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য। এই দেশের আয়তন ৭,৮৮৭.৪ বর্গ মাইল এবং রাজধানী লুবলিয়ানা। এই শহর কার্যত স্লোভেনিয়ার সকল প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু- যদিও আয়তনের বিচারে শহরটি বেশ ছোট। এই দেশের মুদ্রার নাম ইউরো এবং ভাষা স্লোভিন- আর দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজী। এখানে সকলেই প্রায় ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। এ দেশের মোট জনসংখ্যা ২০,৮১,৯৪৫ জন। এই দেশের মোট জিডিপি ৫৪ বিলিয়ান মার্কিন ডলার আর কমপক্ষে গড়ে ৮৮৬ ইউরো এই দেশে বেতন দেওয়া হয়।

Study in Slovenia
Image Source: pixabay.com

সামগ্রিক বিচারে এই দেশ হতেই পারে আপনাদের পছন্দের ডেস্টিনেশন।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

স্লোভেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো World Ranking এর তালিকায় উপরের দিকে অবস্থিত হওয়ায় অনেকেই এই দেশে পড়াশুন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে চায়। তাই নিঃসন্দেহে এই দেশে পড়তে আসার জন্য মনস্থির করতে পারেন।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিচে দেওয়া হলঃ

  • University of Ljubljana‎
  • University of Maribor‎
  • University of Nova Gorica‎
  • University of Novo Mesto‎
  • University of Primorska‎

এই দেশে আপনি সকল সাবজেক্টেই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। আর্টস, বিজনেস অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং যে কোন বিষয়েই পড়াশুনা করার সুযোগ পাবেন। এখানে কোর্সসমূহ স্লোভেনিয়া আর ইংরেজী ভাষায় অফার করা হয়। বিভিন্ন কোর্স বিভিন্ন ভাষায় হওয়ায় আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত কোর্স কোন ভাষায় অফার করা হয়েছে?

স্লোভেনিয়াতে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

স্লোভেনিয়ায় পড়াশুনার জন্য আপনার জন্য প্রয়োজন পড়বে ইংরেজী ভাষাগত যোগ্যতা। পড়তে যেতে আপনাকে অর্জন করতে হবে B2 গ্রেডের বা IELTS এ ৬.০ অর্জনের প্রমাণপত্র। আর স্বাভাবিকভাবে আপনাকে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে অর্জন করতে হবে HSC আর মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে আপনার থাকতে হবে ব্যাচেলর আর পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে আপনার থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রী।

ভর্তি আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

স্লোভেনিয়ায় Autumn সেশনে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। অক্টোবার মাস থেকে ক্লাস শুরু হয় এই সেশনের এবং ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্লিকেশন নেওয়া শুরু হয়- আর শেষ হয় জুন মাসে। অন্যদিকে Winter সেশনে কম সংখ্যক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট নেওয়া হয়। এদেশে আবেদন করতে হয় একটি কমন ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে, যার লিংক নিচে দেওয়া হলঃ

https://portal.evs.gov.si/prijava/?locale=en

এরপর, এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে আর দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চয়েস লিস্ট। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে মেইল করে আপনাকে একটি ডকুমেন্ট দেওয়া হবে, এই ডকুমেন্ট নিজ হস্তে স্বাক্ষর করে অন্যান্য সত্যায়িত ডকুমেন্টসের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।

University in Slovenia
Image Source: Internet

নিচে প্রায়শঃ আবশ্য ডকুমেন্টসের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। যথাযথভাবে সত্যায়িত সকল একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। সহস্তে স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র

৩। IELTS এর সনদ

৪। CV,

৫। মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

এরপর আপনার আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে Letter of Acceptance দেওয়া হবে। যদি এটিতে উল্লেখ থাকে, ভিসা আবেদনের পূর্বে আপনাকে টিউশন ফি দিতে হবে তাহলে আগে টিউশন ফি দিয়েই আপনাকে আবেদন করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে থাকে, তারা ভিসা প্রাপ্তির পর টিউশন দিতে বলে। তাই আপনার জন্য কোনটি হচ্ছে, সেটা Letter of Acceptance পড়ে ভালো করে বুঝে নিতে হবে।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

স্লোভেনিয়ার জন্য ডকুমেন্টস সত্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া।

(১) প্রথমে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার ডকুমেন্টস সত্যায়ন করিয়ে নিতে হবে।

(২) তারপর যেতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়নের জন্য।

(৩) এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডকুমেন্টস সত্যায়ন করতে হবে।

(৪) এবার এই ডকুমেন্টস অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশের এম্বেসী থেকে সত্যায়ন করাতে হবে- এজন্য ফি দিতে হবে প্রতি পেজ ১০ ইউরো। মনে রাখবেন, অরিজিনাল কাগজ ছাড়া তারা ডকুমেন্টস সত্যায়ন করে না। তাই অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত আপনার কোন বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনকে অথরাইজ করে দিতে হবে এবং তিনি আপনার অরিজিন্যাল ডকুমেন্টস দেখিয়ে সত্যায়িত করিয়ে আনবেন।

(৫) এরপর সত্যায়ন করাতে হবে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া থেকে। এখানে প্রতি পেজ সত্যায়ন করাতে ক্ষরচ হবে ৩ ইউরো। এরা কোন কুরিয়ার কপি গ্রহণ করে না। তাই আপনাকে আবার দ্বারস্থ হতে হবে প্রবাসী বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনের। আপনি চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়েরও সহযোগিতা নিতে পারেন। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই জন্য আপনার কাছ থেকে চার্জ নিবে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ এম্বেসী যদি ডকুমেন্টস সত্যায়ন না করে তাহলে মিনিস্ট্রি অব ফরেন এফেয়ার্স অব স্লোভেনিয়া এই ডকুমেন্টস সত্যায়ন করবে না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ও আপনার ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে না।
Students in Slovenia
Image Source: Internet

টিউশন ফি

স্লোভেনিয়ায় আপনাকে পড়াশুনার জন্য আপনাকে দিতে হবে ২,৫০০-৪০০০ ইউরো। আবার আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা হয়ে থাকে তাহলে টিউশন ফি হতে পারে ৮,০০০ ইউরো পর্যন্ত।

স্লোভেনিয়ায় আবাসন ব্যবস্থা

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে হোস্টেলের ব্যবস্থা। আবাসনের জন্য আগে থেকেই আবেদন করা বুদ্ধিমানের কাজ। স্লোভেনিয়ায় থাকা- খাওয়া বাবদ আপনার মাসিক খরচ হবে ৩০০-৩৫০ ইউরো।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

স্লোভেনিয়ায় ভিসা প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ব্যাংকে সেদেশে এক বছর চলার মত পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান দেখাতে হবে। সাধারণত এই দেশে একজনের জন্য বার্ষিক প্রায় ৬০০০-৭০০০ ইউরো দেখাতে হবে। আর যদি আপনার খরচ বহন করে অন্য কোন স্পন্সর, তাহলে তাকে নোটারাইজড অংগীকারনামা দিতে হবে যে তিনি আপনার সকল খরচ বহন করবেন। তার জন্য প্রয়োজন পরবে, আপনার স্পন্সরের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

বাংলাদেশে স্লোভেনিয়ার এম্বেসী না থাকায় আপনাকে যেতে হবে ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীতে। এজন্য আপনাকে আগে থেকেই নিতে হবে এপয়েন্টমেন্ট। ভিসা ফি দিতে হবে ৮০ ইউরো। এখানে আপনাকে টেম্পোরারী রেসিডেন্স পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

ই-মেইলের মাধ্যমেও আপনি স্লোভেনিয়ার দূতাবাসে ভিসার জন্য অ্যাপোয়েনমেন্ট পেতে পারেন। দিল্লিতে অবস্থিত স্লোভেনিয়ার দূতাবাসের ওয়েবসাইট (http://www.newdelhi.embassy.si)।

Students in Slovenia
Image Source: Internet

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Offer Letter

২। স্লোভেনিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো Observation Letter, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফর্মালিটি শেষ হবার পর পাঠানো হয়ে থাকে

৩। পাসপোর্ট [কমপক্ষে ৩ মাস মেয়াদ ও ২ টি ফাকা পেজ থাকতে হবে]

৪। ফটোগ্রাফ (৪.৫ সেঃমিঃ x ৩.৫সেঃমিঃ) – দুইটি

৫। মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স ও পুলিশ ক্লিয়ারান্স সার্টিফিকেট [অনধিক ৩ মাসের পুরাতন]

৬। ফ্লাইট রিজার্ভেসনের ডকুমেন্টস

৭। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৮। জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট [ইংরেজীতে হতে হবে]

৯। IELTS এর সনদ

১০। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

১১। সকল সত্যায়িত ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

১২।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে বসতে হবে ইন্টারভ্যিউ-এ। আর ভিসা পেতে সময় লাগবে ৪-৬ সপ্তাহ।

ভারতের দিল্লিস্থ স্লোভেনিয়ার এম্বেসীর ঠিকানাঃ

A – 5/4, Vasant Vihar, New Delhi 110 057, India

T: + 91 11/ 41662891

Visa section:

T: + 91 11/ 41662893 F: + 91 11 /41662895 E: [email protected]

পার্ট টাইম জব ও জীবন-যাপন ব্যয়

অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ডে যে রকম নিয়ম আছে যে স্টুডেন্ট অবস্থায় একজন ব্যক্তি এক সপ্তাহে বৈধভাবে বিশ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না, স্লোভেনিয়ার আইনে এ রকম সুনির্দিষ্ট করে এখনো কিছু উল্লেখ নেই। তাই এখানে চাইলে একজন শিক্ষার্থী ফুলটাইম কাজ করতে পারেন। MJob Service আর E-studentski Servis নামক দুইটি সংস্থা শিক্ষার্থীদের জব খোঁজার ব্যাপারে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

মাসিক খরচ নির্ভর করে আপনার জীবন যাপনের উপর। সাধারনত স্লোভেনিয়ায় আপনি ৩০০-৩৫০ ইউরো দিয়ে ১মাস চলতে পারবেন।

Life in Slovenia
Image Source: Internet

স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

আপনি যদি ফুল টাইম কাজের অভিজ্ঞতা ও টানা ৫ বছর এই দেশে থাকেন তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন PR -এ আবেদন করার সুযোগ। আর যদি আপনি শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, টানা ১০ বছর থাকতে হবে।

অর্থাৎ শিক্ষার্থী অবস্থায় পার্মানেন্ট রেসিডেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুই বছরকে এক বছর হিসেবে বিবেচনা হয়। উদাহরণস্বরূপ: কেউ যদি তিন বছরের ব্যাচেলর কোর্স সম্পন্ন করেন স্লোভেনিয়া থেকে, তাহলে এ তিন বছরকে অর্ধেক অর্থাৎ দেড় বছর এবং সেই সঙ্গে আরও সাড়ে তিন বছর ফুলটাইম কাজ করার অভিজ্ঞটা দেখাতে পারলেই তিনি স্লোভেনিয়ার পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তাহলে , শুরু স্লোভেনিয়া যাত্রার শুভ সূচনা।

Life in Slovenia
Image Source: pixabay.com

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

হাঙ্গেরি ইউরোপের একটি অন্যতম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। এটি মধ্যে ইউরোপের একটি ছোট দেশ। এর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে স্লোভাকিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া, অস্ট্রিয়া। দেশটির আয়তন ৯৩,০৩০ স্কয়ার কিলোমিটার।স্কলারশিপ ও লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজের সুবিধা থাকায়, বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

হাঙ্গেরি সরকার ২০১৩ সাল থেকে ‘স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ’ দিয়ে আসছে। স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকামের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গত বছর(২০১৯) থেকে বাংলাদেশে চালু হয়েছে এই স্কলারশিপ। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের আওতায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট, ওয়ান টায়ার মাস্টার্স ও ডক্টরাল নিয়ে হাঙ্গেরিতে পড়ছেন। বাংলাদেশ থেকে আন্ডারগ্র্যজুয়েট ও মাস্টার্স পর্যায়ে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।

স্কলারশিপ এর নাম

“ স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ ”

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

এই স্কলারশিপ এর আওতায় আবেদন করতে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার’স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে।

পড়তে পারবেন সকল বিষয় যেমনঃ মেডিসিন, ফার্মেসী, ডেন্টিস্ট্রি, আর্কিটেকচার, আইন, ভেটেরিনারি সার্জারি, ফরেস্ট্রি ইঞ্জিন্যারিং ইত্যাদি। সকল বিষয় এর লিষ্ট জানতে ভিজিট করুন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – https://stipendiumhungaricum.hu/

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

হাঙ্গেরি। মিনিস্ট্রি অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স এন্ড ট্রেড অফ হাঙ্গেরি।

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপের আওতায় যা যা পাবেন-

১। টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফ্রি।

২।ব্যাচেলর ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে ১২০ ইউরো ।আর, পিএইচডি প্রোগ্রামে প্রথম ৪ সেমিস্টার ৩৯০ ইউরো ও পরবর্তী চার সেমিস্টার ৫০০ ইউরো ।

৩। ক্যাম্পাসের ডরমিটিরিতে বিনা ভাতায় থাকার ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, ডরমিটরিতে না থাকতে চাইলে মাসে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১২ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বাড়ি ভাড়া ভাতা বাবদ।

৪। মেডিকেল ইনস্যুরেন্স (স্বাস্থ্যবিমা) – প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২৭৫ ইউরো।

হাঙ্গেরিতে আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন। যা দিয়ে খুব সহজেই নিজের বারতি খরচ কভার করতে পারবেন। গড়ে একজন বিদেশি শিক্ষার্থী ঘন্টায় ৮০০ HUF এবং সর্বোচ্চ ২০০০ HUF (rare) আয় করতে পারে। বড় শহর গুলোতে জব পাওয়া একটু সহজ।

আবেদনের যোগ্যতা

১। বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
২। অবশ্যই ১৮ বছর বয়স হতে হবে। বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে আবেদন করতে পারবেন না।
৩। ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক পাস।
৪। আইইএলটিএস স্কোর ন্যূনতম ব্যান্ড স্কোর ৫ থাকতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আইইএলটিএসের প্রয়োজন হয় না।
৫। আবেদনকৃত প্রোগ্রামের Entry Qualification পূরণ করতে হবে।

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট ও ডক্টরাল—তিনটির যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক আবেদন করলে আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

আবেদনের সময়সীমা

আবেদনের সময় প্রতি বছর জানুয়ারি এর মধ্যে। তবে হালনাগাদ ডেডলাইন জানতে নজর রাখতে হবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ – https://stipendiumhungaricum.hu/

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

বিশ্বের অনেক দেশ সহ বাংলাদেশের জন্য এই স্কলারশিপ ওপেন আছে।

Stipendium Hungaricum Scholarship
Image Source: Internet

আবেদন প্রক্রিয়া

প্রথমে,  Stipendium Hungaricum Website এ সর্বোচ্চ ২ টি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে। শুধু মাস্টার্স অথবা শুধু পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করা যাবে।

আবেদনের লিংক – https://apply.stipendiumhungaricum.hu/

তারপর, বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনলাইন আবেদনের পাশাপাশি যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মার্কশিট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজপত্রের হার্ডকপিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।

অনলাইন আবেদনের লিংক – http://scholar.banbeis.gov.bd/hungary/

সর্বশেষ,  অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করার পর আবেদনের কপি সহ প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট নিচের ঠিকানায় জমা দিতে হবে।

প্রাপকের ঠিকানা- 
যুগ্নসচিব (বৃত্তি)
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়,
বাংলাদেশ সচিবালয় , ঢাকা।

আবেদনপত্র সচিবালয়ের ২ নং গেট সংলগ্ন অভ্যর্থনা কক্ষের ৯নং কাউন্টারে সকাল ১০.টা থেকে ১১.০০টা এবং বিকাল ৩.৩০টা থেকে ৪.৩০টার মধ্যে জমা দিতে হবে।

বি. দ্রঃ শুধু পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের আগে সুপারভাইজারের কাছ থেকে Statement of the Supervisor নিতে হবে। তারপর, আবেদন শুরু করতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যা যা লাগবে:

১। পাসপোর্ট
২। একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং নম্বর পএ
৩। জন্ম নিবন্ধন অথবা এনআইডি
৪। রিকমেন্ডেশন লেটার (২ টি)
৫। মোটিভেশান লেটার
৬। সিভি
৭। মেডিকেল সার্টিফিকেট
৮। এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
৯। আইইএলটিএস স্কোর (ভার্সিটির রিকোয়ার্মেন্ট অনুযায়ী)

টপ ইউনিভার্সিটি অফ হাঙ্গেরি

১। Semmelweis University
২। Eötvös Loránd University
৩। University of Pécs
৪। University of Debrecen

স্কলারশিপটি অন্য অনেক স্কলারশিপের মতো প্রতিযোগিতা পূর্ণ নয়। তাই মোটামুটি রেজাল্ট, আইইএলটিএস স্কোর ভালো থাকলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
লেখাপড়া শেষে অন্য সব ইউরোপীয় দেশের মতো হাঙ্গেরি ও আপনাকে জব খোঁজার ভিসা দিবে।যদি সেই সময়ের মধ্যে জব ম্যানেজ করতে পারেন তবে থেকে যেতে পারবেন।

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

বিদ্যা অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যাবার বিধান আছে। সেই বিচারে হাঙ্গেরী কি খুব দূর? আপনারা যারা বিদেশে পড়তে যেতে চান, তাদের জন্য আজ নতুন এক ডেস্টিনেশন নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ তুলে ধরব হাঙ্গেরীতে উচ্চ শিক্ষার যাবতীয় বিষয় আশয়। তাই, সিট বেল্ট বেঁধে ফেলুন- আমাদের ফ্লাইট এখনি ঊড়াল দেবে হাঙ্গেরীর উদ্দেশ্যে।

Study in Hungary
Image Source: pexels.com

কেন হাঙ্গেরী পড়তে যাবেন?

অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, ইউক্রেন, সার্বিয়া, রমানিয়া, স্লোভেনিয়া এই দেশগুলোর ঠিক মাঝে অবস্থিত দেশ হাঙ্গেরী। এই দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আর সেঞ্জেন চুক্তির আওতায় আছে। তাই, হাঙ্গেরীতে পাড়ি জমাতে পারলে আপনি বিনা বিপত্তিতে ঘুরে আসতে পারবেন ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে।

দানিয়ুব নদীর তীরে অবস্থিত বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরীর রাজধানী ও পৃথিবীর অন্যতম বাসযোগ্য ও উন্নত শহর। এই দেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইংরেজী ও হাঙ্গেরী ভাষায়। এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রিসার্চের জন্য বিখ্যাত- শুধু তাই নয়, শিক্ষা কার্যক্রমে বাস্তবিকধর্মী করতে অনেক প্রশিক্ষণ ও ফ্যাক্টরী এটাচমেন্ট থাকে। এছাড়া হাঙ্গেরীতে পড়াশুনার খরচও ইউরোপের অন্যান্য দেশের থেকে কম।

এই দেশে প্রায় ৯৩,০৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনে বসবাস করে প্রায় ১ কোটি লোকের বসবাস। এই দেশের অফিসিয়াল ভাষা হাঙ্গেরিয়ান এবং মুদ্রার নাম ফরিন্ট (HUF).

হাঙ্গেরীর কিছু বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হলঃ

১। Budapest University of Technology and Economics

২। Eötvös Loránd University Budapest

৩। University of Szeged

হাঙ্গেরীতে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

হাঙ্গেরীতে ব্যাচেলর পড়তে গেলে আপনাকে HSC অথবা ডিপ্লোমা পাশ করে আসতে হবে। অনেক কোর্সে ভর্তির জন্য আপনাকে এন্ট্রান্স এক্সাম দিতে হতে পারে। অথবা প্রিপেরোটরী কোর্সে ভর্তি হতে হবে। ব্যাচেলর কোর্স গুলোর অধিকাংশই হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় করানো হয়। তবে অল্প সংখ্যক ইংরেজী কোর্সও আছে। আর মাস্টার্সে ভর্তি হতে ব্যাচেলর আর পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্ত হতে প্রয়োজন পড়বে মাস্টার্স ডিগ্রীর।

হাঙ্গেরীতে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে IELTS স্কোর প্রয়োজন পরবে ৫.০ থেকে ৬.০ আর TOEFL স্কোর পড়বে ৬০ থেকে ৮০। মাস্টার্স আর পিএইচডি প্রোগ্রামে IELTS স্কোর প্রয়োজন পরবে ৫.৫ থেকে ৬.৫ আর TOEFL স্কোর প্রয়োজন পরবে ৭০ থেকে ৯০।

University in Hungary
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স ভেদে যোগ্যতার তারতম্য হয়। তাই আবেদনের সময় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স অনুযায়ী যোগ্যতাগুলো ভালো করে খুঁটিয়ে দেখে নেবেন।

কোর্স সার্চ ও কোর্স নির্বাচন

হাঙ্গেরীতে অনেক কোর্স ও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই, আপনাকে নিজের পছন্দের কোর্স খুঁজে পেতে আশা করি খুব একটা কষ্ট হবে না। হাঙ্গেরীতে কোর্স খুঁজতে নিচের লিঙ্কটিতে ঘরে দেখতে পারেনঃ

http://studyinhungary.hu/study-in-hungary/menu/find-a-study-programme/study-finder.html

এই দেশে সাধারণত বছরে ২ টি সেশনে আবেদন কয়ার সুযোগ আছে। প্রথমটি হল ১ এপ্রিল থেকে ১ জুলাই এবং দ্বিতীয়টি হল ১ অক্টোবর থেকে ১ ডিসেম্বর। তবে কোর্সের সময় অনেক সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তাই আবেদনের সময় জানতে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ঘুরে আসুন।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনার আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন তা নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর। তাই আপনার উচিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট ঘেটে সব কিছু জেনে নেওয়া। সাধাণত নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস আপনার আবেদনের সময় চাওয়া হয়ঃ

১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। আইইএলটিএস (ন্যূনতম ৬.০) / জার্মান B2 সনদ

৪। এন আই ডি/পাসপোর্ট কপি

৫। মোটিভেশন লেটার/ সিভি/ রেফারেন্স লেটার

৬। কাজের অভিজ্ঞতা/ রিসার্স পেপার (যদি প্রয়োজন হয়)

 

অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে থাকে। তাই এই ব্যাপারে অবশ্যই ভালো করে খোঁজ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেবিদ্যালয়ের Admission Office-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে। অন লাইন পরীক্ষা নেবার পর বিশ্ববিদ্যালয় আপনার ফলাফল জানাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে কন্ডিশনাল অফার লেটার দিতে পারে। সেক্ষেত্রে শর্ত পূরণ ও নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টসে টিউশন ফি প্রদান করলেই অফার লেটার দিয়ে থাকে।

Students in Hungary
Image Source: Internet

টিউশন ফি

হাঙ্গেরীতে পড়াশুনা করতে প্রতি বছর ২৫০০ ইউরো থেকে ১০,০০০ ইউরো প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আসলে কত অর্থের প্রয়োজন হবে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেই জেনে নিতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

হাঙ্গেরীর এম্বেসী বাংলাদেশে নেই। তাই আপনাকে যেতে হবে ইন্ডিয়ার নয়া দিল্লীতে। ভিসার জন্য আবেদন করতে আপনাকে প্রদান করতে হবে ৫০ ইউরো আর সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ।

আপনার ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজন পড়বেঃ

১। পাসপোর্ট (কমপক্ষে ১ বছর ভ্যালিডিটি থাকতে হবে) সাথে ফটোগ্রাফ

২। সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট এর সত্যায়িত কপি

৩। ভিসা আবেদন ফর্ম

৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার

৫। স্বাস্থ্য বীমার যাবতীয় ডকুমেন্টস

 

দিল্লী এম্বেসীর ওয়েব ঠিকানাঃ

https://delhi.mfa.gov.hu/eng

Life in Hungary
Image Source: pexels.com

আবাসন ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রার ব্যয়

হাঙ্গেরীতে আবাসন খাতে আপনাকে জায়গা ও শহর ভেদে ১৯০ থেকে ২৩০ ইউরো খরচ হবে। আপনি চাইলে এই শহরে ৫৫০ থেকে ৮৫০ ইউরোর মধ্যে যাবতীয় ব্যয় বির্বাহ করতে পারবেন।

পার্ট টাইম জব

হাঙ্গেরীতে বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। আপনি যদি হাঙ্গেরী ভাষা জানেন তাহলে পার্ট টাইম কাজ পেতে সুবিধা হবে।

পড়ালেখা শেষে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ

হাঙ্গেরীতে আপনি খুব সহজেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। আপনি যদি আইনসিদ্ধ ভাবে হাঙ্গেরীতে ৩ বছর থাকেন তাহলে আপনি National Permanent Residence Permit (NPRP) বা (Állandó tartózkodási kártya) পেয়ে যাবেন। শুধু তাই নয়, যদি হাঙ্গেরীর নাগরিকত্ব পেয়ে যান তাহলে সেই ডকুমেন্টস দিয়ে আপনি ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি গিয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় বসবাস করার সুযোগ পাবেন।

Life in Hungary
Image Source: Internet

তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!