Loading...
November 21, 2022

সূর্যোদয়ের দেশ জাপান এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী দেশ আর সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বিবেচনায় এই দেশের জুড়ি মেলা ভার। বরাবরই দেখা যায়, বিদেশে শিক্ষার্থীরা যেতে ব্যর্থ হয় তার মূল কারণ হল, সঠিক তথ্য না জানা। তাই আমাদের চেষ্টা থাকে আপনাদের কাছে, তথ্যসমৃদ্ধ লেখা তুলে ধরার। এই চেষ্টা থেকেই আমরা আজ সাজিয়েছি, জাপানে উচ্চশিক্ষা। তাহলে আর দেরী কেনো? চলুন, নিজেই করি নিজের আবেদন।

কেন জাপানে পড়তে যাবেন?

বিশ্বে জাপানী মানুষের খ্যাতি আছে- কাজ পাগল হিসেবে। জাপান সমৃদ্ধ এক দেশ এবং আছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংস্কৃতি ও শিক্ষার অসাধারণ পরিবেশ। বর্তমানে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা এতোটাই উন্নত যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পাড়ি যমাচ্ছে প্রাচ্যের এই সমৃদ্ধ দেশে। বিশাল এই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিড়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা কম নয়।

জাপান মূলত দ্বীপ রাষ্ট্র- অনেকগুলো দ্বীপ নিয়েই জাপান। জাপানের রাজধানী টোকিও আর মুদ্রা ইয়েন। এই দেশের আয়তন ১,৪৫,৯৩৭ বর্গমাইল আর এই আয়তনে বসবসা করে ১২.৫৯ কোটি লোক। বিশ্বে ১১তম ঘন বসতিপূর্ণ দেশ। অর্থনৈতিক বিচারে জ্যায়ান্ট এই দেশের জিডিপি ৫.৪১৩ ট্রিলিয়ন (বিশ্বে চতুর্থ)। জাপানী শিক্ষা ব্যবস্থা পড়াশুনার জন্য অনেক সহায়ক। আপনি চাইলে মনবুশো বা সেন্টার ফর এক্সিলেন্স বৃত্তির জন্যও আবেদন করতে পারবেন।

বুঝতেই পারছেন, জাপান আসলেই শিক্ষা বান্ধব একটি দেশ।

Study in Japan
Image Source: pexels.com

জাপানে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

জাপানের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই ইংরেজীতে কোর্স অফার করা হয়। তবে ইংরেজী ভাষায় কোর্স করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে জাপানী ভাষা শিখে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। জাপানী ভাষা জানা থাকলে আপনি যেমন সংস্কৃতির সাথে মিশে যেতে পারবেন, সাথে পার্ট টাইম জব পেতেও সুবিধা হবে। জাপানে উচ্চশিক্ষা শুরু হয় সাধারণত ১২ বছর মেয়াদী প্রথাগত শিক্ষা শেষ হবার পর। সমস্যা নেই- কারণ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আপনি HSC পাশ করলেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। জাপানে পড়তে যেতে আপনাকে সাধারণত কিছু সাধারণ পরীক্ষার মুখোমুখিও হতে পারে, যেমনঃ Examination for Japanese University Admission for International Students (EJU), Japanese Language Proficiency Test (JLPT), TOEFL, IELTS, TOEIC ইত্যাদি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান টোফেল সিবিটি স্কোর ১৫০-এর ওপর অথবা টোফেল আইবিটি স্কোর ৫২-এর ওপর চায়- আর এই স্কোরের পরিপূরক স্কোর হিসেবে IELTS 6.5/ 7.0 গ্রহণযোগ্য। যেহেতু, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি TOEFL (CBT/ iBT) চায়, তাই জাপানের জন্য TOEFL (CBT/ iBT) পরীক্ষায় বসাই উত্তম। তবে সব কোর্সে আর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব পরীক্ষার প্রয়োজন পড়েনা। তাই আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে ঘুরে দেখে নিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষা আসলে কি কি যোগ্যতা তাদের শিক্ষার্থীদের থেকে আশা করে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

জাপানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু উন্নত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জাপানে রয়েছে পেশাদার প্রশিক্ষণ কলেজ, জুনিয়র কলেজ, প্রযুক্তি কলেজ, গ্রাজুয়েট স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের সবগুলোতেই বিদেশী শিক্ষার্থী পড়তে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি গ্রাজুয়েট, মাস্টার্স, এসোসিয়েট ডিগ্রী, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এমনকি পিএইচডি ডিগ্রীও পেতে পারেন।

জাপানের সব ভার্সিটিতেই পড়াশুনার সিস্টেম একই। তবে স্কলারশিপের জন্য পাবলিক ভার্সিটি ও ন্যাশনাল ভার্সিটি সিলেক্ট করাই উত্তম। কারণ এইসব ভার্সিটিতে স্কলারশিপ এর সংখ্যা সাধারণত বেশি থাকে। তাই গুগলে List of Public University / National university in Japan লিখে সার্চ দিলেই সব ভার্সিটি পাওয়া যাবে। সব ভার্সিটির ওয়েব পেইজ জাপান, কোরিয়ান, চাইনিজ ও ইংরেজিতে লিখা।

লিঙ্ক: http://www.mext.go.jp/en/about/relatedsites/title01/detail01/sdetail01/1375122.htm

জাপানে আপনি পড়তে পারবেন হিউমান স্টাডিজ, মানববিদ্যা, ভাষাশিক্ষা, ইতিহাস, এডুকেশনাল সায়েন্স, ল অ্যান্ড সোসাইটি, পাবলিক ল অ্যান্ড পলিসি, ট্রান্সন্যাশনাল ল অ্যান্ড পলিসি, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জোতির্বিদ্যা, ভূ-প্রকৃতিবিদ্যা, রসায়ন, ভূ-বিজ্ঞান, মেকানিক্যাল সিস্টেমস অ্যান্ড ডিজাইন, ন্যানোমেকানিকস, এডুকেশনাল ইনফরমেটিকস, পরিবেশবিদ্যা, এনভায়রনমেন্টাল লাইফ সায়েন্স, ফলিত তথ্যবিজ্ঞান, আন্তসাংস্কৃতিক সম্পর্ক, এরিয়া স্টাডিজ, বায়োসায়েন্স ও বায়োটেকনোলজি, প্রাণবিজ্ঞান, স্থাপত্য ও ভবনবিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমলিকুলার ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, হিউম্যান-সোশ্যাল ইনফরমেশন সায়েন্স, বায়োলজি অ্যান্ড নিউরোসাওেয়ন্স, কম্পিউটার অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সসহ  ইত্যাদি বিষয়ে।

জাপানে প্রায় ৭০০ এর মতো ইউনিভার্সিটি রয়েছে। সাড়া বিশ্বের সেরা ইউনিভার্সিটির র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৫০টি ইউনিভার্সিটির মধ্যে আছে জাপানের “দ্যা ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও” আর “কিয়োটো ইউনিভার্সিটি”। সেরা ৫০০ ইউনিভার্সিটির মধ্যে কেবল জাপানেই আছে  ১৬টি ( ARWU)।

এই লিঙ্কে গেলেই  জাপানিজ ইউনিভার্সিটির র‍্যাংকিং সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।

লিঙ্কঃhttp://www.shanghairanking.com/World-University-Rankings-2018/Japan.html

নীচে জাপানের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। Tohoku University

২। Kyoto University

৩। University of Tokyo

৪। Tokyo Institute of Technology

৫। Kyushu University

University in Japan
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

জাপানে বছরে ২টি সেমিস্টার পড়ানো হয়। যথাঃ এপ্রিল ১ থেকে সেপ্টেম্বর ৩০ এবং ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি সুযোগ থাকে, Fall Semester অর্থাৎ, ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ সেমিস্টারে।

জাপানে বিশ্ববিদ্যালয় বা যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে আপনাকে সাধারণত বসতে হবে স্কাইপি বা যেকোন ধরণের অনলাইন বা স্পট ইন্টারভিউতে। আর এই ইন্টারভিউতে পাশ করলেই মিলবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ। পাশ করার পর কর্তৃপক্ষ জাপানী ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে আপনার ডকুমেন্টস গ্রহন করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার পরবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ

১। একাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট

২। TOEFL/ JLPT 5 এর সনদ

৩। CV, মোটিভিশন লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার

৪। শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র

৫। পাসপোর্টের কপি

University in Japan
Image Source: Internet

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

জাপানের টিউশন ফি নির্ভর করে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেন তার উপর। আপনি যদি ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন তাহলে আপনার বছরে খরচ হবে ১০,০০০ মার্কিন ডলারের মত। লোকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার খরচ ১১,৩৭৭ মার্কিন ডলার। আর যদি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তাহলে এই টিউশন ফি হবে ৭,৯৫৯ থেকে ৬১,১২৩ মার্কিন ডলার প্রতি বছর।

জাপানে আপনি অনেক ধরণের বৃত্তির সুযোগ পাবেন। সরকারী বৃত্তির পাশাপাশি রয়েছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদত্ত স্কলারশিপ।

জাপানে মূলত নিম্নোক্ত স্কলারশিপ সমূহ পাওয়া যায়-

 

১. MEXT স্কলারশিপ: MEXT scholarship এর জন্য দুইভাবে আবেদন করা যায়।
ক) জাপান এম্বাসি বাংলাদেশ এর মাধ্যমে: আবেদনের সময় প্রতি বছরের মে মাসে জাতীয় পত্রিকায় আবেদন ডাকা হয়। সীমিত সংখ্যক স্কলারশিপ।
লিঙ্ক: https://www.bd.emb-japan.go.jp/en/education/scholarshipNotice.html

খ) জাপানিজ ভার্সিটির মাধ্যমে: আবেদনের সময় ১ নভেম্বরের থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভার্সিটি রিকমেন্ডেশনের মাধ্যমে সুযোগ ও স্কলারশিপের সংখ্যাও অনেক বেশী। ২০১৮ সালে ২৬৭ জন বাংলাদেশি MEXT scholarship পায় ।

 

২. ADB স্কলারশিপ: এইখানে জিপিএ এর চাইতে বেশি দরকার ২ বছর অভিজ্ঞতা। যাদের পাশ করার পর দুইবছর জব এক্সপেরিয়েন্স নাই তারা অ্যাপ্লাই করতে পারবেনা। আর আপ্লিকেশনের তারিখ ভার্সিটির উপর নির্ভর করে।
লিঙ্ক: https://www.adb.org/site/careers/japan-scholarship-program/jsp-institutions

 

৩. World Bank স্কলারশিপ: আপ্লিকেশনের সময় সাধারণত প্রতি বছরের মার্চ মাসে।
লিঙ্ক: http://www.worldbank.org/en/programs/scholarships#3

জাপানে অনেক প্রাইভেট স্কলারশিপ আছে যা শুধু ভর্তিকৃত আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য। লিংক https://www.jasso.go.jp/index.html

জাপানিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপগুলোর ধরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই লিঙ্কটি থেকে ঘুরে আসতে পারো।
লিঙ্কঃ https://www.studyjapan.go.jp/en/toj/toj0302e.html

Temple in Japan
Image Source: pexels.com

জাপানের আবাসন ব্যবস্থা

এলাকাভেদে জাপানে জীবনধারণের খরচে ভিন্নতা দেখা যায়। শহরতলি এলাকায় খরচটা গ্রামীণ এলাকা থেকে একটু বেশি। জাপানে একজন শিক্ষার্থীর জীবনধারণের খরচের বেশির ভাগই ব্যয় হয় খাদ্য ও বাড়িভাড়ার পেছনে। এ ছাড়া অন্যান্য খরচের মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা, বীমা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও বিনোদন খরচ।

জাপানে আবাসিক খাতে আপনাকে খরচ করতে হবে বছরে ৪৫,০০ ইয়েন থেকে ৭৪,২৫০ ইয়েন। আর খাবার থেকে শুরু করে অন্যান্য ব্যয়, যেমনঃ যাতায়াত, টেলিফোন, ওয়াই-ফাই ইত্যাদি বাবদ বছরে খরচ পড়বে ১,৩১,৮৭৮ থেকে ১,৭৮,০৯২ ইয়েন।

হেলথ ইন্স্যুরেন্স এ বছরে সাধারণত ১৮,০০০ ইয়েন লাগবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

জাপানে ভিসা আবেদনের প্রথম ধাপে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি কনফার্ম হওয়ার পর আপনাকে জাপান ইমিগ্রেশন দপ্তরে জমা দিতে হবে আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র। তারা ডকুমেন্টস গ্রহণ করবে আর Ministry of Justice in Japan- এর মাধ্যমে Pre-Visa (COE) প্রদান করবে। এই Pre-Visa (COE) নিয়ে আপনি ভিসার জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান এম্বেসীতে আবেদন করবেন।

ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের লিস্ট নীচে তুলে ধরা হলঃ

১। Pre-Visa (COE)

২। সকল ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ

৪। রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

৫। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৬। মেডিকেল রিপোর্ট

৭। TOEFL/ JLPT 5 এর সনদ (যদি থাকে)

৮।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

City life in Japan
Image Source: Internet

পার্ট টাইম জব এর সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস

জাপানে আপনি সপ্তাহে ২৮ ঘন্টা আর মাসে আপনি ১২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করতে পারবেন। আর ছুটির সময় পারবেন ফুল টাইম জব করতে। পার্ট টাইম জবে জাপানে ঘন্টায় ৯০০-১২০০ ইয়েন পাওয়া যায়, বাংলাদেশী টাকায় ৭০০-৯০০ টাকার সমতুল্য।

পড়াশুনা শেষে আপনি স্টুডেন্ট ভিসাকে পরিবর্তন করতে পারবেন ফুল টাইম জব ভিসায়। এই ভিসা নিয়ে আপনি যত দিন ইচ্ছা, জাপানে থাকতে পারবেন। ৩ বছরের পর স্থায়ী বসবাসের জন্য জাপানের নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়।

তাহলে, জাপানে আবেদনে রইলো না আর কোন বাঁধা। তাই প্রস্তুতি নেই আর করে ফেলুন নিজেই নিজের আবেদন।

Sumo - Japan
Image Source: pexels.com

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

আমেরিকা, ইউকে, অস্ট্র্রেলিয়া ও কানাডার পাশাপাশি এশিয়ার দেশ চীনও এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিয়ে আকর্ষণ করতে শুরু করেছে।চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) হলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চীন সরকারের দেয়া স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ এর যাবতিয় বিষয় দেখভাল করে চাইনিজ স্কলারশিপ কাউন্সিল (সিএসসি)। সিজিএস/সিএসসি (CGS/CSC) নামে অধিক পরিচিত এই স্কলারশিপের বিস্তারিত নিয়েই আজকের আয়োজন।

ব্যাচেলরে সিজিএস/সিএসসি স্কলারশিপ মানেই চাইনিজ মাধ্যম, ইংরেজিতে পড়ার কোনো সুযোগ নেই।

আর মাস্টার্সে ইংলিশ এবং চাইনিজ দুই মাধ্যমেই পড়ার সুযোগ আছে। তবে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি মাধ্যমকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।

আপনি এই স্কলারশিপের আওতায় করতে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার্স, কিংবা পিএইচডি।

স্কলারশিপ এর নাম

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ ( সি জি এস )

যে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করা যাবে

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) আওতায় আপনি পড়তে পারবেন ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স। এখান থেকে প্রথমে আপনার পছন্দের বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে নিন। সিএসসি বি-টাইপের জন্য  – http://www.campuschina.org/universities/categories.html

আমাদের দেশ থেকে যারা পড়ালেখার জন্য চীনে আসে তাদের শতকরা ৫০ ভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং, ৩০ ভাগ মেডিকেল, ১৫ ভাগ কলা (ভাষা-সাহিত্য বা অন্যান্য), এবং সর্বশেষ ৫ ভাগ ব্যাবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়তে আসে।

দেশ এবং কর্তৃপক্ষ

চাইনিজ সরকার। চাইনিজ স্কলারশিপ কাউন্সিল (সিএসসি)

বৃত্তির সুযোগ সুবিধাসমূহ

স্কলারশিপের আওতায় আপনি যা যা পাবেনঃ

১। টিউশন ফি

২। মাসিক ভাতা

৩। বিমান ভাড়া

৪। স্বাস্থ্য বীমা

৫। ফ্রি আবাসন

আবেদনের যোগ্যতা

১) বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। অবশ্যই সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
২) অন্য কোনো স্কলারশিপ বা ফান্ডিং এর জন্য মনোনীত হওয়া যাবে না।

৩) স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ এবং বয়স অবশ্যই ২৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৪) মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৩৫ এর চেয়ে কম হতে হবে।

৫) ডক্টরেল প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য উচ্চ মাস্টার্স ডিগ্রিধারী এবং বয়স অবশ্যই ৪০ এর চেয়ে কম হতে হবে।

আবেদনের সময়সীমা

আবেদন শুরু হয় সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আর শেষ হয় জুন-জুলাইয়ের দিকে। তবে বিস্তারিত জানতে ও পিন পয়েন্ট তথ্যের জন্য আপনাকে সাহায্য নিতে হবে অফিসিয়াল ওয়েব সাইটের।

https://studyinchina.csc.edu.cn/

বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হলে নিচের ওয়েবসাইট থেকে করতে হবে।

http://www.shed.gov.bd/site/view/scholarship

আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রতি বছরই প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

Chinese government scholarship
Image Source: Internet

যেসকল দেশের প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য

চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) এ বিশ্বের যে কোন দেশের সুস্থ নাগরিক আবেদন করতে পারবে।

আবেদন প্রক্রিয়া

এই স্কলারশিপে আবেদন করার উপায় হচ্ছে,

(১) বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে (টাইপ – এঃ সবোর্চ্চ ২টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)

(২) চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে (টাইপ – বিঃ সবোর্চ্চ ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ)

 

Type A তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হয় এবং Type B তে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হয়।

প্রথম পদ্ধতিঃ বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট – http://www.shed.gov.bd/site/view/scholarship

সকল ডকুমেন্টস ও আবেদন পত্র জমা দিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এরপর প্রাথমিক বাছাই-এর সকল কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে চাইনিজ এম্বেসীতে এবং সেখানে আপনাকে ভাইভা দিতে হবে। পরবর্তীতে রেজাল্ট জানিয়ে দেওয়া হবে। আর আপনি এই প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ টি সাবজেক্টে আবেদন করতে পারবনে। আর এডমিশন কার্য শেষ হলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এখানে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার এইস,এস,সি এর ফলাফল অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এছাড়া ভাল কোনো শিক্ষকের প্রসংসা পত্র, কো-কারিকুলার এক্টিভিটিজ এবং চাইনিজ জানা থাকলে আপনি সেটাতে বেনিফিট পেতে পারেন। এখানে ভাইবা ও একটা মূখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল হতে একটু দেরী হয় ,সাধারনত জুলাই এর শেষ সপ্তাহ বা আগস্ট এর প্রথম সপ্তাহে ফলাফল প্রকাশ হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ চাইনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে

প্রথমেই আপনাকে চাইনীজ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে এবং দেখে নিতে হবে এই সকল বিশ্ববিদ্যালয় চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) প্রদান করে কি না। তো আপনারা যারা এই মাধ্যমে আবেদন করতে চান তারা নভেম্বর- ডিসেম্বর থেকেই বিভিন্ন ভার্সিটির ওয়েব সাইটে তথ্য খোজা শুরু করুন। বিভিন্ন ভার্সিটির ওয়েব সাইট,সেখানে আবেদনের প্রক্রিয়া,তাদের রিকোয়ারমেন্ট দেখলে আপনি নিজেই সব কিছু বুঝে যাবেন। চীনের অধিকাংশ ভালমানের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে চাইনিজ গভঃ স্কলারশিপ (সিজিএস) বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়।  এরপর সকল কাগজপত্র ও আবেদন ফর্মসহ আবেদন করতে হবে স্কলারশিপের জন্য। এবার সকল কাগজপত্র কুরিয়ার করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় আর যদি এপ্লিকেশন ফি দেবার প্রয়োজন হয় তবে সেটাও দিতে হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রেজাল্ট দিলে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় খোজার ক্ষেত্রে https://www.topuniversities.com/universities/region/asia/country/china অথবা http://www.campuschina.org/ এই ওয়েব সাইটের সহায়তা নিতে পারেন।

স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য আপনাকে জমা দিতে হবেঃ

১. অ্যাপ্লিকেশন ফরম।
২. পাসপোর্ট।
৩. পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৪. সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের নোটারাইজ কপি।
৫. স্টাডি প্ল্যান।
৬. রিকোমেন্ডেশন লেটার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন প্রফেসরের কাছ থেকে রিকোমেন্ডেশন লেটার বা সুপারিশপত্র নিতে হবে।
৭. মেডিকেল রিপোর্ট।
৮. IELTS বা TOFFEL সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।

আবেদন করতে ভিজিট করুণঃ

http://www.campuschina.org/

সিএসসি স্কলারশিপ এর আবেদনের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এজেন্সি নাম্বার কোড জানার জন্য ভিজিট করুনঃ

https://scholarshipfellow.com/agency-numbers-of-all-universities-for-csc-scholarship-china/

অন্যান্য তথ্যের জন্য

https://www.chinesescholarshipcouncil.com

তথ্যসুত্রঃ

November 21, 2022

জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হলে সুদূর চীনে যাওয়া উচিত- এই প্রবাদ আমরা সবাই জানি। এই প্রবাদ শুনে সবাই বুঝতেই পারছেন পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ দেশ চীন জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চায় বেশ এগিয়ে, সেই অতীত থেকেই। পাহাড়, পর্বত, নদী, সমউদ্র, তৃণভূমি, মরুভূমি- কি নেই এই বৃহদাকার দেশের থলের মধ্যে। মহা প্রাচীরের দেশ চীনে, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের পর সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পাড়ি জমাই প্রাচ্যের এই দেশে। হিসাব অনুযায়ী দেখা গেছে, এক ২০১৬ সালেই তাবদ দুনিয়া থেকে ৪,৪০,০০০ শিক্ষার্থী পড়তে এসেছে চীনে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বেশ সুনাল অর্জন করেছে এবং চীন সরকারের উদার নীতির কারণে এ দেশে দিনে দিনে অন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

কেন চীনে পড়তে যাবেন?

“পিপলস রিপাবলিক অব চায়না” – আয়তন ও জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের বৃহত্তম দেশটির রাজধানী বেইজিং, ভাষা মান্দারিন আর মুদ্রা ইউয়েন। উৎপাদন, শিল্প, কৃষি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই যেন এক নম্বর এই দেশ। আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, খেলাধূলা ও গবেষণা থেকে শুরু করে কি নেই এই সব সম্ভবের দেশে। প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে চীন উৎকর্ষতার শিখরে- ফলে এই দেশে পড়াশুনা করলে বিশ্বের প্রযুক্তি বিষয়ে নিজের দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হবে। কিন্তু, চীনের চাকুরির বাজার ক্রমে সংকুচিত হচ্ছে- আবার, অপর দিকে, এই দেশে ব্যবসা করার পথ দিন দিন আরো খুলে যাচ্ছে। তাই অবারিত দ্বার এই দেশে নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য হয়ত আপনারও দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হবে।

Great wall - China
Image Source: pixabay.com

চীনে পড়তে যাবার জন্য নূন্যতম যোগ্যতা

ইউরোপ বা আমেরিকার মত চীনে পড়াশুনা করতে GRE/ GMAT/ SAT/ ACT কিম্বা নিদেন পক্ষে IELTS/ TOEFL জাতীয় কোন পরীক্ষায় বসতে হবে না।

চীনে যেহেতু পাশ মার্ক ৬০%। তাই আপনার একাডেমিক পরীক্ষায় ৬০% এর অধিক মার্ক থাকলে আপনি চীনে যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি ৮০% মার্ক পেলে স্কলারশিপ পেতে আপনার সুবিধা হবে। আর ডিপ্লোমা কোর্সে আবেদন করতে আপনার থাকতে হবে HSC- তে ৪.৪৩ পয়েন্ট। ব্যাচেলরে আবেদন করতে আপনাকে SSC ও HSC তে আপনার সব মিলিয়ে থাকতে হবে ৮.০ পয়েন্ট। মাস্টার্সে আবেদন করতে থাকতে হবে ৩.২০ আর পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে ৩.৪০ পয়েন্ট সাথে থাকতে হবে পাবলিশড রিসার্চ পেপার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা ফি বছর পরিবর্তন হয়। তাই দেখে নিন, বুঝে নিন – বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদতে কি চাচ্ছে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

চীন বছরে দুইটি সেমিস্টারের মাধ্যমে অফার করে বিভিন্ন ধরণের কোর্স। আপনি গ্রাজুয়েশন, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, মাস্টার্স, সিনিয়র স্কলার, জেনারেল স্কলার অথবা পিএইচডি সহ যে কোন প্রোগ্রামে যেতে পারেন ।

চীনে অবস্থিত বিশ্বমানের প্রায় ১১০০ এর অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আওতায় বিভিন্ন কোর্স অফার করে থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সব বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেয় না। আবার অনেক নামী- দামী বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেওয়া হয় না। তাই আবেদনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমন্ধে একটু জেনে নিতে হবে। আর এই দেশে প্রকৌশল, কৃষি, মেডিকেল ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, বিজনেস ও ম্যানেজমেন্টসহ অনেক ধরণের বিষয়ে পড়ানো হয়। তবে, প্রকৌশল বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় চীনে উন্নত শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।

বর্তমানে চীনে মেডিকেল ও স্বাস্থ্যবিষয়ে পড়াশোনার জন্য বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। চীনের যেকোন রেজিস্টার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে পড়াশুন শেষ করে এসে আপনি বাংলাদেশে প্রকটিস করতে পারবেন। শুধু আপনাকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) থেকে সম্মতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ও এখন বেশ উন্নত ও তারা বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত শিক্ষা প্রদান করে আসছে। নিম্নে চীনের কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেওয়া হলঃ

১। Tsinghua University

২। Peking University

৩। University of Science and Technology of China

৪। Zhejiang University

৫। Fudan University

Students in China
Image Source: Internet

চাইনিজ ইউনিভার্সিটির র‍্যাংকিং নিয়ে  আরও ভালো ভাবে জানতে চাইলে তুমি এই লিঙ্কটিতে ঘুরে আসতে পারো। আশা করি র‍্যাংকিং নিয়ে তোমার আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না।

 

লিঙ্কঃ https://www.mastersportal.com/ranking-country/105/china.html

কোন ভাষায় পড়বেন?

চাইনিজ কিংবা ইংলিশ দুই ভাষাতেই পড়তে পারবেন । ডিপ্লোমাতে সারাধরণ চাইনিজে পড়ানো হয়। ইংলিশ কোর্স খুব একটা পাওয়া যায়না। অনার্স , মাস্টার্স, পিএইচডি চাইনিজ কিংবা ইংলিশে করতে পারেন । বেশির ভাগ ইউনিভার্সিটি এখন IELTS চাচ্ছে। সর্বনিম্ন ৬.০ ব্যান্ড। তবে, আপনার প্রোফাইল সমৃদ্ধ হলে সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও IELTS ছাড়াই আবেদন গ্রহণ করছে। চীনা ভাষায় দক্ষতা প্রমাণের জন্য HSK 4 পরীক্ষার স্কোর প্রয়োজন পড়ে আর যদি খোদ চাইনিজ ভাষায় পড়তে চান তাহলে প্রয়োজন পড়বে HSK 5 । তবে, এই স্কোরও বাধ্যতামূলক নয়। চীনে সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে দিয়ে এই সংক্রান্ত কোর্স করিয়ে নেবে। তাই, এই বিষয়েও কোন চিন্তা নেই।

ডকুমেন্টস সত্যায়ন

চীনে আবেদনের জন্য সকল ডকুমেন্টস নোটারাইজড করে দিতে হবে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় আবার আপনার সার্টিফিকেট চাইনীজ ভাষা/ মান্দারিন ভাষায় চেয়ে থাকে। তাদের জন্য আপনাকে অনুবাদক দিয়ে আপনার ডকুমেন্টস অনুবাদ করিয়ে নিতে হবে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখন ইংরেজীতে প্রদত্ত সকল সার্টিফিকেট এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

আগেই বলেছি চীনে দুইটি সেমিস্টার পড়ানো হয় প্রতি বছরঃ যার একটি মার্চে শুরু হয় আর অপরটি সেপ্টেম্বরে শুরু হয়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা বেশ কষ্টকর- তাই, আবেদন করার জন্য যদি চীনে অবস্থিত কোন পরিচিত বন্ধু বা আত্মীয়ের সাহয্য নেন তাহলে অনেকটাই সুবিধা হবে। যেহেতু, আবেদন করতে টাকা-পয়সা খরচ হবে, তাই বিশ্বস্ত না হলে এই বিষয়ে না এগোনোই ভালো।

Students in China
Image Source: Internet

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য যেসকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার পরবে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ

১। সকলএকাডেমিক সার্টফিকেট এবং মার্কশীট (অবশ্যই নোটারাইজড)

২। Study Plan ও ২ টি রিকমেন্ডেশন লেটার (সহযোগী অধ্যাপক বা অধ্যাপকের কাছ থেকে নিতে হবে)

৩। পাসপোর্টের কপি ও সাদা ব্যাক-গ্রাউন্ডের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (নোটারাইজড)

৪। স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট

৫। জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র, বায়ো-ডাটা

পড়াশোনার খরচ ( টিউশন ফি) ও স্কলারশিপ

সাধারণত চীনে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশুনা করতে বছরে খরচ হবে ২-৩ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এই ফি-এর তারতম্য হয়। আর মেডিকেল বিষয়ে পড়তে খরচ হবে ৩-৬ লাখ টাকা। চীনে মেডিকেল কোর্স ৫ বছরের আর সাথে ১ বছরের ইন্টার্নশীপ।

 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে চীনা সরকার প্রচুর পরিমাণে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছে, যেগুলো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলে টিউশন ফি’র জন্য ফুল ও পার্শিয়াল ফান্ডিংয়ে দেয়া হয়ে থাকে। এর মাঝে রয়েছে-

১। Chinese Government Scholarship

২। University/ Presidential Scholarship

৩। Confucius Institute Scholarship

৪। Local Government Scholarship / Provincial Scholarship

৫। Enterprise Scholarship

তাই, যোগ্যতা থাকলে এই দেশে স্কলারশিপের সুযোগ অনেক বেশি।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টস চেকলিস্ট

চীনের বিশ্ববিদ্যালয় আপনার আবেদন গ্রহণ করলে তারা আপনাকে প্রদান করবে JW202 (চীনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সীলযুক্ত) । আর এই JW 202 ভিসা আবেদনের জন্য একান্ত প্রয়োজন। সকল ডকুমেন্ট নিয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত চীন এম্বেসীতে করতে হবে ভিসার জন্য আবেদন।

ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের লিস্ট নীচে তুলে ধরা হলঃ

১। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো Admission Letter এবং JW 202

২। সকল নোটারাইজড ডকুমেন্টস, মার্কশিট ও সকল সনদ

৩। পাসপোর্ট ও ফটোগ্রাফ

৪। রিকমেন্ডেশন বা রেফারেন্স লেটার

৫। ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আর্থিক স্বচ্ছলতার ডকুমেন্টস

৬। মেডিকেল রিপোর্ট

৭। IELTS এর সনদ (যদি থাকে)

৮।স্কলারশিপের পেপার (যদি থাকে)

City life in China
Image Source: Internet

চীনের আবাসন ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রার ব্যয়

চীনে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে হোস্টেল। হোস্টেলে থাকতে আপনাকে দিতে হবে ভার্সিটিভেদে বাৎসরিক ৩০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা।

সকল দেশের মত এই দেশেও খরচ নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের মত। তবে নিজে রান্না করে খেলে আপনি প্রভিন্সভেদে মাসিক ৪০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকায় সেরে নিতে পারবেন। আর যদি বাইরে খান তাহলে এই খরচ মাসিক ২৫,০০০ টাকার মত লেগে যাবে।

চীনের যাতায়াত ব্যবস্থা যেমন বেশ ভালো, তেমনই বেশ সাশ্রয়ী। এখন চলুন বিভিন্ন যানবাহনে খরচ কেমন হতে পারে সেই সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক:

মেট্রো: ৪০ টাকা (প্রায়)

ট্যাক্সি/কি.মি: ৩০ টাকা (প্রায়)

সিটি বাস: ২৫ টাকা (প্রায়)

পাবলিক ট্রান্সপোর্টে স্টুডেন্ট পাস থাকলে মাসে তাতে খরচ হবে মাত্র ১৩০০ টাকা

পার্ট টাইম জব ও স্থায়ী বসবাস এর সুযোগ

চীনে পড়াশুনার পাশাপাশি জব করা সকল প্রদেশে বৈধ নয়। তাই, আপনি জব করতে পারবেন কি না সেটা আপনার বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রদেশে সেটার উপর নির্ভর করবে। আর চীনে চাকুরীর বাজারে বিদেশী হিসেবে চাকুরী পাওয়া কঠিন। তাই, আপনি স্থায়ী বসবাসের কথা ভাবলে এই দেশ খুব একটা ভালো ডেস্টিনেশন হবে না। কিন্তু, জ্ঞান অর্জনের জন্য এই দেশ সমৃদ্ধ।

City life in china
Image Source: Internet

আপনারা চীনে উচ্চশিক্ষা নিয়ে অনেক কিছুই জেনে গেলেন। বাকিটা আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে জানতে হবে। তাহলে আর দেরী কেন? এখনি করুন- নিজেই নিজের আবেদন।

তথ্যসুত্রঃ

October 27, 2021

 ইউরোপের মধ্যে অবস্থিত কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়, এমন প্রকৃতির অন্যতম সুন্দর দেশ সুইজারল্যান্ড;এটি সেঞ্জেনভুক্ত দেশ। এ দেশের যেমন রয়েছে সুইস ব্যাংক, রয়েছে ট্রেন, চীজ, চকোলেট ও ঘড়ির বিশাল বিশাল ইন্ডাস্ট্রি, তেমনি রয়েছে আল্পস পর্বতমালা বেষ্টিত নৈসর্গিক সৌন্দর্য। অপার্থিব পরিবেশ শুধু নয়, বিজ্ঞান-গবেষণা ও অপেক্ষিকতার জনক আইনস্টাইনের নামও এ দেশের সাথে জড়িত। বিশ্ববিখ্যাত CERN Laboratories-ও এ দেশেই রয়েছে। বুঝতেই পারছেন, সুইজারল্যান্ডের মহিমা কতটা বিশাল। তাই, এ ডদেশে পড়াশুনা করার সুযোগ পেলে আপনার ক্যারিয়ারে আসবে গতি – শুধু তাই নয়, সঙ্গে মিলবে সম্মান ও অর্থ। তাই, উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য আপনার জন্য সুইজারল্যান্ড হতে পারে সবচেয়ে উত্তম স্থান।

Switzerland
Image Source: Internet

আপনার যোগ্যতা যাচাই

সুইজারল্যান্ডে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্ত্বশাসিত- অর্থাৎ, প্রতিটি ভার্সিটিতেই ভর্ত্তির মানদন্ড ভিন্ন ভিন্ন। তাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তির জন্য সঠিক ও যথার্থ তথ্য পাবেন আপনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবপেজে। আর যদি কোন বিভ্রান্তি কিংবা সংশয় থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের Admission Office-এ যোগাযোগ করতে হবে।

সুইস বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর্স ডিগ্রী ৩/৪ বছর মেয়াদী, মাস্টার্স প্রোগ্রাম ১.৫-২ বছর মেয়াদী এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম ৩-৫ বছর মেয়দী হয়। আপনি যদি ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য কোন সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে চাইলে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় সফলতার সাথে উর্ত্তীর্ণ হতে হবে। আর  ভাষাগত দক্ষতা- আপনাকে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাষায় পড়ানো হয়, সে ভাষায় দক্ষ হতে হবে। মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য আপনার কমপক্ষে ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন (Schooling) থাকতে হবে। ভাষাবিষয়ক দক্ষতা থাকতে হবে।এজন্য IELTS-এ আপনাকে 6.5 থেকে 7.00 পেতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে বেশ কিছু সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ে GRE/ GMAT চাইতে পারে।

মজার বিষয় হল, সুইস বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইংরেজী, ফরাসি, জার্মানি এবং ইতালিয় ভাষায়।তাই, আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে জার্মান কিংবা ইতালীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জন করে আবেদন করতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে, একটু মনে করিয়ে দিতে চাই, সুইজারল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল দেশ। তাই, শিক্ষার খরচও বেশি- এই খরচ বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কমবেশি হয়ে থাকে। আপনাকে ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য শিক্ষার্থীকে বছরে প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা, মাস্টার্স ডিগ্রীর জন্য বছরে ১০ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকা গুনতে হবে।

কোর্স সার্চ ও কোর্স নির্বাচন

আর সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সগুলো খুঁজতে এখনি ঘুরে আসুন নিচের লিংক থেকেঃ

https://www.studyprogrammes.ch/crus-sprdb-client/

সুইজারল্যান্ডে পড়তে গেলে আপনি বিশেষত ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট ফাইনান্স, হোটেল  ম্যানেজমেন্ট, ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি কোর্সগুলো বাছাই করতে পারেন। এই কোর্সগুলোর খ্যাতি রয়েছে সুইজারল্যান্ডে। এছাড়া অন্যান্য কোর্স যেমন- ইকোনমিকস, ল’, সোস্যাল ওয়ার্ক, একাউন্টিং, ব্যাংকিং, ক্রিমিনোলজি, আর্কিটেকচার, সংস্কৃতি, ভাষাতত্ত্ব, হেলথ্ কেয়ার, ম্যাথমেটিক্স, মিডিয়া বিজনেস, থিওলজি, ফিলোসফি, জার্নালিজম, সাইকোলজি সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিদ্যার্জনের সুযোগ আছে।

ইউনিভার্সিটি সিলেকশন

আপনাদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লিংক দেওয়া হলঃ

https://www.studyinswitzerland.plus/list-swiss-universities/

সুইজারল্যান্ডের যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে World Ranking-এ জায়গা করে নিয়েছে, সেগুলো হলঃ

ETH Zurich (13th),

École Polytechnique Fédérale de Lausanne (38th),

The University of Zurich (90th),

University of Basel (94th),

The University of Bern (113th)

এছাড়া সুইজারল্যান্ডে রয়েছে আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। আপনি তাদের মধ্যে থেকেও আপনার সুবিধামত বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করতে পারেন।

University of Zurich
Image Source: Internet

ডকুমেন্টস সত্যায়ন (Documents Attestation)

স্বপ্ন যদি হয় সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন তাহলে আপনাকে প্রায় ১ বছর ধরে এর প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনার সকল মার্কশীট, সনদ, স্কুল ও কলেগজের প্রত্যয়নপত্র সব কিছু ইংরেজী ভাষায় হতে হবে- আর এগুলো ইংরেজীতে না থাকলে নোরারী পাবলিক করে অনুবাদ করিয়ে নিতে হবে। এছাড়া প্রয়োজন পরবে ভাষা দক্ষতা প্রমাণের জন্য সনদপত্র, পাসপোর্ট সাইজের ছর্সি, পাসপোর্টের ফটোকপি ও রেফারেন্স। সুইজারল্যান্ডে ভিসার জন্য আবেদন আপনাকে সব ডকুমেন্ট অরিজিনাল দিতে হয়। তবে নিরীক্ষণের পর সেটাকে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।

সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া

সুইজারল্যান্ডে আবেদন শুরু করা যায় বছরে দুই বার, যথাঃ সামার সেশন (Summer Session) আর উইন্টার সেশন (Winter Session)। শীতকালীন সেশনে আবেদন অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগ এবং গ্রীষ্মকালীন সেশনে আবেদন মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যবর্তী সময় থেকে জুন বা জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত হয়ে থাকে।

Uni Bern Switzerland
Image Source: Internet

ভর্ত্তির জন্য হাতে সময় নিয়ে আবেদন করা উচিত হবে। সাধারণত ৬-৮ মাস আগেই আবেদন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিজ্ঞপ্তি দেখে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আপনি সফল হলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিবে পরবর্তীতে কি করতে হবে।

আর আপনি যদি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে ঘুরে আসুন নিচের লিঙ্ক থেকেঃ

https://www.studyinswitzerland.plus/scholarships/

সুইস সরকার ফেডারেল কমিশন ফর স্কলারশিপ  বাইরের দেশের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ স্কলারশিপ প্রধানত স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।

ছাত্র হোস্টেল বা বাসা খোঁজা

প্রকৃতির স্বর্গরাজ্যে পৌঁছানোর পর আবাসিক ব্যবস্থা সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাছে।এক্ষেত্রে আপনার কোন পরিচিত এদেশে থাকলে তার ঠিকান এখানে সংযুক্ত করতে হবে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্ট চেক লিষ্ট

সুইস এম্বেসী বাংলাদেশে থাকায় আপনি অনেক সুবিধা পাবেন সুইজারল্যান্ডে আবেদন করার ব্যাপারে। আপনি যেহেয়ু ইউরোপীয়ান পাসপোর্টধারি নয়, তাই আপনাকে নিতে হবে ডি ভিসা (D- Visa). ঢাকাস্থ সুইস এম্বেসীর মাধ্যমে আপনি এই বাএদন করতে পারবেন।

student visa switzerland
Image Source: Internet

ভিসা আবেদনের জন্য নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বেঃ

১। আবেদন ফর্ম সাথে অনধিক ৬ মাসের পুরানো ছবি সংযুক্ত

২। পাসপোর্ট (পুরাতন সহ, যদি থাকে)

৩। বর্তমান পাসপোর্ট এর ফটোকপি (প্রতিটি আবেদন ফর্ম এর জন্য)

৪। সিভি ও মোটিভেশন লেটার

৫। সকল একাডেমিক কাগজপত্র

৬। অফার লেটার (সুইস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সত্যায়িত)

৭। ঘোষণা পত্র যে, আপনি পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে আসবেন।

৮। স্পন্সর কর্তৃক হলফনামা (এফিড্যাভিট)

৯। আয়ের উৎস হিসেবে ১২ মাসের ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট/সনদ, ইনকাম ট্যাক্স পেপার, ফিক্সড জামানত ইত্যাদি এবং যদি ব্যাংক লোন হয় তাহলে ব্যাংককে নিশ্চিত পত্র ইস্যু করতে হবে তা প্রমাণের জন্য।

১০। কমপক্ষে ১ বছরের টিউশন ফি পরিশোধের প্রমাণ কপি

১১। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা পরিক্ষায় পাশের নিশ্চিত পত্র

১২। সাম্প্রতিক IELTS পরীক্ষার সনদ

এছাড়াও অন্যান্য ডকুমেন্টস প্রয়োজন হতে পারে, যদিও তার সম্ভবনা নিতান্তই কম।

পার্ট টাইম জব ও জীবনযাত্রার ব্যয়

সুইজারল্যান্ডে পড়াশুনার পাশাপাশি আপনি সপ্তাহে ১৫ ঘন্টা কাজ করা করার সু্যোগ পাবেন। আবার শর্ত সাপেক্ষে অনেক সময় ফুল টাইম কাজ করারও অনুমতি পেতে পারেন। তবে প্রথম ৬ মাস আপনি কোন কাজই করতে পারবেন না। ৬ মাসের পরে আবেদন করে অনুমতি নিয়ে আপনি পার্ট টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন। সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন জব সাইট ঘেটে নিজের CV দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

সুইজারল্যান্ডে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশী। স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে আপনাকে বাৎসরিক প্রায় ৮০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা গুনতে হবে।

Image Source: Internet

কোর্স শেষে চাকুরির সুযোগ ও স্থায়ী বসবাস (পিআর) এর সম্ভাবনা

পড়াশুনা শেষে স্থায়ী ভাবে বসবাসের সুযোগ আছে । সুইজারল্যান্ডে পড়াশুনা শেষ করে আপনি ৬ মাসের জব সার্চ ভিসা পাবেন। আর নাগরিকত্ব পেতে সুইজারল্যান্ডে আপনাকে বসবাস করতে হবে ১২ বছর। কিন্তু আশার বিষয় হচ্ছে বর্তমানে প্রচলিত নিয়মটি পরিবর্তন আসবে- এজন্য সুইজারল্যান্ডে একটি গণভোটও হয়েছে। সামনে হয়ত সহজেই মিলবে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব।

মনোরম প্রকৃতিক শোভামণ্ডিত এই দেশে পড়তে আগ্রহী হলে আপনি আআবেদন করতে পারেন। সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এই দেশ বিশ্বে সকলের কাছেই খুব প্রিয়।

Life in Switzerland
Image Source: Internet

সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা  তথ্যসুত্রঃ

October 26, 2021

স্বপ্ন যখন বিদেশ এ উচ্চ শিক্ষাঃ কিভাবে শুরু করবেন ?

বিদেশে পড়তে যাবার ইচ্ছা আমাদের অনেকেরই আছে হোক সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা ;কোন নবীন কিশোর কিম্বা চাকুরীতে মগ্ন কোন সরকারি বা বেসরকারি অফিস কর্মকর্তা; ইচ্ছে আমাদের ষোল আনাই আছে কিন্তু সম্ভব হয়ে ওঠে না কারণ আমরা অনেকেই এর পেছনে সময় দিতে পারি না; আবার অনেকেই খেঁই হারিয়ে ফেলি; কিন্ত সবচেয়ে যে কারণটি এখানে মুখ্য তা হলা আমাদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত না জানা আর সঠিক গাইডলাইন না থাকা;

higher study abroad
Image Source: pexels.com

তাই আমারা আপনাদের অধরা স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনে দিতে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য যাবতীয় তথ্য ও উপাত্তের পশরা নিয়ে এসেছি; এক এক করে তুলে ধরা হবে বিদেশে অধ্যয়নের যাবতীয় বিষয় আশয়; আজকের আলোচনার বিষয়ঃ শুরুটা ঠিক কবে থেকে, আর কখন থেকে এবং কিভাবে করতে হবে;

যাদের ইচ্ছা গ্রাজুয়েশন

উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করে যারা গ্রাজুয়েশনের জন্য বিদেশে যেতে চায় তাদের জন্য প্রথমত দরকার কোন বিষয়ে অধ্যয়ন করতে হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা; যদি ভালো লাগে কম্পিউটারের সামনে বসে কোডিং করতে তাহলে উচিত হবে প্রোগ্রামিং করা যদি ইচ্ছে হয় রোবট বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে; আর যদি থাকে ধৈর্য্য তাহলে উচিত হবে মেকানিক্যাল কিম্বা ইলেক্ট্রিক্যাল নিয়ে পড়াশুনা করা; তবে ইচ্ছাটাকে গুরুত্ব দেবার পাশাপাশি চাকুরীর বাজারেও একটু ঢু দিয়ে আসা; তারপর লেগে যেতে হবে পড়তে যাবার দেশ নির্বাচনের বিষয়ে ও যে বিষয়ে পড়তে যাবে সেই বিষয়টি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল পড়ানো হয়; সেই বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে;সব তথ্য সংগ্রহের পর সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে পাড়ি যমাতে হবে বিদেশে;

যাদের ইচ্ছা মাস্টার্স আর পোস্ট গ্রাজুয়েশন

যারা বাংলাদেশে ইতোমধ্যে গ্রাজুয়েশন করে ফেলেছে, তাদের সাবজেক্ট মোটামুটি ঠিক করা থাকে; অনেকেই নিজের বিষয়ের বাইরে গিয়ে অর্থনীতি এমবিএ কিম্বা ফাইন্যান্স নিয়ে পড়াশুনা করে; এই সব ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার অনুযায়ী কোন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করলে ক্যারিয়ার আরও ঊজ্জ্বল হবে, সে বিষয়ে জানতে ও ভাবতে হবে;যারা বিদেশে পড়তে যাতে চান, তাদের উচিত হবে গ্রাজুয়েশন ৪র্থ বর্ষ থেকেই এই বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া; কোন দেশে যেতে কি কি কাগজ পত্র ও কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন পড়বে সে বিষয়ে ধারণা নেওয়া;

কোয়ালিফিকেশন টেস্টঃ কার জন্য কোনটি প্রযোজ্য

GRE নাকি GMAT

বিদেশে পড়তে যেতে কি করব? কোন পরীক্ষা দিব এই বিষয়ে সংশয় কম বেশি সবার থাকে; সাধারণত আমেরিকায় যারা পড়তে যেতে ইচ্ছুক তাদের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের জন্য প্রয়োজন GRE যার পূর্ণরূপ Graduate Record Examination; আর যারা ব্যবসা অথবা মানবিক বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক তাদের জন্য আছে GMAT, Graduate Management Admission Test. যারা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিদেশে যেতে চায় অথবা বিদেশে কোন কলেজে ভর্তি হতে চায় তারা SAT বা Scholastic Aptitude Test দেয়। ইউরোপীয়ান দেশগুলোতে আমেরিকাভিত্তিক GRE বা GMAT প্রয়োজন হয় না;

তাই, স্বপ্ন যদি USA না হয় তবে GRE অথবা GMAT এর বালাই নেই। GRE/ GMAT এর মেয়াদ ৫ বছর থাকে। তবে ২/৩ বছরের বেশি সময় হলে প্রফেসররা আবার পরীক্ষায় বসার সাজেশন দেয়;

IELTS নাকি TOEFL

ইংরেজী ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ দেবার জন্য আমাদের বেছে নিতে হয় IELTS (International English Language Testing System) অথবা TOFEL (Test of English as Foreign Language); এই পরীক্ষা দুইটি মোটামুটি সব দেশেই গ্রহণযোগ্য। IELTS মূলত UK ও Australia ভিত্তিক ভাষাগত দক্ষতা যাচাই পরীক্ষা। তাই, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে IELTS বেশি প্রাধান্য পায়। আর TOFEL মূলত আমেরিকা ভিত্তিক ভাষাগত পরীক্ষা হবার দরুন USA তে TOFEL এর গুরুত্ব বেশি। তাই নিজের নির্বাচিত গন্তব্য অনুযায়ী, যে কোন একটি পরীক্ষায় বসা উচিত। এই দুই পরীক্ষারই মেয়াদ ২ বছর;

তবে এ ব্যাপারে উল্লেখ্য যে, IELTS অথবা TOEFL এর ঝুট-ঝামেলা বাদেও অনেক দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায়। তাই সবসময় যে এই পরীক্ষাগুলো দিতেই হবে তারও কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। দেশ- বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে সব কিছুই নির্ভর করে। তাই ইচ্ছা থাকলে উপায়ের অন্ত নেই।

IELTS for higher study abroad
Image Source: pexels.com

IELTS Score ছাড়া মিলবে কি সফলতা?

অনেকে জেনেই খুশি হবেন যে, IELTS Score ছাড়াও পেতে পারেন বিদেশে পড়াশুনা করার সুযোগ। না, মোটেও অসম্ভব কিছু বলছি না। বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার মাধ্যম বা Medium of Instruction হল English. এখানে উল্লেখ্য হল, বাইরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় মিদিয়াম অফ ইন্সট্রাকশনকে অনেক মূল্যায়ন করে, এমনকি এটাকে IELTS বা TOEFL এর সমতুল্য হিসেবে গ্রহণ করে। তাই, যারা ভাবছেন IELTS দিয়ে সময় নষ্ট করবেন না, বা মনে করছেন IELTS দিয়ে প্রয়োজনীয় স্কোর করতে পারবেন না- তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “Medium of Instruction” সার্টিফিকেট সংগ্রহ করুন এবং এপ্লাই করুন;

এভাবে এমনি IELTS ছাড়াই এপ্লাই করতে পারবেন;সাধারণত বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সাম কন্ট্রোলার থেকে আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্যারের দপ্তর থেকে এই সার্টিফিকেট সংরহ করতে পারবেন। এখানে একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মিডিয়াম অব ইন্সট্রাকশন সার্টিফিকেট দিয়ে কাজ হবে না, বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আপনাকে IELTS/ TOEFL সার্টিফিকেট দিতে হবে;

কাগজপত্রের তোড়-জোড়

প্রথমত, Application প্রসেস করার শুরুতেই প্রয়োজন পড়বে CV, SOP (Statement of Purpose), Mark-Sheets, IELTS/ TOFEL Result, Bank Solvency Certificate। এই সব কাগজপত্র দিয়ে আবেদন শুরু করার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া যাবে Confirmation of Enrollment;

এই Confirmation of Enrollment এর সাথে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন, জাতীয় পরিচয়পত্র, বিবাহের সনদ(যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন), জন্ম সনদ, ট্যাক্স সনদ, ইত্যাদি দিয়ে Visa এর জন্য আবেদন করতে হয়;
সকল ডকুমেন্ট ঠিক ঠাক থাকলে তবেই মিলবে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা;

কোথায় সে দেশঃ কোন সে বিশ্ববিদ্যালয়?

দেশের বাইরে পড়তে যাবার জন্য প্রথমত দরকার কোন দেশে পড়তে যাবেন ও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে যাবেন সেই বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন করা। এই পথ বাৎলে দিতে এই পর্বের আলোচনাঃ কোন দেশে পড়তে যাবেন তা নিয়ে।

find country for higher study
Image Source: pixabay.com

দেশ নির্বাচনঃ কোন দেশে পড়তে যাবেন

দেশ নির্বাচন সবসময়ই একটি জটিল প্রক্রিয়া; এক এক দেশে এক এক রকমভাবে যাচাই করা হয় প্রত্যেক ক্যান্ডিডেটকে। আবার সব দেশের আচার-আচরণ, জীবন- জীবিকা, আবহাওয়া, স্কলারশিপের সুযোগ, পড়ার পাশাপাশি অথবা পড়া শেষে কর্মে প্রবেশের সুযোগ এক রকম নয়। তাই, সব দিক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই সব সময় উচিত হবে কমপক্ষে এক বছর আগে থেকে প্রিপারেশন শুরু করা। এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো ভালো হবে না;

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের তালিকায় যে সব দেশ রাখে তাদের মধ্যে রয়েছে – আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানী, ব্রিটেন, চীন, মালয়েশিয়া সহ অন্যান্য দেশ। এই দেশেগুলোর মাঝে কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা পরবর্তী সিটিজেনশিপ লাভের সুযোগ বেশি;
এবার আস্তে আস্তে চলুন জেনে নেই – কিছু পছন্দসই দেশের সাত-সতেরো;

১। আমেরিকা

সবচেয়ে বেশী সংখ্যক বাঙ্গালী ছাত্র-ছাত্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে। বাঙ্গালী শিক্ষার্থী শুধু নয়, বিশ্বের সব দেশের সব চেয়ে বেশি জ্ঞানপিপাসুরা অবস্থান করছে এই দেশে আর জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় রিসার্চ করছে; আমেরিকায় রিসার্চ সেক্টরে প্রচুর বরাদ্দ থাকায় এই দেশ সবার পছন্দের এক নম্বরে থাকে। তবে আমেরিকায় বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের টানাপোড়েনে অনেক সময় অনেক রকম বিপত্তি দেখা যায়- যদিও সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যায়;

আমেরিকায় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে এক এক রকম টাইম জোন [আমেরিকায় মোট ৫টি টাইম জোন] থাকে আর আবহাওয়ায় বেশ রকম ফের আছে। এই জন্য কোথায়- কোন অঙ্গরাজ্যে পড়তে যাচ্ছেন সেই বিষয়ে একটু খোঁজ নেওয়া বেশ জরুরী। আমেরিকাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে GRE/ GMAT/ SAT এবং ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে TOEFL-কে প্রাধাণ্য দেওয়া হয়;

তবে কেউ যদি IELTS দিয়েও আবেদন করতে চান, তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সেটা গ্রহণ করে নেয়; আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলোয় TA (Teachers’ Assistant)/ RA (Research Assistant) এর কাজ পাওয়া যায়। এজন্য মেধাবীদের Part-time কিছু রোজগারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে Blue Collar Job-ও করার প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে জানতে ও আরও তথ্য নিতে Education USA (https://educationusa.state.gov/) এর ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখতে পারেন;

২। ব্রিটেন

যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় ও অবস্থান ভেদে অনেক তারতম্য হয়। অর্থাৎ, লন্ডনে পড়তে যে খরচ হয়ত হবে, তার ঠিক অর্ধেক খরচে হয়তো অন্য কোন শহরের অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যাবে। UCAS (https://www.ucas.com/) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায়- এছাড়া নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দিয়েও আবেদন করা যায়। ব্রিটেনে পড়তে শুধু IELTS- এ ভালো স্কোর থাকলেই হচ্ছে। যুক্তরাজ্য আইন, ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য, বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় প্রশাসনের বিভিন্ন অনুষদের জন্য এখনও এই দেশকে স্বর্গ ধরা হয়। এই দেশে পড়াশুনার পাশাপাশি Part- Time চাকুরী পাওয়া যায়। তবে পড়াশুনা শেষ করে এই দেশে PR (Permanent Residency) পাওয়া অনেকটা মিশন ইম্পসিবলের গল্পের মত।

৩। অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া ভালো IELTS স্কোরকে অনেকটা গুরুত্ব দেয়- যদিও প্রকাশ্যে বলা হয় না। তারপরও, অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাবার সময় ভালো IELTS স্কোর থাকলে খুব সুবিধা পাওয়া যায়। এই দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং কিম্বা সাইন্সে পড়তে ৭.০ IELTS স্কোর চাওয়া হয়। অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বের তৃতীয় পড়তে-যাবার ডেস্টিনেশন ধরা হয়। এই দেশে পড়াশুনা শেষ করার পর বেশ সহজেই PR পাওয়া যায়। সাধারণত পড়াশোনা শেষ করার পর ১.৫ থেকে ২ বছর সেখানে চাকুরী করলে PR পাওয়া যায়। এদেশে পড়াশোনা চলার সময় Part- Time আর ছুটিতে Full Time Job পাওয়া যায়।

৪। কানাডা

বিদ্যার্জনের আরেক ডেস্টিনেশন হল কানাডা। শীত প্রধান এই দেশে পড়াশুনা শেষ করে Permanent Resident হয়ে যাবার সুযোগ খুব বেশি। নান্দনিক এই দেশে নাগরিক সুবিধা ও উন্নত জীবন-যাপনের কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি আগ্রহী হয় এই দেশে আসতে। কানাডা CGPA ও IELTS স্কোরকে খুব প্রাধান্য দেয়। তাই এই দেশের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এই দু’টো দিকে একটু খেয়াল দিতে হবে।

৫। ইউরোপ

ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যেমনঃ জার্মানী, সুইডেন, নরওয়ে জ্ঞান পিপাসুদের পছন্দের পীঠস্থান; জার্মানীতে ইংরেজী ভাষা ও জার্মান ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়;জার্মান ভাষা জানা থাকলে এ দেশে এক্সট্রা সুবিধা পাওয়া যাবে; সুইডেনে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে ভর্ত্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়; এরফলে আপনি আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌছে যাবেন; নরওয়ে ও ফিনল্যান্ডে পড়তে আপনার এক পয়সাও ব্যয় হবে না- কারণ এই দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়; আর আপনি যদি পেয়ে যান স্কলারশিপ তাহলে অন্যান্য খরচের ব্যয় নিয়েও আর চিন্তা করতে হবে না;

দেশ ও তার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে শিক্ষার মান বিভিন্ন; নিজের ইচ্ছা ও যে দেশে আপনি পড়তে যাবেন সেই দেশের বিবেচনায় আপনাকে তৈরী হতে হবে; তবেই মিলবে উচ্চ শিক্ষার সোনার হরিণ;

স্বপ্ন যখন বিদেশ : বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন – কেন গুরত্তপূর্ন এবং কিভাবে করবেন

দেশ নির্বাচনের পর পরের কাজ বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা;বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের জন্য আপনি সাহায্য নিতে পারেন ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিং এর; ওই দেশের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের নয়নের মণি সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেওয়া দরকার;সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ প্রদান করে কি না আবার সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পর পোর্ট-ফোলিও কতটা উজ্জ্বল হবে সেই সব বিষয়ও মাথায় রেখে এগোতে হবে;
আপনি নিম্নোক্ত লিংকে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল-হকিকতঃ
https://www.topuniversities.com/university-rankings/world-university-rankings/2020

Higher Study Abroad - Oxford University
Image Source: pixabay.com

বিশ্বে নামী দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে আপনাকেও নিজেকে গড়ে নিতে হবে; CGPA, GRE Score এবং IELTS/ TOEFL Score এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ;অনেকে CGPA কম থাকায় মুসড়ে পরে কিন্তু আমি বলব এখানে থেমে যাওয়ার কিছু নাই;যদি পরিশ্রম করার ইচ্ছা থাকে তবে জয় একদিন হবেই;CGPA কম থাকলে তাকে অন্যান্য বিষয় দিয়ে পুশিয়ে নিতে হবে;

আপনার কো-কারিকুলাম কার্যক্রম ভালো অনুপ্রেরণাদায়ক SOP কিম্বা নিজেকে উপস্থাপন করার ধরণ কর্মে অভিজ্ঞতা Publication, Software Expertise ইত্যাদি হতে পারে আপনার অস্ত্র যদি আপনার CGPA কম থাকে। আর CGPA ভালো থাকলে আপনাকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুঁজছে- শুধু দেরি আপনার আবেদনের; সামনে এগোতে কে আপনাকে রুখে দাঁড়াবে?

স্বপ্ন যখন বিদেশ : স্কলারশিপ না সেলফ ফান্ডিং

বিদেশে উচ্চ শিক্ষা মূলত ব্যয়বহুল; তাই অনেকে পক্ষেই এই ব্যয় বহন করা বেশ কষ্টসাধ্য;তাই, বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা মূলত স্কলারশিপের খোঁজ করে থাকে; কিছু জনপ্রিয় স্কলারশিপ প্রোগ্রাম হলঃ

১। যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ এবং শেভেনিং স্কলারশিপ
২। কানাডার হাম্বার ইন্টারন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্কলারশিপ
২। জাপানের মনবুশো বৃত্তি ও মনবুকাগাকুশো বৃত্তি
৩। যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্টস প্রোগ্রাম
৪। এমএইচটিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম
৫। জার্মানির ডিএএডি
৬। অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ

এছাড়া প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে নিজস্ব ফান্ডিং ব্যবস্থা; এ বিষয়ে প্রফেসরের শরণাপন্ন হলে মিলবে সৎ পরামর্শ। আর যারা এই ব্যয়ভার বহনে সামর্থ তাদের এই ঝক্কি পোহানোর কোন দরকার নেই;সেলফ ফান্ডিং এর আওতায় আপনি যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়তে পারবেন;

আর্থিক সামর্থ্য বা সচ্ছলতার সনদ (সলভেন্সি সর্টিফিকেট)

সবই তো হলঃ দেশ বাছাই হল, বিশ্ববিদ্যালয়ও পাওয়া গেল- এবার ভিসা নিতে গেলে প্রয়োজন পড়বে আর্থিক সামর্থ্য বা সচ্ছলতার সনদ; যদি আপনি ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ পান তাহলে আপনাকে ভ্রমণ স্বাস্থ্য বীমা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানের প্রমাণ দিতে হবে;

আর যদি সেলফ ফান্ডিং বা আংশিক বৃত্তি পান তাহলে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচসহ যাবতীয় খরচ নির্বাহের জন্য অর্থের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হবে; যদি আপনি নিজে কিম্বা আপনার নিকট আত্মীয় যেমন বাবা মা ভাই  কিংবা বোন এই ব্যয়ভার বহন করেন তার সম্মতিপত্র ও তার আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ দিতে হবে; এ জন্য TIN (Tax Identification Number) ও Bank Solvency Certificate গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট যার মাধ্যমে আপনি আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারেন;

ইউনিভার্সিটিতে ডকুমেন্ট পাঠানোর উপায়

বিশ্ববিদ্যালয়ে ডকুমেন্ট পাঠানোর আগে প্রথমে জানতে হবে সেখানে আদৌ ডকুমেন্ট লাগবে কি না? অনেক বিশ্ববিদ্যালয় Paperless Concept এর কারণে শুধু অনলাইন আবেদনই চায়; সেক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে ডকুমেন্টস পাঠাতে হবে না; আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানে অনলাইনে আবেদনের পাশাপাশি ডকুমেন্টসগুলোর হার্ড কপিও লাগে;সেই জন্য আছে FedEX,DHL; এক্ষেত্রে আপনি চাইলে বাংলাদেশের সরকারি পোস্ট অফিসের EMS সেবাও নিতে পারেন; কম খরচে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ পৌছে দেবে আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে;

দেশ, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কলারশিপ, ফান্ডিং ও আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র সবই যোগাড়-যন্ত্র করে আপনি পাড়ি জমাবেন আপনার পছন্দের গন্তব্যে;বিদেশের মাটিতে প্রতিটি শিক্ষার্থী বাংলাদেশের এক এক জন রাষ্ট্র দূত; তাই, আমাদের উচিত সবসময় দায়িত্বশীল আচরণ করা; যাই হোক, শুরু করে দিন প্রস্তুতি- সময় এখন আপনার;

স্বপ্ন যখন বিদেশ : তথ্যসুত্রঃ

error: Alert: Content selection is disabled!!